কিডনির ক্ষতি প্রতিরোধ করবে যে ৫ খাবার
কিডনির ক্ষতি প্রতিরোধ করবে যে ৫ খাবার শীতকালে কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে। কারণ এসময় বিপাকীয় প্রক্রিয়াগুলো স্থানান্তরিত হয় এবং শরীরের কিছু অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজন হয়। এই অঙ্গগুলো ক্রমাগত বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে। সঠিক সুপারফুড ঠাণ্ডা ঋতুতে সেই বোঝা ভালোভাবে কমিয়ে দিতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখতে, প্রদাহ কমাতে এবং ক্ষতি রোধ করতে আপনার ডায়েটে বিশেষ করে রাতে রেনাল-বান্ধব সুপারফুড অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৫টি খাবার সম্পর্কে যেগুলো কিডনির ক্ষতি প্রতিরোধ করবে- ১. বিটরুট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ বিট রক্তচাপ কমাতে এবং রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে পারে। উচ্চ ফাইবার সামগ্রী খাবার হজম করতে, শরীরকে পরিষ্কার করতে এবং কিডনিকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। শীতকালীন সালাদ বা স্যুপে বিট যোগ করতে পারেন। বিটরুট শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ যা রক্তের প্রবাহ বাড়ায় এবং ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তা করে। ২. ক্র্যানবেরি ক্র্যানবেরি মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং মূত্রনালীর সঙ্গে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকা বন্ধ করে কিডনিকে রক্ষা করে। ফলটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিডনি-বান্ধব খাদ্যের সুস্বাদু সংযোজন হিসাবে ক্র্যানবেরি জুস বা তাজা ক্র্যানবেরি বেছে নিতে পারেন। ক্র্যানবেরি হলো আরেকটি প্রিয় শীতকালীন ফল যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করার ক্ষমতার কারণে মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য পরিচিত। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিডনির অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, যা কিডনির ক্ষতি রোধ করে। ৩. মিষ্টি আলু মিষ্টি আলু কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য আরেকটি সুপারফুড যা ভিটামিন এ এবং সি, ফাইবার এবং পটাসিয়ামে পূর্ণ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে এবং স্বাস্থ্যকর রক্তচাপকে সহায়তা করে। এই সুবিধাগুলো কিডনির কার্যকারিতা রক্ষার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন এ এবং সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারে পরিপূর্ণ এই আলু রক্তের গ্লুকোজ এবং রক্তচাপকে স্থিতিশীল রাখে, যা উভয়ই কিডনি রোগের গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ। ৪. রসুন রসুন স্বাদ বাড়ায় এবং কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অ্যালিসিন হলো রসুনে পাওয়া একটি প্রদাহরোধী যা রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খাবারে রসুন যোগ করলে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার পাশাপাশি স্বাদও উন্নত হবে। রসুন এর প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য অ্যালিসিনের মাধ্যমে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল কমিয়ে কিডনিকে রক্ষা করে। ৫. পালং শাক পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তবে অক্সালেট সামগ্রীর কারণে এটি পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত, যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। পালং শাক উচ্চ আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ। কিডনি ভালো রাখতে এই শাক নিয়মিত পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস করুন।
সকালে খালি পেটে যেসব খাবার খেলে শরীর ভালো থাকবে
সকালে খালি পেটে যেসব খাবার খেলে শরীর ভালো থাকবে আপনি কেমন খাবার দিয়ে দিন শুরু করছেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারা দিনের পুষ্টি এবং শক্তি সঞ্চয়ের জন্য সকালের খাওয়াতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাটের সঠিক সামঞ্জস্য থাকা দরকার। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি খাওয়াটা বাধ্যতামূলক। খালি পেটে কী খাওয়া যেতে পারে? মধু ও লেবুর পানি দিনের শুরুতে হালকা গরম পানি খেলে শরীর ভালো থাকে। পানিতে ১ চামচ মধু ও অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে নিন। কাজ হবে আরও ভালো। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। পাশপাশি মেদ কমাতেও সহায়ক এই পানীয়। ভেজানো আমন্ড ভিটামিন ই, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার ও নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর আমন্ড শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। সকালেই যদি ৩-৪টে আমন্ড খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে নেয়া যায়, শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টির বেশ কিছুটা পেয়ে যাবে। ওট্স ফাইবার ও অন্যান্য পুষ্টিগুণে সম্পন্ন ওট্স সকালে খেলে দিনভর পেট যেমন ভরা থাকে, তেমন শরীরের উপকার হয়। ওট্সের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও ক্যালোরির পরিমাণ কম হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে তা বিশেষ ভাবে রাখতে বলা হয়। খালি পেটে ওট্স খাওয়ার উপকারিতা হল এটি পাকস্থলীর উপর একটি আস্তরণ তৈরি করে। যা শরীরে অ্যাসিডের জন্য হওয়া জ্বলন থেকে সুরক্ষা দিতে পারে কিছুটা। ফল ভিটামিন, ফাইবার, ফাইটোকেমিক্যালে পরিপূর্ণ ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। খালি পেটে ফল খেলে শক্তি যেমন পাওয়া যায়, তেমন ফল পরিপাক তন্ত্রকে ‘ডিটক্সিফাই’ করতে সাহায্য করে। চিয়া সিড চিয়া সিড ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। সকালে খালি পেটে চিয়া সিড ভেজানো পানি বা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে চিয়া সিড খেলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে। খেজুর মিষ্টি এই ফলটিতে ভিটামিন, ম্যাগেশিয়াম, ফাইবার, আয়রন রয়েছে প্রচুর। দিনের শুরুতে শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাতে খুব সাহায্য করে খেজুর। এতে ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও এতে কমে। আমলকির রস ভিটামিন ই ও অন্যান্য খনিজে ভরপুর আমলকির রস যদি দিনের শুরুতেই খাওয়া যায় তাহলে শরীর থাকবে রোগমুক্ত। এতে থাকা উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আয়ুর্বেদে বলাই হয়, দিনের শুরুতে আমলকির রস খাওয়া দরকার। আমলকির রস হজম ক্ষমতা বাড়ায়। ত্বক এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এই রস।
শরীরে আয়রন শোষণ বাড়াবেন যেভাবে
শরীরে আয়রন শোষণ বাড়াবেন যেভাবে আয়রন একটি অপরিহার্য খনিজ যা আমাদের শরীরের প্রচুর প্রয়োজন। এটি আমাদের রক্ত প্রবাহিত রাখে এবং সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আয়রনের ঘাটতি ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং ফ্যাকাশে ত্বকের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। আপনার যদি আয়রনের ঘাটতি থাকে তবে কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে তারপরেও আয়রনের মাত্রার উন্নতি দেখা যায় না। তাহলে আপনি কোথায় ভুল করছেন? আপনার শরীরে আয়রনের শোষণকে ধীর করে দিচ্ছে কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক কী করবেন- ১. আয়রন সমৃদ্ধ খাবার আয়রন শোষণ বাড়ানোর জন্য সবুজ শাক, খেজুর এবং ডালিমের মতো খাবার নিয়মিত খেতে হবে। এ ধরনের খাবার আয়রন সমৃদ্ধ এবং এগুলো খেলে আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। আয়রনের প্রস্তাবিত দৈনিক পরিমাণ বয়স এবং লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অনুসারে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈনিক আয়রন গ্রহণের লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রায় ৪ মিলিগ্রাম, যেখানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর লক্ষ্য হওয়া উচিত ১৮ মিলিগ্রাম। ২. চা/কফির সঙ্গে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন না আমরা অনেকেই সারাদিন চা এবং কফিতে চুমুক দিতে পছন্দ করি। তবে এই পানীয়ের সঙ্গে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন না। এটি আপনার শরীরে আয়রন শোষণে হস্তক্ষেপ করতে পারে। চা এবং কফিতে ক্যাফেইন এবং ট্যানিন থাকে, উভয়ই আয়রন শোষণকে ধীরগতি করতে এবং কমাতে পরিচিত। জাপান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, চা খেলে আয়রন শোষণ ৩৫% পর্যন্ত এবং কফির সঙ্গে খাওয়ার সময় ৬২% পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। ৩. ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন সি-এর উৎসের সঙ্গে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ হলো ভিটামিন সি একটি অ্যাসিডিক পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে, যা আয়রনকে আরও পর্যাপ্তভাবে দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। সুতরাং সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার সময় তার ওপর লেবুর রস চেপে নিন। এতে আপনার শরীর আয়রন শোষণ করতে সক্ষম হবে, এইভাবে আপনার সামগ্রিক আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। কোন খাবারে সবচেয়ে বেশি আয়রন থাকে? যখন আমরা আয়রন-সমৃদ্ধ খাবারের কথা ভাবি, তখন পালং শাকই সম্ভবত প্রথমেই মাথায় আসে। আর কেন নয়? এটি আয়রনের একটি চমৎকার উৎস এবং এটি বিভিন্ন রেসিপিতেও যোগ করা যেতে পারে। তবে আরও বেশ কিছু আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার রয়েছে যা আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে চিয়া বীজ, শুকনো এপ্রিকট এবং কাজুবাদাম অন্যতম। এই সবগুলোতে উচ্চ আয়রন সামগ্রী রয়েছে, তাই আপনার খাবারে এগুলো যোগ করার চেষ্টা করুন।
থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না
থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না আজকাল অধিকাংশ মানুষ থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। অথচ তারা জানেনই না। কিংবা জানলেও খুব একটা গুরুত্ব দেন না। থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগলে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদন হলে শীত শীত অনুভব, অতিধিক গরম লাগা, হুট করে মেজাজের অস্বাভাবিক পরিবর্তন, চুল পড়ে যাওয়াসহ নানাবিধ লক্ষণ দেখা দেয়। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যাওয়াকে বলে হাইপোথাইরয়েডিজম। আর অতিরিক্ত হরমোন নিঃসৃত হওয়াকে বলে হাইপার থাইরয়েডিজম। দুই ক্ষেত্রেই ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে বা কমে যেতে পারে। দীর্ঘদিন এ সমস্যায় ভুগলে এক সময় ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিও হতে পারে। তাই থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে হবে। এর পাশাপাশি খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেসব খাবার খেলে থাইরয়েডের রোগীদের সমস্যা বাড়ে, সেসব খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। থাইরয়েডের রোগীরা যেসব খাবার খাবেন না- ১. থাইরয়েডের রোগীদের ক্রুসিফেরাস জাতীয় শাক সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, শালগম, মুলা, মুলাশাক, সরিষা, সরিষাশাক, মিষ্টি আলু ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ২. সয়া ও সয়া জাতীয় খাবার যেমন সয়াবিন, সয়া মিল্ক, সয়া সস, টফু, সয়াবাদাম, সয়া চাংক ইত্যাদি ভুলেও খাওয়া যাবে না। ৩. চেরি, এপ্রিকট, পিয়ার, রাসবেরি, স্ট্রবেরিতে গয়োট্রোজেন উপাদান থাকে। তাই হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যায় এ ফলগুলো খাওয়া যাবে না। খেলেও খুব কম পরিমাণে খেতে হবে। ৪. থাইরয়েডের সমস্যা হলে আটা-ময়দা এবং তা দিয়ে তৈরি সব ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা এসব খাবারে আছে গ্লুটেন। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে ঠিকমতো কাজ করতে দেয় না এই গ্লুটেন। ফলে থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণগুলো বেড়ে যায়। ৫. ক্যাফেইন থাইরয়েড হরমোনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে না। তবে এটি টি-ফোর হরমোনের শোষণ কমিয়ে দেয়। ফলে থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণগুলো বেড়ে যায়। তাই ক্যাফেইন আছে এমন সব ধরনের পানীয় যেমন—কফি, চা, ক্যাফেইন ক্রিম, সব ধরনের কার্বনেটেড পানীয় ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
যে রঙের পোশাক মানসিক চাপ দূর করতে পারে
যে রঙের পোশাক মানসিক চাপ দূর করতে পারে মানসিক চাপ কাটানোর সহজ উপায় হতে পারে নতুন কিছু কেনাকাটা করা। সেই সঙ্গে কিছু সঠিক রঙের পোশাক বেছে নেওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, সবুজ রঙের পোশাক শুধু তাৎক্ষণিকভাবেই নয়, দীর্ঘ মেয়াদে মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে। দ্য কালার কিউরের প্রতিষ্ঠাতা রঙের মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞ মিশেল লুইস জানিয়েছেন, বিভিন্ন রং আমাদের মনের ওপর ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব ফেলে। যেমন, হলুদ রং আপনাকে খুশি করতে পারে, গোলাপি আপনাকে আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। কিন্তু সবুজ রং মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। লুইস বলেন, ‘সবুজ হলো সেই মনস্তাত্ত্বিক প্রধান রং যা লাল, হলুদ ও নীলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। আপনি যদি খুব বেশি মানসিক চাপে থাকেন, সবুজ রং আপনাকে শান্ত করবে। আবার মন খারাপ থাকলে এটি আপনাকে উজ্জীবিত করবে। সবুজ রঙের প্রভাব : সবুজ রঙের পোশাক পরা ডোপামিন ড্রেসিংয়ের একটি অংশ, যা পোশাকের মাধ্যমে মনের অবস্থার উন্নতি ঘটায়। মনোবিজ্ঞানী ও রেইকি মাস্টার ড. এলেন আলবার্টসন ভেরি ওয়েল-কে জানান, ‘সবুজ রং স্বস্তিদায়ক। এটি আপনাকে আরো শান্ত রাখবে এবং ভয়-ভীতি কাটাতে সাহায্য করতে পারে। শুধু পোশাকে নয়, পরিবেশেও সবুজ রঙের প্রভাব অত্যন্ত ইতিবাচক। ২০১৭ সালে ৩৬ জন নারীর ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শহরের সবুজ পরিবেশে সময় কাটালে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। নীল রঙের বিকল্প প্রভাব : আলবার্টসন বলেন, যদি সবুজ আপনার পছন্দের রং না হয়, তবে নীল রংও মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। নীল রংকে বলা হয়ে থাকে শান্তির প্রতীক। এটি আপনার চাপকে কমাতে পারে। কিন্তু লাল রং আপনাকে উত্তেজিত করতে পারে। লুইসও একমত হয়ে বলেছেন, নীল রং হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ কমায়। হালকা বা গাঢ়, যে কোনো শেডই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই মানসিক চাপ দূর করতে, সবুজ বা নীল রঙের পোশাক বেছে নেওয়া আপনার প্রতিদিনের জীবনকে আরো শান্তিময় করে তুলতে পারে।
গোপন দুর্বলতায় কালোজিরাই যথেষ্ট
গোপন দুর্বলতায় কালোজিরাই যথেষ্ট কালোজিরা শুধুই ছোট ছোট কালো দানা নয়, এটি বহন করে বিস্ময়কর ক্ষমতা। প্রাচীনকাল থেকেই এটি বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, কালোজিরা চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি এবং মস্তিষ্ক শক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়ায়। অনেকেই গোপন শক্তি বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন বা ভায়াগ্রা সেবন করেন। তবে তাদের জানানো দরকার, এর জন্য ভায়াগ্রার প্রয়োজন নেই এক চামচ কালোজিরাই যথেষ্ট! কারণ, কালোজিরার এই শক্তি অপরিসীম বলে জানিয়েছে লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই ডট কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, কালোজিরায় রয়েছে-ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বো-হাইড্রেট ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান। কালোজিরায় ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাবসংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক। আসুন জেনে নিই কালোজিরায় আর কি কি উপকারিতা রয়েছে- মাথাব্যথা: মাথাব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তী স্থানে দৈনিক ৩-৪ বার কালোজিরার তেল মালিশ করুণ। তিন দিন খালি পেটে চা চামচে এক চামচ করে তেল পান করুন উপকার পাবেন। যৌন দুর্বলতা: কালোজিরা চুর্ণ ও অলিভ অয়েল, ৫০ গ্রাম হেলেঞ্চার রস ও ২০০ গ্রাম খাঁটি মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে খাবারের পর এক চামুচ করে খান। এতে গোপন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। চুলপড়া: লেবু দিয়ে সব মাথার খুলি ভালোভাবে ঘষুণ। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুন। তার পর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পূর্ণ মাথার খুলিতে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এতে এক সপ্তাহেই চুলপড়া কমে যাবে। কফ ও হাঁপানি: বুকে ও পিঠে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এ ক্ষেত্রে হাঁপানিতে উপকারী অন্যান্য মালিশের সঙ্গে এটি মিশিয়েও নেয়া যেতে পারে। স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও অ্যাজমায় উন্নতি ঘটে: এক চামচ মধুতে একটু কালোজিরা দিয়ে খেয়ে ফেলুন। এতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। হালকা উষ্ণ পানিতে কালোজিরা মিলিয়ে ৪৫ দিনের মতো খেলে অ্যাজমার সমস্যার উন্নতি ঘটে। ডায়াবেটিস: কালোজিরার চূর্ণ ও ডালিমের খোসা চূর্ণ মিশ্রণ এবং কালোজিরার তেল ডায়াবেটিসে উপকারী। মেদ ও হৃদরোগ: চায়ের সঙ্গে নিয়মিত কালোজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ কমে যায়। অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্টিক: এক কাপ দুধ ও এক টেবিল চামুচ কালোজিরার তেল দৈনিক তিনবার ৫-৭ দিন সেবন করতে হবে। এতে গ্যাস্টিক কমে যাবে। চোখে সমস্যা: রাতে ঘুমানোর আগে চোখের উভয়পাশে ও ভুরুতে কালোজিরার তেল মালিশ করুণ। এক কাপ গাজরের রসের সঙ্গে এক মাস কালোজিরা তেল সেবন করুন। উচ্চ রক্তচাপ: যখনই গরম পানীয় বা চা পান করবেন, তখনই কালোজিরা খাবেন। গরম খাদ্য বা ভাত খাওয়ার সময় কালোজিরার ভর্তা খান রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে। এ ছাড়া কালোজিরা, নিম ও রসুনের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুণ। এটি ২-৩ দিন পরপর করা যায়। জ্বর: সকাল-সন্ধ্যায় লেবুর রসের সঙ্গে এক টেবিল চামুচ কালোজিরা তেল পান করুণ। আর কালোজিরার নস্যি গ্রহণ করুন। স্ত্রীরোগ: প্রসব ও ভ্রুণ সংরক্ষণে কালোজিরা মৌরী ও মধু দৈনিক ৪ বার খান। সৌন্দর্য বৃদ্ধি: অলিভ অয়েল ও কালোজিরা তেল মিশিয়ে মুখে মেখে এক ঘণ্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন। বাত: পিঠে ও অন্যান্য বাতের বেদনায় কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এ ছাড়া মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। দাঁত শক্ত করে: দই ও কালোজিরার মিশ্রণ প্রতিদিন দুবার দাঁতে ব্যবহার করুন। এতে দাঁতে শিরশিরে অনুভূতি ও রক্তপাত বন্ধ হবে। ওজন কমায়: যারা ওজন কমাতে চান, তাদের খাদ্য তালিকায় উষ্ণ পানি, মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখন এই মিশ্রণে কিছু কালোজিরা পাউডার ছিটিয়ে দিন। পান করে দারুণ উপকার পাবেন।
কেন সুপারফুড বলা হয় বিটরুটকে
কেন সুপারফুড বলা হয় বিটরুটকে বিটরুট পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত সবজি। নানারকম পষ্টি উপাদানের ভরপুর লালচে-বেগুনি রঙের এই সবজিকে সুপারফুডও বলা হয়। এই সবজি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিটুরটে রয়েছেন ভিটামিন সি, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপদান। আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার। বিটরুট কেন খাবেন? বিটরুটে রয়েছে ভিটামিন সি ও বিটালাইন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শরীরর রোগমুক্ত থাকে। ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার আছে বলে ঞম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে বিটরুট। অন্ত্রের নানা সমস্যাও দূর করে। বিটরুটে আছে নাইট্রেট, এটা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, রক্তনালীকে শিথিল করে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাসিয়াম হার্ট সুস্থ রাখতে কার্যকর। এটি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। প্রচুর আয়রন আছে বলে বিটরুটে শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। এটা অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দূর করাতেও বেশ কার্যকরী। বিটরুট শরীরকে শক্তি জোগায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। তাই খেলোয়াড় ও পরিশ্রমী ব্যক্তিদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী। বিটরুটে আছে বিটালাইন নামে খাদ্য উপদান, এটা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কীভাবে খাবেন? সালাদে কাঁচা বিটরুট মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া ব্লেন্ড করে জুস বানিয়েও সহজে খাওয়া যায়। বিটরুটের জুস খুবই পুষ্টিকর। সেদ্ধ বিটরুট সহজপাচ্য এবং সুস্বাদু। বিটরুট দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খাওয়া যায়। বিটরুটের হালুয়া বা পুডিংও বেশ জনপ্রিয়। সতর্কতা : অতিরিক্ত বিটরুট খেলে প্রস্রাব ও মল লালচে হতে পারে, এতে অবশ্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যাদের কিডনিতে পাথর আছে বা কিডনি জটিলতায় যারা ভুগছেন তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিটরুট খাওয়া উচিত। শেষ কথা হলো, বিটরুট একটি সুপারফুড, যা নিয়মিত খেলে শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে। এর পুষ্টিগুণ স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই খাদ্যতালিকায় বিটরুট যোগ করুন এবং সুস্থ থাকুন।
অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত পুরুষদের বয়স বাড়ে ধীরে
অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত পুরুষদের বয়স বাড়ে ধীরে অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত পুরুষদের বয়স ধীরে বাড়ে, তবে একই প্রভাব নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল ওয়ার্ক জার্নালের এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা গেছে, বিবাহিত পুরুষদের বয়স অবশ্যই ধীরে বাড়ে। তবে এটি শুধুমাত্র প্রযোজ্য যদি তাদের সম্পর্কের স্ট্যাটাস বিবাহিতই থাকে। বিচ্ছেদ, বিবাহবিচ্ছেদ বা স্ত্রীকে হারানো বার্ধক্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যেভাবে করা হয়েছে গবেষণা : গত ২০ বছর ধরে ৪৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সী কানাডিয়ানদের স্বাস্থ্য এবং ভালো থাকাকে অনুসরণ করা হয়েছে। যাতে বৈবাহিক অবস্থা তাদের স্বাস্থ্যকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা বোঝা যায়। প্রতিটি ব্যক্তির বয়স ভালোভাবে অর্থাৎ কোনোরকম বার্ধক্য, অসুস্থতা ছাড়াই বয়স বেড়েছে কি না তা নির্ধারণ করার জন্য এ পদক্ষেপও নেওয়া হয়। গবেষকরা আসলে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের বাস্তব অভিজ্ঞতা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের একটি বিস্তৃত সংজ্ঞা ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে গবেষণার প্রধান লেখক মেবেল হো, ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো ইনস্টিটিউট অফ লাইফ কোর্স অ্যান্ড এজিং-এর একজন গবেষক বলেছেন, ‘আমি একজন সমাজকর্মী। গত ২০ বছরের বেশি বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের সাহায্য করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমার আবেগ সবসময় তাদের সুস্থ এবং সুখী জীবনযাপনে সমর্থন করে এসেছে। আমাদের গবেষণায় ৭ হাজারের বেশি মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক কানাডিয়ানদের অনুসরণ করা হয়েছে। আমরা দেখতে পেয়েছি যে কিছু লোকের বয়স নির্দিষ্ট নিয়মে বেড়েছে, আবার অন্যদের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘মানুষদের বার্ধক্য আসতে কোন বিষয়টা বাধা দিতে পারে তা আমরা বুঝতে পারলেই প্রাপ্তবয়স্কদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ভাল জীবনযাপনে তাদের আরও ভালভাবে সহায়তা করতে পারি।
১০ উপকারিতা ফুলকপির
১০ উপকারিতা ফুলকপির ফুলকপি শীতের মৌসুমের অন্যতম সুস্বাদু সবজি। শীতের শাকসবজিতে একটু বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে। এসব পুষ্টিগুণ শরীরের শক্তি জোগান দেওয়ার পাশাপাশি বাড়ায় রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ফুলকপিতে কী কী খাদ্য উপদান আছে আর কী কী উপকার করে আমাদের? পুষ্টিতে ভরপুর ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি চর্মরোগ ও ক্ষত সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন কে হাড়ে গঠনে ভুমিকা রাখে, ফাইবার হাজশক্তি বাড়াও ও কোষ্টকাঠিন্য দূর করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। হজম শক্তি বাড়ায় : ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। হজমে সাহায্য করে। নিয়মিত ফুলকপি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। পাইলস ব্যাথ্যাতে রোগের জন্য ফুলকপি কার্যকর ভূমিকা রাখে। ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে : ফুলকপি কম ক্যালোরিযুক্ত একটি সবজি। এটি খেলে পেট ভরে যায়, ক্ষুধা কমে। কিন্তু কম ক্যালারিযুক্ত বলে বাড়তি মেদ জমা হওয়ার সুযোগ থাকে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক : ফুলকপি কার্বোহাইড্রেড বা শর্করার মাত্রা খুব কম।ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। ফলে কিডনি সুস্থ রাখতে ফুলকপি সহায়ক হয়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : ফুলকপিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এটি রক্তনালীগুলোকে সুস্থ রাখে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় : ফুলকপিতে সালফোরাফেন নামক একটি যৌগ রয়েছে। এটা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। ফুলকপি এটি স্তন, প্রোস্টেট এবং ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধে বেশ কার্যকরি। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় : ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন বি৬ এবং আরও কিছ নিউট্রিয়েন্ট। এগুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফলে মানসিক ও ডিপ্রেশন কমাতেও সাহায্য করে। ত্বকের জন্য ভালো : ফুলকপিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এটি ত্বকের বার্ধক্য রোধেও সহায়ক। ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে : ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত এটি খেলে ঠান্ডা-কাশি বা ফ্লু সহজে হয় না। বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় : ফুলকপিতে প্রচুর সালফার যৌগ আছে। এটা শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দেয়। এটি লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ফুলকপি একটি সহজলভ্য ও পুষ্টিকর সবজি। এটি রান্না করা, ভাজি বা স্যুপ যেভাবেই খাওয়া যায়। তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত ফুলকপি রাখুন এবং সুস্থ থাকুন।
বসে থাকার সাথে হৃদরোগের ঝুঁকি
বসে থাকার সাথে হৃদরোগের ঝুঁকি দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাজ করলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে- এমনকি অন্য সময়ে ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। বস্টন’য়ের ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের গবেষকদের করা এক পর্যবেক্ষণে এমন ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। গবেষণার প্রধান ও প্রতিষ্ঠানের হৃদবিজ্ঞানের সম্মানিত সদস্য ডা. এজিম আজুফো সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “শারীরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন বা না থাকেন, অতিরিক্ত সময় বসে থাকা এড়ানোর ব্যাপারে আমাদের ফলাফলটি গুরুত্ব দেয়। সাধারণভাবেই প্রতিষ্ঠিত যে, বেশিক্ষণ বসে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক ঝুঁকিটা কী আর সুস্থ থাকতে কোন ধরনের নির্দেশনা প্রয়োজন, সেটা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন- একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন ‘কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’য়ের ‘বিহেভিওরাল মেডিসিন’য়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেইথ ডিয়াজ। গবেষণার সাথে যুক্ত না থেকেও তিনি বলেন, “আংশিকভাবে হলেও এই পর্যবেক্ষণটি বসে থাকার ক্ষতির বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কারণ এর নমুনা ও তথ্যের ভাণ্ডার ব্যাপক। গবেষকরা ‘ইউকে বায়োব্যাংক’য়ের ৯০ হাজার অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যবেক্ষণ করেন। ‘অ্যাকসেলেরোমিটার’ পরিয়ে তাদের অলস ও সক্রিয় সময়ের সাথে তুলনা করা হয়। আর পরের বছর তাদের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং ‘হার্ট ফেউলিয়র’ হয়েছে কিনা সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হয়। জার্নাল অফ দি আমেরিকান কলেন অফ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এই পর্যবেক্ষণে শুধু বসে থাকার সাথে হৃদ-সংক্রান্ত রোগ হওয়ার সম্পর্কই বের করা হয়নি, পাশাপাশি কতক্ষণ বসে থাকটা ক্ষতিকর সেটাও বের করা হয়েছে। ডা. আজুফো বলেন, “আমরা সুপারিশ করছি যে, কেউ যেন ১০.৬ ঘণ্টার বেশি বসে না থাকেন। জনস্বাস্থ্যের জন্য এই নির্দেশনা প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। যে কারণে বেশিক্ষণ বসে থাকা খারাপ গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক। তাই কারণ নয় বরং বসে থাকার সাথে হৃদরোগ হওয়ার সম্পর্কটা দেখানো হয়েছে। ডিয়াজ বলেন, “রক্তে শর্করা ও চর্বি মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজ ভালোভাবে করার জন্য পেশির নড়াচড়ার প্রয়োজন। তাই বসে থাকার ফাঁকে নড়াচড়া করার মাধ্যমে পেশিগুলো উত্তেজিত করলে ভালো মতো কাজ করতে পারে। যেভাবে নড়াচড়া করা উপকরী যদি অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয় তবে প্রতিটা কাজের ফাঁকে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাচলা করতে হবে। অন্তত আধা ঘণ্টা পরপর এই কাজ করা উচিত। এই ক্ষেত্রে শুধু দাঁড়িয়ে থাকলে কাজ হবে না। কারণ দাঁড়ানোতে পেশির নড়াচড়া হয় না”- বলেন ডা. ডিয়াজ। ছোটখাট মিটিগুলো হেঁটে বা চলতে-ফিরতে করা যেতে পারে। যদিও ফলাফলে দেখা গেছে, সারাদিন বসে থাকার পর দিন শেষে ভালো মানের ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। তাই ব্যায়াম করলেও বসে থাকার ফাঁকে দেহের পেশিগুলোকে নড়াচড়া করাতে হবে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই” – বলেন ডা. ডিয়াজ, “ব্যায়াম বা শরীরচর্চার সুফলের বিষয়টা অগ্রাহ্য করা যাবে না। আর কাজের ফাঁকে হাঁটাহাঁটির অভ্যাসও গড়েতে হবে।