নাচোলে নলকুপের পাইপে পড়ে বাক প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

92

ফায়ার সার্ভিসের ৪টি উদ্ধারকারী দলের জীবন্ত উদ্ধারের ৫ ঘন্টার রুদ্ধশ^াস চেষ্টার পর নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেজামপুর গ্রাম সংলগ্ন একটি  মাঠে স্থাপিত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিত্যক্ত একটি গভীর নলকুপের পাইপের ১২০ ফুট গভীরে পড়ে যাওয়া বাক  ও কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবক রনি বর্মণের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। রনি পূর্ব নেজামপুর গ্রামের চৈতন্য বর্মনের ছেলে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, বিএমডিএ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামের অদুরে মাঠের ভেতরে একটি ঘরের মধ্যে অবস্থিত নলকুপের ১২ ইঞ্চি ব্যসের স্টিলের পাইপের মধ্যে পড়ে যায় রনি। এর পরপরই পাশ দিয়ে যাওয়া এক ব্যাক্তি কুপের ভেতরে গোঙ্গাণীর শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজনকে জানান। স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিস্টদের জানালে সকলে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বেলা ১১টা নাগাদ শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। তবে জীবন্ত উদ্ধার করা যায় নি রনিকে। বিকেল ৪টার দিকে তাঁকে মৃত অবস্থায় কুপ থেকে তুলে আনে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।

নাচোল ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন ইনচার্জ লীডার এমদাদুল হক জানান, বেলা ১১টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় উদ্ধার দল। এ সময় রনি জীবিত ছিল। শব্দ করছিল।  কয়েক মিনিটের মধ্যেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। ডাকা হয় রাজশাহী,চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার ডুবুরী টিম সহ উদ্ধার দলকে। রশির মাথায় হুক লাগিয়ে নীচে নামানো হয় ‘সার্চ ভিশন’ ক্যামেরা ও ভিডিও চালু করা মোবাইল ফোন। কিন্তু অত নীচে গভীর অন্ধকারে তেমন কিছু দেখা সম্ভব হয় নি। রনির পিতাকে দিয়ে তাকে ডেকে অবস্থান বোঝার চেষ্টা করা হয়। নামানো হয় খাবার পানি ও বিস্কুট। কিন্তু দুপুর ১২টার পর আর রনির জীবন্ত থাকার কোন আলামত পাওয়া যায় নি। পাইপের ভেতর ডুবুরী নামনো যায় নি বিষাক্ত গ্যাসের কারণে। তবে বিভিন্ন কায়দায় চলতে থাকে উদ্ধার অভিযান। বিকালে পোষাক ও হাতে হুক আটকিয়ে রনিকে মৃত অবস্থায় উপরে ওঠানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার বলেন,ঘটনাটি মর্মান্তিক। রনিকে জীবন্ত উদ্ধারে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উর্ধতণ কর্মকর্তাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। রনির পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষে সহযোগিতা করা হবে।  ঘটনায় বিএমডিএ’র দায় কতটুকু সে ব্যাখ্যা  ও জবাব তারাই দিবে।

বিএমডিএ,নাচোলের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম দাবী করেন, ঘরটি পুরোপুরি পরিত্যক্ত নয়। সেখানে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় ২০ ফুট দূরে আরেকটি ঘর নির্মাণ করে সেখানে নতুন নলকুপ বসিয়ে সেখান থেকে জরুরী সেচের কাজ চালু করা হয়েছে মাত্র ৪/৫দিন আগে। তবে সব কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ হয় পুরাতন ঘর থেকে। এমনকি নতুন ঘরটি এখনও ঠিকাদারের নিকট থেকে বুঝে নেয়া হয় নি। পাইপের মুখ কাঠ দিয়ে ঢেকে বালুর বস্তা চাপিয়ে বন্ধ করা ছিল বলেও দাবি প্রকৌশলীর।

নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীণ।