জরায়ু নিয়ে কোন বয়স থেকে মেয়েদের সতর্ক হওয়া উচিত

জরায়ু নিয়ে কোন বয়স থেকে মেয়েদের সতর্ক হওয়া উচিত ওজন বেশি বা স্থূলত্ব রয়েছে এমন মহিলাদের জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, ওজন বেশি মানেই সিস্ট হবে, তা নয়। জরায়ুতে সিস্ট বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ওভারিয়ান সিস্ট’ হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ কাজ করে। তাই ঝুঁকির কারণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকাই জরুরি। ওভারিয়ান সিস্ট কী? ‘ওভারিয়ান সিস্ট’ মূলত ডিম্বাশয়ের ভিতরে থলির মতো মাংসল পিণ্ড, যার ভিতরে রক্ত বা তরল পদার্থ থাকতে পারে। চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতে, সিস্ট মানেই ক্যানসার নয়। এটি একটি টিউমার জাতীয় বৃদ্ধি, যা ম্যালিগন্যান্ট (ক্যানসারযুক্ত) অথবা বিনাইন (ক্যানসারহীন) হতে পারে। তবে যদি সিস্টের দেওয়াল পুরু হয় এবং কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হয়, তখন তা ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে। কোন বয়স থেকে ঝুঁকি বাড়ে? বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেয়েদের জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ সময়ের সিস্ট তাড়াতাড়ি সেরে যায়। কিন্তু রজোনিবৃত্তির পর (menopause-এর পর) সিস্ট হলে তা বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এ সময়ে শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এই হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই সিস্ট মারাত্মক আকার নিতে পারে এবং অনিয়মিত রক্তপাতের ঝুঁকি তৈরি হয়। ওভারিয়ান সিস্টের ঝুঁকি যাদের বেশি : যাদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) রয়েছে যাদের এন্ডোমেট্রিওসিস আছে হরমোন থেরাপি নেওয়া মহিলারা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন নারীরা অন্য কোনো ক্যানসারের চিকিৎসা যেমন রেডিয়োথেরাপি বা কেমোথেরাপি নিয়েছেন স্তন ক্যানসারের ওষুধ ব্যবহারকারীরা সম্ভাব্য জটিলতা ও চিকিৎসা ডিম্বাশয়ের সিস্ট থাকলে ডিম্বাণু পরিপক্ব হতে বা বেরোতে সমস্যা হয়, ফলে গর্ভধারণে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সিস্ট বিনাইন হয় এবং ওষুধের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকলে CA-125 টেস্ট, আলট্রাসাউন্ড এবং প্রয়োজনে সার্জারি করা হয়। তবে প্রতিটি সিস্টের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয় না অনেক ক্ষেত্রেই ওষুধ ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট। চিকিৎসকদের পরামর্শ : ১৪ বছর বয়সের পর থেকেই মেয়েদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি। মাসিক অনিয়ম, তলপেটে ব্যথা, ওজন বেড়ে যাওয়া বা মুখে ব্রণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রজোনিবৃত্তির পর অনিয়মিত রক্তপাত হলে দ্রুত গাইনোকলজিস্টের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসকদের মতে, সচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা থাকলে ওভারিয়ান সিস্ট বড় কোনো সমস্যা নয়, বরং সময়মতো ধরা পড়লে সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

বাজ অলড্রিনের ক্যামেরায় ধরা পড়ে মানবজাতির প্রথম মহাকাশ সেলফি !

বাজ অলড্রিনের ক্যামেরায় ধরা পড়ে মানবজাতির প্রথম মহাকাশ সেলফি ! মহাকাশ অনুসন্ধানের ইতিহাসে ১৯৬৬ সাল একটি অনন্য অধ্যায়। ওই বছরই প্রথমবারের মতো একজন নভোচারী মহাকাশে নিজের ছবি তোলেন—যা ইতিহাসে স্থান পায় পৃথিবীর বাইরের প্রথম সেলফি হিসেবে। এই ঐতিহাসিক ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী এডউইন ই. ‘বাজ’ অলড্রিন জুনিয়র, জেমিনি–১২ মিশনের সময়। জেমিনি–১২ মিশনটি ১৯৬৬ সালের ১১ নভেম্বর মহাকাশে পাঠানো হয়, মহাকাশযানের ডকিং (সংযুক্তকরণ) কৌশল পরীক্ষা করার জন্য। অভিযানে কমান্ডার ছিলেন জেমস এ. লভেল জুনিয়র, আর পাইলট ছিলেন বাজ অলড্রিন। ১৩ নভেম্বর অলড্রিন তার তিনটি স্পেসওয়াকের (মহাশূন্যে হাঁটা) দ্বিতীয়টিতে অংশ নেন, যার সময়কাল ছিল ২ ঘণ্টা ৬ মিনিট। মূলত দৃশ্যমান তারকাক্ষেত্রের ছবি তোলাই ছিল তার দায়িত্ব। কাজের ফাঁকেই তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের একটি ছবি তোলেন—যা পরবর্তীতে পৃথিবীর বাইরের প্রথম সেলফি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ছবিতে অলড্রিনকে দেখা যায় গভীর মহাকাশের পটভূমিতে, তার স্পেসস্যুট ও হেলমেটের প্রতিফলনে মহাকাশযান ও পৃথিবীর অংশও দেখা যায়। পরবর্তীতে অলড্রিন অ্যাপোলো–১১ অভিযানে চন্দ্রাভিযানেও অংশ নেন এবং জানান, তার ঝুলিতে এই ‘প্রথম সেলফি’ একটি গর্বের অর্জন। ছবিটি তোলার সময় অলড্রিন ব্যবহার করেছিলেন একটি বিশেষ আলট্রাভায়োলেট (ইউভি) ক্যামেরা, যা তৈরি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নভোচারী কার্ল হেনাইজ। ইউভি বিকিরণ (অদৃশ্য আলোর রশ্মি) পরিমাপের জন্য বিশেষ লেন্স ও ফিল্টার ব্যবহৃত হয়েছিল, যেন অন্য বিকিরণগুলো বাদ দেওয়া যায়। জেমিনি–১২ মিশনে ব্যবহৃত আসল ইউভি ক্যামেরাটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। মানব মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এটা এক স্মারক হিসেবে বিবেচিত।

অস্ট্রেলিয়ায় মিলল ৫ কোটি ৫০ লাখ বছর প্রাচীন কুমিরের ডিমের খোসা !

অস্ট্রেলিয়ায় মিলল ৫ কোটি ৫০ লাখ বছর প্রাচীন কুমিরের ডিমের খোসা ! অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে এক ভেড়ার খামারের পেছনের উঠোনে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ বছর পুরোনো কুমিরের ডিমের খোসা পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এগুলো সম্ভবত প্রাগৈতিহাসিক ধরনের কুমির ‘ড্রপ ক্রোক’-এর। তারা গাছে উঠে শিকার ধরত বলে ধারণা করা হয়। এই আবিষ্কারটি সম্প্রতি জার্নাল অব ভার্টিব্রেট প্যালিয়োনটোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ডিমের খোসাগুলো ‘মেকোসুকাইন’ নামের এক বিলুপ্ত কুমির প্রজাতির। তারা অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে বাস করত। অস্ট্রেলিয়া তখন ছিল অ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত এক মহাদেশের অংশ। গবেষণার সহলেখক ও ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের জীবাশ্মবিজ্ঞানী প্রফেসর মাইকেল আর্চার বলেন, ড্রপ ক্রোক ধারণাটা অদ্ভুত শোনালেও, কিছু কুমির হয়তো চিতাবাঘের মতো গাছ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে শিকার ধরত। এই প্রজাতির কুমিরের দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ মিটার পর্যন্ত হতো। তারা ৩৮ লাখ বছর আগের আধুনিক লবণপানির বা মিঠা পানির কুমিরের আগের যুগের বাসিন্দা ছিল। ডিমের খোসাগুলো বহু দশক আগে পাওয়া গেলেও সম্প্রতি স্পেনের বিজ্ঞানীদের সহায়তায় বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আগের কিছু গবেষণায় পাওয়া যায়, প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বছর আগেও মেকোসুকাইন কুমিররা বেঁচে ছিল এবং তাদের কিছু ছিল আধা-গাছে ওঠা বা আংশিক গাছে বসবাসকারী ‘ড্রপ ক্রোক’। প্রফেসর আর্চার ১৯৮০-এর দশক থেকে কুইন্সল্যান্ডের মারগন এলাকায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জায়গাটি এখন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পুরনো জীবাশ্ম আবিষ্কারের স্থানগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত। গবেষক ড. মাইকেল স্টেইন জানান, এই প্রাচীন বনভূমিতেই পাওয়া গেছে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো গান গাওয়া পাখি, অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দিকের ব্যাঙ ও সাপ, দক্ষিণ আমেরিকান বংশের ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বাদুড়ের জীবাশ্ম। আর্চার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৮৩ সালে আমরা সেখানে গিয়ে স্থানীয় কৃষকের দরজায় কড়া নেড়ে বলেছিলাম—আমরা কি একটু খনন করতে পারি? তারা হাসিমুখে বলেছিল, ‘অবশ্যই।’ তারপর থেকেই একের পর এক অবাক করা আবিষ্কার আসছে, এবং আমরা জানি, এখনো অনেক রহস্য মাটির নিচে লুকিয়ে আছে। এই আবিষ্কার শুধু প্রাচীন প্রাণিবিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত খুলেই দেয়নি, বরং লক্ষ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রাণজগৎ কতটা বৈচিত্র্যপূর্ণ ও চমকপ্রদ ছিল দেখিয়েছে। সূত্র : বিবিসি

সবুজ-লাল আলোয় রঙিন রাতের আকাশ !

সবুজ-লাল আলোয় রঙিন রাতের আকাশ ! সূর্যের শক্তিশালী বিকিরণে সৃষ্ট বিরল প্রাকৃতিক দৃশ্য নর্দার্ন লাইটস (Aurora Borealis) এবার দেখা গেছে দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, আলাবামা, জর্জিয়া এবং এমনকি উত্তর ফ্লোরিডা থেকেও এই মনোমুগ্ধকর আলোকরেখা দেখা গেছে মঙ্গলবার রাতে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সূর্য থেকে নির্গত একাধিক শক্তিশালী বিকিরণ বা করোনাল মাস ইজেকশন পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে আঘাত হেনেছে। এই বিকিরণগুলো বায়ুমণ্ডলের উচ্চস্তরে থাকা বিদ্যুতায়িত কণার সঙ্গে সংঘর্ষে রঙিন আলোর সৃষ্টি করেছে। ফলে আকাশজুড়ে সবুজ, লাল ও বেগুনি রঙের ঢেউয়ের মতো আলো ছড়িয়ে পড়েছে। এই সৌরঝড়কে জি-৪ (G4) পর্যায়ের ‘গুরুতর ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার। পাঁচ ধাপের স্কেলে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রা। আগামী দুই রাতেও এমন ঝড় অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জি-৪ মাত্রার ঝড়ে সাধারণত বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণ সমস্যা, জিপিএস সিগন্যাল বিভ্রাট, এবং রেডিও ও স্যাটেলাইট যোগাযোগে সাময়িক বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে এইবারের ঝড়টি এখন পর্যন্ত শুধু আকাশে চমৎকার আলোর প্রদর্শনী ঘটিয়েছে, বড় কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। স্পেস ওয়েদার বিশেষজ্ঞ শন ডাল জানিয়েছেন, সূর্যের সক্রিয় দাগের একটি বড় গুচ্ছ থেকে আরও শক্তিশালী বিকিরণ বুধবার দুপুর নাগাদ পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারে। এতে আগামী রাতগুলোতেও দক্ষিণাঞ্চলে আলোর এই নাচ দেখা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌরঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট এই নর্দার্ন লাইট কেবল মনোমুগ্ধকর দৃশ্যই নয়, বরং এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় মানব সভ্যতা যত উন্নতই হোক না কেন, প্রকৃতি ও সূর্যের প্রভাবের বাইরে নয়।

হারাচ্ছে আলোর পোকা জোনাকি, ফেরানোর উপায় কি?

হারাচ্ছে আলোর পোকা জোনাকি, ফেরানোর উপায় কি? কখনও সন্ধ্যা নামলেই মাঠে, গাছতলায় কিংবা খোলা জলাভূমির ধারে জড়ো হতো শিশুর দল। তাদের হাতে ধরা পড়ত ছোট্ট একটি আলোর বিন্দু, নাম তার জোনাকি। সেই আলো ছিল নিখাদ বিস্ময়, ছিল রাতের সৌন্দর্য। কিন্তু সময় বদলেছে। শৈশবের সেই আলোর স্মৃতি এখন অতীত হয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় বলা হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে দ্রুত কমে যাচ্ছে জোনাকির সংখ্যা। আর এই বিলুপ্তির পেছনে আছে প্রধান তিনটি কারণ; বাসস্থান ধ্বংস, আলো দূষণ এবং কীটনাশকের ব্যবহার। বিশ্বে প্রায় দুই হাজার প্রজাতির জোনাকি রয়েছে। বেশিরভাগ জোনাকি পোকা জন্মায় এবং বেঁচে থাকে আর্দ্র পরিবেশে; পুকুরের ধারে, জলাভূমিতে, পচা কাঠের পাশে বা অন্ধকার বনে। কিন্তু উন্নয়ন আর নগরায়নের চাপ সেই পরিবেশকে গ্রাস করে নিচ্ছে। খোলা মাঠ ভরাট করে বহুতল ভবন, ম্যানগ্রোভ বনের জায়গায় কৃষিখামার, নদীর তীরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা; সব মিলিয়ে জোনাকির জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্ধকার এবং নীরব পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী সারা লুইসের নেতৃত্বে ২০২০ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, জোনাকিদের টিকে থাকার জন্য নির্দিষ্ট পরিবেশগত শর্ত প্রয়োজন। তার ভাষায়, জোনাকিদের জীবনচক্র এমন এক জায়গার ওপর নির্ভরশীল, যেখানে এদের জন্ম হয়, তারা সাধারণত সেখানেই থাকে। বলেন গবেষক দলটির প্রধান। সেই পরিবেশ হারালে তারা প্রজনন করতে পারে না, প্রজন্ম জন্মায় না। আরেকটি বড় হুমকি কৃত্রিম আলো। জোনাকিরা তাদের দেহের আলো ব্যবহার করে সঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং প্রজনন করে। পুরুষ জোনাকি আলো জ্বেলে উড়ে বেড়ায়, স্ত্রী জোনাকি অপেক্ষা করে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য। কিন্তু মানুষের রাস্তার লাইট, বিজ্ঞাপনের আলো, গাড়ির হেডলাইট; সব কৃত্রিম আলো জোনাকিদের নিজেদের সংকেত পাঠানো ব্যাহত করে। ফলে তারা সঙ্গী খুঁজে পায় না। গবেষকদের মতে, পৃথিবীর মোট স্থলভাগের অন্তত ২৩ শতাংশ এলাকায় রাতের অন্ধকার আর অন্ধকার থাকে না, এটা জোনাকিদের জন্য মৃত্যুঘণ্টা। এদিকে কৃষিজমিতে ব্যবহার করা কীটনাশক জোনাকির লার্ভার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। লার্ভা সাধারণত এক থেকে দুই বছর বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু মাটির রাসায়নিক উপাদান তাদের বেড়ে ওঠার সময়ই ধ্বংস করে দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কীটনাশকের প্রভাবে জোনাকির মৃত্যুহার ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ‘জোনাকি ট্যুরিজম’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নৌকায় করে নেওয়া হচ্ছে জোনাকির আবাসস্থলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পর্যটনে আলোর ব্যবহার, শব্দ এবং নৌকার ইঞ্জিন জোনাকিদের জীবনচক্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তবে আশার কথা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো সময় আছে। সচেতনতা বাড়ানো গেলে জোনাকিকে রক্ষা করা সম্ভব। তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে অপ্রয়োজনীয় আলো কমাতে হবে, কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং জলাভূমি, বন ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে।

বিদায়বেলায় ‘টাটা’ বলার প্রচলন যেভাবে শুরু

বিদায়বেলায় ‘টাটা’ বলার প্রচলন যেভাবে শুরু বিদায়ের সময় বন্ধুকে, সহকর্মীকে বা প্রিয়জনকে বিদায় জানাতে আমরা প্রায়ই বলি – ‘টাটা’। এই শব্দটি এতটাই পরিচিত যে, বয়স বা প্রজন্ম নির্বিশেষে সবার মুখে এটি শোনা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- বিদায়ের সময় সবাই কেন বলে ‘টাটা’? ভাষাবিদদের মতে, ‘টাটা’ মূলত ব্রিটিশ ইংরেজি থেকে আগত একটি শব্দ। এটি ‘গুডবাই’ বা ‘ফেয়ারওয়েল’-এর তুলনায় অনেক বেশি অনানুষ্ঠানিক ও আন্তরিক অভিব্যক্তি। উনিশ শতকের শেষ দিকে ইংল্যান্ডে, বিশেষ করে ককনি (Cockney) উপভাষায়, শব্দটির প্রচলন শুরু হয়। সেখান থেকে এটি পুরো ব্রিটিশ সমাজে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে উপনিবেশের প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শব্দটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর সহজ উচ্চারণ। শিশুদের মুখে উচ্চারণ সহজ বলে মা–বাবারা প্রাথমিকভাবে বিদায় জানাতে শেখানোর সময় বলেন- বলো টাটা। শিশুরাও হাসিমুখে হাত নাড়িয়ে বলে ‘টাটা’, যা একধরনের স্নেহমিশ্রিত বিদায়ের রীতি হয়ে ওঠে। আরও একটি মজার দিক হলো, অনেক ভাষায় ‘টাটা’ শব্দের অর্থ ‘বাবা’। ফলে যখন শিশুরা ‘টাটা’ বলে বিদায় জানায়, তখন সেটি একদিকে আবেগের প্রকাশ, অন্যদিকে ধ্বনিগতভাবে সহজ একটি বিদায়ের ইঙ্গিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মিষ্টি ধ্বনি বিদায়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ব্রিটিশ উপনিবেশের যুগে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শব্দটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে এখন ‘টাটা’ এক অনানুষ্ঠানিক, বন্ধুত্বপূর্ণ বিদায়ের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। ভাষাবিদরা বলেন, আনুষ্ঠানিক পরিবেশে ‘গুডবাই’, ‘ফেয়ারওয়েল’ বা ‘বিদায়’ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ‘টাটা’, ‘বাই’ বা ‘সি ইউ লেটার’-এর মতো শব্দই আন্তরিকতা প্রকাশ করে।

বহুরূপী মানুষ চেনার সহজ উপায়

বহুরূপী মানুষ চেনার সহজ উপায় অনেক সময় আমরা মানুষের মিষ্টি কথায় সহজেই প্রলুব্ধ হয়ে যাই। কিন্তু কি জানেন? সব মিষ্টি কথা মানে সত্যিকারের ভালোবাসা বা আন্তরিকতা নয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, বহুরূপী বা ফেক মানুষদের আচরণে এমন কিছু লক্ষণ থাকে যা চিনে নিলে আপনি মানসিক শান্তি ও আবেগ রক্ষায় সচেতন থাকতে পারবেন। . খুব দ্রুত এবং অতিরিক্ত ভালো আচরণ যারা সত্যিকারের ভাল মানুষ, তারা কখনোই অতিরিক্ত অভিনয় করে না বা খুব দ্রুত বিশ্বাস জেতার চেষ্টা করে না। কিন্তু বহুরূপী মানুষ প্রথম থেকেই অতিরিক্ত মিষ্টি বা দয়ালু হলে সেটি সতর্ক হওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। . বারবার নিজের চরিত্র বদলানো একই ব্যক্তি বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। কেউ নম্র ও ভদ্র, আবার অন্য কারো কাছে আত্মবিশ্বাসী। এ ধরনের আচরণ মনোবিজ্ঞানে ‘ইম্প্রেশন ম্যানেজমেন্ট’ নামে পরিচিত। . সত্যিকারের আবেগ তৈরি করতে না পারা এরা আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের স্বার্থে সম্পর্ক স্থাপন করে, সত্যিকারের ভালোবাসা বা সহানুভূতির জন্য নয়। . সব সময় অন্যের সমালোচনা করা বহুরূপী মানুষরা অন্যের গসিপ করে এবং সমালোচনা করতে ভালোবাসে। তারা নিজস্ব অনিশ্চয়তা ও কম আত্মবিশ্বাস লুকানোর জন্য এমন আচরণ করে। যারা অন্যদের খারাপ কথা বলে, তারা আপনার পেছনেও একই কাজ করবে। . বন্ধুসুলভ আচরণ করে গোপনে প্রতিযোগিতা যদিও বন্ধুত্বের ভান করে, তাদের মধ্যে হিংসা ও প্রতিযোগিতার মনোভাব লুকানো থাকে। তারা আপনার সাফল্যে খুশি না হয়ে আপনাকে ছোট করার চেষ্টা করে। মনোবিজ্ঞানে এটিকে ‘কভারট রাইভেলারি’ বলা হয়। সত্যিকারের বন্ধুত্ব হলো একে অপরকে উৎসাহ দেওয়া, আর বহুরূপী মানুষের সাথে সম্পর্ক মানসিক শান্তি নষ্ট করতে পারে। তাই, এই লক্ষণগুলো বুঝে সাবধান হওয়া জরুরি।

আজ একা থাকার দিন

আজ একা থাকার দিন আজ ১১ নভেম্বর বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হচ্ছে ‘সিঙ্গেল ডে’ বা একা থাকার দিন। একা থাকা মানেই নিঃসঙ্গতা নয় বরং নিজের মতো করে বাঁচার স্বাধীনতা, নির্বিবাদী জীবনযাপন, নিজের সত্তাকে উপভোগ করার সুযোগ। সিঙ্গেল মানেই ঝাড়া হাত-পা, কোনো কৈফিয়তের দায় নেই, নেই প্রেমের টানাপড়েন। কেউ কেউ হয়তো প্রেমহীনতার আফসোসে ভোগেন, কিন্তু অনেকেই এই একাকিত্বকেই স্বাধীনতার আনন্দ হিসেবে দেখেন একা থাকার আনন্দ যারা একবার অনুভব করেন, তারা জানেন এর ভেতর লুকিয়ে আছে মুক্তির স্বাদ। কেউ কেউ সম্পর্কের ব্যর্থতা বা বিচ্ছেদের পর নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলেন, আবার কেউ নিজের ইচ্ছায় একা থাকাকে বেছে নেন। এই ‘সিঙ্গেল ডে’ উদযাপনের সূত্রপাত চীনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী, যারা ভালোবাসায় ব্যর্থ হলেও জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতেন, ১৯৯৩ সালে প্রথম এই দিবসটি উদযাপন করেন। দিনটি বেছে নেওয়া হয় ১১ নভেম্বর অর্থাৎ ১১-১১। প্রতিটি ‘১’ একক মানুষকে বোঝায়, আর চারটি এক মিলে জীবনের সম্মিলিত আনন্দকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করে। চীনে দিনটি মূলত ভালোবাসা দিবসের বিপরীতে একা মানুষদের উৎসব হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এখন বিশ্বের নানা প্রান্তে এই দিনটি পালিত হয় আত্মপ্রেম, স্বাধীনতা এবং নিজেকে উদযাপনের বার্তা নিয়ে। ‘ডেজ অব দ্য ইয়ার’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের প্রচারক ছিলেন টমাস ও রুথ রয় নামের দুজন ভদ্রলোক। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, মানুষ যেন একা থাকাকে লজ্জার নয়, বরং গর্বের বিষয় হিসেবে দেখতে শেখে। বহুরূপী মানুষ চেনার সহজ উপায় : তাই আজকের দিনটি হোক নিজের জন্য নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর, নিজের সঙ্গ উপভোগ করার দিন। একা থাকা মানেই কিন্তু শূন্যতা নয়; বরং স্বাধীনতার মিষ্টি পরশ।

বিকেলের নাস্তায় ঝটপট মজাদার আলুর কাটলেট 

বিকেলের নাস্তায় ঝটপট মজাদার আলুর কাটলেট  বিকেলের নাস্তায় ঝটপট মজাদার কিছু খেতে চাই আমরা সবাই। এ ধরনের খাবার বাড়িতে তৈরি করে খাওয়াই নিরাপদ। এতে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে, তেমনই খরচও কম হয়। বাড়িতে থাকা আলু দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন আলুর কাটলেট। সঙ্গে প্রয়োজন হয়ে কয়েকটি ডিম আর অল্পকিছু উপকরণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক, আলুর কাটলেট তৈরির রেসিপি- তৈরি করতে যা লাগবে : বড় আলু- ৩টি ডিম- ৩টি পেঁয়াজ কুচি- ৩/৪ কাপ ধনিয়াপাতা কুচি- ৩ টেবিল চামচ কাঁচা মরিচ কুচি- স্বাদমতো মরিচের গুঁড়া- ১ চা চামচ চাট মসলা- ১ টেবিল চামচ ভাজা জিরার গুঁড়া- ৩/৪ চা চামচ কর্নফ্লাওয়ার- ৩ টেবিল চামচ ব্রেডক্রাম- পরিমাণমতো লবণ- স্বাদমতো তেল- প্রয়োজন অনুযায়ী। যেভাবে তৈরি করবেন : দুটি ডিম ও আলুগুলো সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর খোসা ছাড়িয়ে গ্রেট করে নিন। তেল ও ব্রেডক্রাম ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার মাখানো আলু-ডিমের মিশ্রণ থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে কাটলেট আকারে তৈরি করে নিন। ডিম ফেটিয়ে নিন। কাটলেটগুলো একটি একটি করে ডিমে ডুবিয়ে ব্রেডক্রামে গড়িয়ে নিন। এবার তেল গরম করে দুই পিঠ সোনালি করে ভেজে তুলুন। কাটলেট তৈরি হয়ে গেলে পছন্দমতো সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন সুস্বাদু আলুর কাটলেট।

ছুটির দিনে সবার পছন্দের পাটিসাপটা পিঠা

ছুটির দিনে সবার পছন্দের পাটিসাপটা পিঠা ক্যালেন্ডারে বসন্ত এলেও প্রকৃতিতে এখনও শীতের আমেজ। পিঠা খাওয়ার সময়ও এখনই। খুব সহজে ছুটির দিনে তৈরি করুন সবার পছন্দের পাটিসাপটা পিঠা: উপকরণ পোলাও-এর চালের গুঁড়া – ৫০০ গ্রাম, আটা- ১ কাপ, দুধ- দেড় কেজি, খেজুরের গুড় দেড় কাপ ও তেল অল্প, এলাচ গুঁড়া ও লবণ সামান্য (ইচ্ছা)। প্রণালী ক্ষীর-দুধ জ্বাল দিয়ে কিছুটা কমে এলে এক কাপ গুড় দিয়ে আবার জ্বাল দিতে হবে। মাঝে মাঝে নাড়তে হবে। দুধ কমে এলে ১ চা-চামচ চালের গুঁড়াতে অল্প দুধ মিশিয়ে বাকি দুধে ঢেলে নাড়তে হবে। কিছুক্ষণ পর এলাচ গুঁড়া দিয়ে ক্ষীর নামিয়ে নিতে হবে। চালের গুঁড়া, আটা, গুড়, লবণ এবং পানি মিলিয়ে মসৃণ গোলা তৈরি করতে হবে। পানি এমন আন্দাজে দিতে হবে যেন বেশি পাতলা বা ঘন না হয়। এবার তাওয়ায় সামান্য তেল দিয়ে বড় গোল ডালের চামচে এক চামচ গোলা তাওয়ায় দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। ওপরটা শুকিয়ে এলে একপাশে এক টেবিল চামচ ক্ষীর রেখে পিঠা মুড়ে চেপে করে দিতে হবে। সবগুলো পিঠা তৈরি করে ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন দারুণ মজার ক্ষীর পাটিসাপটা।