রান পাচ্ছিলাম না, দলের স্বার্থে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি: রোহিত
রান পাচ্ছিলাম না, দলের স্বার্থে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি: রোহিত বর্ডার-গাভস্কার ট্রফিতে ব্যাট-বলের উত্তেজনা তো চলছেই। মাঠের বাইরের ইস্যুতেও সরগরম। সিডনি টেস্টের আগে হঠাৎ রোহিত শর্মার সরে যাওয়া নিয়ে ছড়ায় উত্তাপ। তাহলে কী ভারতের অধিনায়ক পারফরম্যান্সের কারণে বাদ-ই পড়লেন? নাকি তাকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। সচরাচর দলের নিয়মিত কাউকে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ দেওয়া হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্রাম শব্দটি ব্যবহার করা হয়। রোহিতের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে। টসের সময় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জসপ্রিত বুমরাহ বিশ্রাম শব্দটাই ব্যবহার করেছিলেন। সিডনিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা চলাকালীন প্রোডাকশনের মুখোমুখি নিয়ে রোহিত নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। সাফ জানিয়েছেন, নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। দলের জন্য এই ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য অফফর্মে থাকা রোহিত নিজ থেকে ম্যাচটি না খেলার সিদ্ধান্ত নেন। তার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আরেকটি প্রশ্নও উঠছে, টেস্ট ক্রিকেটে নিজের শেষটা কি দেখে ফেললেন রোহিত? উত্তরটা সাফ পরিষ্কার, ‘‘আমি কেবল এই টেস্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, অবসর নেইনি।’ তার ভাষ্য, ‘‘রান করতে পারছিলাম না। ব্যর্থ হলে তো মানতেই হবে। তাই দলের স্বার্থে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অবসর নেইনি। শুধু এই ম্যাচটা না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রান করতে পারছিলাম না। আমাদের অনেক ব্যাটারই ভাল ফর্মে নেই। ম্যাচে প্রভাব পড়ছিল। অধিনায়ক হিসাবে দলের কথাই আগে ভাবি। কী করলে দলের লাভ ভাবি। সেই ভাবনা থেকেই সরে দাঁড়িয়েছি। এটা দলগত খেলা। ব্যক্তিগত খেলা নয়। আমি নিজেই কোচ, নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোথাও যাচ্ছি না। দলের সঙ্গেই আছি।’’ সর্বশেষ ৬ ইনিংসে মাত্র ৬৫ রান করা রোহিতের ফর্ম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাই হয়েছে কয়েক দিন। অধিনায়ক বলেই তাকে বাদ দেওয়া যাচ্ছিল না—এমনও বলেছিলেন কেউ কেউ। নিজেকে সরিয়ে রাস্তাটা রোহিত পরিষ্কার করে দেন। তবে তার সামনের পরিকল্পনা কী সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রোহিত খোলাসা করে বলেছেন, ‘‘যারা কলম নিয়ে, ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন, তারা কী লিখলেন, তাতে আমাদের জীবন বদলে যাবে না। তারা ঠিক করবেন না আমরা খেলব কিনা, অধিনায়কত্ব করব কিনা। আমি পরিণত। দুই ছেলের বাবা। তাই দলের স্বার্থে আমার যেটা সঠিক মনে হয়েছে, সেটাই করেছি। কেননা দিনের শেষে দলকে ম্যাচ জেতানোটাই আসল কথা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়।’’‘‘ছয় মাস আগে যে ভাবনা নিয়ে নেতৃত্ব দিতাম, এখনও সে ভাবেই দিই। সিদ্ধান্তগুলো কাজে লাগলে ভালো মনে হয়। কাজে না এলে, সমালোচনা হয়। তখন লোকে বলে, এ কী করছে! দেখুন আমরা ভারতে থাকি। ১৪০ কোটি মানুষ আমাদের বিচার করে। তারা মতামত দিতেই পারেন। কিন্তু মাঠে নেমে আমাদের পারফর্ম করতে হয়। সিদ্ধান্ত নিতে হয়। একই রকম মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামি সবসময়। অধিনায়ক হিসাবে দলে স্বার্থকে আগে রাখি। যেটা ভাবি, সেটাই বলি, সেটাই করি। অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।’’ – যোগ করেন রোহিত। কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে দূরত্বের কথাও সামনে এসেছে। এ নিয়ে রোহিতের সরাসরি উত্তর, ‘‘দুটো টেস্টের মধ্যে খুব বেশি সময় ছিল না। মাঝে নববর্ষও ছিল। তার মধ্যে এসব নিয়ে কথা বলতে চাইনি। এখানে আসার পর কথা বলেছি। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দলে এমন কাউকে দরকার ছিল, যে ফর্মে রয়েছে। এই অবস্থায় যে ফর্মে নেই, তাকে খেলিয়ে যাওয়ার মানে হয় না। এটা খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। আর এটাই আমার মাথায় ঘুরছিল। সেটাই কোচ, নির্বাচকদের বলেছিলাম। তারা আমার সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন।’’
১৫ উইকেটের দিনে কার মুখে ফুটল হাসি
১৫ উইকেটের দিনে কার মুখে ফুটল হাসি সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় দিন রোমাঞ্চ ছড়ালেন বোলাররা। এক দিনেই তুলে নিলেন ১৫ উইকেট। যদিও গতকালও বোলারদের পকেটে গেয়েছিল ১১ উইকেট। আজ সংখ্যাটা আরো ৪টি বেশি। ১ উইকেটে ৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া ১৭২ রান যোগ করে অলআউট হয়েছে। ভারতের করা ১৮৫ রানের জবাবে তাদের ইনিংস থামে ১৮১ রানে। ৪ রানের লিড পায় অতিথি ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ভারতের ব্যাটিংটাও যুৎসই হয়নি। ৬ উইকেটে ১৪১ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছে। স্কোরবোর্ডে লিড মাত্র ১৪৫ রানের হওয়াতে কার মুখে হাসি ফুটল তা বোঝা যাচ্ছে না এখনই। তবে এই টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে চরম রোমাঞ্চের অপেক্ষা করছে তা বলতে দ্বিধা নেই। ভারত এদিন দুঃসংবাদও পেয়েছে। বোলিংয়ের সময় কোমড়ে ব্যথা অনুভব হওয়ায় মাঠ ছাড়েন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জসপ্রিত বুমরাহ। ড্রেসিংরুমে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর খেলা শেষ হওয়ার আগেই গাড়িতে করে মাঠ ছাড়েন এই পেসার। তাকে বোলিংয়ে পাওয়া না গেলে তা হবে বিপর্যয়। সকালে অসি শিবিরে শুরুর ধাক্কাটা বুমরাহ দিয়েছিলেন। তার লাফিয়ে উঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লাবুশানে। এরপর মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ঞার যৌথ আক্রমণে গুঁড়িয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার মিডল ও লেট অর্ডার। দুই ডানহাতি পেসার ৩টি করে উইকেট নেন। আরেক পেসার নিশিত রেড্ডির পকেটেও গেছে ২ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ওয়েবস্টার। ১৫৮ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ৫ বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজান। এছাড়া স্মিথ ভালো শুরুর পর ৩৩ রানে আটকে যান। অ্যালেক্স ক্যারির ব্যাট থেকে আসে ২১ রান। নিয়মিত বিরতিতে ভারতের পেসাররা উইকেট নেওয়ায় থিতু হতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যানই। ভারত অ্যাটাকিং খেলবে নাকি ডিফেন্সিভ সেটা নিয়ে ছিল কৌতুহল। প্রথম ওভারে সেই বার্তা দিয়ে দেন জওসওয়াল। বাঁহাতি পেসারকে প্রথম ওভারে চারটি চার হাঁকান জওসওয়াল। থেমে থাকেননি আরেক ব্যাটসম্যান লোকেশ রাহুল। ২টি দৃষ্টিনন্দন চারে এগিয়ে নেন স্কোরবোর্ড। দুই পেসার কামিন্স ও স্টার্ক কোনো সুবিধা করতে না পারায় প্রথম ইনিংসে ফাইফারের স্বাদ পাওয়া বোল্যান্ড আক্রমণ আসেন। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ১৭ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। রাহুল ও জওসওয়াল বোল্ড হওয়ার পর কোহলি আবারো স্লিপে ক্যাচ দেন। অফস্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে এই সিরিজে এই নিয়ে মোট সাতবার আউট হলেন কোহলি। হাল ধরার চেষ্টা ছিলেন গিল। কিন্তু ১৩ রানে তাকে আটকে দেন ওয়েবস্টার। পাঁচে আসা রিশভ পান্ত খেলার গতি পাল্টে দেন। মাত্র ২৯ বলে তুলে নেন ফিফটি। যা ভারতের হয়ে টেস্টে দ্বিতীয় দ্রুততম। পান্তই এ রেকর্ডটা দখলে রেখেছেন। ২৮ বলে ফিফটি পেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৩৩ বলে ৬১ রান করেন ৬ চার ও ৪ ছক্কায়। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখলেও কামিন্স তাকে ফিরিয়ে ভারতের বড় স্কোরের সম্ভাবনা কমিয়ে দেন। অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন পান্ত। দিনের শেষ ভাগে নীতিশ রেড্ডি বোল্যান্ডের চতুর্থ শিকার হলে পিছিয়ে যায় ভারত। জাজেদা ৮ ও সুন্দর ৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। আগামীকাল তৃতীয় দিনে তারা কতটা লড়াই করতে পারেন, সেটার উপর ম্যাচের ভাগ্য নির্ভর করবে।
রাজশাহীকে হারিয়ে প্রথম জয় চিটাগাংয়ের
রাজশাহীকে হারিয়ে প্রথম জয় চিটাগাংয়ের বিপিএলে একদিনের ব্যবধানে বিপরীত চিত্রটাও দেখল দুর্বার রাজশাহী। গতকাল তাসকিন আহমেদের রেকর্ড ম্যাচে জয় পেলেও আজ হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রাজশাহী। চিটিগাং কিংসের কাছে ১০৫ রানে হেরেছে তারা। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান খানের সেঞ্চুরিতে ২২০ রানের লক্ষ্য দেয় চিটাগাং। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এই বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১৪ রানে অলআউট হয় রাজশাহী। এতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে বিপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় পায় চিটিংগা। এর আগে ১০৫ রানের জয় পেয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সও। এবারের বিপিএলে বন্দর নগরীর দলটির প্রথম জয়। চিটাগাংয়ের হয়ে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার অফ স্পিনার আলিস আল ইসলাম। আলিসের মতো সমান ৩ উইকেট নিলেও আরেক বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি খরচ করেছেন ২৩ রান। এবারের বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন উসমান। দলটির হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেছেন ইংল্যান্ডের গ্রাহাম ক্লার্ক।
পেরেরার ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরিতে ১৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচলো শ্রীলঙ্কার
পেরেরার ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরিতে ১৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচলো শ্রীলঙ্কার ৪২৯ রানের রোমাঞ্চকর এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শেষ হাসি হাসলো শ্রীলঙ্কা। নেলসনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে ৭ রানে হারালো সফরকারী দল। দুই ম্যাচ সিরিজ আগেভাগেই নিজেদের করে নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ ম্যাচটি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার। তবে লঙ্কানরা এই ম্যাচ জিতে শুধু হোয়াইটওয়াশ লজ্জাই এড়ায়নি, ঘুচিয়েছে ১৯ বছরের আক্ষেপ। ২০০৬ সালের পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এবারই প্রথম কোনো টি-টোয়েন্টি জিতলো শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের এই জয়ের নায়ক কুশল পেরেরা। ৪৪ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের ইতিহাসের সর্বকালের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক এখন পেরেরা। পেরেরার বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে ভর করেই ৫ উইকেটে ২১৮ রানের বিশাল পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল টস হেরে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা। এটি টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ৪৬ বলে ১৩ চার আর ৪ ছক্কায় বাঁহাতি পেরেরা খেলেন ১০১ রানের ঝকঝকে ইনিংস। এছাড়া ২৪ বলে ৪৬ করেন অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। জবাবে ১৫ ওভার পর্যন্ত দারুণভাবে লড়াইয়ে ছিল নিউজিল্যান্ড। ওভারপ্রতি ১১ রান করে লাগতো, ঠিকই সে চেষ্টা করে গেছে স্বাগতিকরা। ১৫তম ওভারে আসালাঙ্কাকে টানা চার ছক্কা হাঁকিয়ে খেলা জমিয়ে দিয়েছিলেন ড্যারিল মিচেল। ১৭ বলে ৩৫ করে তিনি আউট হন। শেষদিকে নয় নম্বর ব্যাটার জ্যাকারি ফকসও ভয় জাগিয়েছিলেন লঙ্কানদের মনে। তবে তার ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংসেও তীরে পৌঁছতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ৭ রান দূরে থাকতে হেরে যায় স্বাগতিকরা। এর আগে ৪৪ বলে ৮১ রানের ওপেনিং জুটিতে রান তাড়ার শক্ত ভিত গড়ে দিয়েছিলেন রাচিন রাবিন্দ্র আর টিম রবিনসন। রবিনসন ২১ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৭ আর রাচিন ৩৯ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় করেন ৬৯ রান।
টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়লেন শান্ত, নতুন অধিনায়ক কে?
টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়লেন শান্ত, নতুন অধিনায়ক কে? নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বগুণ নিয়ে তেমন প্রশ্ন ওঠেনি। তবে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে তিনি তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হওয়ার থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে টি-টোয়েন্টি নিয়ে। শান্তর ব্যাট হাতে নানা ব্যর্থতা এবং স্ট্রাইকরেট টি-টোয়েন্টির সঙ্গে খাপ খাচ্ছিল না কিছুতেই। সমালোচনার মুখে গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের সময় শান্ত জানান, তিনি কোনো ফরম্যাটেই আর অধিনায়কত্ব করতে চান না। কিন্তু বিসিবি তাকে ছাড়তে চায়নি। আসলে শান্তর নেতৃত্বে দল তো সাফল্যও পেয়েছে। এর মধ্যে চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ছিটকে পড়েন শান্ত। টেস্ট আর ওয়ানডেতে মেহেদী হাসান মিরাজ এবং টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দেন লিটন দাস। অবশেষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন শান্ত। বিসিবির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, শান্ত চূড়ান্তভাবেই জানিয়েছেন যে, তিনি আর টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব দিতে চান না। বিসিবি যদি চায়, টেস্ট এবং ওয়ানডে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাবেন। তার এই ইচ্ছায় সম্মতি জানিয়েছে বিসিবিও। অর্থাৎ, আগামী মার্চে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরবর্তী টি-টোয়েন্টি সিরিজে শান্ত বাংলাদেশের অধিনায়ক থাকছেন না। তাহলে অধিনায়ক কে হবেন? হাতে সময় আছে। বিসিবি এখনই নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করছে না। তবে কে হচ্ছেন টি-টোয়েন্টিতে নতুন দলপতি, সেটি আন্দাজ করা যাচ্ছে খুব সহজেই। লিটন দাসের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি–টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। সব ঠিক থাকলে লিটনই হচ্ছেন পরবর্তী অধিনায়ক। আলোচনায় মেহেদী হাসান মিরাজের নাম থাকলেও টি–টোয়েন্টি দলে তার জায়গাটাই নিয়মিত নয়। এছাড়া তাসকিন আহমেদের কথাও এসেছে অনেকবার। কিন্তু চোটপ্রবণ হওয়ায় এবং তিন ফরম্যাটেই খেলা তাসকিনকে আপাতত ভাবনার বাইরে রাখতে হচ্ছে। আর অধিনায়ক হিসেবে সবশেষ সিরিজে লিটনের সাফল্য আসলে বিকল্প ভাবনার পথও রুদ্ধ করে দিয়েছে। বিজ্ঞাপন
জয় দিয়ে বিপিএল শুরু খুলনা টাইগার্সের
জয় দিয়ে বিপিএল শুরু খুলনা টাইগার্সের উইলিয়াম বোসিস্তো ও মাহিদুল ইসলামের ফিফটি ছাড়ানো ইনিংসে দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় খুলনা টাইগার্স। জবাব দিতে নেমে ধুঁকতে থাকে চিটাগং কিংস। তবে এই ধ্বংসস্তুপের মাঝে একাই লড়েন শামিম হোসাইন। ফিফটি ছাড়ানো ইনিংস খেললেও দলকে জেতাতে পারেননি। তবে হারের ব্যবধান কমিয়েছেন অনেকটাই। বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচে চিটাগংকে ৩৭ রানে হারিয়েছে খুলনা। আগে ব্যাট করতে নেমে উইলিয়াম বোসিস্তো ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ঝোড়ো ব্যাটে ৪ উইকেটে ২০৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে খুলনা টাইগার্স। যা তাড়ায় নেমে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানের বেশি করতে পারেনি চিটাগং কিংস। আগে ব্যাট করতে নামা খুলনা টাইগার্স ওপেনার নাঈম শেখকে (২৬) শিকার করেন আলিস আল ইসলাম। তিনে নেমে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও ভালো কিছু করতে পারেননি। ১৮ বলে ১৮ রান করে খালেদ আহমেদের বলে ফিরতে হয় তাকে। পরে ইব্রাহীম জাদরানকেও তুলে নেন খালেদ। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ঠিকই ফিফটি তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার উইলিয়াম বোসিস্কো। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে খেলতে পারছিলেন না হাতখুলে। তাকে সেই সুযোগটি এনে দেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটি গড়েন তারা। যদিও সেই জুটিতে বেশি ভয়ানক দেখা গেছে অঙ্কনকেই। মাত্র ১৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্যদিকে ৫০ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৭৫ রান আসে বোসিস্তোর ব্যাট থেকে। চিটাগাংয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট খালেদ ও আলিস। রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই নাঈম ইসলামকে হারায় চিটাগং কিংস। ৯ বলে ১২ রান করে বিদায় নেন তিনি। আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৮ বলে ১৩ রান করে তিনি শিকার হন আবু হায়দার রনির। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন মিথুনও। তার ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। তিনে নামা ওসমান খান করেন ১৮ রান। বাকিদের এই আসা যাওয়ার মধ্যে একাই টিকে থাকেন শামিম হোসাইন। অপরপ্রান্তে চলছিলো উইকেটের মিছিল। একে একে বিদায় নেন টম ও’কনেল (০), মোহাম্মদ ওয়াসিম (৮), শরিফুল ইসলাম (১)। লড়তে থাকা শামিম ২৩ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ৭৮ রান করে বিদায় নেন ১৯তম ওভারে। তার ৩৮ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭ চার ও ৫ ছক্কায়।
মাহিদুলের ৬ ছক্কা, শেষ ৫ ওভারে রান ৮৪
মাহিদুলের ৬ ছক্কা, শেষ ৫ ওভারে রান ৮৪ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ক্রিজে আসলেন। আর জয় করলেন। ঝড় তুললেন ব্যাট হাতে। বিষয়টা ঠিক এমনই হলো মিরপুরের ২২ গজে। শুরুর ৩ বলে রান নিলেন ১। এরপর যা করলেন তা রীতিমত চমকে দেওয়ার মতো। ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে মাত্র ১৮ বলে করলেন ফিফটি। যেখানে ছিল ১ চার, ৬ ছক্কা। তার দোর্দণ্ড প্রতাপে শেষ ঝড়ে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে খুলনার রান পৌঁছে গেল ২০৩-এ। গতকাল প্রথম দিনে দুই ম্যাচে রান ১৯০ হয়েছিল। তৃতীয় ম্যাচে দুইশ পেরিয়ে গেল দলীয় রান। মাহিদুল ২২ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া ওপেনার উইলিয়াম বসিসটো ৫০ বলে ৭৫ রান করেন ৮ চার ও ৩ ছক্কায়। দুজনের পঞ্চম উইকেট জুটিতেই খুলনার ইনিংসের শেষের চিত্র পাল্টে যায়। মাত্র ৩৫ বলে দলীয় সংগ্রহে ৮৬ রান যোগ করেন দুজন। এর আগে খুলনা টাইগার্সের পঞ্চম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান ছিল ২৮। ব্যাটসম্যান ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও ইব্রাহিম জাদরান। চিটাগং কিংসের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনার শুরুটা ভালো ছিল। ৩ ছক্কা ও ১ চারে ২৬ রান করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। পঞ্চম ওভারে তার ইনিংসটি থামান আলিস আল ইসলাম। তিনে নামা মিরাজ আলো ছড়াতে পারেননি। ১৮ বলে ১৮ রানে থেমে যায় খুলনার অধিনায়কের ইনিংস। ইব্রাহিম জাদরান ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। আফিফের ইনিংস থেমে যায় ৮ রানে। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ধীর স্থির থেকে রান তুলছিলেন বসিসটো। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ৩৬ বলে তুলে নেন বিপিএলের প্রথম ফিফটি। এরপর মারমুখী ব্যাটিংয়ে পরের ১৪ বলে আরও ২৫ রান যোগ করেন। চিটাগং কিংসের হয়ে বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন আলিস আল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। শরিফুল ছিলেন বিবর্ণ। ৪৭ রানে ছিলেন উইকেটশূন্য।
ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা অস্ট্রেলিয়ার
ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন টেস্টের রোমাঞ্চ ছড়ান পঞ্চম ও শেষ দিনে ভারতকে ১৮৪ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাতে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অজিরা। পাশাপাশি এই জয়ে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে ফাইনালে যাওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে গেল ভারত। আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪) সকালে অস্ট্রেলিয়া তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট হয়। তাতে ভারতের সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩৪০ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান তুলে চা বিরতিতে যায় ভারত। বিরতি থেকে ঋষভ পন্তের উইকেট হারানোর পর নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতিতি বদলে যায়। শেষ পর্যন্ত ৭৯.১ ওভারে ভারত ১৫৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। আর অস্ট্রেলিয়া ১৮৪ রানে জয় পায়।
বরিশালের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে রাজশাহী
বরিশালের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে রাজশাহী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এগারতম আসরের যাত্রা শুরু হলো। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেছে ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহী। টস জিতে বরিশালের অধিনায়ক তামিম ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাজশাহীকে। টসের পর স্বল্প আয়োজনে উদ্বোধনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ। শান্তির পায়রা, সাদা রঙের বেলুন উড়িয়ে এবং বর্ণিল আলোকচ্ছটায় উদ্বোধন হয় বিপিএলের। এছাড়া জুলাই বিপ্লবের আহতদের সম্মানিত করা হয়। সন্ধ্যায় আরেকটি ম্যাচে মুখোমুখি হবে ঢাকা ক্যাপিটালস ও রংপুর রাইডার্স। ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাতটায়। ৭ দল নিয়ে এবারও হচ্ছে বিপিএল। নতুন করে কোনো দল বাড়ায়নি বিসিবি। তবে দলগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। ৭টি দল হলো— ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স, রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। পুরোনো দলের মধ্যে নেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এ ছাড়া বদল হয়েছে ঢাকার মালিকানা। পুনরায় ফিরে এসেছে দুর্বার রাজশাহী। বরিশাল একাদশ: তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, কাইল মায়ার্স, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ নবী, ফাহিম আশরাফ, শাহীন শাহ আফ্রিদি, তানভীর ইসলাম ও রিপন মন্ডল। রাজশাহী একাদশ: এনামুল হক বিজয়, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ হারিস, জিসান আলম, ইয়াসির আলী, আকবর আলী, রায়ান বার্ল, হাসান মুরাদ, মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয়, লাহিরু সামারাকুন ও এস এম মেহরব হাসান।
ভারতকে ৩৬৯ রানে আটকে লিড পেলো অস্ট্রেলিয়া
ভারতকে ৩৬৯ রানে আটকে লিড পেলো অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ভারতকে ৩৬৯ রানে অলআউট করেছে অস্ট্রেলিয়া। তাতে লিড পেয়েছে ১০৫ রানের। ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৫৮ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল ভারত। নিতিশ কুমার রেড্ডি ১০৫ ও মোহাম্মদ সিরাজ ২ রানে অপরাজিত ছিলেন। আজ রোববার (২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪) চতুর্থ দিন সকালে তারা দুজন মাত্র ২২ বল মোকাবিলা করতে পারেন। দলীয় সংগ্রহে রান যোগ করতে পারেন ১১টি। দলীয় ৩৬৯ রানের মাথায় নিতিশ আউট হলে যবনিকাপাত ঘটে ভারতের ইনিংসের। নিতিশ ১৮৯ বল খেলে ১১টি চার ও ১ ছক্কায় ১১৪ রান করেন। সিরাজ ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স, স্কট বোল্যান্ড ও নাথান লায়ন প্রত্যেকে ৩টি করে উইকেট নেন। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৪৭৪ রান তুলেছিল সবকটি উইকেট হারিয়ে। অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। ৯১ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসেছে ৬ উইকেট। তাদের লিড হয়েছে দুইশ’র কাছাকাছি।