ব্রঙ্কিওলাইটিস শীতে শিশুর কষ্ট

ব্রঙ্কিওলাইটিস শীতে শিশুর কষ্ট শীতের শুরু থেকেই শিশুর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, বিশেষ করে ব্যাপকভাবে দেখা যায় ব্রঙ্কিওলাইটিস। এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং খাওয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হয়। ফলে তারা ভোগে এবং অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বর্তমানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং অন্তঃবিভাগে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা দৃশ্যমানভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই একে নিউমোনিয়া ভেবে ভুল করেন, কিন্তু চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিউমোনিয়া নয়, বরং রেস্পিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসজনিত ব্রঙ্কিওলাইটিস। ব্রঙ্কিওলাইটিস হলো শিশুর ফুসফুসের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলোর ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। সাধারণত রেস্পিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসই এ রোগের প্রধান কারণ। রোগটি নির্ণয়ে বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না; শিশুর বয়স, রোগের ইতিহাস এবং শারীরিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলেই এটি সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। সাধারণত শিশু দুমাস থেকে দুবছরের মধ্যে আক্রান্ত হয়। রোগের শুরুতে নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর থাকা বা না থাকা, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে বুকে পাঁজরের হাড় ভেতরের দিকে ঢুকে যায় এবং শ্বাসের সময় বাঁশির মতো শব্দ শোনা যায়। কিছু শিশু এ রোগে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে ছয় মাসের কম বয়সী, স্বল্প ওজনের, অপরিণত শিশু বা ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে থাকা শিশুর ক্ষেত্রে। ছেলে শিশুরা মেয়েদের তুলনায় কিছুটা বেশি আক্রান্ত হয়। শীতকাল প্রধান সময় হলেও বর্ষাকালেও সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। বুকের দুধ যথাযথভাবে না পাওয়া, ঘরে ধূমপানের প্রভাব এবং কাঠের চুলা ব্যবহার এ ঝুঁকিকে আরও বৃদ্ধি করে। বাড়িতে আক্রান্ত শিশুর যত্নের জন্য তাকে মাথার দিক সামান্য উঁচু করে শোয়ানো, নাক পরিষ্কার রাখা, স্বাভাবিক খাবার দেওয়া, কুসুম গরম পানিতে গোসল করানো এবং জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা উপকারী। যদিও কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন, স্যালবিউটামল বা কিটোটিফেন জাতীয় সিরাপ দেওয়া হয়। তবে এগুলো রোগ সারাতে বেশ কার্যকর নয়। তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালের সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- শিশুর অস্বস্তি বা শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, খাওয়া বা পানি পান করতে অক্ষমতা, উচ্চমাত্রার জ্বর বা শরীরের নীলচে রঙ ধরা। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গিয়ে জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। মনে রাখবেন, ব্রঙ্কিওলাইটিস নিউমোনিয়া নয় এবং অধিকাংশ শিশুর চিকিৎসা বাড়িতেই সম্ভব। কাশি দুসপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হতে পারে এবং ভবিষ্যতে কিছু শিশুর শ্বাসকষ্ট বা বুকে বাঁশির মতো শব্দ হতে পারে। রোগ প্রতিরোধে জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানো, নির্ধারিত সময়মতো টিকা দেওয়া, ছমাস পর ধীরে ধীরে ঘন খাবার দেওয়া, খাবারের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং বাড়িতে ধূমপান পরিহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ব্রঙ্কিওলাইটিস সংক্রান্ত এ তথ্যের মাধ্যমে অভিভাবকরা শিশুর যত্নে সতর্ক থাকতে পারেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। ডা. ইমনুল ইসলাম ইমন লেখক : অধ্যাপক, শিশুরোগ বিভাগ

ঘরের ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জি সতর্ক থাকবেন যেভাবে

ঘরের ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জি সতর্ক থাকবেন যেভাবে   অনেকেরই ডাস্ট অ্রালার্জি বা ধূলিকণা থেকে সৃষ্ট অ্যালার্জির সমস্যা আছে। এর ফলে একটানা হাঁচি, সর্দি, চোখ চুলকানো বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সঠিক লাইফস্টাইল এবং কিছু স্মার্ট অভ্যাস আপনার অ্যালার্জিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। যেমন-ডাস্ট অ্যালার্জির মূল কারণ হল ধুলোর মাইট । এই ক্ষুদ্র জীবগুলি গরম ও আর্দ্র পরিবেশে, বিশেষ করে বিছানাপত্রে জন্মায়। এদের নিয়ন্ত্রণ করাই হলো প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । কী করবেন- বিছানাপত্রের বিশেষ যত্ন বিছানার কভার ব্যবহার করতে হবে। বালিশ, তোষক এবং লেপের উপর অ্যালার্জি-প্রুফ কভার ব্যবহার করুন। এই কভারগুলি মাইট এবং এগুলোর বর্জ্য পদার্থকে আটকে রাখে। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানার চাদর, বালিশের কভার এবং কম্বল গরম পানিতে ধুয়ে নিন। ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ:ধুলোর মাইট আর্দ্রতা ভালবাসে। আপনার ঘরের আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে একটি ডিহিউমিডিফায়ার (আর্দ্রতা শোষণকারী যন্ত্র) ব্যবহার করতে পারেন। কার্পেট এবং ভারী পর্দা এড়িয়ে চলুন কার্পেট, ভারী কম্বল বা ঘন পর্দা ধুলোর মাইট এবং অন্যান্য অ্যালার্জেনদের জন্য আদর্শ আবাস। সম্ভব হলে কার্পেট সরিয়ে শক্ত কাঠ, টাইলস বা লিনোলিয়ামের মেঝে ব্যবহার করুন। জানলায় সহজে ধোওয়া যায় এমন হালকা পর্দা ব্যবহার করুন। পরিচ্ছন্নতার স্মার্ট রুটিন নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা জরুরি। তবে সেই পরিচ্ছন্নতা যেন সঠিক উপায়ে হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। সঠিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার: সাধারণ ঝাড়ু ব্যবহার করলে ধুলো আরও বেশি বাতাসে ছড়ায়। এর পরিবর্তে এইচইপিএস ফিল্টার যুক্ত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। এটি সূক্ষ্ম ধূলিকণাকে শোষণ করে, যা অ্যালার্জির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ভেজা কাপড় ব্যবহার: আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিস মোছার জন্য শুকনো কাপড়ের পরিবর্তে ভেজা কাপড় বা মপ ব্যবহার করুন। এতে ধুলো বাতাসে ওড়ার সুযোগ পায় না। মাস্ক পরুন: যখন ঘর পরিষ্কার করবেন বা ভ্যাকুয়াম করবেন, তখন নাকে এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। তাহলে অ্যালার্জেন সরাসরি আপনার শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে পারবে না। পরিষ্কারের পর কমপক্ষে ২০ মিনিট ঘর থেকে দূরে থাকুন। বিশুদ্ধ বাতাসের দিকে নজর: বাড়ির ইনডোর বাতাসের গুণমান উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরে এইচইপিএস যুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। যা বাতাস থেকে পরাগ, ধুলোর মাইটের বর্জ্য এবং অন্যান্য অ্যালার্জেন ফিল্টার করে দেবে। এ ছাড়া ঘরের ভেতরের ডাস্টবিন নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং বাইরে রাখুন। লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার পরেও যদি অ্যালার্জির উপসর্গগুলি না কমে তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

শীতের বাহারি পিঠা

শীতের বাহারি পিঠা শীত মানেই বাহারি পিঠা তৈরির আয়োজন। আর পিঠা ছাড়া শীত যেন পরিপূর্ণ হয় না। তাই তো হেমন্তের নতুন চালে শীতে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায়। আমাদের দেশে যে কত রকম পিঠা হয় তা বলে শেষ করা কঠিন। চিকেন ভাপা পিঠা উপকরণ: চিকেন কিমা সিদ্ধ এক কাপ, আদা কুচি ১/২ চা চামচ, রসুন কুচি ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজকলি কুচি এক চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি এক চা চামচ, ধনেপাতা কুচি এক চা চামচ, সরিষার তেল এক টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি পরিমাণমতো ও লবণ পরিমাণমতো। প্রস্তুতপ্রণালি: পরিমাণমতো পানি ও লবণ দিয়ে মেখে ঝুরঝুরা করে রাখতে হবে চালের গুঁড়া। চিকেন কিমা সব মসলা দিয়ে মেখে নিতে হবে। একটা ছোট বাটিতে চালের গুঁড়া নিয়ে তার উপর এক টেবিল চামচ চিকেনের মিশ্রণ রেখে আবার চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবার পাতলা কাপড়ের উপর রেখে ছিদ্রযুক্ত পিঠার পাতিলে পিঠা রেখে ঢাকনা দিয়ে মাঝারি আঁচে ২/৩ মিনিট ঢেকে রাখলেই পিঠা তৈরি হয়ে যাবে। লবঙ্গ পিঠা উপকরণ: লবঙ্গ ৮/১০টা, ময়দা এক কাপ, ময়ানের জন্য তেল বা ঘি ২ চা চামচ, লবণ সামান্য। পুরের জন্য: নারকেল এক কাপ, গুড় বা চিনি ১/২ কাপ, এলাচ গুঁড়ো এক চিমটি, গুঁড়ো দুধ ২/৩ টেবিল চামচ ও ভাজার জন্য তেল পরিমাণমতো। প্রস্তুতপ্রণালি: ময়দা, পরিমাণমতো লবণ, তেল বা ঘি দিয়ে ভালোমতো ময়ান দিয়ে রাখতে হবে। গুড় বা চিনি, নারিকেল, গুঁড়ো দুধ ও এলাচ একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে একটা পুর তৈরি করতে হবে। ময়ান দেওয়া ময়দা থেকে পাতলা রুটি বেলতে হবে। এক চা চামচ পুর মাঝখানে রেখে মাঝামাঝি ভাঁজ দিতে হবে। এর পর কোনাটা টেনে মাঝখানে এনে আর একটা ভাঁজ দিতে হবে। তারপর একে একে বাকি কোনাগুলো টেনে পুরো পিঠা তৈরি করে মাঝখানে একটা লবঙ্গ দিয়ে ভাঁজগুলো আটকে দিতে হবে। এরপর ডুবা তেলে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। ঝিনুক বা খেজুর পিঠা উপকরণ: ময়দা ১ কাপ, চালের গুড়ো ২ কাপ, চিনি বা গুড়ের সিরা পরিমাণ মতো। নকশা করার জন্য চিরুনি। পিঠা ভাজার জন্য পরিমাণ মতো তেল। প্রস্তুত প্রণালি: ময়দা আর চালের গুড়ো চালনির সাহায্যে চেলে নিন। গরম পানি দিয়ে ভালো ভাবে মেখে পিঠার ডো তৈরি করুন। ছোট লেচি কেটে লম্বা করে বেলে চিরুনির দাতে বসিয়ে হাতে চেপে ডিজাইন করুন। গরম তেলে ভাজা হলে গুড় বা চিনি র সিরা ছড়িয়ে দিন। সুজির মালাই পিঠা উপকরণ: দুধ ১ লিটার, এলাচ গুঁড়া আধা চা চামচ, চিনি ২ কাপ, ডিম ২টি, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ, সুজি ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, বাদাম কুচি ও চেরি পরিমাণমতো। প্রস্তুত প্রণালি: একটি পাত্রে এক লিটার দুধ নিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। দুধ ঘন হয়ে এলে এতে দিয়ে দিন আধা চা চামচ এলাচ গুঁড়া। সঙ্গে দিন ১-৩ কাপ চিনি। দুধ ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এবার একটি বাটিতে দুটি ডিম ভেঙে নিন। ভালো করে বিট করে নিন। এতে দিন এক চা চামচ চিনি। ভালো করে বিট করে চিনি গলিয়ে নিন। এতে দিয়ে দিন ১ চা চামচ লবণ, ১ চা চামচ বেকিং পাউডার ও ৩/৪ কাপ গুঁড়া দুধ। খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এতে দিয়ে দিন ১ কাপ সুজি। ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ১০ মিনিটের জন্য ঢেকে রেখে দিন। এবার একটি প্যানে তেল নিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। তাই পিঠাগুলো গোল গোল আকার দিয়ে বানিয়ে তেলে ছেড়ে দিন। ২ মিনিটের মতো ভেজে নিন। খুব বেশি ভাজা যাবে না। পিঠাগুলো তুলে ফেলার পরপরই বানানো মালাইয়ের মধ্যে ঢেলে দিতে হবে। সব শেষে পিঠার ওপর বাদাম কুচি আর চেরির টুকরো দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। ঝাল পোয়া পিঠা উপকরণ: আতপ চালের গুঁড়া ২ কাপ, ময়দা ১ কাপ, ডিম ২টা, খাবার সোডা ১ চিমটি, লবণ স্বাদমতো, চিনি ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা ও রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ চা চামচ, মরিচ কুচি ১ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ মুঠ, পানি পরিমাণমতো, তেল ভাজার জন্য। প্রস্তুত প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে পিঠার গোলা বানাতে হবে। গোলাটা বেশ কিছু সময় রেখে দিয়ে তারপর ভালো করে ফেটে নিলে খুব সুন্দর পিঠা হয়। তেলের পিঠা পোয়া পিঠার মতো ঘন গোলা হবে। আন্দাজমতো গোলা গরম তেলে ভালো করে দুই পিঠ ভেজে তুলে নিন। টমেটো সস দিয়ে এই পিঠা খেতে খুব অসাধারণ। হালকা নাশতা কিংবা মেহমান আপ্যায়নে ভালো জমবে এ খাবারটি।

কালো গোলাপ প্রেম নাকি মৃত্যুর প্রতীক?

কালো গোলাপ প্রেম নাকি মৃত্যুর প্রতীক? প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের সমাজ ও সংস্কৃতিতে কালো গোলাপকে শক্তি এবং কুসংস্কারের প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। সময়ের সাথে সাথে এর প্রতীকী অর্থ বদলাতে শুরু করে। কালো গোলাপ রহস্য, পুনর্জন্ম এবং বিদায়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে, এটি গভীর এবং স্থায়ী প্রেমের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রকৃত কালো গোলাপ নেই। যেগুলিকে ‘কালো গোলাপ’ বলা হয়, সেগুলি আসলে গাঢ় লাল বা বেগুনি রঙের হয়, যা নির্দিষ্ট আলোতে কালো দেখায়। তুরস্কের হাফেটি নামক একটি ছোট শহরে এক বিশেষ জাতের গোলাপ পাওয়া যায়। যা ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে গাঢ় মেরুন থেকে প্রায় কালো রঙ ধারণ করে। এই ‘হাফেটি কালো গোলাপ’ তার অনন্য রঙের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং এটি প্রাকৃতিক উপায়ে কালো রঙের সবচেয়ে কাছাকাছি গোলাপ। স্থানীয় মাটির পিএইচ মাত্রা এবং ইউফ্রেটিস নদীর পানির কারণে এই গোলাপের রঙ এত গাঢ় হয়ে থাকে। অবশ্য আধুনিক যুগে, উদ্ভিদ প্রজননকারীরা ‘ব্ল্যাক ব্যাকারার’ মতো জাত তৈরি করেছেন। যা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে খুব গাঢ় রঙের হয় এবং সেগুলি ‘কালো গোলাপ’ নামে বিক্রি করা হয়। বলা যায়, এই ফুলের শক্তিশালী অস্তিত্ব রয়েছে কল্পনা ও সাহিত্যে। আর এই প্রতীকী রূপ বর্তমানে গভীর প্রেমের প্রতীক হিসেবেই পরিচিত। সূত্র: এনডিটিভি

কুসুম গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা

কুসুম গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা শীতের সকালে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে পেশী শিথিল হয়। গরম পানির সাথে বাথ সল্ট বা লবণ মিশিয়ে নিলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এই অভ্যাস শরীরের একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা থেকে তৈরি হওয়া জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ১৪ থেকে ২৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে থাকে। এই সময়ে গোসলের জন্য ৩০-৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার পানিই সবচেয়ে উপযোগী।’’ গরম পানিতে গোসল করলে যেসব উপকারিতা পেতে পারেন : রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে : হালকা গরম পানিতে গোসল করলে রক্তনালি প্রসারিত হবে। যা রক্তপ্রবাহকে উন্নত করতে সহায়তা দেবে। এটি হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। পেশী শিথিল করে : সকালে ব্যায়ামের পর কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে পেশির টান কমে এবং শরীর শিথিল হয়। ওজন কমাতে সাহায্য করে : কুসুম গরম পানিতে গোসল বিপাক ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। ক্লান্তি ও ব্যথা উপশম হয় : কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে শারীরিক ক্লান্তি ও ব্যথা কমে আসে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়। সতর্কতা: অঅতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে তা চুল ও ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দিতে পারে, যার ফলে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হতে পারে। ত্বকের ক্ষতি এড়াতে এবং সর্বোচ্চ উপকার পেতে হালকা গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।

শিশুদের খর্বাকৃতির কারণ ও প্রতিকার

শিশুদের খর্বাকৃতির কারণ ও প্রতিকার শিশুদের খর্বাকৃতি বা short stature বলতে বয়স অনুযায়ী উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় কম হওয়াকে বোঝায়। কোনো শিশুর উচ্চতা যদি তৃতীয় পারসেন্টাইলের নিচে থাকে, তবে তাকে খর্বাকৃতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খর্বাকৃতি দুই ধরনের-স্বাভাবিক ভেরিয়েন্ট ও প্যাথলজিক্যাল। স্বাভাবিক ভেরিয়েন্ট খর্বাকৃতির কারণ বংশগত বা গঠনগত হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বংশগত কারণই প্রধান; এ ক্ষেত্রে পরিবারে মা-বাবা বা ভাইবোন খাটো হলে শিশুও খর্বাকৃতির প্রবণতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। একে বলা হয় ফ্যামিলিয়াল খর্বাকৃতি। গঠনগত খর্বাকৃতির ক্ষেত্রে শৈশবের বৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরগতির হয় এবং বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন দেরিতে দেখা দেয়। তবে এই ধরনের শিশু পরে প্রায় স্বাভাবিক উচ্চতায় পৌঁছায়। অন্যদিকে, প্যাথলজিক্যাল খর্বাকৃতি বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগ, হরমোনজনিত সমস্যা, অপুষ্টি, সিনড্রোম এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে দেখা দিতে পারে। হাঁপানি, জন্মগত হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, লিভার বা কিডনির রোগ, থ্যালাসেমিয়া, রিকেটস ও সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। দীর্ঘদিন স্টেরয়েড গ্রহণ করলেও বৃদ্ধি কমে যায়। থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি, গ্রোথ হরমোনের স্বল্পতা কিংবা কুশিং সিনড্রোমের মতো হরমোনজনিত সমস্যাও শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টি শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিকে দমিয়ে দেয়; পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ না পেলে তারা পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী বাড়তে পারে না। জন্মকালীন অপুষ্টি বা ওটএজ মায়ের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা ভ্রƒণের জটিলতার কারণে হয়ে থাকে। এছাড়া ডাউন সিনড্রোম, টার্নার সিনড্রোম ও অ্যাকন্ড্রোপ্লাসিয়ার মতো সিনড্রোমিক অবস্থায়ও বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পারিবারিক অশান্তি, বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ বা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বংশগত ও গঠনগত খর্বাকৃতির ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না; যথাযথ কাউন্সেলিংই যথেষ্ট। দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে মূল কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিলে বৃদ্ধির হার স্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসে। হরমোনজনিত সমস্যায় থাইরয়েড হরমোন বা গ্রোথ হরমোন প্রয়োগ করা হয়। অপুষ্টি প্রতিরোধে শৈশব থেকেই শিশুর পুষ্টির প্রতি নজর দেওয়া জরুরি এবং গর্ভাবস্থায় মায়ের নিয়মিত যত্ন নিলে জন্মকালীন অপুষ্টি কমানো যায়। টার্নার সিনড্রোমে গ্রোথ হরমোন থেরাপির মাধ্যমে উচ্চতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। মানসিক চাপজনিত সমস্যায় শিশুকে চাপমুক্ত পরিবেশে বড় করা এবং প্রয়োজনে কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা, শৈশবে সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। রোগ নির্ণয়, সঠিক চিকিৎসা, নিয়মিত চেকআপ ও বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে খর্বাকৃতি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। খর্বাকৃতি শিশু প্রায়ই সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয় এবং হীনমন্যতায় ভোগে। তাই অভিভাবক ও সমাজের অন্যদের সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।

শীতে প্রতিদিন অল্প করে ঘি খান

শীতে প্রতিদিন অল্প করে ঘি খান   বিভিন্ন ধরনের খাবারকে সুস্বাদু করার কাজে ব্যবহার করা হয় ঘি। আসলেই কি ঘি-এর কাজ এখানেই শেষ? শীতের সময়ে যদি প্রতিদিন অল্প করে ঘি খান, তাহলে শরীরে কী ঘটতে পারে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘি উষ্ণতা প্রদান করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক এবং জয়েন্টগুলোকে শক্তিশালী করে শীতকালীন শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখে। শীতকালে ঘি কীভাবে আমাদের শরীরের সেরা সঙ্গী হয়ে ওঠে, চলুন জেনে নেওয়া যাক- উষ্ণতা এবং শক্তি প্রদান করে ঘি স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ যা অভ্যন্তরীণ তাপ উৎপন্ন করে। অতএব, যারা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা, শীতকালে ক্ষুধা না লাগা বা অলসতায় ভোগেন তাদের জন্য এটি খুবই কার্যকর। অল্প পরিমাণে খেলে শক্তির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যা দিনের বেলায় আপনাকে সচল রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শীতকালে সংক্রমণও বেশি হয়ে থাকে, তাই আমাদের শরীরের শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘি-য়ে বিউটাইরেট থাকে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ অন্ত্র সরাসরি উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। বিউটাইরেট প্রদাহ কমায় এবং অন্ত্রের আস্তরণকে সাহায্য করে, যা শরীরকে ভালোভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ত্বক এবং চুলের জন্য চমৎকার বাতাসে আর্দ্রতার অভাবের কারণে শুষ্ক, খসখসে ত্বক এবং ভঙুর চুল শীতকালে সাধারণ অভিযোগ। ঘি-য়ে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা শরীরকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ঘিকে একটি রসায়নও বলা হয়, যার অর্থ উজ্জ্বল ত্বকের জন্য একটি পুনরুজ্জীবিত অমৃত। জয়েন্টের ব্যথা এবং প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয় ঠান্ডা আবহাওয়া জয়েন্টের শক্ত হওয়া এবং শরীরের ব্যথার সমস্যাকে আরও খারাপ করে। কিন্তু ঘি-তে প্রাকৃতিক লুব্রিকেটিং গুণ রয়েছে, যা গতিশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শীতকালে এই পণ্যটির প্রতিদিনের ব্যবহার জয়েন্টের কাঠিন্য হ্রাস করে এবং পুষ্টি জোগায়। পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধি করে অনেক শীতকালীন সবজি, যেমন গাজর, পালং শাক, সরিষার শাক, চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে থাকে। স্বাস্থ্যকর চর্বি ছাড়া আমাদের শরীর এই ভিটামিনগুলো শোষণ করতে পারে না। ঘি পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং খাবারকে আরও কার্যকরী করে তোলে।

লিভার ড্যামেজের যে ৪ লক্ষণ অবহেলা করবেন না

লিভার ড্যামেজের যে ৪ লক্ষণ অবহেলা করবেন না   লিভারে সমস্যা হলে শরীরে তার লক্ষণ ফুটে ওঠে। ত্বকের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ আসলে বিভিন্ন ধরনের এবং অন্তর্নিহিত প্যাথলজির জন্য সতর্কতা সংকেত হিসেবে কাজ করে। শুরুতেই শনাক্ত করা গেলে প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। লিভারের রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত ত্বকের পরিবর্তন খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৪টি লক্ষণ সম্পর্কে- জন্ডিস (ত্বক এবং চোখ হলুদ হওয়া) কারও লিভারের রোগের সবচেয়ে স্বীকৃত লক্ষণের মধ্যে একটি হলো জন্ডিসের সূত্রপাত। এটি এমন অবস্থা যেখানে ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ উভয়ই হলুদ হয়ে যায়। লিভার বিলিরুবিনকে কার্যকরভাবে প্রক্রিয়া করতে পারে না, যা লোহিত রক্তকণিকার ভাঙন। তখন বিলিরুবিন শরীরে জমা হয় এবং টিস্যুগুলোকে হলুদ করে ফেলে। জন্ডিস হালকা থেকে বেশ গুরুতর পর্যন্ত হতে পারে। তাই এ ধরনের লক্ষণ ফুটে উঠলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী লিভার রোগের ফলে ত্বকে অস্বাভাবিক রক্তনালী পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। স্পাইডার অ্যাঞ্জিওমাস হলো ছোট, লাল মাকড়সার মতো রক্তনালী যা মুখ, ঘাড় এবং বুকে দেখা যেতে পারে। পালমার এরিথেমা হলো আরেকটি সম্পর্কিত অবস্থা যার সঙ্গে হাতের তালু লাল হয়ে যাওয়া এবং উষ্ণতা দেখা দেয়। উভয়ই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং লিভারের কর্মহীনতার ফলে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। ত্বকে চুলকানি (প্রুরিটাস) প্রুরিটাস বা ফুসকুড়ি ছাড়া চুলকানি লিভারের রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিরক্তিকর লক্ষণ। এটি রক্তে পিত্ত লবণ জমা হওয়ার ফলে ঘটে কারণ লিভার স্বাভাবিকভাবে পিত্ত নিঃসরণ করতে পারে না। ত্বকে জমা পিত্ত লবণ প্রদাহ সৃষ্টি করে যে কারণে চুলকানির সৃষ্টি হয়। চুলকানি তীব্র এবং অবিরাম হতে পারে এবং এর ফলে জীবনের মান প্রভাবিত হয়। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তাই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। হাইপার-পিগমেন্টেশন এবং নখের পরিবর্তন লিভারের রোগে ত্বকের বিভিন্ন রঞ্জক পরিবর্তনও দেখা দেয়, যার ফলে ত্বকে কালো দাগ দেখা দিতে পারে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের কারণে এটি ঘটে বলে মনে করা হয়। নখের বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন হতে পারে, যেমন টেরির নখ (সাদা নখ যার ডগায় গোলাপী রঙের সরু ব্যান্ড থাকে) অথবা মুয়ের্কের লাইন (নখ জুড়ে সাদা ব্যান্ড), উভয়ই লিভারের কার্যকারিতা এবং প্রোটিন বিপাক ব্যাহত করে।

হাঁটার জন্য আমাদের জুতা যেমন হওয়া উচিত

হাঁটার জন্য আমাদের জুতা যেমন হওয়া উচিত   হাঁটা এমন একটি দৈনন্দিন শারীরিক কার্যকলাপ, যা বয়স কিংবা পেশা অতিক্রম করে সবার জীবনে প্রয়োজন হয়ে ওঠে। কিন্তু নিয়মিত হাঁটা আরামদায়ক ও উপকারী করার জন্য সঠিক জুতা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত জুতা শুধু হাঁটাকে আরামদায়ক করে না, পায়ের ব্যথা কমায় ও বিভিন্ন আঘাতজনিত সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই হাঁটার জুতা বেছে নেওয়ার সময় কিছু মৌলিক বিষয় বিবেচনায় রাখা জরুরি। প্রথমেই আসা যাক, জুতার সঠিক সাইজ বিষয়ে। জুতাটি হতে হবে এমন, যেন পায়ের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে খাপ খায়। আঙুলের সামনে সামান্য ফাঁকা জায়গা থাকা ভালো, যাতে হাঁটার সময় আঙুলে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। এরপর আসে জুতার ওজন। হাঁটার জন্য হালকা ওজনের জুতা সবচেয়ে ভালো। কারণ এটি চলাফেরায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে না এবং দীর্ঘক্ষণ হাঁটলেও ক্লান্তি বাড়ায় না। জুতার সোলের গঠনও গুরুত্বপূর্ণ। নিচের অংশ বা আউটসোল যদি রাবারের হয়, তাহলে গ্রিপ ভালো পাওয়া যায় এবং পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ার ভয় কম থাকে। ননসিøপ ডিজাইন রাস্তা বা মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে যায়। মাঝের অংশ বা মিডসোল পায়ের ওপর ধাক্কা বা কম্পনের চাপ কমিয়ে আরাম দেয়। ইভা ফোম বা জেল কুশন থাকলে দীর্ঘ সময় হাঁটলেও পায়ে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ভেতরের অংশ বা ইনসোলে নরম কুশন থাকা উচিত, যাতে পায়ের তালুকে সাপোর্ট দেয় এবং চাপ কমায়। যাদের পায়ের সমস্যা আছে, তাদের জন্য অর্থোপেডিক ইনসোল ভালো সাপোর্ট দিতে পারে।অনেকের পায়ের তালুর বাঁক হয় কম বা বেশি। এমন ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের আর্চ সাপোর্ট থাকা জুতা নির্বাচন করতে হয়। একইভাবে গোড়ালিতে ভালো সাপোর্ট থাকলে দীর্ঘক্ষণ হাঁটলেও গোড়ালি ও হাঁটুর ওপর বাড়তি চাপ পড়ে না। জুতার ওপরের অংশ এমন উপাদানে তৈরি হওয়া উচিত, যাতে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে। শ্বাসপ্রশ্বাস-নেওয়া সক্ষম জালযুক্ত কাপড় বা ক্যানভাস পা ঠান্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। অনেক ক্ষেত্রে মানসম্মত সিনথেটিক লেদারও আরামদায়ক হতে পারে। হিলের উচ্চতা খুব বেশি বা খুব কম হওয়া ক্ষতিকর। সাধারণত শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৫ ইঞ্চি হিল হাঁটার জন্য উপযোগী। সম্পূর্ণ ফ্ল্যাট জুতা ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ তাতে পায়ের গঠনে চাপ পড়ে। জুতার সামনের অংশ সহজে বাঁকানো যায় কিনা, সেটিও বিবেচনা করা দরকার। খুব শক্ত এবং অনমনীয় জুতা হাঁটার স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে। হাঁটার জুতায় লেইস বা ভেলক্রো স্ট্র্যাপ থাকলে পায়ে ফিট করানো সহজ হয়। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য ভেলক্রো স্ট্র্যাপ বেশ সুবিধাজনক। দীর্ঘস্থায়ী ও ভালো মানের ব্র্যান্ডের জুতা নির্বাচন করলে তা দ্রুত নষ্ট হয় না এবং পায়ের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দীর্ঘদিন ধরে বজায় থাকে। যাদের প্লান্টার ফ্যাসাইটিস বা হিল স্পারের সমস্যা আছে, তাদের জন্য বাড়তি আর্চ সাপোর্ট ও নরম হিল কুশন অপরিহার্য। ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে নরম, সেলাইবিহীন ইনসোল থাকা জুতা বেছে নেওয়া উচিত, যাতে ঘর্ষণে ক্ষত বা ফোসকা হওয়ার ঝুঁকি কমে। ফ্ল্যাটফুট থাকলে বিশেষ আর্চ সাপোর্টযুক্ত জুতা ব্যবহার করা জরুরি। সব মিলিয়ে যাদের পায়ের বিশেষ কোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে জুতা নির্বাচন করাই সবচেয়ে নিরাপদ। ডা. এম ইয়াছিন আলী

প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটলে হার্টের যেসব উপকার হয়

প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটলে হার্টের যেসব উপকার হয় প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য একটি শক্তিশালী প্রেসক্রিপশন। এই সহজ কার্যকলাপ বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটায়, মেজাজ উন্নত করে, স্ট্রেস হরমোন হ্রাস করে, রক্তে শর্করার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। বিশেষজ্ঞরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং হৃদস্পন্দনের সমস্যা মোকাবিলায় এর ভূমিকা তুলে ধরেছেন, প্রমাণ করেছেন যে প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস স্বাস্থ্যের পরিবর্তন আনতে পারে।হৃদরোগের সংখ্যা বাড়ছে। সিডিসি অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হৃদরোগের কারণে হয়। যদিও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ানোর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, তবে অনেকেই যা উপেক্ষা করেন তা হলো হৃদরোগ দূরে রাখতে শারীরিক কার্যকলাপের অসাধারণ শক্তি।হাঁটাকে একটি দুর্দান্ত ব্যায়াম। এটি নড়াচড়ার কারণে ঘটে যাওয়া শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের একটি ধারা। আপনি ক্লান্ত থেকে উদ্যমী, উদ্বিগ্ন থেকে শান্ত হবেন, যদি নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করেন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন হাঁটা এবং মাঝারি থেকে জোরালো শারীরিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়া উভয়ই মেনোপজাল পরবর্তী নারীদের হৃদরোগজনিত রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে। হার্ট জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্রুত হাঁটার গতি এবং এই গতিতে ব্যয় করা সময়, অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন, টাকাইকার্ডিয়া (দ্রুত হৃদস্পন্দন) এবং ব্র্যাডিকার্ডিয়া (খুব ধীর হৃদস্পন্দন) এর মতো হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি কমাতে পারে। হাঁটা হলো শরীর, মস্তিষ্ক এবং আত্মার জন্য সবচেয়ে অবমূল্যায়িত থেরাপি। যখন আপনি এক মিনিট হাঁটেন, তখন রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্কে উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটে। যেমন মেজাজ উন্নত হতে শুরু করে এবং উদ্বেগ কমতে শুরু করে। যখন আপনি ১০ মিনিটের সীমায় পৌঁছান, তখন আপনার শরীরের প্রাথমিক স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল হ্রাস পেতে শুরু করে। এটি প্রশান্তির অনুভূতি নিয়ে আসে। প্রতি মিনিটে সুবিধাগুলো বৃদ্ধি পায়। ১৫ মিনিট হাঁটার পরে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল হতে শুরু করে। ৩০ মিনিটের মধ্যে শরীর চর্বি ঝরানোর মোডে চলে যায়। যারা ওজন কমানোর যাত্রায় থাকেন বা সুস্থ ওজন বজায় রাখতে চান তারা মাত্র আধ ঘণ্টা হাঁটার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন। শারীরিক সুবিধার পাশাপাশি, হাঁটা মানসিক সুস্থতাও প্রদান করে। প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাসের ফলে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা কমে যেতে শুরু করে। এতে ডোপামিনের মাত্রা বাড়তে থাকে এবং সুখ অনুভব সহজ হয়। সাইকোলজি অফ স্পোর্ট অ্যান্ড এক্সারসাইজ জার্নালে প্রকাশিত টেক্সাস ইউনিভার্সিটি অফ আর্লিংটনের গবেষকদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৩০ মিনিট বসে থাকার পর হাঁটার মতো হালকা কার্যকলাপ করলে শক্তি এবং মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়। মনে রাখবেন, আপনার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য জিম সদস্যপদ বা দামি সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন নেই। শুধু নিয়মিত হাঁটার অভ্যাসই উপকার বয়ে আনতে পারে।