শুভেচ্ছায় ভাসছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত জিয়াউল হক

71

২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির আবেগের দিন। এদিন মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারো চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী গভীর শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদের স্মরণ করেছেন। তবে এবারের একুশ ভোলাহাট উপজেলার মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কেননা তাদের উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হক এবছর পেয়েছেন একুশে পদক। আগের দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে একুশে পদক গ্রহণের পর গ্রামে ফিরে আসার পর থেকেই ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি।
একুশে ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল থেকেই জিয়াউল হকের পাঠাগারে নিজ গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। একুশে পদকপ্রাপ্ত জিয়াউল হককে নিয়েই একুশের প্রভাতফেরি করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুরে জিয়াউল হককে শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও পুলিশ সুপার মো. ছাইদুল হাসান। জিয়াউল হকের পাঠাগারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বই উপহার দেয়া হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সকল বিষয় বাস্তবায়নের কথাও জানান জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. আবুল কালাম সাহিদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আঞ্জুমান সুলতানাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জিয়াউল হকের নিজ বাড়িতে নির্মিত পাঠাগার ও নিকটবর্তী মুশরীভূজা ইউসুফ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শন করেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক। প্রসঙ্গত, গত বছর সমাজসেবায় একুশে পদক-২০২৪ এর জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আবেদন করেন জিয়াউল হক এবং মনোনীত হন। ‘বেচি দই, কিনি বই’ স্লোগানটি এখন সারাদেশে মানুষের মুখে মুখে। এই স্লোগানের রূপকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চামামুশরীভুজা গ্রামের জিয়াউল হক। যিনি দই বেচে বই কিনে সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন। নিজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দৌড় বেশিদূর এগিয়ে নিতে না পারলেও তার সহায়তা পেয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন। তাঁর এই কাজের স্বীকৃতিও পেলেন তিনি। জিয়াউল হক তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য সমাজসেবায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক পেয়েছেন। জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে তিনিসহ দেশের ২১ বিশিষ্ট ব্যক্তি (মরণোত্তরসহ) একুশে পদক পান। ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে একুশে পদক গ্রহণ করেন তিনি। সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীতদের হাতে একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে জিয়াউল হকের সমাজসেবামূলক কাজের প্রশংসা করেন এবং পাঠাগারের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি সরকারিকরণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা, সে উদ্যোগও নেবেন বলে জানান।