রাতের খাবারের কতক্ষণ পর ঘুমানো উচিত?

রাতের খাবারের কতক্ষণ পর ঘুমানো উচিত?   রাতের খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়া শরীরের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। ধীরে ধীরে এতে নানা জটিল অসুখ দেখা দিতে পারে। বদহজম, বুকজ্বালা, অ্যাসিডিটি, অতিরিক্ত ওজন এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই রাতে খাওয়া ও ঘুমের মাঝে ঠিক কতটা বিরতি রাখা প্রয়োজন, তা জানা খুবই জরুরি। হজমে সমস্যা: খাওয়ার পরই শুয়ে পড়লে প্রথমেই ক্ষতি হয় হজমশক্তির। ঘুমের সময় খাবার ঠিকমতো ভাঙতে শরীরকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। নিউট্রিশনিস্ট রূপালী দত্তের মতে, খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে গেলে খাবার ধীরে হজম হয় এবং অন্ত্রে সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে না। ফলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বুকজ্বালা দেখা দেয়। আবার ঘুমও ঠিকমতো হয় না, আর ঘুম কম হলে ওজন বাড়তে থাকে। ঘুমে ব্যাঘাত: ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগে খাবার খেলে ঘুমের মান নষ্ট হয়। বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে শরীরে বাড়তি এনার্জি তৈরি হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ওজন বৃদ্ধি: ধীর হজম ও খারাপ ঘুম দুটিই ওজন বাড়ার প্রধান কারণ। দিনের শেষে মেটাবলিজম ধীরে চলে, ফলে তখন খাওয়া ক্যালরি সহজে বার্ন হয় না। শরীর সূর্যের কার্যক্রমের ছন্দে কাজ করে, তাই তাড়াতাড়ি খেলে পুষ্টিগুণ ভালোভাবে শোষিত হয়। কিন্তু দেরি করে খেলে সেই পুষ্টিগুণ ঠিকমতো না মেটাবলাইজ হয়ে শরীরে চর্বি হিসেবে জমে। বুকজ্বালা ও অ্যাসিডিটি: খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়লে বুকজ্বালা আরও বেড়ে যায়। পেটে চাপ পড়ার ফলে অস্বস্তি ও অ্যাসিডিটি বাড়ে। গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, অ্যাসিডিটি থেকে স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। বদহজম থেকে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপও বেড়ে যায় যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। খাওয়া ও ঘুমের মধ্যে কতক্ষণ বিরতি রাখা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতের খাবার ও ঘুমের মধ্যে অন্তত ৩ ঘণ্টা বিরতি রাখা ভালো। এতে বদহজম, বুকজ্বালা এবং ঘুমের সমস্যা কমে। ভরা পেটে ঘুমালে মেটাবলিজম শ্লথ হয়ে যায়, ফলে ওজন বাড়া ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ে।

পোশাকে বিজয়ের লাল-সবুজ

পোশাকে বিজয়ের লাল-সবুজ পোশাকে চেতনা ধারণ করার ভাবনাটি নতুন নয়। দুটি রঙের মিশেলে দেশের জন্য ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে পারা যায় অনায়াসে। তবে পোশাকের নকশা, কাট, ডিজাইন যেমনই হোক, লাল-সবুজ মানেই একটি চেতনা। সব পরিচয় ছাপিয়ে যেখানে বড় হয়ে ওঠে নিজেদের বাংলাদেশি পরিচয়টাই। তাই প্রতিবারের মতো এবারও দেশীয় হাউসগুলো সেজেছে লাল-সবুজে। বিস্তারিত লিখছেন নিশাত তানিয়া লাল-সবুজ রঙটি আজও আমাদের চেতনার প্রতীক, বলছিলেন রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার সৌমিক দাশ। এবারও তারা আয়োজন করেছেন বিজয় উৎসবের। এবারের থিম মানচিত্র, পতাকা ও জাতীয় সংগীত। তিনি আরও বলেন, লাল ও সবুজের সমন্বয়ে প্রতিটি পোশাক যেন কথা বলে আত্মবিশ্বাসের, গর্বের, স্বাধীনতার। কটন হাইব্রিড, জ্যাকেট কটনের আরামদায়ক পোশাক রেখেছেন তারা যে কোনো বয়সের ক্রেতাদের জন্য। স্কিন আর ডিজিটাল প্রিন্টের কাজে প্রতিটিতে থাকছে নানন্দিকতার ছোঁয়া। বাংলাদেশের উৎসব আর দিবসভিত্তিক পোশাকে বিজয় দিবস উল্লেখযোগ্য। তাই তো ফ্যাশন হাউসগুলোর ভাবনায় একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে সময়োপযোগী করার তাগিদ থাকে প্রতিটি বিজয় উৎসবেই। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। বরাবরই ফ্যাশন হাউসগুলো নতুন প্রজন্মকে পোশাকের দিক থেকে করেছে স্বদেশমুখী। তাদের ডিজাইনের একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে দেশাত্মবোধের চেতনা। এবারের বিজয় দিবসে লাল-সবুজের প্রত্যয়ে আবারও সে চেষ্টাই চলছে। মূলত ফ্যাশনের ধারাটা সময়কে ধারণ করে। ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেল বিজয় দিবস উপলক্ষে ডিজাইন করা শাড়িতে জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙের পাশাপাশি আছে কালো, সাদা ও কমলারও নিপুণ সমন্বয়। ফ্যাব্রিক হিসেবে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ক্রেপ সিল্ক ও হ্যান্ডলুম কটন বা হাতে বোনা সুতি কাপড়। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় এখন ফ্যাশন স্টাইলের অনুষঙ্গ হিসেবে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এ ফ্যাশন-স্টাইলে উৎসবী আমেজ থাকলেও তার থেকে বেশি থাকে দেশাত্মবোধ তথা দেশপ্রেম। আর সে কারণেই বিজয়, স্বাধীনতা কিংবা ভাষা দিবসের ফ্যাশনের প্রথম চিত্রকল্প হিসেবে পোশাকে, শোপিসে কিংবা গহনায় উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের স্থিরচিত্রের চিত্রকর্ম, ’৭১-এর আত্মত্যাগের বাঙালি ধরনটা যেমন হৃদয়ছোঁয়া, মর্মস্পর্শী, আবেগঘন; তেমনি আনন্দময়তার রেশটাও কম নয়। আর এ ফ্যাশন বোধের মর্মকথাটা চিত্রে ও কবিতার পঙ্্ক্তির মাধ্যমে পোশাকে উৎকীর্ণ করার সফল প্রয়াসটা প্রতিবছরের এ বিশেষ দিনগুলোতে করে থাকেন প্রতিষ্ঠিত হাউসগুলোর পক্ষে নিজ নিজ ডিজাইনাররা। এবারের বিজয় দিবসও এর ব্যতিক্রম নয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ডাকটিকিট, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কবিতা, ছবি, আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা ও স্মৃতিসৌধ এবারের আয়োজনের অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আমাদের পতাকার রঙ লাল ও সবুজ রঙ পোশাক ডিজাইনে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এবারের আয়োজনে শাড়ি, পাঞ্জাবি, মেয়েদের টপস, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট পাওয়া যাবে। এ ছাড়া শিশু-কিশোরদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, শাড়ি, টি-শার্ট, সালোয়ার-কামিজ ইত্যাদি। মহান বিজয়ের এই দিনটি সুন্দরভাবে উদযাপন করার জন্য পোশাকগুলোর মূল্যও তুলনামূলকভাবে কম রাখা হয়েছে।’ শীতের আগমনে এ আয়োজনে বিজয় দিবসে কিছুটা ভিন্নতা আনা হয়েছে। পোশাকগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে মোটা সুতি ও খাদি কাপড়। শাড়ি, থ্রিপিস, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ছেলেমেয়েদের কুর্তা, টি-শার্ট ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ লেখা এবং লাল-সবুজ রঙের মাধ্যমে উঠে এসেছে দেশীয় ভাবনা। পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান এসেছে ডিজাইনের অনুষঙ্গ হিসেবে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে টাইডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, ক্যাটওয়াক, স্ক্রিনপ্রিন্ট ইত্যাদি। আর পোশাকের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। দেশপ্রেমের চেতনা ধারণ করে এগিয়ে চলার আত্মপ্রত্যয়ে আপনিও যদি এমন পোশাক পরতে চান, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো থেকে। রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন শোরুমে পাবেন এমন পোশাকের খোঁজ। অনলাইনভিত্তিক কেনাকাটার সুযোগও রয়েছে। চাইলে বানিয়েও নিতে পারেন নিজের পছন্দমতো পোশাক। বিজয় দিবস থিমে আপনার পোশাকটির মূল রঙ হতে পারে সবুজ; বুকে থাকতে পারে লাল নকশা, এমনকি পতাকার লাল বৃত্তটাই। পোশাকের হাতা আর কলারে থাকতে পারে লাল রঙের ব্যবহার। আবার মূল রঙ লাল রেখে সবুজের বৈচিত্র্যময় ব্যবহারও হতে পারে। চাইলে এই রঙের ভিন্নতাটুকু অ্যাপ্লিকের কাজ দিয়েও করিয়ে নিতে পারেন পোশাকে। থাকতে পারে দেশের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো পঙ্ক্তি। জাতীয় সংগীতের লাইন, একাত্তরে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হয়ে ওঠা জর্জ হ্যারিসনের গানের লাইনও লেখা আছে বাজারের কিছু পোশাকে। নারীরা চাইলে লাল রঙের কো-অর্ডের সঙ্গে সবুজ শাল পরতে পারেন কিংবা সবুজ কো-অর্ডের সঙ্গে টকটকে লাল ওড়না বা কটি। আর ব্যান্ডানা তো পথেও বিক্রি করেন পতাকার ফেরিওয়ালারা। পোশাক কিংবা অনুষঙ্গে লাল-সবুজের পরশ রাখা যায় নানাভাবেই। লাল-সবুজের চেতনা অন্তরে নিয়েই হোক সবার পথচলা।

মশা তাড়ানোর ঘরোয়া কিছু উপায়

মশা তাড়ানোর ঘরোয়া কিছু উপায়   সারাদেশে মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশার কামড়েই এ বছর চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সুস্থ ও নিরাপদে থাকতে ঘরের ভেতর-বাহির, ফুলের টব, বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিকল্প নেই। পাশাপাশি মশা তাড়াতে ঘরোয়া কিছু উপায় মেনে চলতে পারেন। মশা তাড়াতে কর্পূরের ওপর ভরসা করতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের টুকরা একটি ছোট পাত্রে রেখে পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। দুদিন পরপর পানি পরিবর্তন করুন। কর্পূরের গন্ধ মশা একদমই সহ্য করতে পারে না। তাই এটি ঘরে থাকলে মশা দূর হয়। কর্পূরের মতো নিমের গন্ধও মশা সহ্য করতে পারে না। আশপাশে নিমগাছ থাকলে কয়েকটি নিমপাতা সংগ্রহ করে ঘরের কোণে রেখে দিন। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে। নিম তেল গায়ে মাখলেও মশার কামড় থেকে রেহাই পাবেন। মশা তাড়াতে কয়েকটি রসুনের কোয়া থেঁতলে পানিতে দিয়ে সেদ্ধ করুন। চাইলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করতে পারেন। এবার রসুন মেশানো পানি ঘরের বিভিন্ন জায়গায় স্প্রে করুন। অল্প সময়েই মশা পালাবে। লেবু মাঝামাঝি করে কেটে, কাটা লেবুর ভেতরের অংশে অনেক লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর টুকরাগুলো পাত্রে রেখে ঘরের এক কোণে রেখে দিন। চাইলে লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফল পাবেন। মশাসহ যে কোনো পোকামাকড় তাড়াতে পুদিনা পাতার ওপর ভরসা রাখতে পারেন। একটি গ্লাসে অল্প পানি নিয়ে তাতে পাঁচ থেকে ছয় গাছি পুদিনাপাতা রেখে দিন। তিন দিন পরপর পানি বদলে দেবেন। পুদিনার গন্ধে অনেক ধরনের পোকামাকড় ঘরে আসবে না। মশার হাত থেকে বাঁচতে গায়ে সুগন্ধি, আতর বা লোশন মাখতে পারেন। কেননা মশা সুগন্ধি খুব অপছন্দ করে। রাতে ঘুমানোর আগেও শরীরে লোশন মাখতে পারেন। বাজারে মশা নিরোধক লোশনও পাওয়া যায়। চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুর গায়ে সে ধরনের লোশন লাগাতে পারেন। ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে তা দিয়ে মশা তাড়াতে পারেন। চা-পাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তাতে ঘরের সব মশা, মাছি পালিয়ে যায়। কয়লা বা কাঠকয়লার আগুনে নিমপাতা পুড়িয়েও ঘরের মশা তাড়াতে পারেন।

ত্বকের কোলাজেন বাড়াবে ৬ খাবার

ত্বকের কোলাজেন বাড়াবে ৬ খাবার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের কোলাজেন কমতে থাকে। এতে ত্বকে বলিরেখা পড়ে, ত্বক ঝুলে যায় এবং উজ্জ্বলতা কমে যায়। খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনসহ নানাবিধ কারণে কোলাজেন হ্রাস পায়। আর তখনই চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ম্লান হতে শুরু করে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শরীরে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন ছয়টি খাবার। এ খাবারগুলো কোলাজেন বাড়াতে সহায়তা করে। সাইট্রাস জাতীয় ফল কোলাজেন উৎপাদনের জন্য ভিটামিন সি অপরিহার্য। ত্বকের উজ্জ্বলতা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে কমলালেবু, লেবু, আঙুর এবং কিউই জাতীয় সাইট্রাস ফল নিয়মিত খান। এতে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ে এবং ত্বক সুস্থ থাকে। ডিম ত্বকের কোলাজেন বাড়াতে নিয়মিত ডিম খান। বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোলিন নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড যা কোলাজেন তৈরি করতে ভূমিকা রাখে। ডিমের কুসুমে থাকা বায়োটিন চুল-ত্বক-নখকে রক্ষা করে। সামুদ্রিক খাবার শরীরের পর্যাপ্ত পুষ্টির জন্য সামুদ্রিক মাছ মাছ গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকায় স্যামন, টুনা, চিংড়ি ইত্যাদি মাছ রাখুন। এগুলো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস, একইসঙ্গে কোলাজেন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবুজ শাকসবজি পালং শাক, কলমি শাকের মতো পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ। এগুলোতে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোলাজেন সংশ্লেষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ এর মতো নানা পুষ্টিকর উপাদান, যা ত্বকের ক্ষতি হওয়া টিস্যু মেরামত করে। দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই হজমশক্তি ঠিক রাখে। ত্বকের কোলাজেন গঠনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দই। তাই খাদ্যতালিকায় দই রাখুন। বেরি স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি এবং রাস্পবেরির মতো ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি আছে। এ দুটি উপাদান কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই দুই ফল রাখুন।

ব্রঙ্কিওলাইটিস শীতে শিশুর কষ্ট

ব্রঙ্কিওলাইটিস শীতে শিশুর কষ্ট শীতের শুরু থেকেই শিশুর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, বিশেষ করে ব্যাপকভাবে দেখা যায় ব্রঙ্কিওলাইটিস। এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং খাওয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হয়। ফলে তারা ভোগে এবং অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বর্তমানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং অন্তঃবিভাগে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা দৃশ্যমানভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই একে নিউমোনিয়া ভেবে ভুল করেন, কিন্তু চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিউমোনিয়া নয়, বরং রেস্পিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসজনিত ব্রঙ্কিওলাইটিস। ব্রঙ্কিওলাইটিস হলো শিশুর ফুসফুসের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলোর ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। সাধারণত রেস্পিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসই এ রোগের প্রধান কারণ। রোগটি নির্ণয়ে বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না; শিশুর বয়স, রোগের ইতিহাস এবং শারীরিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলেই এটি সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। সাধারণত শিশু দুমাস থেকে দুবছরের মধ্যে আক্রান্ত হয়। রোগের শুরুতে নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর থাকা বা না থাকা, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে বুকে পাঁজরের হাড় ভেতরের দিকে ঢুকে যায় এবং শ্বাসের সময় বাঁশির মতো শব্দ শোনা যায়। কিছু শিশু এ রোগে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে ছয় মাসের কম বয়সী, স্বল্প ওজনের, অপরিণত শিশু বা ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে থাকা শিশুর ক্ষেত্রে। ছেলে শিশুরা মেয়েদের তুলনায় কিছুটা বেশি আক্রান্ত হয়। শীতকাল প্রধান সময় হলেও বর্ষাকালেও সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। বুকের দুধ যথাযথভাবে না পাওয়া, ঘরে ধূমপানের প্রভাব এবং কাঠের চুলা ব্যবহার এ ঝুঁকিকে আরও বৃদ্ধি করে। বাড়িতে আক্রান্ত শিশুর যত্নের জন্য তাকে মাথার দিক সামান্য উঁচু করে শোয়ানো, নাক পরিষ্কার রাখা, স্বাভাবিক খাবার দেওয়া, কুসুম গরম পানিতে গোসল করানো এবং জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা উপকারী। যদিও কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন, স্যালবিউটামল বা কিটোটিফেন জাতীয় সিরাপ দেওয়া হয়। তবে এগুলো রোগ সারাতে বেশ কার্যকর নয়। তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালের সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- শিশুর অস্বস্তি বা শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, খাওয়া বা পানি পান করতে অক্ষমতা, উচ্চমাত্রার জ্বর বা শরীরের নীলচে রঙ ধরা। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গিয়ে জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। মনে রাখবেন, ব্রঙ্কিওলাইটিস নিউমোনিয়া নয় এবং অধিকাংশ শিশুর চিকিৎসা বাড়িতেই সম্ভব। কাশি দুসপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হতে পারে এবং ভবিষ্যতে কিছু শিশুর শ্বাসকষ্ট বা বুকে বাঁশির মতো শব্দ হতে পারে। রোগ প্রতিরোধে জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানো, নির্ধারিত সময়মতো টিকা দেওয়া, ছমাস পর ধীরে ধীরে ঘন খাবার দেওয়া, খাবারের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং বাড়িতে ধূমপান পরিহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ব্রঙ্কিওলাইটিস সংক্রান্ত এ তথ্যের মাধ্যমে অভিভাবকরা শিশুর যত্নে সতর্ক থাকতে পারেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। ডা. ইমনুল ইসলাম ইমন লেখক : অধ্যাপক, শিশুরোগ বিভাগ

ঘরের ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জি সতর্ক থাকবেন যেভাবে

ঘরের ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জি সতর্ক থাকবেন যেভাবে   অনেকেরই ডাস্ট অ্রালার্জি বা ধূলিকণা থেকে সৃষ্ট অ্যালার্জির সমস্যা আছে। এর ফলে একটানা হাঁচি, সর্দি, চোখ চুলকানো বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সঠিক লাইফস্টাইল এবং কিছু স্মার্ট অভ্যাস আপনার অ্যালার্জিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। যেমন-ডাস্ট অ্যালার্জির মূল কারণ হল ধুলোর মাইট । এই ক্ষুদ্র জীবগুলি গরম ও আর্দ্র পরিবেশে, বিশেষ করে বিছানাপত্রে জন্মায়। এদের নিয়ন্ত্রণ করাই হলো প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । কী করবেন- বিছানাপত্রের বিশেষ যত্ন বিছানার কভার ব্যবহার করতে হবে। বালিশ, তোষক এবং লেপের উপর অ্যালার্জি-প্রুফ কভার ব্যবহার করুন। এই কভারগুলি মাইট এবং এগুলোর বর্জ্য পদার্থকে আটকে রাখে। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানার চাদর, বালিশের কভার এবং কম্বল গরম পানিতে ধুয়ে নিন। ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ:ধুলোর মাইট আর্দ্রতা ভালবাসে। আপনার ঘরের আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে একটি ডিহিউমিডিফায়ার (আর্দ্রতা শোষণকারী যন্ত্র) ব্যবহার করতে পারেন। কার্পেট এবং ভারী পর্দা এড়িয়ে চলুন কার্পেট, ভারী কম্বল বা ঘন পর্দা ধুলোর মাইট এবং অন্যান্য অ্যালার্জেনদের জন্য আদর্শ আবাস। সম্ভব হলে কার্পেট সরিয়ে শক্ত কাঠ, টাইলস বা লিনোলিয়ামের মেঝে ব্যবহার করুন। জানলায় সহজে ধোওয়া যায় এমন হালকা পর্দা ব্যবহার করুন। পরিচ্ছন্নতার স্মার্ট রুটিন নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা জরুরি। তবে সেই পরিচ্ছন্নতা যেন সঠিক উপায়ে হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। সঠিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার: সাধারণ ঝাড়ু ব্যবহার করলে ধুলো আরও বেশি বাতাসে ছড়ায়। এর পরিবর্তে এইচইপিএস ফিল্টার যুক্ত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। এটি সূক্ষ্ম ধূলিকণাকে শোষণ করে, যা অ্যালার্জির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ভেজা কাপড় ব্যবহার: আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিস মোছার জন্য শুকনো কাপড়ের পরিবর্তে ভেজা কাপড় বা মপ ব্যবহার করুন। এতে ধুলো বাতাসে ওড়ার সুযোগ পায় না। মাস্ক পরুন: যখন ঘর পরিষ্কার করবেন বা ভ্যাকুয়াম করবেন, তখন নাকে এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। তাহলে অ্যালার্জেন সরাসরি আপনার শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে পারবে না। পরিষ্কারের পর কমপক্ষে ২০ মিনিট ঘর থেকে দূরে থাকুন। বিশুদ্ধ বাতাসের দিকে নজর: বাড়ির ইনডোর বাতাসের গুণমান উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরে এইচইপিএস যুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। যা বাতাস থেকে পরাগ, ধুলোর মাইটের বর্জ্য এবং অন্যান্য অ্যালার্জেন ফিল্টার করে দেবে। এ ছাড়া ঘরের ভেতরের ডাস্টবিন নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং বাইরে রাখুন। লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার পরেও যদি অ্যালার্জির উপসর্গগুলি না কমে তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

শীতের বাহারি পিঠা

শীতের বাহারি পিঠা শীত মানেই বাহারি পিঠা তৈরির আয়োজন। আর পিঠা ছাড়া শীত যেন পরিপূর্ণ হয় না। তাই তো হেমন্তের নতুন চালে শীতে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। আমাদের দেশে যে কত রকম পিঠা হয় তা বলে শেষ করা কঠিন। চিকেন ভাপা পিঠা উপকরণ: চিকেন কিমা সিদ্ধ এক কাপ, আদা কুচি ১/২ চা চামচ, রসুন কুচি ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজকলি কুচি এক চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি এক চা চামচ, ধনেপাতা কুচি এক চা চামচ, সরিষার তেল এক টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি পরিমাণমতো ও লবণ পরিমাণমতো। প্রস্তুতপ্রণালি: পরিমাণমতো পানি ও লবণ দিয়ে মেখে ঝুরঝুরা করে রাখতে হবে চালের গুঁড়া। চিকেন কিমা সব মসলা দিয়ে মেখে নিতে হবে। একটা ছোট বাটিতে চালের গুঁড়া নিয়ে তার উপর এক টেবিল চামচ চিকেনের মিশ্রণ রেখে আবার চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবার পাতলা কাপড়ের উপর রেখে ছিদ্রযুক্ত পিঠার পাতিলে পিঠা রেখে ঢাকনা দিয়ে মাঝারি আঁচে ২/৩ মিনিট ঢেকে রাখলেই পিঠা তৈরি হয়ে যাবে। লবঙ্গ পিঠা উপকরণ: লবঙ্গ ৮/১০টা, ময়দা এক কাপ, ময়ানের জন্য তেল বা ঘি ২ চা চামচ, লবণ সামান্য। পুরের জন্য: নারকেল এক কাপ, গুড় বা চিনি ১/২ কাপ, এলাচ গুঁড়ো এক চিমটি, গুঁড়ো দুধ ২/৩ টেবিল চামচ ও ভাজার জন্য তেল পরিমাণমতো। প্রস্তুতপ্রণালি: ময়দা, পরিমাণমতো লবণ, তেল বা ঘি দিয়ে ভালোমতো ময়ান দিয়ে রাখতে হবে। গুড় বা চিনি, নারিকেল, গুঁড়ো দুধ ও এলাচ একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে একটা পুর তৈরি করতে হবে। ময়ান দেওয়া ময়দা থেকে পাতলা রুটি বেলতে হবে। এক চা চামচ পুর মাঝখানে রেখে মাঝামাঝি ভাঁজ দিতে হবে। এর পর কোনাটা টেনে মাঝখানে এনে আর একটা ভাঁজ দিতে হবে। তারপর একে একে বাকি কোনাগুলো টেনে পুরো পিঠা তৈরি করে মাঝখানে একটা লবঙ্গ দিয়ে ভাঁজগুলো আটকে দিতে হবে। এরপর ডুবা তেলে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। ঝিনুক বা খেজুর পিঠা উপকরণ: ময়দা ১ কাপ, চালের গুড়ো ২ কাপ, চিনি বা গুড়ের সিরা পরিমাণ মতো। নকশা করার জন্য চিরুনি। পিঠা ভাজার জন্য পরিমাণ মতো তেল। প্রস্তুত প্রণালি: ময়দা আর চালের গুড়ো চালনির সাহায্যে চেলে নিন। গরম পানি দিয়ে ভালো ভাবে মেখে পিঠার ডো তৈরি করুন। ছোট লেচি কেটে লম্বা করে বেলে চিরুনির দাতে বসিয়ে হাতে চেপে ডিজাইন করুন। গরম তেলে ভাজা হলে গুড় বা চিনি র সিরা ছড়িয়ে দিন। সুজির মালাই পিঠা উপকরণ: দুধ ১ লিটার, এলাচ গুঁড়া আধা চা চামচ, চিনি ২ কাপ, ডিম ২টি, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ, সুজি ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, বাদাম কুচি ও চেরি পরিমাণমতো। প্রস্তুত প্রণালি: একটি পাত্রে এক লিটার দুধ নিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। দুধ ঘন হয়ে এলে এতে দিয়ে দিন আধা চা চামচ এলাচ গুঁড়া। সঙ্গে দিন ১-৩ কাপ চিনি। দুধ ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এবার একটি বাটিতে দুটি ডিম ভেঙে নিন। ভালো করে বিট করে নিন। এতে দিন এক চা চামচ চিনি। ভালো করে বিট করে চিনি গলিয়ে নিন। এতে দিয়ে দিন ১ চা চামচ লবণ, ১ চা চামচ বেকিং পাউডার ও ৩/৪ কাপ গুঁড়া দুধ। খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এতে দিয়ে দিন ১ কাপ সুজি। ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ১০ মিনিটের জন্য ঢেকে রেখে দিন। এবার একটি প্যানে তেল নিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। তাই পিঠাগুলো গোল গোল আকার দিয়ে বানিয়ে তেলে ছেড়ে দিন। ২ মিনিটের মতো ভেজে নিন। খুব বেশি ভাজা যাবে না। পিঠাগুলো তুলে ফেলার পরপরই বানানো মালাইয়ের মধ্যে ঢেলে দিতে হবে। সব শেষে পিঠার ওপর বাদাম কুচি আর চেরির টুকরো দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। ঝাল পোয়া পিঠা উপকরণ: আতপ চালের গুঁড়া ২ কাপ, ময়দা ১ কাপ, ডিম ২টা, খাবার সোডা ১ চিমটি, লবণ স্বাদমতো, চিনি ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা ও রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ চা চামচ, মরিচ কুচি ১ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ মুঠ, পানি পরিমাণমতো, তেল ভাজার জন্য। প্রস্তুত প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে পিঠার গোলা বানাতে হবে। গোলাটা বেশ কিছু সময় রেখে দিয়ে তারপর ভালো করে ফেটে নিলে খুব সুন্দর পিঠা হয়। তেলের পিঠা পোয়া পিঠার মতো ঘন গোলা হবে। আন্দাজমতো গোলা গরম তেলে ভালো করে দুই পিঠ ভেজে তুলে নিন। টমেটো সস দিয়ে এই পিঠা খেতে খুব অসাধারণ। হালকা নাশতা কিংবা মেহমান আপ্যায়নে ভালো জমবে এ খাবারটি।

কালো গোলাপ প্রেম নাকি মৃত্যুর প্রতীক?

কালো গোলাপ প্রেম নাকি মৃত্যুর প্রতীক? প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের সমাজ ও সংস্কৃতিতে কালো গোলাপকে শক্তি এবং কুসংস্কারের প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। সময়ের সাথে সাথে এর প্রতীকী অর্থ বদলাতে শুরু করে। কালো গোলাপ রহস্য, পুনর্জন্ম এবং বিদায়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে, এটি গভীর এবং স্থায়ী প্রেমের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রকৃত কালো গোলাপ নেই। যেগুলিকে ‘কালো গোলাপ’ বলা হয়, সেগুলি আসলে গাঢ় লাল বা বেগুনি রঙের হয়, যা নির্দিষ্ট আলোতে কালো দেখায়। তুরস্কের হাফেটি নামক একটি ছোট শহরে এক বিশেষ জাতের গোলাপ পাওয়া যায়। যা ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে গাঢ় মেরুন থেকে প্রায় কালো রঙ ধারণ করে। এই ‘হাফেটি কালো গোলাপ’ তার অনন্য রঙের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং এটি প্রাকৃতিক উপায়ে কালো রঙের সবচেয়ে কাছাকাছি গোলাপ। স্থানীয় মাটির পিএইচ মাত্রা এবং ইউফ্রেটিস নদীর পানির কারণে এই গোলাপের রঙ এত গাঢ় হয়ে থাকে। অবশ্য আধুনিক যুগে, উদ্ভিদ প্রজননকারীরা ‘ব্ল্যাক ব্যাকারার’ মতো জাত তৈরি করেছেন। যা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে খুব গাঢ় রঙের হয় এবং সেগুলি ‘কালো গোলাপ’ নামে বিক্রি করা হয়। বলা যায়, এই ফুলের শক্তিশালী অস্তিত্ব রয়েছে কল্পনা ও সাহিত্যে। আর এই প্রতীকী রূপ বর্তমানে গভীর প্রেমের প্রতীক হিসেবেই পরিচিত। সূত্র: এনডিটিভি

কুসুম গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা

কুসুম গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা শীতের সকালে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে পেশী শিথিল হয়। গরম পানির সাথে বাথ সল্ট বা লবণ মিশিয়ে নিলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এই অভ্যাস শরীরের একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা থেকে তৈরি হওয়া জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ১৪ থেকে ২৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে থাকে। এই সময়ে গোসলের জন্য ৩০-৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার পানিই সবচেয়ে উপযোগী।’’ গরম পানিতে গোসল করলে যেসব উপকারিতা পেতে পারেন : রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে : হালকা গরম পানিতে গোসল করলে রক্তনালি প্রসারিত হবে। যা রক্তপ্রবাহকে উন্নত করতে সহায়তা দেবে। এটি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। পেশী শিথিল করে : সকালে ব্যায়ামের পর কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে পেশির টান কমে এবং শরীর শিথিল হয়। ওজন কমাতে সাহায্য করে : কুসুম গরম পানিতে গোসল বিপাক ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। ক্লান্তি ও ব্যথা উপশম হয় : কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে শারীরিক ক্লান্তি ও ব্যথা কমে আসে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়। সতর্কতা: অঅতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে তা চুল ও ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দিতে পারে, যার ফলে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হতে পারে। ত্বকের ক্ষতি এড়াতে এবং সর্বোচ্চ উপকার পেতে হালকা গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।

শিশুদের খর্বাকৃতির কারণ ও প্রতিকার

শিশুদের খর্বাকৃতির কারণ ও প্রতিকার শিশুদের খর্বাকৃতি বা short stature বলতে বয়স অনুযায়ী উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় কম হওয়াকে বোঝায়। কোনো শিশুর উচ্চতা যদি তৃতীয় পারসেন্টাইলের নিচে থাকে, তবে তাকে খর্বাকৃতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খর্বাকৃতি দুই ধরনের-স্বাভাবিক ভেরিয়েন্ট ও প্যাথলজিক্যাল। স্বাভাবিক ভেরিয়েন্ট খর্বাকৃতির কারণ বংশগত বা গঠনগত হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বংশগত কারণই প্রধান; এ ক্ষেত্রে পরিবারে মা-বাবা বা ভাইবোন খাটো হলে শিশুও খর্বাকৃতির প্রবণতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। একে বলা হয় ফ্যামিলিয়াল খর্বাকৃতি। গঠনগত খর্বাকৃতির ক্ষেত্রে শৈশবের বৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরগতির হয় এবং বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন দেরিতে দেখা দেয়। তবে এই ধরনের শিশু পরে প্রায় স্বাভাবিক উচ্চতায় পৌঁছায়। অন্যদিকে, প্যাথলজিক্যাল খর্বাকৃতি বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগ, হরমোনজনিত সমস্যা, অপুষ্টি, সিনড্রোম এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে দেখা দিতে পারে। হাঁপানি, জন্মগত হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, লিভার বা কিডনির রোগ, থ্যালাসেমিয়া, রিকেটস ও সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। দীর্ঘদিন স্টেরয়েড গ্রহণ করলেও বৃদ্ধি কমে যায়। থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি, গ্রোথ হরমোনের স্বল্পতা কিংবা কুশিং সিনড্রোমের মতো হরমোনজনিত সমস্যাও শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টি শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিকে দমিয়ে দেয়; পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ না পেলে তারা পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী বাড়তে পারে না। জন্মকালীন অপুষ্টি বা ওটএজ মায়ের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা ভ্রƒণের জটিলতার কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া ডাউন সিনড্রোম, টার্নার সিনড্রোম ও অ্যাকন্ড্রোপ্লাসিয়ার মতো সিনড্রোমিক অবস্থায়ও বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পারিবারিক অশান্তি, বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ বা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বংশগত ও গঠনগত খর্বাকৃতির ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না; যথাযথ কাউন্সেলিংই যথেষ্ট। দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে মূল কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিলে বৃদ্ধির হার স্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসে। হরমোনজনিত সমস্যায় থাইরয়েড হরমোন বা গ্রোথ হরমোন প্রয়োগ করা হয়। অপুষ্টি প্রতিরোধে শৈশব থেকেই শিশুর পুষ্টির প্রতি নজর দেওয়া জরুরি এবং গর্ভাবস্থায় মায়ের নিয়মিত যত্ন নিলে জন্মকালীন অপুষ্টি কমানো যায়। টার্নার সিনড্রোমে গ্রোথ হরমোন থেরাপির মাধ্যমে উচ্চতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। মানসিক চাপজনিত সমস্যায় শিশুকে চাপমুক্ত পরিবেশে বড় করা এবং প্রয়োজনে কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা, শৈশবে সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। রোগ নির্ণয়, সঠিক চিকিৎসা, নিয়মিত চেকআপ ও বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে খর্বাকৃতি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। খর্বাকৃতি শিশু প্রায়ই সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয় এবং হীনমন্যতায় ভোগে। তাই অভিভাবক ও সমাজের অন্যদের সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।