গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দিবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দিবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সুযোগে তারা ৪০ হাজারেরও বেশি শিশুকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এর সহযোগীরা ইতোমধ্যে ৯ নভেম্বর শুরু হওয়া প্রথম ধাপের আট দিনে তিন বছরের কম বয়সী ১০ হাজার শিশুকে টিকা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছেন, প্রথম ধাপের কর্মসূচি শনিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে হাম, মাম্পস, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হুপিং কাশি, হেপাটাইটিস বি, যক্ষ্মা, পোলিও, রোটাভাইরাস ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ পরিচালিত হবে। এ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ইউনিসেফ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। টেড্রোস বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকায় আমরা উৎসাহিত। এতে গাজায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পুনঃসংস্থান এবং বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমেই গত ১০ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের রক্তক্ষয়ী হামলার জেরে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ড বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তবে বর্তমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেও সেখানে বেশ কয়েকবার সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই হামলায় ১ হাজার ২২১ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল। নিহতদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলি সেনাদের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৫০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ এ সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।

রুশ বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের এক শহরে এক রাতে নিহত ২৫

রুশ বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের এক শহরে এক রাতে নিহত ২৫ রুশ বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেরনোপিলের আবাসিক এলকায় এক রাতে নিহত হয়েছেন ২৫ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৭৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৩ জন এবং আহতদের মধ্যে ১৫ জন শিশু আছে। গত মঙ্গলবার রাতে তেরনোপিলে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এই শহরটি পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী। নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে তেরনোপিল, লভিভ এবং খারকিভ শহরে ৪৮৩টি ড্রোন এবং ৪৮টি বিভিন্ন পাল্লারি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ৪৪২ ও ৪২টি ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দিতে পারলেও বাকি ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ছয় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ঘটেছে হতাহতের এসব ঘটনা। যে তিন জন শিশু নিহত হয়েছে, তাদের বয়স যথাক্রমে ৫, ৭ এবং ১৬ বছর। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃত ২৫ জনের মধ্যে ১৯ জন জীবন্ত পুড়ে মারা গেছেন। এ ১৯ জনের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে। হামলার পর ইউক্রেনের জাতীয় জরুরি অবস্থা পরিষেবা বাহিনীর ৪৫টি ইউনিটের ১৬০ জন সদস্য তেরনোপিলের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন তাদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং গতকাল তারা বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ থেকে ৪৫ জনের নিহত ও আহতকে উদ্ধার করতে পেরেছেন। তেরনোপিলে হামলার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “ইউক্রেনের বেসামরিক লোকজনের ওপর রুশ বাহিনীর প্রতিটি নির্লজ্জ আক্রমণ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে রাশিয়ার ওপর বৈশ্বিক চাপ কোনো কাজ করছে না।”

ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র অ্যালিস গুও-কে একটি জালিয়াতি কেন্দ্র পরিচালনার ভূমিকার জন্য মানব পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর), তাকে এবং আরো তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২ মিলিয়ন পেসো (৩৩ হাজার ৮৩২ ডলার ) জরিমানা করা হয়েছে। খবর বিবিসির। কর্তৃপক্ষ মেয়র অ্যালিসের ছোট শহর বাম্বানে দেশের বৃহত্তম জালিয়াতি কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি উদঘাটন করার পর অ্যালিস গুওর মামলাটি বছরের পর বছর ধরে ফিলিপাইনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। অভিযানের পর প্রায় ৮০০ ফিলিপিনো এবং বিদেশিকে জালিয়াতির কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর গুওর বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনোর আড়ালে জালিয়াতি কেন্দ্র এবং মানব পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়।  ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ গত জুলাই মাসে অ্যালিস গুওর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। ৩৫ বছর বয়সী এই নারী এরপর কয়েক সপ্তাহ পলাতক থাকার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আপিল করতে পারবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। গুওর বিরুদ্ধে এখনও পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে একটিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালে, গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত বাম্বানের মেয়র নির্বাচিত হন। বাম্বানের বাসিন্দারা আগে বিবিসিকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন যত্নশীল ও সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে, কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বড় জালিয়াতি কেন্দ্র উদঘাটন করার পর নীরব শহরটি জাতীয় আলোচনায় আসে। গুও প্রথমে ওই জায়গা সম্পর্কে তার সমস্ত জ্ঞান অস্বীকার করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে সিনেটের তদন্তে তার অফিসের কাছে অবস্থিত আট হেক্টর কেন্দ্রটি সনাক্ত করতে তার অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে জানা যায় যে কম্পাউন্ড- যার মধ্যে ৩৬টি ভবন ছিল- গুওর পূর্বে মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ গুওর জীবন কাহিনীতেও অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। গুও দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মগ্রহণ করেননি, বরং কিশোর বয়সে তার পরিবারের সাথে চীন থেকে চলে এসেছিলেন। পরে তদন্তকারী সংসদ সদস্যরা দেখতে পান যে, তার আঙুলের ছাপ হুয়া পিং নামে একজন চীনা নাগরিকের সাথে মিলে যায়। তাকে দ্রুতই মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মামলার আরো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের সাথে সাথে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি নিখোঁজ হন, যার ফলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চারটি দেশে আন্তর্জাতিক অভিযান শুরু হয়। একই বছরের সেপ্টেম্বরে, তাকে ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং ফিলিপাইনে প্রত্যর্পণ করা হয়। তার ফিলিপাইনের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়। দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের বিবাদ অব্যাহত থাকায় গুওর মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফিলিপাইনে মামলাটি ব্যাপক আলোচিত হলেও, অ্যালিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে চীন এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।

ভারতকে জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র

ভারতকে জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র ও এক্সক্যালিবার প্রজেক্টাইলস বিক্রি করতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থার (ডিএসসিএ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৯ নভেম্বর) ডিএসসিএ এক ঘোষণায় জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভারতকে ৯৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম ও এক্সক্যালিবার গাইডেড আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। আগস্টে নয়াদিল্লির রাশিয়ান তেল কেনার শাস্তি হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের ঘটনায় সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পর ওয়াশিংটনের বিদেশি সামরিক বিক্রয় কর্মসূচির অধীনে ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়। ভারত নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি তেজাস যুদ্ধ বিমানকে আরো শক্তিশালী করার জন্য চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের ফাইটার জেট ইঞ্জিনের পুনঃঅর্ডার দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিল। ডিএসসিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই প্রস্তাবিত ডিল যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে রয়ে যাওয়া একটি প্রধান প্রতিরক্ষা অংশীদারের নিরাপত্তা উন্নত করতে সহায়তা করে মার্কিন বৈদেশিক নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোকে সমর্থন করে।” ডিএসসিএ জানিয়েছে, ভারত সরকার ২১৬টি এক্সক্যালিবার ট্যাকটিক্যাল প্রজেক্টাইল এবং ১০০টি জ্যাভলিন সিস্টেম কিনতে চেয়েছে। এক্সক্যালিবার হলো জিপিএস গাইডেড অত্যাধুনিক ১৫৫এমএম কামানের গোলা যা নিখুঁত লক্ষ্যে গিয়ে আঘাত করতে পারে। এটা ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে। জ্যাভলিন হলো একজন বহন করতে পারে এমন একটি মাঝারি পাল্লার ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতের পর শক্তিশালী ভূমিকম্প

ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতের পর শক্তিশালী ভূমিকম্প ইন্দোনেশিয়ার সেরামে ৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) জানিয়েছে, আজ আঘাত হানা ভূমিকম্পটি ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৩৬ কিলোমিটার (৮৪ দশমিক ৫১ মাইল) গভীরে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পের ঘটনায় কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সেমেরুতে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেশটিতে ভূমিকম্প আঘাত হানলো। প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাবার সেমেরুতে একটি আগ্নেয়গিরি জেগে উঠেছে। অগ্ন্যুৎপাতের পর ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ ৯০০-র বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। উল্লেখ্য, প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অব ফায়ারের পাশে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়া।

ফিলিপাইনের দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ

ফিলিপাইনের দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ ফিলিপাইন প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সরকারের দুই মন্ত্রী অবৈধ অবকাঠামো ও বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতির মামলায় পদত্যাগ করেছেন। বুধবার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রেস অফিসার ক্লেয়ার কাস্ত্রো স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, নির্বাহী সচিব লুকাস বারসামিন এবং বাজেট ও প্রশাসন সচিব অ্যামেনাহ পাঙ্গানডামান উভয়েই তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কাস্ত্রো বলেন, “বন্যা প্রতিরোধমূলক প্রকল্পে তাদের দপ্তরগুলোর অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর, প্রশাসনকে বিষয়টি যথাযথভাবে সমাধান করার সুযোগ দেওয়ার দায়িত্বস্বরূপ তারা পদত্যাগ করেছেন।” ফিলিপাইনের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং সিনিয়র ফেলো আরিস আরুগে-এর মতে, জুলাই মাসে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বারসামিন এবং পাঙ্গানডামান হলেন মার্কোস সরকারের সর্বোচ্চ পদস্থ সদস্য- যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে। তার মতে, প্রেসিডেন্ট নিজে আপাতত বিতর্কের বাইরে থাকলেও পরিস্থিতি যে কোনো সময় বদলাতে পারে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, “এই মুহূর্তে, প্রাসাদ প্রেসিডেন্টকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছে, এবং এই কারণেই নির্বাহী সচিব, বাজেট সচিবের ‘পদত্যাগ’ করানো হচ্ছে।” আরুগে বলেন, “মার্কোস জুনিয়রের এখনও সংসদে ‘আরামদায়ক’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে কারণ অনেক এমপি এখনও তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তের নেতৃত্বের তুলনায় পছন্দ করেন, তবে আরো প্রমাণ সামনে এলে ‘সব বাজি শেষ’ হতে পারে।” চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পলাতক রাজনীতিবিদ জালডি কো বলেন, তিনি একটি বরাদ্দের কমিটির প্রধান থাকাকালে মার্কোস তাকে ‘সন্দেহজনক জনকল্যাণের’ জন্য বাজেটে ১.৭ বিলিয়ন ডলার যোগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।  এক মাস ধরে তদন্তের পর দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িত অভিযুক্ত প্রথম কর্মকর্তাদের মধ্যে কো ছিলেন। মার্কিস জুনিয়র কংগ্রেসে এক বক্তব্যে বন্যা-নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ঠিকাদারদের নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের তথ্য প্রকাশের পর, দুনীর্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দেশটির জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।  ফিলিপাইন প্রতিবছরই টাইফুন ও অন্যান্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের কবলে পড়ে এবং বন্যা সেখানে নিয়মিতভাবে ভয়াবহ একটি সমস্যা।

যুদ্ধবিরতির পরেও গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল, নিহত বেড়ে ২৭৯

যুদ্ধবিরতির পরেও গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল, নিহত বেড়ে ২৭৯ হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পরেও গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ১০ অক্টোবর দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চলমান থাকার পরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন থামছে না। খবর বিবিসির। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ৩৯৩ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ২৭৯ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৬৫২ জন। এদিকে দক্ষিণ লেবাননের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। অপরদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী এক শিশু এবং আল জাজিরার এক সাংবাদিককে গুলি করেছে। মঙ্গলবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে গাড়ি চাপা ও ছুরিকাঘাতে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় ইসরায়েলে মোট ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ আগ্রাসনে কমপক্ষে ৬৯ হাজার ৪৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৬ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, গত দুই বছরের কম সময়ে ইসরায়েলি কারাগারে অন্তত ৯৪ ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটক ব্যক্তি মারা গেছেন। সংগঠনের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব মৃত্যু পদ্ধতিগত হত্যা ও গোপন করার চেষ্টার অংশ হতে পারে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগের ১০ বছরে ইসরায়েলি হেফাজতে প্রায় ৩০ ফিলিস্তিনি মারা যান। তাদের দাবি, সাম্প্রতিক মৃত্যুর ঘটনা মূলত শারীরিক নির্যাতন, চিকিৎসা-সেবা অস্বীকার, অথবা দুইয়ের সংমিশ্রণে ঘটেছে।

জাপানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: পুড়েছে ১৭০টির বেশি ভবন

জাপানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: পুড়েছে ১৭০টির বেশি ভবন জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর ওইতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৭০টিরও বেশি ভবন পুড়ে গেছে। আগুন রাতভর জ্বলতে থাকার পরও স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় অগ্নি নির্বাপণ সংস্থা। বুধবার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। সংস্থাটি জানায়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ওইতা শহরের সাগানোসেকি এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ১৭৫ বাসিন্দাকে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় এখনো এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে তদন্ত চলছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে-ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে শহর, আর বহু ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওইতা প্রিফেকচারের অনুরোধে একটি সামরিক অগ্নিনির্বাপণ হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কিউশু দ্বীপে অবস্থিত ওইতা রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৭৭০ কিলোমিটার দূরে। পাহাড়ঘেরা এই উপকূলীয় শহরটি সাগানোসেকি মৎস্যবন্দর এবং উচ্চমানের ম্যাকারেল মাছের উৎপাদনের জন্য পরিচিত।

সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দিতে রাজি ট্রাম্প

সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দিতে রাজি ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সৌদি আরবের কাছে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির অনুমোদন দেবেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণা আরব দেশগুলোতে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের পদক্ষেপের একটি নতুন রূপ। খবর আলজাজিরার। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঠিক একদিন আগে সোমবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। রিয়াদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের প্রশংসা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সৌদি আরবের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করব। হ্যাঁ, আমি এটি করার পরিকল্পনা করছি। তারা এগুলো কিনতে চায়। তারা আমাদের খুব ভালো মিত্র।” তার এই মন্তব্যকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অস্ত্রনীতির বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তটিকে রিয়াদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য জয় হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প আব্রাহাম চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনে সৌদি আরবকে রাজি করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। যদিও সৌদি নেতৃত্ব বারবার জানিয়েছে, তারা এখনো আরব শান্তি উদ্যোগের অবস্থানেই অটল। অর্থাৎ টেকসই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি নয়। এদিকে, সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়া হলে ইসরায়েলের ‘গুণগত সামরিক সুবিধা’ যা মার্কিন আইনে সুরক্ষিত- তা ক্ষুণ্ন হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা। সম্ভাব্য আঞ্চলিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের উচ্চতর সামরিক ক্ষমতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশক ধরে প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ১৯৬৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসনের অধীনে প্রথম প্রতিষ্ঠিত এবং প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত এই নীতিটি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অস্ত্র বিক্রিকে পরিচালিত করে আসছে।

ফ্রান্স থেকে ১০০ রাফাল যুদ্ধবিমান পাচ্ছে ইউক্রেন

ফ্রান্স থেকে ১০০ রাফাল যুদ্ধবিমান পাচ্ছে ইউক্রেন রাশিয়ার ভয়াবহ আক্রমণ থেকে নিজেদের আত্মরক্ষার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একটি বড় চুক্তির আওতায় ফ্রান্সের কাছে থেকে ১০০টি রাফাল এফ-৪ যুদ্ধবিমান এবং উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাচ্ছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যারিসের কাছে একটি বিমান ঘাঁটিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পর, এই পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ২০৩৫ সালের মধ্যে রাফাল এফ-৪ বিমানগুলো সরবরাহের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার আগে চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে ইন্টারসেপ্টর ড্রোনের যৌথ উৎপাদন। আর্থিক বিষয়গুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে ইউক্রেনকে অর্থায়নের চেষ্টা করবে ফ্রান্স। এছাড়া জব্দ করা রাশিয়ান সম্পদও ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে; এটি এমন একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ যা নিয়ে ২৭ সদস্যের জোটের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। সোমবার ম্যাখোঁর সঙ্গে এক যৌথ ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেন, “এটি একটি কৌশলগত চুক্তি যা আগামী বছর থেকে শুরু করে ১০ বছর ধরে চলবে। তিনি আরো বলেন, “ইউক্রেন খুব শক্তিশালী ফরাসি রাডার, আটটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য উন্নত অস্ত্র পাবে।” জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, “এই ধরনের উন্নত ব্যবস্থা ব্যবহার করার অর্থ ‘কারও জীবন রক্ষা করা…এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে, বিশেষ করে জ্বালানি ও রেল অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।