বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন : চাঁপাইনবাবগঞ্জে জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান

101

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় তাদেরকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা পর্যায়ে ৫ ও সদর উপজেলা পর্যায়ে ৪ জন জয়িতাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর তাদেরকে এই সংবর্ধনা প্রদান করে।
জেলা পর্যায়ে সংবর্ধিত জয়িতারা হলেন- সদর থেকে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী রেজিনা আনোয়ার, নাচোল থেকে শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী আদরী বালা, শিবগঞ্জ থেকে সফল জননী বাদেনুর বেগম, সদর থেকে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী তাসলিমা খাতুন ও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা নারী চম্পা বেগম। এদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী রেজিনা আনোয়ার ও নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী তাসলিমা খাতুন এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য চম্পা বেগম সদর উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা নির্বাচিত হন। এছাড়া সফল জননী নির্বাচিত হয়েছেন কহিনুর বেগম। তাদেরকেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রত্যেককে ত্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ। জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর সুলতানা রাজিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ইয়াসমিন সুলতানা রুমা।
বিজয়ের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জরুল হাফিজ বলেন- যিনি না থাকলে হয়ত এভাবে জয়িতাদের অন্বেষণ করার সুযোগ পেতাম না, স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না, একটি স্বাধীন পতাকা থাকত না, মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়লে এ দেশ স্বাধীন হতো না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মরণ করে বলেন- গত ৫ বছর আগেও বিদেশীরা বাংলাদেশকে ঠিকমতো চিনত না। কিন্তু আজ সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আজ বিদেশীরা বলছে, উন্নয়ন করতে হলে বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার আছে। আজকে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এটা সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার সুযোগ্য সন্তান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দরদী নেতৃত্বে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ নানা ক্ষেত্রে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাণ কাঁদে। তাই তো তিনি জয়িতাদের অন্বেষণ করার কথা বলেছেন। পৃথিবীতে যত মহীয়সী নারী আছেন আমার ধারণা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা : ‘আমরা সবাই সোচ্চার, বিশ্ব হবে সমতার’ সেøাগানকে সামনে রেখে নারী জাগরণের অগ্রপথিক, মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে বুধবার সকালে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি পৌরসভা চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন- কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান আরমান, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মোসলেমা খাতুনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
পরে পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পৌর মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। সভায় আরো বক্তব্য দেন- পৌর কাউন্সিলর ও পৌর নারী ও শিশু স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোসা. সিদ্দীকা সিরাজুম মনিরা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী সাদিকুল ইসলাম, সচিব মো. মামুন অর রশীদ, অ্যাকাউন্টস অফিসার আহসান হাবীব, অ্যাকাউন্টেট রবিউল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান আরমান, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক, পৌরসভার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যরা।
জাগো নারী বহ্নিশিখা : বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলোচনা সভা করে জাগো নারী বহ্নিশিখা। বিকেল ৪টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শহীদ সাটু হল মার্কেটের তৃতীয় তলায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক ফারুকা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- সংগঠনের উপদেষ্টা রফিক হাসান বাবলু, সদস্য সচিব মনোয়ারা খাতুন, সদস্য শিরিন বেগম, শেফালী খাতুন, মারিয়া হাসান, দ্যুতি তাসনুভা রিফাত, মাহবুবা ইতি।
বেগম রোকেয়ার জীবন ও কর্ম তুলে ধরার পাশাপাশি বক্তারা বলেন, বেগম রোকেয়া বলেছেন, পুরুষের সমকক্ষ হতে যা যা করা দরকার নারীদের তাই তাই করতে হবে।
জাতীয় মহিলা সংস্থা : জাতীয় মহিলা সংস্থা কার্যালয়ে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বিকাল সাড়ে ৩টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাডভোকেট ইয়াসমিন সুলতানা রুমার সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর ক্যাডেট কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইসরাইল হক ও শিশুবিষয়ক কর্মকতা শফিকুল আলম।
তাসরিন সুলতানার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন- মহিলা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুফিয়া খাতুন ও কবির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন- রেহেনা খাতুন, সিনুরা বেগম, আশফাকুল ইসলাম ও বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীরা।
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরেরর আয়োজনে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
‘কমলা রঙের বিশ্বের নারী, বাধার পথ দেবেই পাড়ি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে র‌্যালিটি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা সভাকক্ষে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ হুমায়ুন রেজা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা খাতুন, জেলা পরিষদ সদস্য হালিমা বেগম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বরুন কুমার পাল, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম, আইজিএ প্রকল্পের ট্রেইনার শামসুন্নাহার টুম্পা, প্রশিক্ষণার্থী কামরুন নাহার মিতু, শাহিদা রিমা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী শ্রী শান্তিসহ অন্যরা।
ভোলাহাট প্রতিনিধি : আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জেলার ভোলাহাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বুধবার সকালে শোভাযাত্রা, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সরদার, জেলা পরিষদ সদস্য হোসনে আরা পাখি, আঞ্জুমানারা পারভিন ও নিলুফার ইয়াসমিনসহ অন্যরা।
নিয়ামতপুর প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জয়িতাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়া মারীয়া পেরেরার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ আইয়ুব হোসাইন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাদিরা বেগম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিলুফা সরকার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সেলিম উদ্দিন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আরিফুজ্জামান।
আলোচনা শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫ জয়িতাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। উপজেলা পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে গুলনাহার, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী মোসা. সীমায়ারা, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা শান্তা খাতুন, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা মোসা. পারুল আক্তার ও শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করায় শিল্পী জোয়ার্দ্দারকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।