ওজন কমানোর পাঁচ পানীয়

ওজন কমানোর পাঁচ পানীয় সকালের একটি ছোট অভ্যাস বদলে দিতে পারে পুরো শরীর। প্রতিদিন সকালে মাত্র এক গ্লাস স্বাস্থ্যকর পানীয় শরীরের অতিরিক্ত মেদ গলাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যালান্সড ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি কিছু সহজ ঘরোয়া পানীয় আপনার ওজন কমানোর যাত্রাকে আরও সহজ করে তুলতে পারে। চলুন জেনে নিই এমন ৫টি ‘ওজন কমানোর’ সকালের পানীয়— ১. লেবু পানি সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ পানীয়। লেবুতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর ডিটক্স করতে সহায়তা করে, হজম ক্ষমতা বাড়ায় এবং খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যেভাবে খাবেন সকালে খালি পেটে, এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। ২. জিরা পানি রান্নার পরিচিত উপাদান হলেও জিরা পানির রয়েছে অতুলনীয় উপকারিতা। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, পানিশূন্যতা দূর করে এবং শরীরের ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে। প্রস্তুত প্রণালি ১ চা চামচ জিরা এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা ফুটিয়ে নিন। ছেঁকে নাশতার অন্তত ২০ মিনিট আগে হালকা গরম অবস্থায় পান করুন। ৩. আমলকির রস গরম পানিতে আমলকি এক কথায় একটি সুপারফ্রুট। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফ্যাট কমাতেও সহায়তা করে। খাওয়ার নিয়ম ২ টেবিল চামচ আমলকির রস এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। পান করার পর অন্তত ৩০ মিনিটের মধ্যে চা বা কফি পান করবেন না। ৪. দারচিনি পানি দারচিনি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে চর্বি জমা প্রতিরোধ করে। একই সঙ্গে মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন কমাতেও সহায়তা করে। যেভাবে তৈরি করবেন এক কাপ পানি ফুটিয়ে তাতে ১ চা চামচ গুঁড়ো দারচিনি অথবা একটি দারচিনি স্টিক দিন। ১০ মিনিট রেখে ছেঁকে নিয়ে গরম গরম পান করুন। এই সহজ ৫টি পানীয় নিয়মিত সকালে গ্রহণ করলে শরীর যেমন হালকা লাগবে, তেমনি ওজনও কমানো যাবে। ৫. অপরাজিতার চা প্রাকৃতিক নীল রঙের হারবাল পানীয় অপরাজিতার চা। এটি ক্যাফেইন-মুক্ত ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ডিটক্সে সহায়ক। লেবু মিশিয়ে গরম গরম উপভোগ করুন। তবে মনে রাখতে হবে—শুধু পানীয় নয়, এর সঙ্গে চাই সঠিক ডায়েট ও নিয়মিত শরীরচর্চা।
শুধুই চিনি নয়, ক্যান্সারের ঝুঁ*কি রয়েছে দৈনন্দিন খাবারেও

শুধুই চিনি নয়, ক্যান্সারের ঝুঁ*কি রয়েছে দৈনন্দিন খাবারেও চিনি অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। যদিও অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ যে ক্ষতিকর, তা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবুও সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে—স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত অনেক সাধারণ খাবারও দীর্ঘমেয়াদে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি কোনো খাবারকে দোষারোপ করার বিষয় নয়। বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে সচেতনতা বাড়ানো। বিজ্ঞানীরা যখন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির পেছনের কারণগুলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করছেন, তখন পরিষ্কার হয়ে উঠছে যে— নিয়মিত যেসব খাবার আমরা গ্রহণ করি, সেগুলোরই বড় ভূমিকা রয়েছে। গবেষণা বলছে, ক্যান্সার কোষ সত্যিই সাধারণ কোষের তুলনায় বেশি গ্লুকোজ গ্রহণ করে, তবে সম্পূর্ণ চিনি বাদ দিলেই ক্যান্সার থেমে যাবে—এমন ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গ্লুকোজ মানবদেহের সব কোষের জন্যই প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস। আসল উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে আমাদের সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাস। দীর্ঘদিনের প্রদাহ, স্থূলতা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধের মতো সমস্যা—যেগুলো অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও লাল মাংসের সঙ্গে যুক্ত এবং ক্যান্সারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এদিকে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে ডিমের ক্ষেত্রেও। সাধারণভাবে ডিমকে উচ্চমানের প্রোটিন ও পুষ্টির উৎস হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু উরুগুয়েতে ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত পরিচালিত এক বড় গবেষণায় দেখা গেছে, অতিমাত্রায় ডিম খাওয়ার সঙ্গে কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। ৩,৫০০-এর বেশি ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ২,০০০-এর বেশি নিয়ন্ত্রণ দলের (হাসপাতালে থাকা সাধারণ রোগী) উপর চালানো এই গবেষণায় ধরা পড়ে, যারা নিয়মিত বেশি পরিমাণে ডিম খেতেন, তাদের মধ্যে কোলন, ফুসফুস, স্তন, প্রোস্টেট, মূত্রাশয়, মুখগহ্বর এবং উপরের শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। গবেষকরা ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং সার্বিক খাদ্যাভ্যাসের মতো উপাদানগুলোর হিসাব করে ফলাফল বিশ্লেষণ করেছেন। তারপরও ডিমের সাথে ক্যান্সারের ঝুঁকির সংযোগ রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সরাসরি কারণ নয় বরং একটি পরিসংখ্যানভিত্তিক সম্পর্ক। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলছে— অতিরিক্ত ডিম গ্রহণ কি ধূমপান, খারাপ খাদ্যাভ্যাস বা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের মতো অন্যান্য ঝুঁকির সাথে মিলে ক্যান্সার প্রবণতা বাড়াতে পারে? এই বিষয়ে গবেষকরা আরও মানবভিত্তিক গবেষণার ওপর জোর দিচ্ছেন, যাতে এই সংযোগের প্রকৃত কারণ আরও ভালোভাবে বোঝা যায়। ডিম নিয়ে সব গবেষণা কিন্তু নেতিবাচক নয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের প্রোটিন ও পেপটাইড—বিশেষ করে বিশুদ্ধভাবে তৈরি হলে—অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সম্ভাবনা রাখে। তবে সমস্যা হলো, এই ফলাফলগুলো মূলত ল্যাবরেটরিতে কোষের উপর (ইন ভিট্রো) করা পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে। মানবদেহে এগুলো কতটা কার্যকর হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তাই পর্যাপ্ত মানবভিত্তিক গবেষণা ছাড়া ডিমের এই স্বাস্থ্যগুণ এখনও শুধুই প্রতিশ্রুতির পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, চিনির পরে যদি কোনো খাদ্যাভ্যাস সত্যিকারের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তা হলো অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের বেড়ে চলা প্রবণতা। প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, তৈরি খাবার, কোমল পানীয় এবং ফাস্টফুড—এইসব খাবার আধুনিক খাদ্যাভ্যাসের বড় একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণা বলছে, অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের উচ্চমাত্রায় গ্রহণের ফলে, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যহীনতা, স্থূলতা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ-এর মত সমস্যা তৈরি হয় এগুলো সবই ক্যান্সার সৃষ্টির বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। তাহলে আসলে গুরুত্বপূর্ণ কী? স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে অনেকেই একটি ‘সুপারফুড’ খুঁজে নেন বা কোনো ‘খারাপ’ খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে চান। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একক কোনো খাবারই আপনার স্বাস্থ্য গড়তেও পারে না, ভাঙতেও পারে না। আসল গুরুত্ব রয়েছে সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাসে—আপনি কতটা বৈচিত্র্যময় এবং সুষম খাবার খান, সেটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে, ফলমূল, সবজি, সম্পূর্ণ শস্য, বাদাম, বীজ এবং জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো ও মাছের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বিতে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ওপর জোর দেওয়া উচিত। এসব খাবার উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। প্রদাহ কমানো মানেই দীর্ঘমেয়াদি রোগের (যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার) ঝুঁকি হ্রাস করা। এছাড়া, সুস্থ থাকা মানে আপনার প্রিয় খাবার একেবারে ছেড়ে দিতে হবে—এমন নয়। মাঝেমধ্যে কেকের টুকরো খাওয়া ঠিক আছে, যদি আপনার প্রতিদিনের খাবারের বড় অংশ হয় সতেজ ও পুষ্টিকর উপাদানে ভরা। ডিমও খাদ্যতালিকায় থাকতে পারে, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ এবং প্রদাহ সৃষ্টিকারী অন্য খাবারের সাথে অতিরিক্ত সংমিশ্রণ ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
পেটের চর্বি কমাতে হলে যা যা করতে হবে

পেটের চর্বি কমাতে হলে যা যা করতে হবে পেটে চর্বি জমে গেলে আমরা পেটের ব্যায়াম করি। কিন্তু ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র পেটের ব্যায়াম করে চর্বি কমানো সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয়?— চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক। ফিটনেস বিষয়ক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এ এস তাজ একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমরা অনেকে মনে করি পেটের ব্যায়াম করবো এবং পেটের চর্বি কমে যাবে। শুধুমাত্র পেটের ব্যায়াম করে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব না। আমরা যদি আমাদের পুরো শরীরকে একটা সুইমিংপুল হিসেবে ধরি, সুইমিংপুলে যখন আপনি পানি তুলেন তখন গভীর এবং অগভীর সব জায়গা থেকে এক সঙ্গে পানি কমবে। কিন্তু আমরা রেজাল্ট সর্ব প্রথম অগভীর জায়গায় দেখবো। সর্ব প্রথম দেখা যাবে সিঁড়ি থেকে পানি কমে গেছে। আমাদের শরীরটাও একই।’’ এ এস তাজ আরও বলেন, ‘‘মেয়েদের ক্ষেত্রে হিপ থেকে হাঁটু পর্যন্ত ফ্যাট জমে। চর্বির জন্য এটা গভীর জায়গা। আর ছেলেদের নাভি। মেয়েরা যদি অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে তাহলে তাদের হিপ থেকে নিচের দিকে চর্বি জমতে থাকবে। ছেলেরা যদি অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে সবার প্রথমে তাদের পেট মোটা হতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে যদি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন শুরু করা যায়, তাহলে সবার প্রথমে পেট এবং হিপ থেকে চর্বি’ কমতে শুরু করে।’’ ‘‘যেকোন ব্যক্তি ডায়েট শুরু করলে সবার প্রথমে তার মুখ শুকিয়ে যায়। এরপর হাতের কবজি এবং পায়ের কবজি শুকিয়ে যায়। কারণ এগুলো হচ্ছে অগভীর জায়গা। পেটের চর্বি কমাতে ফুল বডি এক্সারসাইজ করতে হবে। যেন আপনার ব্রেন ফিল করে যে এই ব্যক্তির প্রত্যেকটা মাসল আগের থেকে বেশি কাজ করে। তখন আপনি রেজাল্টটা বেশি পাবেন। মেটাবোলিক রেট ফার্স্ট হবে। ব্লাড হার্ট থেকে হাতের আঙুল পর্যন্ত পৌঁছাবে। পায়ের আঙুল পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং ব্রেন পর্যন্ত পৌঁছাবে। সুতরাং ফিটনেস পেতে হতে পুরো বডির এক্সারসাইজ করতে হবে।’’- যোগ করেন এ এস তাজ
মন খারাপ থাকলে যা করতে পারেন

মন খারাপ থাকলে যা করতে পারেন সব সময় আমাদের মন ভালো থাকবে, এমনটা নাও হতে পারে। মন খারাপ থাকলে যা করতে পারেন- ১. সহানুভূতিশীল বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে বেশি সময় কাটান। সহানুভূতিশীল মানুষ অন্যের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনে। নিজের খারাপ লাগার কথাটি খুলে বলতে পারলে, অনেক সময় মন হালকা হয়। ২. সাধ্যের অতিরিক্ত চাপ নিতে যাবেন না। অতিরিক্ত কাজের চাপ মন ও শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। ৩. যেসব কাজ আপনাকে আনন্দ দেয়, মন খারাপের সময় সেসব কাজ বেশি করে করুন। আনন্দের কাজটিও করতে ‘ভালো লাগছে না’ মনে হলেও, এক পর্যায়ে দেখবেন ভালো লাগতে শুরু করেছে। ৪. খারাপ লাগা দূর করার জন্য ঘর থেকে বের হোন। বাজার করা, শপিংয়ে যাওয়া বা একটু হাঁটার জন্য হলেও বের হোন। দূরে কোথাও যেতে হবে তা নয়, প্রকৃতির কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যান। ৫. অল্প সময়ের জন্য হালকা ব্যায়ামও করতে পারেন। বেশি না, ১৫-৩০ মিনিট হাঁটাও মন ও শরীরের জন্য বেশ উপকারী। ৬. জীবনে কী কী ভালো ঘটনা ঘটেছে, তার একটি লিস্ট করুন। দেখবেন, মন ভালো লাগছে। নিজেকে বলুন, আপনি সব সময় খারাপ ছিলেন না। আবারও ভালো সময় আসবে। ৭. নিজের প্রতি ধৈর্যশীল হোন। খারাপ কিছু ঘটলে নিজেকে দোষারোপ করতে থাকা বা সেটি নিয়ে বার বার ভাবা বন্ধ করুন। আত্মসমালোচনা যেন আপনার মধ্যে নেগেটিভিটি না আনে। ৮. মন খারাপ থাকলে সাধারণত আমাদের আত্মবিশ্বাসও কমে যায়। এই সময়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। ৯. ভালো একটা ঘুম দিন। রাতে ভালো ঘুম না হলেও মন খারাপ হতে পারে। অনেক সময় মনে হয়, কারণ ছাড়াই খারাপ লাগছে। আসলে সবকিছুর ১১. পেছনেই কারণ থাকে। ভালো ঘুম হলে, শরীর ও মন ফ্রেশ লাগতে পারে। ১২. যদি প্রায়ই এবং দীর্ঘ সময় ধরে মন খারাপ থাকে তাহলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলে, কাউন্সেলিংও প্রয়োজন হতে পারে।
শরীরচর্চার অভ্যাসে বাড়ে মনোযোগ

শরীরচর্চার অভ্যাসে বাড়ে মনোযোগ ওজন কমাতে শরীরচর্চার জুড়ি নেই। রোগা হওয়ার তাগিদে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত সবাই। নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরে ওজন যদি নাও কমে, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা অবধারিত বাড়ে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের করা গবেষণা তেমনটাই জানাচ্ছে। ব্যায়াম শুধু শরীর আর মনের খেয়াল রাখে না। মস্তিষ্ক সচল রাখতেও শরীরচর্চা করা জরুরি বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাসে বশে থাকে ওজন। হাঁটুতে ব্যথা, রক্তচাপের সমস্যা, ডায়াবিটিস থাকলেও ব্যায়াম করে সুফল পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি শরীরচর্চা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। স্মৃতিভ্রম যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তার উদাহরণ হলো ডিমেনশিয়া। মাত্র কয়েক দশকে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়বে প্রায় ২শ শতাংশ। টাইপ-২ ডায়াবিটিস থাকলেও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। শরীরচর্চা টাইপ-২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও কমায়। ফলে প্রতিদিনের শারীরিক কসরতের অভ্যাস একসঙ্গে বহু রোগের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কীভাবে বাড়িয়ে তোলে শরীরচর্চা। নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাসে স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলে। শরীরচর্চা মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখে। এর ফলে মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ সচল থাকে। কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্মৃতি ধরে রাখাও অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। তবে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর বদলে হাঁটলে কিংবা সাইকেল চালালেও উপকার পাওয়া যাবে। শরীরচর্চার অভ্যাসে বাড়ে মনোযোগ। ইঁদুরদৌড়ের জীবনে যেটা অত্যন্ত প্রয়োজন। মনোযোগহীন কাজের গুণমান নিয়ে সংশয় থাকেই। কার্ডিও মনোযোগ বাড়িয়ে তোলে। হার্টের খেয়াল রাখতেও কার্ডিওর জুড়ি মেলা ভার। ব্যায়াম করলে শুধু ওজন কমে না, মনও ভালো থাকে। সার্বিকভাবে ভালো থাকতে শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকি কমালে চলবে না। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও সমান নজর দিতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হলে শরীরের ওপরও এর প্রভাব পড়ে।
ফিট থাকতে নিয়মিত করুন সাইক্লিং
ফিট থাকতে নিয়মিত করুন সাইক্লিং খোলা আকাশের নিচে, গাছে ঘেরা রাস্তায় সাইকেল চালালে প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। এতে করে মাথা থেকে দুশ্চিন্তাগুলো বাতাসের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। সকালের দিকে দূষণ ও গাড়ির চাপ কম থাকে। তাই সকালে সাইক্লিং করুন, সকালে না পারলে সারাদিনে কিছুটা সময় বের করে সাইকেল চালান। আর নিরাপদ বাহন কিন্তু সাইকেল, চাইলে নিয়মিত যাতায়াতের জন্য গণ-পরিবহনের পরিবর্তে সাইকেল ব্যবহার করতে পারেন। সাইক্লিংয়ের উপকারিতা * সাইক্লিং শুধু পায়ের ব্যায়াম নয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে আমাদের শরীরের প্রতিটি পেশিতে চাপ পড়ে, ফলে পেশি সুগঠিত ও শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। * সাইক্লিং আমাদের হার্ট, ফুসফুস এবং রক্তচাপের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। আর এভাবে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। * আমাদের কাজ করার জন্য যে স্ট্যামিনা প্রয়োজন হয়, নিয়মিত সাইক্লিং থেকে আমরা সেই কর্মস্পৃহা পেয়ে থাকি। যা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষে দ্রুত পৌঁছতে সাহায্য করে। * খোলা আকাশের নিচে, গাছে ঘেরা রাস্তায় সাইকেল চালালে প্রকৃতির সাথে আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। এতে করে মাথা থেকে দুশ্চিন্তাগুলো বাতাসের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। ফলে মানসিক চাপ কমানোর জন্য এটি খুব ভালো একটি উপায়।শরীরের মেদ কমে- নিয়মিত সাইক্লিং-এ আমাদের শরীরের বাড়তি মেদ কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। * সাইক্লিংয়ের ফলে আমাদের শ্বাস এবং হার্ট বিট উন্নত হয়। সাইক্লিংয়ে সাবধানতা শহরের ব্যস্ত রাস্তায় সাইক্লিং করা সহজ নয়। এক্ষেত্রে নিজের সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাইকেল কেনার সময় নিরাপত্তা গিয়ার ঠিক আছে কি না চেক করে নিন। সব সময় রাস্তার একপাশ দিয়ে সাইকেল চালাতে হবে। বাই সাইকেল চালালেও ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। কখনোই খুব দ্রুত সাইকেল চালানো যাবে না। হেলমেট ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস থাকলে সাইকেল চালানোর আগে কিছু খেয়ে নিতে হবে। সাইকেল চালানোর সময় অনেক ঘাম হয়। তাই ক্লান্তি দূর করতে সঙ্গে এক বোতল পানি বা জুস রাখুন। কখনো ব্যথা পেলে বা কোনো শারীরিক সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বাইসাইকেল কিনতে ফনিক্স, এমটিভি, হারকিউলিক্স, হিরো, ফায়ারফক্সসহ ভালো মানের একটি সাইকেল কিনতে পারবেন ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায়। ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা, নিউমার্কেট, বংশালসহ দেশের ছোট বড় সব শহরেই দেশি বিদেশি ব্র্যান্ডের সাইকেল পাওয়া যায়।
সকালে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা? দূর করবেন যেভাবে

সকালে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা? দূর করবেন যেভাবে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে অনেকের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা শুরু হয়। কী করলে বা কী খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব তা অনেকেই জানেন না। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সাময়িক সমাধান দিতে পারে ঠিকই তবে দীর্ঘমেয়াদে তা নানা শারীরিক অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় প্রাকৃতিক উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক- ১. আদার রস ও পানি আদার রসের অনেক উপকারিতার মধ্যে একটি হলো, এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কাজ করে। এক চামচ আদার রসের সঙ্গে এক কাপ পানি মিশিয়ে খেয়ে নিন। অথবা শুধু এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেয়েও পানি খেতে পারেন। এভাবে নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে। ২. পুদিনার পানি পুদিনাপাতা বিভিন্ন খাবারে স্বাদ ও গন্ধ যুক্ত করতে সাহায্য করে। তবে এখানেই শেষ নয়, এর রয়েছে অনেক উপকারিতাও। এই পাতার পানি গ্যাস কমাতেও সমান কার্যকরী। নিয়মিত পুদিনা পাতা সেদ্ধ করা পানি পান করতে পারেন। এই পাতা কাঁচা চিবিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। ৩. মৌরি ভেজানো পানি মৌরি ভেজানো পানি গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। শুধু পানিই নয়, এর সঙ্গে মৌরিগুলোও চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। তাতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক উপকার মিলবে। ৪. জিরা ভেজানো পানি জিরার অনেক উপকারিতা। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতেও এটি কাজ করে। জিরা ভেজানো পানি মৌরি ভেজানো পানির মতোই কাজ করে। প্রতিদিন সকালে পরিমিত পরিমাণে জিরা ভেজানো পানি পান করলে তা পেটে জমে থাকা গ্যাস বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে পেট ঠান্ডা হয়। ৫. হালকা গরম পানি সকালে উঠে খালি পেটে পান করতে পারেন হালকা গরম পানি। হালকা গরম পানি পান করলে তা পেটের তাপমাত্রার হেরফের ঘটিয়ে গ্যাস বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এটি পেট পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে।
হঠাৎ খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে, মানসিক চাপ নয়তো?

হঠাৎ খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে, মানসিক চাপ নয়তো? উৎসবে আনন্দ করতে মানুষ পরিবারের সদস্যদের কাছে যায়। এই সময় পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ক আর দৃঢ় হয়। আবার এর উল্টোটাও ঘটে। একাধিক মানসিক চাপে হতাশ হয়ে মানুষ অধিক খাবার খাওয়া শুরু করে। বিশেষ করে ক্যালোরি বৃদ্ধি করে এমন খাবারগুলো তখন বেশি বেছে নেয়। মানসিক চাপ বাড়লে খাবার খাওয়ার প্রতি কেন আগ্রহ বাড়ে? এই বিষয়ে মনোবিদরা বলছেন, ‘‘মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ খাবারের সাহায্য নেয়। যার যে খাবারটা খেলে তৃপ্তি বোধ হয়, সে সেই খাবারই মানসিক চাপের মধ্যে বেশি খেতে থাকে। যাকে বলে ‘কমফোর্ট ফুড’। এই কমফোর্ট ফুড ক্ষণিকের জন্য স্ট্রেস থেকে মুক্তিও দেয়।’’ কেন এমন হয়? অধিক মানসিক চাপে শরীরের কর্টিসল হরমোন নির্গত হয়। এই হরমোন উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দেয়। কিংবা যে খাবার খেলে মানুষ তৃপ্তি অনুভব করে, সেগুলোই বেশি করে খাবার ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে। ‘কমফোর্ট ফুড’ তৃপ্তি আনে এবং ডোপামিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। তাই স্ট্রেসের মধ্যে মুখরোচক খাবার খেলে একটু হলেও স্বস্তি মেলে। কিন্তু এটা সাময়িক। ভারতীয় মনোবিদ ডা. সরখেল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘কমফোর্ট ফুড খেয়ে স্ট্রেস থেকে সাময়িক রিলিফ মেলে। কিন্তু এটা কোনও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। বরং এতে ওজন বাড়ে। আর ওবেসিটি অনেকের ক্ষেত্রে স্ট্রেসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’’ এই সমস্যা এড়াতে হলে প্রতিদিন শরীরচর্চা করুন। নিজেকে আলাদা করে সময় দিন। প্রার্থনা করতে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। শুনতে পারেন প্রিয় গান, প্রিয় কোনো সুর। আবার নিজের খুব প্রিয় কোনো স্থানে গিয়ে কিছু সময় থাকতে পারেন। সুতরাং কোনো সম্পর্ককে অধিক গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজেকে গুরুত্বহীন করে তুলবেন না।
ইফতারে তরমুজের পুডিং তৈরির রেসিপি

ইফতারে তরমুজের পুডিং তৈরির রেসিপি ইফতারে ঠান্ডা কিছু না হলে কি চলে? সারাদিন রোজা থাকার পর মন ও পেট দুটোই জুড়াতে বেছে নিতে পারেন তরমুজের পুডিং। ভাবছেন, তরমুজের পুডিং কী করে তৈরি করবেন? এটি একদমই কঠিন নয়, বরং বেশ সহজ। বাজারে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। তার সঙ্গে দুই-তিনটি উপকরণ মিশিয়ে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন তরমুজের পুডিং। চলুন জেনে নেওয়া যাক তরমুজের পুডিং তৈরির রেসিপি- তৈরি করতে যা লাগবে তরমুজের রস- ৪ কাপ চিনি-স্বাদ মতো কর্ন ফ্লাওয়ার- আধা কাপ পানি- পরিমাণ মতো। যেভাবে তৈরি করেবন তরমুজ খোসা ছাড়িয়ে টুকরা করে নিন। এবার তরমুজের বীজ ছাড়িয়ে নিন। তরমুজের টুকরাগুলো ব্লেন্ডারে দিয়ে রস বের করে নিন। এবার তরমুজের চুলায় মাঝারি আঁচে বসিয়ে দিন। অনবরত নাড়তে থাকুন। ফুটে উঠলে স্বাদ মতো চিনি দিন। এরপর অল্প পানি দিয়ে কর্ন ফ্লাওয়ার গুলিয়ে নিয়ে তরমুজের রসে অল্প অল্প করে মিশিয়ে দিন। এ সময় চুলার আঁচ কমিয়ে নিন। নাড়তে থাকুন। এভাবে ঘন ও আঠালো হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। পছন্দসই পাত্রে বাটার ব্রাশ করে তরমুজের মিশ্রণ ঢেলে দিন। কিছুক্ষণ পর নরমাল ফ্রিজে রাখুন। এভাবে অন্তত কয়েক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর বের করে পরিবেশন করুন ঠান্ডা ঠান্ডা তরমুজের পুডিং।
দিনের শুরুতে মস্তিষ্কের যে ব্যায়ামগুলো করবেন

দিনের শুরুতে মস্তিষ্কের যে ব্যায়ামগুলো করবেন দিনের শুরুতে শরীরচর্চার সময় যেমন আপনার পেশীগুলোকে প্রসারিত করেন, তেমনই উদ্দীপক ব্যায়ামে আপনার মস্তিষ্ককে নিযুক্ত করুন। এটি মানসিক ক্ষমতাকে তীক্ষ্ণ করে তুলবে এবং একটি সৃজনশীলতায় সাহায্য করবে। অনেক সময় আধুনিক জীবনের গতি মানসিক ক্লান্তি এবং চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সহজ, নিয়মিত মস্তিষ্কের ব্যায়াম স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং সামগ্রিক মানসিক তৎপরতা উন্নত করতে কাজ করে। তাহলে, কেন আপনার সকাল এমন একটি রুটিন দিয়ে শুরু করবেন না যা আপনার মস্তিষ্ককে সাফল্যের জন্য প্রস্তুত করে? মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিজ্ঞান দ্বারা সমর্থিত কিছু কার্যকর মস্তিষ্কের ব্যায়াম এখানে দেওয়া হলো- ১. মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য একটি দুর্দান্ত ব্যায়াম। বর্তমান মুহুর্তের ওপর মনোনিবেশ করে চাপ কমাতে এবং একাগ্রতা বাড়াতে পারেন। ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন কর্মক্ষম স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মস্তিষ্কের নমনীয়তা উন্নত করে। সকালে মাত্র ১০ মিনিট মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন বেশ কার্যকরী হতে পারে।মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশনের জন্য একটি আরামদায়ক অবস্থানে বসুন, চোখ বন্ধ করুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোযোগ দিন। চিন্তাভাবনা জাগলে, আলতো করে আপনার মনোযোগ আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে ফিরিয়ে আনুন। ধীরে ধীরে এই সহজ অনুশীলন আপনার মানসিক স্বচ্ছতা এবং মানসিক স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করবে। ২. মেন্টাল ভিজ্যুয়ালাইজেশন মেন্টাল ভিজ্যুয়ালাইজেশনের মধ্যে রয়েছে দৃশ্যপট বা কার্যকলাপকে প্রাণবন্তভাবে বিশদভাবে কল্পনা করা। এই কৌশলটি কেবল সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে না বরং স্নায়ুতন্ত্রকেও শক্তিশালী করে। আপনার লক্ষ্য বা কাজকে কল্পনা করে দিন শুরু করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার কোনো সভা থাকে, তাহলে নিজেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উপস্থাপন করার কল্পনা করুন। এটি আপনার মস্তিষ্ককে সাফল্যের জন্য প্রস্তুত এবং ইতিবাচক মানসিক অভ্যাসকে শক্তিশালী করবে। ৩. নতুন কিছু শেখা নতুন ক্রিয়াকলাপে জড়িত থাকলে তা মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে এবং নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ায়। এটি হলো মস্তিষ্কের অভিযোজন এবং বৃদ্ধির ক্ষমতা। ডালাসের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বুনন বা ফটোগ্রাফির মতো নতুন দক্ষতা শিখলে তা প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বেশ উন্নত করে। সকালে কয়েক মিনিট একটি নতুন দক্ষতা অর্জন বা একটি চ্যালেঞ্জিং শখ পুনরায় করে দেখার জন্য উৎসর্গ করুন। সুডোকু ধাঁধা সমাধান করা, বিদেশী ভাষার কয়েকটি শব্দ শেখা, অথবা নতুন কোনো রান্না শেখা হোক না কেন, মূল বিষয় হলো অপরিচিত কিছু দিয়ে মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করা। ৪. শারীরিক কার্যকলাপ শারীরিক ব্যায়াম মস্তিষ্কের জন্য যেমন উপকারী, তেমন আপনার শরীরের জন্যও উপকারী। জগিং, যোগব্যায়াম, এমনকি দ্রুত হাঁটার মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে, স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা দক্ষতা বৃদ্ধি করে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি গবেষণায় জোর দেওয়া হয়েছে যে, নিয়মিত ব্যায়াম নতুন মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে, বিশেষ করে হিপ্পোক্যাম্পাসে, যা স্মৃতির নেপথ্যে কাজ করে।আপনার সকালের রুটিনে একটি সংক্ষিপ্ত, উদ্যমী ব্যায়াম যোগ করুন। এটি মেজাজ উন্নত এবং মস্তিষ্ককে দিনের কাজের জন্য প্রস্তুত করে। ৫. কৃতজ্ঞতা জার্নালিং কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করা কেবল আত্মার জন্যই ভালো নয়; এটি মস্তিষ্কের জন্যও ভালো। প্রতিদিন সকালে আপনি যে তিনটি জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞ তা লিখে রাখলে ইতিবাচকতা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা উন্নত হতে পারে। আপনার বিছানার পাশে একটি জার্নাল রাখুন এবং ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আপনার জীবনের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে চিন্তা করার অভ্যাস করুন।