কাঁঠালের বিচির জাদুকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা

কাঁঠালের বিচির জাদুকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা কাঁঠালের বিচি শুধুই ফেলে দেওয়ার বস্তু নয়—এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যের জন্য রয়েছে একাধিক উপকারিতা। খেতেও সুস্বাদু। প্রতি ১শ গ্রাম বিচি থেকে শক্তি পাওয়া যায় ৯৮ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট ৩৮ দশমিক ৪ গ্রাম, প্রোটিন ৬ দশমিক ৬ গ্রাম, ফাইবার ১ দশমিক ৫ গ্রাম, চর্বি শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম শূন্য দশমিক ৫ থেকে শূন্য দশমিক ৫৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস শূন্য দশমিক ১৩ থেকে শূন্য দশমিক ২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ দশমিক ২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম ও পটাসিয়াম ৪ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম রয়েছে। যেসব উপকারিতা মিলবে কাঁঠালের বিচি খেলে, আসুন জেনে নিই: * কাঁঠালের বিচি আয়রনের একটি বড় উৎস। নিয়মিত এটি খেলে রক্তস্বল্পতা ও অন্যান্য রক্তরোগের ঝুঁকি দূর হয়। এছাড়া আয়রন মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্র সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। * হেলথলাইন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বলা হচ্ছে, কাঁঠালের বিচিতে ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান রয়েছে। এর উপরিভাগ ছোট ছোট কণা দ্বারা আবৃত থাকে যা ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। * ফাইবার ও রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চসমৃদ্ধ কাঁঠালের বিচি খেলে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা নিবারণ করা সহজ হয়। এরা শরীরে সহজে হজম হয় না। কিন্তু অন্ত্রে থাকা উপকারী। * ব্যাকটেরিয়াদের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। * রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় কাঁঠালের বিচি। * স্টাইলক্রেজ ওয়েবসাইট বলছে, কাঁঠালের বিচিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলো ফ্রি র‌্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। *অকাল বার্ধক্য ও বলিরেখা থেকে দূরে থাকা যায়। ঠান্ডা দুধে কাঁঠালের বিচি পিষে ত্বকে লাগালে ত্বক টানটান থাকে। * কাঁঠালের বিচি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়। * কাঁঠালের বিচিতে থাকা উচ্চ মানের প্রোটিন আমাদের পেশি তৈরিতে সাহায্য করে। * কাঁঠালের বিচি বদহজম রোধ করে হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। * কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে আসে। * কাঁঠালের বিচি প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস সমৃদ্ধ যা মানসিক চাপ কমায়। * বলিরেখা দূর ও ত্বকের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে। * প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে কাঁঠালের বিচিতে। চোখের জন্য উপকারি ও রাতকানা রোগ কাটাতেও সাহায্য করে। * চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমে। *নিয়মিত কাঁঠালের বিচি খেলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এটি খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতাও দূর হবে।

জেল্লা বাড়াতে ত্বকের ধরন অনুযায়ী মাস্ক

জেল্লা বাড়াতে ত্বকের ধরন অনুযায়ী মাস্ক ত্বকের দীপ্তি ফেরাতে বাজারে নানা রকম উপাদানে তৈরি মাস্ক রয়েছে। কোন ত্বকের জন্য কোনটি ভালো, না বুঝে ব্যবহার করলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। ত্বক তৈলাক্ত। মুখময় ব্রণ। সেই মুখে যে মাস্ক ব্যবহার করা যায়, সেটাই কি মাখতে পারেন যাদের ত্বকের ধরন শুষ্ক, তারাও? কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই শুধু মাস্কের উপযোগিতা বিচার করে মুখে মাখছেন। উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে ত্বকের সমস্যা বা ধরন। তবে বিউটিশিয়ানদের পরামর্শ, সমস্যা এবং ত্বকের ধরন বুঝেই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। যে কোনো প্রসাধনী যেমন যে কোনো ত্বকের উপযোগী নয়, তেমনই মাস্কও সব ত্বকের জন্য এক রকম হতে পারে না। আর সে কারণেই বাজারে নানা রকম উপাদানে তৈরি মুখের মাস্ক রয়েছে। বেছে নেবেন কোনটি? শুষ্ক ত্বক: ত্বকের ধরন কারও কারও বেশ শুষ্ক হয়। মুখে কোনো ঔজ্জ্বল্য থাকে না। এমন ত্বকের জন্য দরকার হয় আর্দ্রতার। সেজন্য বেছে নেওয়া যেতে পারে হাইড্রেটিং জেল বা ক্রিম মাস্ক। এই ধরনের মাস্ক ত্বকে আর্দ্রতার জোগান দিতে এবং সেই আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত শিট মাস্ক বা অন্য কোনও মাস্ক এ জন্য আদর্শ। কারণ, মুখে আর্দ্রতা জোগাতে এই উপাদান একাই একশো। জেল্লাহীন ত্বক: কারও ত্বক শুষ্ক না হলেও জেল্লা থাকে না। মুখের কোনও কোনও অংশ কালচে হয়। এমন ত্বকের জন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যুক্ত প্রসাধনী জরুরি। দরকার হয় এক্সফোলিয়েশনের, যাতে ত্বকে জমা মৃত কোষ পরিষ্কার করা যায়। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি যুক্ত কোনও মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের কালচে ভাব দূর করে দীপ্তি ফেরাতে কাজে আসতে পারে নিয়াসিনামাইডও। স্পর্শকাতর: কারও ত্বক হয় স্পর্শকাতর। এমন ত্বকে যে কোনো জিনিস মাখা যায় না। সুগন্ধী, অ্যালকোহল মিশ্রিত কোনো প্রসাধনী বা মাস্ক এমন ত্বকের উপযোগী নয়। বরং ক্যালেন্ডুলা, ক্যামোমাইল অয়েল রয়েছে এমন উপাদান মিশ্রিত মাস্ক বেছে নেওয়া যায়। পরামর্শ, মুখের জন্য মাস্ক বেছে নেওয়ার আগে সেটি ত্বকের ওপর পরীক্ষিত কি না জেনে নেওয়া প্রয়োজন। ত্বকের ধরন স্পর্শকাতর হলে ক্লে মাস্ক বা এক্সফোলিয়েটিং মাস্ক এড়িয়ে চলা ভালো।

প্রতিদিন একটি কলা খেলে কী হয়?

প্রতিদিন একটি কলা খেলে কী হয়? কলা সবচেয়ে সহজলভ্য ফলের একটি। এটি প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি, ফাইবার এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থে ভরপুর যা আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে কাজ করে। আপনি যদি প্রতিদিন মাত্র একটি কলা খাওয়া শুরু করেন তবে কী হবে? প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে কী ঘটে? চলুন জেনে নেওয়া যাক দিনে একটি করে কলা খেলে তা আপনার শরীরের জন্য কী উপকারিতা নিয়ে আসতে পারে- ১. হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় ২০২১ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, কলা ডায়েটারি ফাইবার, বিশেষ করে পেকটিন দিয়ে ভরপুর, যা অন্ত্রের গতিবিধি মসৃণ করতে সাহায্য করে। যদি প্রায়ই খাবারের পরে পেট ফাঁপা বোধ করেন, তাহলে দিনে একটি কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি ভালো হজমে সহায়তা করে। কলায় প্রিবায়োটিক থাকে যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এটি নরম, সহজে হজমযোগ্য এবং হজমকে মসৃণ রাখার জন্য উপযুক্ত। ২. শক্তি বৃদ্ধি করে কলা হলো গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের মতো প্রাকৃতিক শর্করার দ্রুত উৎস, যা আপনাকে স্থির শক্তি দেবে। ২০১২ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এটি ক্রীড়াবিদদের কাছে প্রিয় ফল। ওয়ার্কআউটের আগে বা মধ্য-সকালের ঝিমঝিমের সময় একটি কলা খেলে তা শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি বৃদ্ধি করে। কলা ভিটামিন বি৬-তেও ভরপুর, যা খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। ৩. হৃদরোগ দূরে রাখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, একটি মাঝারি কলায় ৪২২ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা ধীরে ধীরে হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি কমতে পারে। এই ফলে চর্বি এবং সোডিয়াম কম থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। ৪. স্ট্রেস দূর করে কলায় থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করতে পারে, যা মানসিক চাপ দূর করে আমাদের প্রাণবন্ত রাখতে কাজ করে। তাই ক্লান্ত ও হতাশ বোধ করলে নিয়মিত কলা খেতে পারেন। এটি একটি প্রাকৃতিক খাবার যা জাঙ্ক ফুডের মতো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। বরং ক্লান্তি দূর করে হাসিখুশি থাকতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী সবজি

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী সবজি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খাবারের ক্ষেত্রে নানা নিষেধ মেনে চলতে হয়। এমনকী কিছু কিছু সবজিও এড়িয়ে চলতে হয়। তবে কিছু সবজি আছে যেগুলো ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। কারণ সেগুলোর গ্লাইসেমিক সূচক কম। এ ধরনের সবজি নিয়মিত খেলে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন সবজিগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী- ১. ব্রোকলি ব্রোকলি এমন একটি সবজি যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ২০১২ সালে রিসার্চ গেটে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, ব্রোকলির গ্লাইসেমিক সূচক কম এবং এতে সালফোরাফেন থাকে, যা শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ব্রোকলি ফাইবারে ভরপুর, যা চিনির শোষণকে ধীর করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখে। ব্রোকলি, সেদ্ধ যেভাবেই খান না কেন এটি আপনার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। তাই ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকতে নিয়মিত এই সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। ২. পালং শাক এই সবুজ পাতাযুক্ত শাক রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। পালং শাকের গ্লাইসেমিক সূচক ১৫, যার অর্থ এটি হঠাৎ করে সুগার স্পাইক তৈরি করে না। এটি ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর, যা রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, সবুজ পাতাযুক্ত শাক-সবজি খেলে তা টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনার স্মুদি, তরকারি, সালাদ বা পরোটায় নিশ্চিন্তে পালং শাক যোগ করে নিন। এতে স্বাদ ও পুষ্টি দুটিই মিলবে। ৩. ফুলকপি পালং শাকের মতো ফুলকপিও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিচিত। এই সবজির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ১৫ এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি, যার অর্থ এটি ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা আপনার শরীরকে সামগ্রিকভাবে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। আপনি এটি ভাজতে পারেন, সুস্বাদু সবজি তৈরি করতে পারেন অথবা স্যুপে যোগ করতে পারেন, ফুলকপি নানাভাবে খাওয়া যায় আবার খেতেও সুস্বাদু। তাই ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত এই সবজি খেতে পারেন। এতে আরও অনেক উপকার মিলবে।

জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার  উপকারিতা জেনে নিন

জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার  উপকারিতা জেনে নিন জাম গ্রীষ্মের সুস্বাদু ফলের মধ্যে একটি। এটি কেবল সুস্বাদুই নয়, বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণেও ভরপুর। সাধারণত এর আমরা ফেলে দিই। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, জামের বীজ গুঁড়া করে খাওয়া হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। হজমশক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা পর্যন্ত, খালি পেটে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার পাঁচটি উপকারিতা জেনে নিন- ১. রক্তে শর্করার মাত্রায় ভারসাম্য রাখে ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন রোগীদের জন্য জামের বীজের গুঁড়া দারুণ উপকারী বলে মনে করা হয়। কারণ জাম্বোলিন এবং অ্যালকালয়েডের মতো যৌগের উপস্থিতি। এই দুটিই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পরিচিত। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অফ ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, জামের বীজের নির্যাস ডায়াবেটিক ইঁদুরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে, যা এর ডায়াবেটিস-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকার প্রমাণ দেয়। ২. হজমশক্তি উন্নত করে আপনি কি হজমের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়া উপকারী হতে পারে। এটি হজম স্বাস্থ্যের জন্য এটি এত ভালো কেন? কারণ এর অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট এবং কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্যে, যা পাচনতন্ত্রকে প্রশমিত করে। সকালে খালি পেটে এই বীজের গুঁড়া খেলে অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। সেইসঙ্গে পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে পারে। ৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার আরেকটি আশ্চর্যজনক সুবিধা হলো, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ, যা ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিক্যাল থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। একবার আপনি নিয়মিত এর গুঁড়া খাওয়া শুরু করলে, লক্ষ্য করবেন যে অসুস্থ হওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি অনেকটাই কমে গেছে। ৪. ওজন কমাতে সহায়তা করে ওজন কমানো বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে জামের বীজের গুঁড়া খেলে তা সহজ হতে পারে। উচ্চ ফাইবারের কারণে খালি পেটে এটি খেলে ক্ষুধা কমতে পারে এবং পেট ভরে যেতে পারে। এটি দিনের বেলা অতিরিক্ত খাওয়াও প্রতিরোধ করতে পারে। দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ওবেসিটির মতে, জাম ফ্যাট বিপাক রোধ করতে এবং চর্বি জমা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। ৫. ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে যেহেতু জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ, তাই এটি আমাদের ত্বকের জন্যও দুর্দান্ত। এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্রণ, পিগমেন্টেশন এবং কালচে দাগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, এর গুঁড়া খেলে অকাল বার্ধক্য এবং নিস্তেজ ত্বকও প্রতিরোধ করা যায়। তাই আপনি যদি সুস্থ এবং উজ্জ্বল ত্বক অর্জন করতে চান, তাহলে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়া শুরু করুন।

পুরোনো স্বাদের ঝুরা মাংস

পুরোনো স্বাদের ঝুরা মাংস ঝুরা মাংস রান্না করতে হলে ধাপে ধাপে কয়েকদিন লাগিয়ে রান্না করতে হবে। বাংলার পুরনো রেসিপি এটি। ঐহিত্যবাহী এই পদ রান্নার রেসিপি রইলো। উপকরণ: গরুর চাকা মাংস: ৪ কেজি পেঁয়াজকুচি: ১ কেজি রসুনবাটা: ৩ টেবিল চামচ আদাবাটা: আধা কাপ দারুচিনি:৬ টুকরা এলাচি: ১০টি তেজপাতা: ৪টি তেল: আধা লিটার লবণ: পরিমাণমতো প্রথম ধাপ: মাংস ধুয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এরপর ধুয়ে পানি ঝরতে দিন। দ্বিতীয় ধাপ: চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ অল্প ভেজে নিতে হবে। এরপর সব মসলা কষিয়ে গোশত দিয়ে দিন। অল্প আঁচে রান্না করতে হবে। তৃতীয় ধাপ: কয়েক দিন ধরে রান্না করতে থাকুন। ভেঙে ঝুরঝুরে হয়ে গেলে হাঁড়ি থেকে ঝুরা মাংস তুলে সংগ্রহ করতে হবে।

ওজন কমাবে ৩ ডাল!

ওজন কমাবে ৩ ডাল! প্রোটিন, ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় খনিজে ভরপুর ডাল অত্যন্ত উপকারী। রক্তাল্পতা সমস্যা নিয়ন্ত্রণে এই দানাশস্য খুবই উপকারী। কিন্তু জানেন কি ৩ ধরনের ডাল ওজন কমাতেও কার্যকর! ছোলার ডাল ছোলার ডালে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। ফলে দেহ সুস্থ থাকে। কর্মক্ষমতা বাড়াতেও ছোলার ডালের গুরুত্ব অত্যন্ত। এক রান্না করা ছোলার ডাল সারা দিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ৩৩ শতাংশ অবধি প্রয়োজন পূরণ করে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরা ছোলার ডাল হৃদযন্ত্রের জন্যেও ভালো। ইনফ্লেম্যাশন কমিয়ে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে ছোলার ডাল। অড়হর ডাল এক কাপ রান্না করা অড়হর ডাল সারা দিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ অবধি প্রয়োজন রক্ষা করে। অড়হর ডালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআইয়ের মাত্রা কম। ফ্যাটের পরিমাণও কম। অন্যদিকে প্রোটিন ও ফাইবারের মাত্রা বেশি। এই ডাল খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকার অনুভূতি হয়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়। ওজন নিয়ন্ত্রিত থাকে। মসুর ডাল মসুর ডালে আছে ২৬ শতাংশ প্রোটিন। এক কাপ রান্না করা মসুর ডালে আছে ১৯ গ্রাম প্রোটিন। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ৩১ শতাংশ অবধি পূর্ণ করে।

জীবনে ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ কীভাবে বাড়াবেন

জীবনে ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ কীভাবে বাড়াবেন কারও জীবনে যদি ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ বা মনোযোগের সময়কাল খুব শর্ট বা ছোট হয় তাহলে তার প্রকৃত জ্ঞান বাড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আমাদের অ্যাটেনশন স্প্যান কমিয়ে দেওয়ার পেছনে কয়েকটি অভ্যাস দায়ী। যেগুলো জীবনের জন্যও টক্সিক ভূমিকা পালন করে। ১. ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে ফোন ব্যবহার করা। এটা খুবই খারাপ অভ্যাস। দিনের প্রথম ও শেষ এক ঘণ্টা ফোন থেকে দূরে থাকা উচিত। ২. দ্বিতীয় ধ্বংসাত্মক অভ্যাস হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ না করেই ওষুধ সেবন করা। নিজের ইচ্ছামতো ওষুধ সেবন করলে অসুখ কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা ছাড়াই ওষুধ সেবনের ফলে হয়তো অসুখের উপসর্গগুলো কমে যাবে কিন্তু মূল সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। প্রত্যেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। যদিও এতে টাকা কম ব্যয় হয় কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। ৩. শর্ট ফর্ম সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট দেখাও একটি খারাপ অভ্যাস। যত ছোট কনটেন্ট,ততটাই ইউজলেস। যত ছোট কনটেন্ট ডোপামিন হরমোন লেভেলের জন্য ততবেশি ক্ষতিকর। দিনে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দিতে পারেন। খুব প্রয়োজন না হলে এর বেশি সময় দেবেন না। যদি আপনি আপনার জীবনের লক্ষ্য সেট করে থাকেন, স্বপ্ন সেট করে থাকেন তাহলে সেই স্বপ্ন তাড়া করতে সময় ব্যয় করুন। ৪. অতিরিক্ত ভোগের অভ্যাস আপনাকে লাইফে এগোতে দেবে না। একজন বন্দির সময় যেভাবে বন্দি অবস্থায় কেটে যায়, আপনার সময়ও ওভাবে কেটে যাবে। খুব বেশি খাওয়া বা খুব ঘন ঘন খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নিজের দিনটাকে ভালোভাবে সাজিয়ে তুলুন। দিনের দশ শতাংশ সময় ভোগের জন্য ব্যয় করতে পারেন। আর দিনের ৯০ শতাংশ সময় আত্মচিন্তা ও উৎপাদন কাজে ব্যায় করুন। ৫. জানেন তো- শর্ট অ্যাটেনশনের অভ্যাস সবচেয়ে খারাপ। অথচ এই সিস্টেমের মধ্যেই আমরা বসবাস করছি। ধরুন আপনি ধনী হতে চান, আপনার উচিত-কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠানগুলো-রিজার্ভ ব্যাংকগুলো কাজ করে এবং কারা এর মালিক। তাদের সম্পর্কে জানা। যে বিষয়গুলো একটি টিকটক ভিডিওতে শর্ট অ্যাটেনশন স্প্যানে পাওয়া সম্ভব নয়।

লিভার ভালো রাখতে খাবেন যে ৭ খাবার 

লিভার ভালো রাখতে খাবেন যে ৭ খাবার  আমাদের লিভার শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাহায্য করে। যেমন ডিটক্সিফিকেশন, প্রোটিন উৎপাদন এবং হজমের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব রাসায়নিক তৈরি। আমরা যা খাই তা মূলত এর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। অনেক সুস্বাদু এবং সহজলভ্য খাবার রয়েছে যেগুলো লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে কাজ করে। প্রতিদিন সেসব খাবার খেলে লিভারের বিভিন্ন অসুখ থেকে দূরে থাকা সহজ হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক- ১. ক্রুসিফেরাস সবজি ব্রোকলি, ফুলকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউট এবং কেল গ্লুকোসিনোলেটে সমৃদ্ধ, যা লিভারকে ডিটক্সিফিকেশন এনজাইম তৈরি করতে সাহায্য করে। এই এনজাইমগুলো শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার ফলে লিভারের ওপর বোঝা কমে। এই সবজিগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। ২. রসুন রসুনে অ্যালিসিন এবং সেলেনিয়াম থাকে, যা লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো রাসায়নিক। অ্যালিসিন লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে, অন্যদিকে সেলেনিয়াম একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লিভারের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। রসুন লিভারের এনজাইমগুলোকেও উদ্দীপিত করতে পারে যা বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে। ৩. বাদাম কাঠ বাদাম, আখরোট এবং চিনা বাদাম স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস। এগুলো প্রদাহ কমাতে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে এবং লিভারের এনজাইমের অবস্থা উন্নত করতে সাহায্য করে। ক্যালোরি বেশি থাকে, তাই এগুলো পরিমিত খেতে ভুলবেন না। ৪. ওটস ওটস দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজম নিয়ন্ত্রণ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের ওপর কাজের চাপ কমায়। এটি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ উন্নত করতেও সাহায্য করতে পারে, যা লিভারের রোগ প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ৫. বেরি ব্লুবেরি, রাস্পবেরি, স্ট্রবেরি এবং ক্র্যানবেরি অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ। এগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই বেরি জাতীয় ফল লিভারকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, প্রদাহ কমায় এবং লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে। এ ধরনের ফল নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। ৬. কফি অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে কফি পান করা লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি লিভারে সিরোসিস এবং ফাইব্রোসিস প্রতিরোধ করে এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। এর ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাফেস্টলের মতো যৌগ এসব উপকারিতা নিয়ে আসে। এই যৌগগুলোর যার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্ল্যাক কফি বেছে নিন, কারণ অতিরিক্ত চিনি ও ক্রিম স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। ৭. গ্রিন টি গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে ক্যাটেচিন। এই যৌগ লিভারের এনজাইমের মাত্রা উন্নত করতে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং লিভারে চর্বি জমা কমাতে কাজ করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে নন-অ্যালকোহলিক তা ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) এবং অন্যান্য লিভারের রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।

গার্লিক বিফ তৈরির রেসিপি

গার্লিক বিফ তৈরির রেসিপি গরুর মাংসের ভুনা কিংবা ঝোল তো খাওয়া হয়ই, চাইলে তৈরি করতে পারেন ব্যতিক্রম স্বাদের কিছু। তেমনই একটি পদ হলো গার্লিক বিফ। সুস্বাদু এই পদ রাখতে পারেন উৎসব-আয়োজনে। রুটি, পরোটা, পোলাও, খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশন করতে পারবেন গরুর মাংসের এই পদ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক গার্লিক বিফ তৈরির রেসিপি- তৈরি করতে যা লাগবে: গরুর মাংস- ১ কেজি পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ হলুদ গুঁড়া- ১ চা চামচ মরিচ গুঁড়া- ২ চা চামচ আদা ও রসুন বাটা- আধা চা চামচ রসুনের কোয়া- ৪/৫টি ধনিয়া ও জিরা গুঁড়া- ১ চা চামচ তেল- আধা কাপ টমেটো সস- আধা কাপ টক দই- ১ কাপ গরম মসলা- গুঁড়া আধা চা চামচ লবণ- স্বাদমতো। যেভাবে তৈরি করবেন : প্রথমে মাংস টুকরা করে কেটে ধুয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, হলুদ, মরিচ, টক দই, আদা, রসুন, লবণ, ধনিয়া, জিরা গুঁড়া, লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেরিনেট করে রাখুন আধা ঘণ্টার মতো। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ লালচে করে ভেজে নিন। এবার তাতে মাখানো মাংস দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর প্রয়োজনমতো পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সেদ্ধ হয়ে এলে তার সঙ্গে রসুনের কোয়া, কাঁচা মরিচ ও টমেটো সস নামিয়ে নিন।