বায়ু দূষণ রোধ বাঁচাতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার ১০০ কোটি মানুষের জীবন

বায়ু দূষণ রোধ বাঁচাতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার ১০০ কোটি মানুষের জীবন দক্ষিণ এশিয়ার ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) নামে পরিচিত অংশগুলোতে বায়ু দূষণ স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতি করছে। এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুতর উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি। এই অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ অস্বাস্থ্যকর বায়ু শ্বাস নেয়, যার ফলে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। এর ফলে প্রতি বছর এই অঞ্চলে জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়ে থাকে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। ‘পরিবর্তনের নিঃশ্বাস: ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে পরিচ্ছন্ন বাতাসের সমাধান’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং বিচারব্যবস্থায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থনে অবদান রাখবে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তানের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত আইজিপি-এইচএফ-এ বায়ু দূষণের মূল উৎস পাঁচটি। এর মধ্যে রয়েছে- রান্না ও গরম করার জন্য কঠিন জ্বালানি পোড়ানো, উপযুক্ত ফিল্টার প্রযুক্তি ছাড়াই জীবাশ্ম জ্বালানি ও জৈববস্তুপুঞ্জ পোড়ানো, অদক্ষ অভ্যন্তরীণ দহন যানবাহন ব্যবহার করা, কৃষকদের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং অদক্ষভাবে সার ও সার ব্যবস্থাপনা করা, এবং পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য পোড়ানো। প্রতিবেদনে এমন কিছু সমাধান তুলে ধরা হয়েছে, যা সহজেই গ্রহণ করা এবং এর ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে- বৈদ্যুতিক রান্না; শিল্প বয়লার, চুল্লি এবং ইটভাটার বিদ্যুতায়ন এবং আধুনিকীকরণ; অ-মোটরচালিত এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন ব্যবস্থা; উন্নত ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং পশুপালনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; এবং উন্নত বর্জ্য পৃথকীকরণ, পুনর্ব্যবহার এবং নিষ্কাশন। প্রতিবেদনে পরিচ্ছন্ন-বাতাস সমাধানগুলোকে তিনটি পারস্পরিকভাবে তিনটি ক্ষেত্রে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, রান্না, শিল্প, পরিবহন, কৃষি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তাদের উৎসে নির্গমন হ্রাস করে এমন হ্রাস সমাধান। দ্বিতীয়ত, সুরক্ষা ব্যবস্থা যা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে, যাতে পরিষ্কার বাতাসে রূপান্তরের সময় শিশু এবং ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলো সুরক্ষিত থাকে। তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক কাঠামো, বাজার-ভিত্তিক উপকরণ এবং আঞ্চলিক সমন্বয় দ্বারা সমর্থিত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, যা সময়ের সাথে সাথে বহু-ক্ষেত্র এবং বহু-বিভাগীয় অগ্রগতি বজায় রাখে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, “এই প্রতিবেদন থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সমাধানগুলো নাগালের মধ্যেই রয়েছে এবং নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য সমন্বিত, সম্ভাব্য এবং প্রমাণ-ভিত্তিক সমাধানগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি বাস্তব রোডম্যাপ প্রদান করে। দক্ষিণ এশীয় উদ্যোগ, পরিবার এবং কৃষকদের জন্য পরিষ্কার প্রযুক্তি এবং অনুশীলন গ্রহণের জন্য এবং সরকারগুলোকে তাদের সমর্থন করার জন্য শক্তিশালী আর্থিক ও অর্থনৈতিক যুক্তি রয়েছে।” সমাধানগুলো কার্যকর করতে দেশগুলোকে সহায়তা করতে প্রতিবেদনটি ‘চারটি-আই’ এর উপর জোর দেয়। সেগুলো হলো:- ইনফরমেশন (তথ্য): পরিকল্পনা এবং জবাবদিহিতার জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করে এমন তথ্য। ইনসেনটিভ (প্রণোদনা): পরিষ্কার বিকল্পগুলোর দিকে আচরণগত এবং বিনিয়োগ স্থানান্তরকে উৎসাহিত করে এমন প্রণোদনা। ইন্সটিটিউশন (প্রতিষ্ঠান): এমন প্রতিষ্ঠান যা কর্মের সমন্বয় সাধন করে, সম্মতি নিশ্চিত করে এবং জাতীয় ও স্থানীয় বাস্তবায়নকে সংযুক্ত করে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার (অবকাঠামো): আধুনিক ও দক্ষ শিল্প কার্যক্রমের সাথে পরিচ্ছন্ন শক্তি, পরিবহন এবং বর্জ্য ব্যবস্থা সক্ষম করে এমন অবকাঠামো। দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশ বিষয়ক বিশ্বব্যাংকের অনুশীলন ব্যবস্থাপক অ্যান জিনেট গ্লোবার বলেন, “পরিচ্ছন্ন বায়ু অর্জনের জন্য স্থানীয়, জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে অব্যাহত সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন এবং শক্তিশালী বাস্তবায়ন প্রয়োজন। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, সরকারগুলো দূষণ কমাতে, লাখ লাখ জীবন বাঁচাতে এবং সকলের জন্য পরিষ্কার বায়ু সরবরাহ করার এই পথ অনুসরণ করতে পারে।

মক্কার কাবা চত্বরে চালু হলো ব্রেসলেট সেবা

মক্কার কাবা চত্বরে চালু হলো ব্রেসলেট সেবা সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে গ্র্যান্ড মসজিদ ও মসজিদে নববির কার্যক্রম তত্ত্বাবধানকারী জেনারেল অথরিটি। এ উদ্যোগের আওতায় মসজিদে প্রবেশের সময় শিশুদের হাতে বিশেষ পরিচয় ব্রেসলেট পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রেসলেটটিতে শিশুর অভিভাবকের যোগাযোগের তথ্য সংযুক্ত থাকবে। ফলে কোনো শিশু ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলে বা পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে দ্রুত তার পরিচয় শনাক্ত করে অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে। এই ব্যবস্থা একটি সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে চালু করা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা যাতে দ্রুত ও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারেন, সে লক্ষ্যেই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। গ্র্যান্ড মসজিদের কিং আবদুল আজিজ গেট ও কিং ফাহদ গেট (গেট নম্বর ৭৯)-সহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রবেশপথে এসব পরিচয় ব্রেসলেট বিতরণ করা হচ্ছে। সেখানে দায়িত্বরত কর্মীরা অভিভাবকদের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ তথ্য সহজে নিবন্ধনে সহায়তা করছেন। বিশেষ করে ওমরাহ মৌসুম ও হজের সময় মুসল্লিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। এ সময় শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব অভিভাবককে এই সেবা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, এ উদ্যোগের মাধ্যমে একদিকে অভিভাবকদের মানসিক নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, অন্যদিকে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানে শিশুদের নিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

নাইজেরিয়ায় খনি স্থাপনায় হামলা, নিহত ১২

নাইজেরিয়ায় খনি স্থাপনায় হামলা, নিহত ১২ নাইজেরিয়ার প্লাটো রাজ্যের আতোসো গ্রামে একটি খনি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত এবং তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্তকাল স্থানীয় একদল নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের। বেরোম ইয়ুথ মোল্ডার্স-অ্যাসোসিয়েশন (বিওয়াইএম) এর প্রধান ডালিওপ সলোমন মাওয়ান্তিরি বলেছেন, আক্রমণকারীরা (যাদের স্থানীয়রা সশস্ত্র ফুলানি মিলিশিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছে) মঙ্গলবার গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের মুখপাত্র আলফ্রেড আলাবো নিশ্চিত করেছেন যে, এই হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে। সর্বশেষ এই হামলার ঘটনা ওই অঞ্চলের নিরাপত্তাহীনতার ঘটনাকে আরও স্পষ্ট করে তুলছে। সেখানে জাতিগত ও ধর্মীয় দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রতি বছর নাগরিকত্ব ত্যাগ করছেন দুই লাখের বেশি ভারতীয়

প্রতি বছর নাগরিকত্ব ত্যাগ করছেন দুই লাখের বেশি ভারতীয় প্রতি বছর নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করছেন দুই লাখের বেশি ভারতীয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের লিখিত জবাবে এস জয়শঙ্করের মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি ভারতীয় দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সাল থেকে নাগরিকত্ব ত্যাগের হার বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন ৯ লাখেরও বেশি ভারতীয়। ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রতি বছর নাগরিকত্ব ত্যাগের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে সংখ্যাটা ২ রাখে পৌঁছায়। কী কারণে নাগরিকত্ব ত্যাগের হার বাড়ল, তার সুস্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে জয়শঙ্করের মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, ব্যক্তিগত কারণেই অনেকে ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগ করছেন। এই পরিসংখ্যানের সূত্রে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে ‘ব্রেন ড্রেন’ তত্ত্ব নিয়ে। যে তত্ত্ব অনুসারে, ভারতের মেধাবী ছাত্র-যুবকরা উন্নত সুযোগ-সুবিধার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোতে চলে যাচ্ছেন। সত্তরের দশকে ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগের ঊর্ধ্বমুখী হার এই তত্ত্বকে আরও জোরদার করেছিল। ভারত দ্বৈত নাগরিকত্ব (একই সঙ্গে দুই দেশের নাগরিকত্ব) স্বীকার করে না। আমেরিকা, কানাডা কিংবা ব্রিটেনের নাগরিকেরা অন্য দেশের নাগরিকত্ব পেতে পারেন। ভারতীয়দের অনেকেই কর্মসূত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। সে দেশের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পেতে অনেকেই সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী, অন্য দেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের নাগরিকত্ব হারাবেন সেই ব্যক্তি। সামাজিকমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবাসী ভারতীয়দের একাংশ। তাদের বক্তব্য, তারা স্বেচ্ছায় ভারতের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে চান না। কিন্তু নিয়মনীতির ফাঁসে পড়ে তা করতে বাধ্য হন।

নির্বাচন ‘বিঘ্নিত’ করার অভিযোগে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা 

নির্বাচন ‘বিঘ্নিত’ করার অভিযোগে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা  সামরিক বাহিনী পরিচালিত আসন্ন নির্বাচন ‘বিঘ্নিত’ করার অভিযোগে ২০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। বুধবার দেশটির জান্তা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাতে জান্তা সরকারের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী টুন টুন নাউং জানান, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার চেষ্টার অভিযোগে মোট ২২৯ জনের বিরুদ্ধে নতুন আইনের আওতায় মামলা করা হবে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বলছে, ভিন্নমত দমন করতেই এই আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাদের মতে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী কণ্ঠ দমন করাই জান্তার মূল উদ্দেশ্য। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ধাপে ধাপে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে জান্তা সরকার। এই ভোটকে তারা ‘জাতীয় পুনর্মিলনের পথে একটি পদক্ষেপ’ হিসেবে তুলে ধরছে। তবে বাস্তবতায় বিরোধী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই নির্বাচন আয়োজন কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিরা এই নির্বাচনকে সামরিক শাসন দীর্ঘায়িত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন এবং তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। উল্লেখ্য, আসন্ন নির্বাচনকে ‘বাধা, বিঘ্ন ও ধ্বংস’ থেকে রক্ষার অজুহাতে চলতি বছরের জুলাইয়ে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করে জান্তা সরকার। ওই আইনে নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করা বা নির্বাচনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

১ ডলার= ৯১ রুপি, ভারত ছাড়ছে বিনিয়োগকারীরা

১ ডলার= ৯১ রুপি, ভারত ছাড়ছে বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধের ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ভারত। শেয়ার বাজার থেকে ধারাবাহিকভাবে বিদেশি পুঁজি তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে তরতর করে কমছে রুপির দাম। এবার ৯০-এর ঘর পেরিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নামছে রুপির মূল্যমান। ডলারের হিসেবে রুপির দাম ৯১-এর ঘরে ঠেকেছে। আজ মঙ্গলবার বাজার খোলার পর এক ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্য কমে দাঁড়ায় ৯১.০৭১-এ। এই প্রথম ৯১-এর ঘর পার করল মার্কিন মুদ্রা। ডলারের নিরিখে ধারাবাহিক ভাবে পতনের ফলে রুপির দামে রের্কড পতন দেখা গিয়েছে এদিন। ভারতের বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারীদের অনুমান, পরিস্থিতি এমন থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে ডলারের বিনিময় রেট ৯২ রুপিতে ঠেকতে পারে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে রুপির পতন কোনও আশ্চর্য ঘটনা নয়। তবে পতনের গতি অপ্রত্যাশিত। বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলোর পুঁজি প্রত্যাহার অব্যাহত। এই সবেরই প্রভাব পড়েছে রুপিতে। দিনের শুরুতে, ডলারের বিপরীতে টাকার দাম ৯০.৮৩-এর রেকর্ড সর্বনিম্ন দরে পৌঁছে যায়। লেনদেন শুরু হওয়ার পর ০.১ শতাংশ কমে ৯০.৭৯-এ দাঁড়ায়। আমেরিকার মু্দ্রার হিসাবে রুপি সর্বকালের সর্বনিম্ন দামে নেমে আসে মঙ্গলবার।

মেগাভূমিকম্পের সতর্কতা তুলে নিল জাপান

মেগাভূমিকম্পের সতর্কতা তুলে নিল জাপান জাপানের উত্তর উপকূলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার এক সপ্তাহ পর সম্ভাব্য মেগাভূমিকম্পের জন্য জারি করা সতর্কতা প্রত্যাহার করেছে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা। আজ এ তথ্য জানানো হয়। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। জাপান আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) এবং অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এফডিএমএ) জানায়, গত ৮ ডিসেম্বরের ভূমিকম্পে সর্বোচ্চ ৭০ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার সুনামি ঢেউ সৃষ্টি হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের পর জেএমএ একটি বিরল সতর্কতা জারি করে। এতে দেশটির উত্তরে ৮ মাত্রা বা তার বেশি শক্তিশালী মেগাভূমিকম্পের ঝুঁকি বেড়েছে বলে সতর্ক করা হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৭ মাত্রা বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের পর সাত দিনের মধ্যে মেগাভূমিকম্প ঘটার আশংকা প্রায় এক শতাংশ। এ সতর্কতার অংশ হিসেবে বাসিন্দাদের জরুরি ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রস্তুত রেখে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। জেএমএর কর্মকর্তা ইসেই সুগানুমা আজ এএফপিকে বলেন, বাসিন্দাদের জন্য জারি করা বিশেষ সতর্কতার সময়সীমা মধ্যরাতে শেষ হয়ে গেছে।

মেক্সিকোতে জরুরি অবতরণকালে ছোট প্লেন বিধ্বস্ত, ৭ আরোহী নিহত

মেক্সিকোতে জরুরি অবতরণকালে ছোট প্লেন বিধ্বস্ত, ৭ আরোহী নিহত মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে জরুরি অবতরণের সময় একটি ছোট প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় তিন আরোহী ছাড়া বাকি সবাই নিহত হয়েছেন। আজ বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে সোমবার একটি ছোট প্লেন জরুরি অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। মেক্সিকো স্টেট সিভিল প্রোটেকশন কো-অর্ডিনেটর আদ্রিয়ান হার্নান্দেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সান মাতেও আতেনকো এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এটি একটি শিল্পাঞ্চল এবং টোলুকা বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে এলাকাটির দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে। প্লেনটি মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী শহর আকাপুলকো থেকে উড্ডয়ন করেছিল। হার্নান্দেজ জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন ওই জেটে ৮ জন যাত্রী ও ২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর পর্যন্ত মাত্র ৭টি মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্লেনটি একটি ফুটবল মাঠে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করছিল। কিন্তু অবতরণের সময় পাশের একটি কারখানার ধাতব ছাদে আঘাত হানে, যার ফলে বড় ধরনের আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

৩৪ বছর পর পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা, নিরাপত্তা নিশ্চিতে মমতার কড়া নির্দেশ

৩৪ বছর পর পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা, নিরাপত্তা নিশ্চিতে মমতার কড়া নির্দেশ দীর্ঘ ৩৪ বছর পর পশ্চিমবঙ্গে ফের বসতে চলেছে বিশ্ব ইজতেমার আসর। নতুন বছরের শুরুতেই হুগলি জেলার তাজপুর থানার অন্তর্গত দাদপুরের পুইনান এলাকায় আয়োজন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক এই ধর্মীয় মহাসমাবেশ। আগামী ২ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে ইজতেমা। ৫ জানুয়ারি আখরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইজতেমাকে ঘিরে মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আয়োজকদের প্রাথমিক অনুমান, চার দিনে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ মুসল্লির সমাগম হতে পারে। নামাজ আদায়, ইসলামী বয়ান শোনা এবং শান্তি-কল্যাণ ও আল্লাহর রহমত কামনায় একত্রিত হবেন মুসল্লিরা। বিশ্ব ইজতেমার মতো এত বড় জনসমাবেশ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সোমবার নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, বিশিষ্ট ইমাম, পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ব ইজতেমা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রে জানা, হুগলি জেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ মানুষের জন্য থাকা, খাবার, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা বা গুজব রুখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়ানো ঠেকাতে সাইবার সেলকে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে শেষবার পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিন দশকের বেশি সময় পর ২০২৬ সালে বৃহৎ এই ধর্মীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মোগল জিমি লাই দোষী সাব্যস্ত

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মোগল জিমি লাই দোষী সাব্যস্ত হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মোগল ও চীনের সমালোচক জিমি লাইকে বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির হাইকোর্ট। খবর বিবিসির। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনা সব অভিযোগে হাইকোর্ট জিমি লাইকে দোষী ঘোষণা করেন। তবে তার সাজা কী হবে, তা পরে জানানো হবে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাতের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।  রায় ঘোষণার সময় বিচারকরা বলেন, “আমাদের মনে কোনো সন্দেহ নেই যে লাই (চীনা কমিউনিস্ট পার্টির) সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার অভিপ্রায় থেকে কখনোই সরে আসেননি।” বিচারকদের মতে, হংকংয়ের জনগণকে সহায়তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের চীনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা ‘এমন পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়, যেখানে কোনো মার্কিন নাগরিক ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যকে সহায়তার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার উৎখাতে রাশিয়ার সাহায্য চাইছে।’ তারা আরো বলেন, প্রমাণে দেখা যায় লাইয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল- ‘চীন ও হংকংয়ের জনগণের স্বার্থকে বিসর্জন দেওয়া’। ৭৮ বছর বয়সী জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে দুটি বিদেশি যোগসাজশের অভিযোগ এবং একটি রাষ্ট্রবিরোধী প্রকাশনার অভিযোগ অভিযোগ আনা হয়। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। গণতন্ত্রপন্থি কর্মী ও চীনের সমালোচক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আগে, লাই একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে চীনে জন্মগ্রহণ করেন। কমিউনিস্টরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ১২ বছর বয়সে লাই চীন থেকে একটি মাছ ধরার নৌকায় করে পালিয়ে হংকংয়ে চলে আসেন। তিনি হংকংয়ে বিভিন্ন কাজ করে ইংরেজি শেখার পর, ১৯৭৭ সালে পোশাক ব্র্যান্ড জিওর্দানো প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসাটি একটি ফ্যাশন সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, যা তাকে কোটিপতি করে তোলে। তিয়ানানমেন স্কোয়ারের দমন-পীড়নের ঘটনার পর জিমি লাই মিডিয়া জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং নেক্সট মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এর অধীনে বিখ্যাত সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলি প্রকাশিত হতো, যা চীনের কঠোর নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল।