অবাঞ্ছিত লোম হলে করণীয়

98

মেয়েদের অবাঞ্ছিত লোম নিয়ে অনেকেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। অবাঞ্ছিত এই লোমের উপস্থিতির নাম হার্সুটিজম। এটি কোনো রোগ নয়, তবে অনেক রোগের লক্ষণ।

লোমের বৃদ্ধিতে হরমোন: জন্মের পর যে লোম দেখা দেয়, সেগুলো একসময় ঝরে গিয়ে নতুন লোম গজায়। মানবদেহে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব লোমকে বলা হয় ভেলাস লোম। এদের বৃদ্ধি হরমোনের ওপর নির্ভরশীল নয়। হরমোনের ওপর নির্ভরশীল লোমগুলো ৯টি স্থানে সীমাবদ্ধ। এগুলো হলো ওপরের ঠোঁট, থুতনি, বুক, হাত, পিঠের ঊর্ধ্ব ও নিম্নভাগ, পেটের ঊর্ধ্ব ও নিম্নভাগ এবং ঊরু। এসব স্থানের লোমের আধিক্যের অন্যতম প্রধান কারণ, অ্যান্ড্রোজেন নামক পুরুষালি হরমোনের আধিক্য। অনেক ক্ষেত্রে বংশগত কারণে এমনটি হতে পারে।
কোন রোগে বাড়ছে লোম: নারীদেহে পুরুষালি হরমোনের মূল উৎস হচ্ছে অধিবৃক্ক বা অ্যাড্রেনালিন নামক গ্রন্থি ও ডিম্বাশয়। কোনো কারণে ডিম্বাশয় কিংবা অ্যাড্রেনাল গ্রন্থিতে রোগ দেখা দিলে এমনটি হতে পারে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। জন্মগতভাবে অধিবৃক্ক গ্রন্থি যদি স্ফীত হয়ে যায়, তখন এমনটি হতে পারে। এ ছাড়া এসব স্থানের টিউমার, এমনকি ক্যান্সার অনেক ক্ষেত্রে এমন উপসর্গ তৈরি করতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজম, কুশিং সিনড্রোম, এক্রোমেগালি নামক কিছু হরমোনঘটিত রোগেও এমনটি হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোনো কোনো রোগ ছাড়াও এমনিতেই নারীদেহে এমনটি হতে পারে।

করণীয়: নারীদেহে অবাঞ্ছিত লোমের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বিশেষ করে হঠাৎ অল্প সময়ের মধ্যে অত্যধিক লোমের আবির্ভাব খারাপ কিছু নির্দেশ করে। অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য ব্লিচিং, সেভিং, কটারি, প্লাকিং, ক্রিম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। তবে যথাযথ রোগ নির্ণয় করে নির্দিষ্ট চিকিৎসা নিতে না পারলে লোম তুলে ফেলার পর আবার নতুন করে গজাতে শুরু করবে। এসব রোগীর অনেকের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। স্থূলতা কমানোর জন্য নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি চর্বি এবং অতিরিক্ত শর্করাজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।

লক্ষণীয় বিষয়: অনেক ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত লোমের পাশাপাশি আরও কিছু উপসর্গ এসব রোগীর দেখা দেয়। অনিয়মিত মাসিক, মাথার চুল পড়ে যাওয়া বা টেকো ভাব, স্থূলতা, ব্রণ, কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন, মাংসপেশি বলিষ্ঠ হয়ে ওঠা, স্তন চুপসে যাওয়া, বন্ধ্যত্ব, বিষণ্নতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।