সকালে বিটরুটের জুস খেলে কী হয়?

সকালে বিটরুটের জুস খেলে কী হয়? প্রতিদিন সকালে বিটরুটের রস খেলে তা শরীরের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। গবেষণা অনুসারে, বিটরুটের রসে থাকা নাইট্রেট পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে, সহনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্যায়ামের সময় ক্লান্তি কমায়। গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, বিটরুটের রস খাওয়া ক্রীড়াবিদদের কর্মক্ষমতা উন্নত হয়। বিটরুটের রসে বিটালাইন থাকে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই যৌগগুলো নির্দিষ্ট ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ সহ দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। বিটরুটের জুস কীভাবে তৈরি করবেন ১টি ছোট বিটরুট ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। ছোট ছোট কিউব করে কেটে একটি ব্লেন্ডার জারে ১/২ ইঞ্চি আদা, ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১/২ কাপ পানি দিন। মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। এবার সেই রসে এক চিমটি ব্ল্যাক সল্ট মিশিয়ে পান করুন। তৈরির প্রক্রিয়া তো জানলেন, এবার তবে জেনে নিন প্রতিদিন সকালে বিটরুটের জুস খেলে কী হয়- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে বিটরুট প্রাকৃতিক নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা শরীর নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত করে। এটি একটি যৌগ যা রক্তনালীকে শিথিল এবং প্রশস্ত করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াটি রক্ত প্রবাহকে উন্নত করে এবং রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালেরতাজা বিটরুটের রসে খেলে হৃদরোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে বিটরুটের শটে ক্যালোরি কম থাকে এবং এতে কোনো চর্বি থাকে না। সুতরাং, এটি সকালে পান করার জন্য একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে। সকালে বিটরুটের জুস খেলে তা যথেষ্ট পুষ্টি শরীরে পৌঁছে দেয়, যা শক্তি বৃদ্ধি করে। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ বিটরুট পটাশিয়াম, খনিজ পদার্থ এবং ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ। যা স্নায়ু এবং পেশীকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। তাই শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য বিটরুটের জুস খেতে পারেন। লিভারের জন্য ভালো বিটরুট তার ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এতে বিটালাইন এবং বিটেইন রয়েছে। এগুলো এক ধরনের যৌগ যা লিভারকে ভালোভাবে বিষাক্ত পদার্থ প্রক্রিয়া করতে সহায়তা করে। বিটরুট লিভার এনজাইমের কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে এবং পিত্ত উৎপাদনে সহায়তা করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে বিটরুটে ভিটামিন সি, ফোলেট এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই পুষ্টিগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে ও সুস্থ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। সেইসঙ্গে ত্বকের প্রাকৃতিক মেরামত প্রক্রিয়ায়ও সহায়তা করে। যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বিটরুট ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন এবং জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থে ভরপুর। যার সবই একটি সুস্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর উজ্জ্বল লাল রঙ আসে বিটালাইন থেকে, যা প্রদাহ কমাতে এবং সামগ্রিক সুস্থতায় সহায়তা করার জন্য পরিচিত শক্তিশালী উদ্ভিদ যৌগ। হজম উন্নত করে বিটরুট খাদ্যতালিকাগত ফাইবার এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা সুস্থ হজম এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। এর প্রাকৃতিক যৌগ পিত্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, লিভারকে চর্বি ভাঙতে এবং বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করে। এছাড়াও ফাইবার পাচনতন্ত্রকে নিয়মিত এবং সুষম রাখতে সাহায্য করে।
সমালোচনার উত্তর দেবেন যেভাবে

সমালোচনার উত্তর দেবেন যেভাবে সমালোচনা এমন একটি বিষয় যার সম্মুখীন আমরা সবাই হই। কর্মক্ষেত্রে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে, এমনকি অনলাইনে অপরিচিতদের কাছ থেকেও। এবং সত্যিকার অর্থে এটি সবসময় ভালো লাগে না। কখনো কখনো এ ধরনের অভিজ্ঞতা মনের মধ্যে থেকে যায়, বিশেষ করে যখন এটি আমাদের স্নায়ুকে স্পর্শ করে বা আমাদের অস্থির করে তোলে। কিন্তু সমালোচনা মোকাবিলা করতে হবে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে। ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সের অর্থ হলো নিজের নিজের আবেগ বোঝা এবং তা বিজ্ঞতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হওয়া। কেউ সমালোচনা করলে তার উত্তর দিতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। কঠোর সমালোচনা থেকেও মূল্যবান শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব, যদি আপনি জানেন যে কীভাবে শিখতে হয়। কেউ আপনার সমালোচনা করলে কী করবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক- ১. প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে থামুন সমালোচনার পর প্রথম মুহূর্তটিই সবচেয়ে আবেগপ্রবণ হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানোর পরিবর্তে পিছিয়ে আসুন এবং গভীর নিঃশ্বাস নিন। এই ছোট্ট বিরতি আপনাকে শান্ত হতে সাহায্য করবে এবং এমন কিছু আবেগপ্রবণ কথা বলা এড়াতে সাহায্য করবে যা পরে অনুশোচনার কারণ করতে পারে। অন্যের সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়ার মধ্যে বিরতি নিন। এতে বিষয়টি অতোটাও জটিল মনে হবে না। ২. কী বলছে সেদিকে মনোযোগ দিন কখনো কখনো সমালোচনার ভাষা কঠোর হলেও হয়তো তার উদ্দেশ্য আপনার উপকার করা হতে পারে। আপনার ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স সঠিক বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে। আপনি সমালোচনার পেছনের উদ্দেশ্য ধরতে পারবেন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করুন, এই ব্যক্তি আসলে কী বলতে চাইছেন? কীভাবে বলছে তার বদলে কী বলছে সেদিকে মনোযোগ দিন। ৩. ভালোভাবে বুঝতে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চুপ করে থাকার পরিবর্তে, কৌতূহলের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যান। আপনার কথাগুলো বুঝতে পারিনি, আরেকবার বুঝিয়ে বলবেন কি? অথবা, আপনার কি মনে হয় আমি অন্যভাবে কী করতে পারতাম? এর মতো চিন্তাশীল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন। এতে আপনার মানসিক পরিপক্কতার প্রমাণ মিলবে। ৪. ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না কেউ যখন কোনো ত্রুটি বা ভুল দেখিয়ে দেয়, বিশেষ করে যদি তা কোনো সংবেদনশীল স্থানে আঘাত করে, তখন আঘাত লাগা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। কিন্তু ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে সব সমালোচনাই ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। একটি ভুল আমাদের মূল্য বা ক্ষমতা কমিয়ে দেয় না। তাই কেউ সমালোচনা করলেই আপনি ছোট হয়ে যাবেন না, বরং সেখান থেকেও শেখার চেষ্টা করুন।
ঈদে অতিথি আপ্যায়নে থাকুক ‘আমের পায়েস’

ঈদে অতিথি আপ্যায়নে থাকুক ‘আমের পায়েস’ কুরবানি ঈদ এমন একটি সময়ে আসছে যে সময়ে প্রচুর পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে। ঈদে অতিথি আপ্যায়নে ভারী খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন আমের পায়েস। অতিথি আপ্যায়নে শেষ পাতে দিতে পারেন এই পদ। জেনে নিন রেসিপি। উপকরণ: আমের ক্বাথ: ১ কাপ তরল দুধ: ১ লিটার সুগন্ধি বা বাসমতি চাল: ৪ টেবিল-চামচ ঘি: ১/৪ চা-চামচ লবণ: এক চিমটি এলাচ-গুঁড়া বা আস্ত: ৩টি কিশমিশ ও বাদাম পরিমাণ মতো গোলাপ জল: পরিমাণ মতো প্রথম ধাপ: চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর চাল থেকে পানি ঝরিয়ে অল্প পরিমাণ ঘি চালের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। দ্বিতীয় ধাপ: একটি পাত্রে ঘি গরম করে বাদাম ও কিশমিশ ভেজে তুলে রাখুন। চুলায় দুধ বসিয়ে তাতে এক লবণ, চিনি ও এলাচ দিন। এবার দুধে বলক উঠলে চাল দিয়ে দিন। চাল সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত মাঝারি আঁচে রান্না করতে থাকুন। তৃতীয় ধাপ: দুধ যখন মাখা মাখা হয়ে আসবে তখন বাদাম, কিশমিশ ও গোলাপ জল দিয়ে দেবেন। এরপরে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। এবার আমের ক্বাথ মিশিয়ে নিন। এই পর্যায়ে এসেও চিনি দিতে পারেন। আমের ক্বাথ ভালোভাবে মিশে গেলে কিছুক্ষণ রেখে উপরে বাদাম ও কিশমিশ দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে পারেন। এ ছাড়া ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করেও পরিবেশন করতে পারেন। আমের পায়েস পরিবেশনের সময় পাকা আম কেটে পরিবেশনের পাত্রে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
অতিথি আপ্যায়নে আমের রেসিপি

অতিথি আপ্যায়নে আমের রেসিপি বাড়িতে অতিথি এলে কী দিয়ে আপ্যায়ন করবেন? আমের দিনে এটা নিয়ে ভাবতেই হবে না। খুব সহজেই তৈরি করা যায় আমের এমন কয়েকটি রেসিপি। চলুন জেনে নিই। পাটিসাপটা পিঠা উপকরণ ময়দা ২ কাপ, চিনি ১ কাপ, পানি প্রয়োজনমতো। পুরের জন্য ঘন দুধ ৪ কাপ, পাকা আমের কাঁঠাল (মাখানো আম) ১ কাপ, পোলাওয়ের চাল ২ টেবিল চামচ (ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে নিন), চিনি আধা কাপ, এলাচ গুঁড়া ও লবণ সামান্য। প্রণালি ময়দা, চিনি ও প্রয়োজনমতো হালকা গরম পানি দিয়ে মিশিয়ে মাঝারি ঘন মিশ্রণ তৈরি করে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এবার পুরের সব উপকরণ একসঙ্গে একটি হাঁড়িতে নিয়ে চুলার হালকা আঁচে রান্না করুন। ঘন ঘন নাড়তে হবে যেন নিচে লেগে না যায়। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে নামিয়ে একটি ছড়ানো প্লেটে ঢেলে ঠান্ডা করে নিন। প্যান গরম করে তাতে অল্প তেল ব্রাশ করুন। ময়দার মিশ্রণ আধা কাপ পরিমাণ ঢেলে প্যান ঘুরিয়ে বড় রুটির মতো ছড়িয়ে দিন। ২-৩ মিনিট পর এক পাশে পুর দিয়ে পিঠাগুলো ভাঁজ করে তুলে নিন। আমের লাচ্ছি উপকরণ পাকা আম কিউব করে কাটা ৩ কাপ, চিনি ২ টেবিল চামচ (স্বাদমতো), মিষ্টি দই ১.৫ কাপ, পানি ২ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স সামান্য (ইচ্ছামতো)। সাজানোর জন্য: পেস্তা বাদাম কুচি ১ টেবিল চামচ ও বরফ কুচি। প্রণালি সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। ঠান্ডা পরিবেশনের জন্য স্বচ্ছ গ্লাসে ঢেলে উপর থেকে পেস্তা বাদাম কুচি ও বরফ কুচি ছড়িয়ে দিন।
এই গরমে প্রাণ জুড়াতে যা খাবেন

এই গরমে প্রাণ জুড়াতে যা খাবেন গরমে ঠান্ডা কিছু খাওয়ার জন্য মন হাহাকার করবেই। হাত বাড়ালেই যেখানে আইসক্রিম, বিভিন্ন প্যাকেটজাত জুস আর কোল্ড ড্রিংকস পাওয়া যায়, সেখানে স্বাস্থ্যকর কিছু খাওয়ার অভ্যাস রাখা আসলেই কঠিন। তবে একটা কথা, আপনার শরীরের যত্ন নিতে হবে আপনাকেই। কোনটা আপনার জন্য ভালো, কোনটা নয় সেটুকু জানা জরুরি। সেইসঙ্গে খেতে হবে এমন কিছু যা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হবে না। এই গরমে প্রাকৃতিক পানীয় বেছে নিন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন পানীয়গুলো এসময় পান করতে পারেন- ১. আখের রস আখের রস বিভিন্ন সমস্যার প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক। আখের রস খেলে তা রক্তরস এবং শরীরের তরল তৈরিতে সাহায্য করে, যা পানিশূন্যতা এবং শরীরের নিস্তেজভাব মোকাবিলায় সাহায্য করে। আখের রসে পুদিনা পাতা মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতে স্বাদ আরও বাড়বে, সেইসঙ্গে আপনি আরও সতেজ অনুভব করবেন। ২. লাচ্ছি দই দিয়ে তৈরি এই পানীয় গরমে আপনাকে শীতল রাখতে অন্যতম কার্যকরী পানীয়। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, সহজেই এতে অনেক বৈচিত্র্য যোগ করা যায়। ক্লাসিক থেকে পুদিনা, অ্যাভোকাডো, আম থেকে কলা আখরোট এবং আরও অনেক কিছু। ৩. লেবুর শরবত গ্রীষ্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় লেবুর শরবত কেন মিস করবেন? দ্রুত তৈরি করা যায় এবং সুস্বাদু বলে এই পানীয় সবার কাছেই বেশ পছন্দের। পুদিনা পাতা, লেবু, চিনি এবং পানি দিয়ে তৈরি করে নিন লেবুর শরবত। স্বাদ ও পুষ্টি বাড়াতে চাইলে জিরা, গোল মরিচ ইত্যাদি মসলাও যোগ করতে পারেন। ৪. তরমুজের রস গ্রীষ্মের সেরা ফলের মধ্যে একটি হলো তরমুজ। এর রস আরও ভালো। এর অত্যন্ত সতেজ এবং হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য শরীরকে হাইড্রেটেড এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে। তাই এই গরমে প্রাণ জুড়াতে তরমুজের টাটকা রসে চুমুক দিতেই পারেন। ৫. বার্লি ওয়াটার বার্লি ওয়াটার সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি প্রাচীন প্রতিকার। এটি তৈরি করতে আপনার যা যা লাগবে তা হলো বার্লি, পানি, লবণ, কয়েক ফোঁটা মধু এবং লেবু। সুস্বাদু এই পানীয় গরমে আপনার প্রাণ তো জুড়াবেই, সেইসঙ্গে এটি শরীরের জন্য আরও অনেক উপকারিতা নিয়ে আসবে।
আপনার হার্ট ভালো নেই, বুঝবেন যেভাবে

আপনার হার্ট ভালো নেই, বুঝবেন যেভাবে বিশ্বব্যাপী হৃদরোগ মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ। কখনো কখনো এমন কিছু প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেগুলো আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষা করি। হার্টের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ বোঝা, হৃদযন্ত্র-বান্ধব খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি হৃদরোগ সম্পর্কিত সমস্যা প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, প্রতিরোধ সবসময় নিরাময়ের চেয়ে ভালো। হৃদরোগের ৫টি প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণ হৃদযন্ত্রের গঠন এবং কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে এমন বিভিন্ন অবস্থাকে হৃদরোগ বলা হয়। প্রাথমিক লক্ষণ সনাক্ত করার মাধ্যমে সময়মতো চিকিৎসা করা যেতে পারে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, মূল সতর্কতা লক্ষণের মধ্যে রয়েছে: বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি: প্রায়ই চাপ বা বুক ভারী বোধ হতে পারে। শ্বাসকষ্ট: বিশ্রাম বা শারীরিক কার্যকলাপের সময় শ্বাস নিতে অসুবিধা। গোড়ালি বা পায়ে ফোলাভাব: হৃদপিণ্ডের পাম্পিং দক্ষতা হ্রাসের কারণে তরল জমা। ক্লান্তি: নিয়মিত কার্যকলাপের সময় অস্বাভাবিক ক্লান্তি। মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: কোনো বিশেষ কারণ ছাড়াই মাথা ঘোরা বা জ্ঞান হারানো। এই লক্ষণগুলো হৃদরোগের নির্দিষ্ট অবস্থার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, করোনারি ধমনী রোগে প্রায়ই বুকে ব্যথা দেখা দেয়, অন্যদিকে হার্ট ফেইলিওর ফুলে যাওয়া এবং ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণগুলো সনাক্ত করে এবং সময়মতো চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। হৃদরোগের জন্য ডায়েট টিপস সম্পূর্ণ খাবার গ্রহণ করুন: বিভিন্ন ধরণের ফল, শাক-সবজি, গোটা শস্য, বাদাম এবং বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন। এই খাবারগুলোতে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে কাজ করে। স্বাস্থ্যকর চর্বি বেছে নিন: অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো এবং স্যামনের মতো ফ্যাটি মাছের মতো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেছে নিন। এই চর্বিগুলো ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। লবণ এবং চিনি গ্রহণ সীমিত করুন: অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে পারে, অন্যদিকে অতিরিক্ত চিনি খেলে তা ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধির করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনিযুক্ত পানীয় কমাতে চেষ্টা করুন। হাইড্রেটেড থাকুন: প্রচুর পাি পান করুন। ডাবের পাি এবং লেবু মিশ্রিত পানি নিয়মিত পান করুন। পরিমিত খাবার: খাবারের পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। এটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করবে, যা আপনার হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ কমাতে পারে।
ব্যস্ত জীবনে কেন দরকার স্লো লিভিং?

ব্যস্ত জীবনে কেন দরকার স্লো লিভিং? জীবন যেন দৌড়ে চলছে। সকাল থেকে রাত-মিটিং, ক্লাস, যানজট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা। এসবের ভিড়ে নিজের জন্য একটু সময় রাখাও যেন বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিক এমন সময়ে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এক নতুন জীবনদর্শন ‘স্লো লিভিং’। শব্দটির অর্থই বলে দেয়, জীবনকে একটু ধীরে উপভোগ করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণটি কেবল ধীরে কাজ করা নয়, বরং প্রতিটি কাজকে মন দিয়ে করা। দ্রুততার চাপে আমরা অনেক কিছুই মিস করি-যেমন প্রিয় মানুষের হাসি, সকালের রোদ, বিকেলের বাতাস কিংবা চায়ের কাপের গন্ধ। স্লো লিভিং-এর প্রভাব যেভাবে পড়ে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে-জীবনযাপনে স্ট্রেস কমে: নিয়মিত সময় নিয়ে কাজ করলে মস্তিষ্কে চাপ কম পড়ে। ঘুম ভালো হয়: ব্যস্ততা কমালে ঘুমের মান বাড়ে। সম্পর্ক মজবুত হয়: কাছের মানুষদের জন্য সময় পাওয়া যায়। সৃজনশীলতা বাড়ে: মন হালকা থাকলে চিন্তা পরিষ্কার হয়। কীভাবে শুরু করবেন? দিনে অন্তত ৩০ মিনিট নিজের জন্য রাখুন। খাবার সময় ফোন দূরে রাখুন। মৃদু গানের সঙ্গে সকালে হাঁটার চেষ্টা করুন। ‘না’ বলতে শিখুন, সবকিছুতেই হ্যাঁ বলা জরুরি নয়। জীবন একবারই পাওয়া যায়। কাজ, দায়িত্ব আর প্রতিযোগিতার মধ্যেও দরকার একটু থেমে নিজের দিকে ফিরে তাকানো। তাই মাঝে মাঝে গতি কমান, নিঃশ্বাস নিন, আর উপভোগ করুন জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলো।
গরমে বাড়ছে জ্বর-অসুস্থতা, সুস্থ থাকতে করণীয়

গরমে বাড়ছে জ্বর-অসুস্থতা, সুস্থ থাকতে করণীয় প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এই আবহাওয়ায় শরীর খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেকেই জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, খাবারে অরুচি ও পানিশূন্যতায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, গরমকালীন এই সময়টিতে শরীর থেকে দ্রুত ঘামের মাধ্যমে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, দেখা দেয় হালকা জ্বর বা ভাইরাল ইনফেকশন। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং যারা আগে থেকেই দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। এই সময়ে সচেতন না হলে সাধারণ ঠান্ডা ও জ্বর থেকেও বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য তারা পরামর্শ দিয়েছেন—প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি ও তরল পান করতে, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খেতে, আর বাইরের ভাজাপোড়া খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলতে। জ্বর বা দুর্বলতা দেখা দিলে বিশ্রাম নিতে হবে। হালকা খাবার খেতে হবে বারবার করে। পাতলা স্যুপ, ডাবের পানি, লেবু শরবত, ওআরএস এসব শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে সাহায্য করে। গরমে অতিরিক্ত ঘাম হলে দিনে দুইবার গোসল করাও উপকারী। এই সময় হালকা রঙের সুতির পোশাক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি দুপুর ১২টা থেকে ৪টার মধ্যে রোদে বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি বের হতেই হয়, তাহলে ছাতা, সানগ্লাস, টুপি এবং পর্যাপ্ত পানি সঙ্গে রাখতে হবে। গরমে জ্বর বা ক্লান্তি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে বা অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, মাথা ঘোরা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এসবই পানিশূন্যতার লক্ষণ। আর বাড়ির ছোট সদস্য ও বয়স্কদের বিশেষ যত্নে রাখারও তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ওজন কমানোর পাঁচ পানীয়

ওজন কমানোর পাঁচ পানীয় সকালের একটি ছোট অভ্যাস বদলে দিতে পারে পুরো শরীর। প্রতিদিন সকালে মাত্র এক গ্লাস স্বাস্থ্যকর পানীয় শরীরের অতিরিক্ত মেদ গলাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যালান্সড ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি কিছু সহজ ঘরোয়া পানীয় আপনার ওজন কমানোর যাত্রাকে আরও সহজ করে তুলতে পারে। চলুন জেনে নিই এমন ৫টি ‘ওজন কমানোর’ সকালের পানীয়— ১. লেবু পানি সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ পানীয়। লেবুতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর ডিটক্স করতে সহায়তা করে, হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যেভাবে খাবেন সকালে খালি পেটে, এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। ২. জিরা পানি রান্নার পরিচিত উপাদান হলেও জিরা পানির রয়েছে অতুলনীয় উপকারিতা। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, পানিশূন্যতা দূর করে এবং শরীরের ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে। প্রস্তুত প্রণালি ১ চা চামচ জিরা এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা ফুটিয়ে নিন। ছেঁকে নাশতার অন্তত ২০ মিনিট আগে হালকা গরম অবস্থায় পান করুন। ৩. আমলকির রস গরম পানিতে আমলকি এক কথায় একটি সুপারফ্রুট। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফ্যাট কমাতেও সহায়তা করে। খাওয়ার নিয়ম ২ টেবিল চামচ আমলকির রস এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। পান করার পর অন্তত ৩০ মিনিটের মধ্যে চা বা কফি পান করবেন না। ৪. দারচিনি পানি দারচিনি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে চর্বি জমা প্রতিরোধ করে। একই সঙ্গে মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন কমাতেও সহায়তা করে। যেভাবে তৈরি করবেন এক কাপ পানি ফুটিয়ে তাতে ১ চা চামচ গুঁড়ো দারচিনি অথবা একটি দারচিনি স্টিক দিন। ১০ মিনিট রেখে ছেঁকে নিয়ে গরম গরম পান করুন। এই সহজ ৫টি পানীয় নিয়মিত সকালে গ্রহণ করলে শরীর যেমন হালকা লাগবে, তেমনি ওজনও কমানো যাবে। ৫. অপরাজিতার চা প্রাকৃতিক নীল রঙের হারবাল পানীয় অপরাজিতার চা। এটি ক্যাফেইন-মুক্ত ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ডিটক্সে সহায়ক। লেবু মিশিয়ে গরম গরম উপভোগ করুন। তবে মনে রাখতে হবে—শুধু পানীয় নয়, এর সঙ্গে চাই সঠিক ডায়েট ও নিয়মিত শরীরচর্চা।
শুধুই চিনি নয়, ক্যান্সারের ঝুঁ*কি রয়েছে দৈনন্দিন খাবারেও

শুধুই চিনি নয়, ক্যান্সারের ঝুঁ*কি রয়েছে দৈনন্দিন খাবারেও চিনি অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। যদিও অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ যে ক্ষতিকর, তা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবুও সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে—স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত অনেক সাধারণ খাবারও দীর্ঘমেয়াদে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি কোনো খাবারকে দোষারোপ করার বিষয় নয়। বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানো। বিজ্ঞানীরা যখন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির পেছনের কারণগুলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করছেন, তখন পরিষ্কার হয়ে উঠছে যে— নিয়মিত যেসব খাবার আমরা গ্রহণ করি, সেগুলোরই বড় ভূমিকা রয়েছে। গবেষণা বলছে, ক্যান্সার কোষ সত্যিই সাধারণ কোষের তুলনায় বেশি গ্লুকোজ গ্রহণ করে, তবে সম্পূর্ণ চিনি বাদ দিলেই ক্যান্সার থেমে যাবে—এমন ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গ্লুকোজ মানবদেহের সব কোষের জন্যই প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস। আসল উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে আমাদের সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাস। দীর্ঘদিনের প্রদাহ, স্থূলতা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধের মতো সমস্যা—যেগুলো অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও লাল মাংসের সঙ্গে যুক্ত এবং ক্যান্সারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এদিকে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে ডিমের ক্ষেত্রেও। সাধারণভাবে ডিমকে উচ্চমানের প্রোটিন ও পুষ্টির উৎস হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু উরুগুয়েতে ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত পরিচালিত এক বড় গবেষণায় দেখা গেছে, অতিমাত্রায় ডিম খাওয়ার সঙ্গে কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। ৩,৫০০-এর বেশি ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ২,০০০-এর বেশি নিয়ন্ত্রণ দলের (হাসপাতালে থাকা সাধারণ রোগী) উপর চালানো এই গবেষণায় ধরা পড়ে, যারা নিয়মিত বেশি পরিমাণে ডিম খেতেন, তাদের মধ্যে কোলন, ফুসফুস, স্তন, প্রোস্টেট, মূত্রাশয়, মুখগহ্বর এবং উপরের শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। গবেষকরা ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং সার্বিক খাদ্যাভ্যাসের মতো উপাদানগুলোর হিসাব করে ফলাফল বিশ্লেষণ করেছেন। তারপরও ডিমের সাথে ক্যান্সারের ঝুঁকির সংযোগ রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সরাসরি কারণ নয় বরং একটি পরিসংখ্যানভিত্তিক সম্পর্ক। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলছে— অতিরিক্ত ডিম গ্রহণ কি ধূমপান, খারাপ খাদ্যাভ্যাস বা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের মতো অন্যান্য ঝুঁকির সাথে মিলে ক্যান্সার প্রবণতা বাড়াতে পারে? এই বিষয়ে গবেষকরা আরও মানবভিত্তিক গবেষণার ওপর জোর দিচ্ছেন, যাতে এই সংযোগের প্রকৃত কারণ আরও ভালোভাবে বোঝা যায়। ডিম নিয়ে সব গবেষণা কিন্তু নেতিবাচক নয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের প্রোটিন ও পেপটাইড—বিশেষ করে বিশুদ্ধভাবে তৈরি হলে—অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সম্ভাবনা রাখে। তবে সমস্যা হলো, এই ফলাফলগুলো মূলত ল্যাবরেটরিতে কোষের উপর (ইন ভিট্রো) করা পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে। মানবদেহে এগুলো কতটা কার্যকর হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তাই পর্যাপ্ত মানবভিত্তিক গবেষণা ছাড়া ডিমের এই স্বাস্থ্যগুণ এখনও শুধুই প্রতিশ্রুতির পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, চিনির পরে যদি কোনো খাদ্যাভ্যাস সত্যিকারের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তা হলো অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের বেড়ে চলা প্রবণতা। প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, তৈরি খাবার, কোমল পানীয় এবং ফাস্টফুড—এইসব খাবার আধুনিক খাদ্যাভ্যাসের বড় একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণা বলছে, অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের উচ্চমাত্রায় গ্রহণের ফলে, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যহীনতা, স্থূলতা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ-এর মত সমস্যা তৈরি হয় এগুলো সবই ক্যান্সার সৃষ্টির বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। তাহলে আসলে গুরুত্বপূর্ণ কী? স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে অনেকেই একটি ‘সুপারফুড’ খুঁজে নেন বা কোনো ‘খারাপ’ খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে চান। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একক কোনো খাবারই আপনার স্বাস্থ্য গড়তেও পারে না, ভাঙতেও পারে না। আসল গুরুত্ব রয়েছে সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাসে—আপনি কতটা বৈচিত্র্যময় এবং সুষম খাবার খান, সেটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে, ফলমূল, সবজি, সম্পূর্ণ শস্য, বাদাম, বীজ এবং জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো ও মাছের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বিতে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ওপর জোর দেওয়া উচিত। এসব খাবার উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। প্রদাহ কমানো মানেই দীর্ঘমেয়াদি রোগের (যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার) ঝুঁকি হ্রাস করা। এছাড়া, সুস্থ থাকা মানে আপনার প্রিয় খাবার একেবারে ছেড়ে দিতে হবে—এমন নয়। মাঝেমধ্যে কেকের টুকরো খাওয়া ঠিক আছে, যদি আপনার প্রতিদিনের খাবারের বড় অংশ হয় সতেজ ও পুষ্টিকর উপাদানে ভরা। ডিমও খাদ্যতালিকায় থাকতে পারে, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ এবং প্রদাহ সৃষ্টিকারী অন্য খাবারের সাথে অতিরিক্ত সংমিশ্রণ ঝুঁকি বাড়াতে পারে।