কোহলিকে পিছনে ফেললেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়

কোহলিকে পিছনে ফেললেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি২০তে ৪ উইকেটে জয়ী হয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম ভারতীয় সুপারস্টার বিরাট কোহলির টি২০ রেকর্ডকে ছাড়িয়ে ড়েছেন। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৪৭ বলে ম্যাচ জয়ী ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন বাবর। এর মধ্যে ছিল ৯টি বাউন্ডারি। এর মাধ্যমে টি২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪০টি হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন বাবর। কোহলি করেছিলেন ৩৯টি। এই তালিকায় ৩৭টি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস উপহার দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৩১টি হাফ সেঞ্চুরি করেন চতুর্থ স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানী উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তান জয়ের জন্য ১৪০ রানে টার্গেট পায়। বাবরের হাফ সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৬ বল বাকি থাকতে পাকিস্তান সহজ জয় নিশ্চিত করে। এর আগে ছয় বল খেলে শুন্য রানে ওপেনার সাইম আইয়ুব বিদায় নিলে পাকিস্তান শুরুতে ধাক্কা খায়। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে বাবর ও শাহিবজাদা ফারহান মিলে ৩৬ রানের পার্টনারশীপ গড়ে তুলেন। ফারহান ১৮ বলে ১৯ রান করেন। এরপর তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক সালমান আলি আগার সাথে ৭৬ রানের ম্যাচ জয়ী জুটি গড়ে তুলেন বাবর। আগা ২৬ বলে দ্রুত ৩৩ রান সংগ্রহ করেন। ১৩৩ রানে ৬ উইকেটে পতনের পর ফাহিম আশরাফ ও উসমান খাজা পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। এর আগে টসজয়ী পাকিস্তান প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। শাহীন শাহ আফ্রিদী ও সালমান মির্জার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৯ রানে থেমে যায়। আফ্রিদী ২৬ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সালমান ১ উইকেট নিলেও চার ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৬। প্রোটিয়া ওপেনার রেজা হেনড্রিকস সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন। আগামী ৪, ৬ ও ৮ নভেম্বর ফয়সালাবাদে দুই দল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হবে।

৪২ বছর পর ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল নিউজিল্যান্ড

৪২ বছর পর ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল নিউজিল্যান্ড সিরিজজুড়ে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগতে থাকা ইংল্যান্ড শেষ ম্যাচেও ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। এ ম্যাচেও ব্লেয়ার টিকনারের পেস আগুনে পুড়ল ইংলিশ ব্যাটাররা। এরপর সহজ লক্ষ্য তাড়া করে জয় তুলে নিয়ে ৪২ বছরের আক্ষেপ ঘোচালো নিউজিল্যান্ড। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৪০ ওভার ২ বলে ২২২ রান তুলে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ৩২ বল বাকি থাকতেই ২ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতে ৪২ বছর পর ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করল কিউইরা। এর আগে কেবল ১৯৮৩ সালেই ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজের সবগুলো ম্যাচ জিতেছিল তারা।

ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারল ইংল্যান্ড

ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারল ইংল্যান্ড ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল সফরকারী ইংল্যান্ড। আজ সিরিজের প্রথম ওয়াডেতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে ইংলিশরা। ১৩৫ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন ব্রুক। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার ম্যাট হেনরি ও জাকারি ফোকসের তোপের মুখে পড়ে ষষ্ঠ ওভারে ১০ রানে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এরপর ৫৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতন হয় ইংলিশদের। ইনিংসের প্রথম বলে জেমি স্মিথকে শূন্য ও জশ বাটলারকে ৪ রানে শিকার করেন হেনরি। আরেক ওপেনার বেন ডাকেট-জো রুট ও জ্যাকব বেথেলকে ২ রানে এবং স্যাম কারানকে ৬ রানে বিদায় দেন ফোকস। উইকেট পতন ঠেকিয়ে ইংল্যান্ডকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন ব্রুক ও জেমি ওভারটন। ৮৭ বলে ৮৭ রানের জুটিতে ইংলিশদের দেড়শ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান তারা। দলীয় ১৪৩ রানে ওভারটনকে আউট করে নিউজিল্যান্ডকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার জ্যাকব ডাফি। ৫৪ বল খেলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪৬ রান করেন ওভারটন। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ওভারটন ফেরার পর ১৬৬ রানে নবম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তখন ৭৩ বলে ৮৫ রান নিয়ে ক্রিজে ছিলেন ব্রুক। শেষ ব্যাটার লুক উডকে নিয়ে দশম উইকেটে ৩২ বলে রেকর্ড ৫৭ রানের জুটি গড়েন ব্রুক। ওয়ানডেতে দশম ও শেষ উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি ইংল্যান্ডের। রেকর্ড জুটি গড়ার পথে ৮২ বলে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান ব্রুক। শেষ ব্যাটার হিসেবে ব্রুক আউট হলে ৩৫.২ ওভারে ২২৩ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ৯টি চার ও ১১টি ছক্কায় ১০১ বলে ক্যারিয়ার সেরা ১৩৫ রান করেন ব্রুক। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন উড। নিউজিল্যান্ডের ফোকস ৪১ রানে ৪ উইকেট নেন। ২২৪ রান তাড়া করতে নেমে পেসার ব্রাইডন কার্সের বোলিং নৈপুন্যে ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। উইল ইয়ং ৫, কেন উইলিয়ামসন গোল্ডেন ডাক ও টম লাথাম ২৪ রান করে কার্সের শিকার হন। পঞ্চম উইকেটে ৯৩ বলে ৯২ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে লড়াইয়ে রাখেন ড্যারিল মিচেল ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। ৫১ বলে ৫১ রান করে ব্রেসওয়েল ফিরলেও, নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন মিচেল। ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের সাথে ৫০ বলে ৪৯ এবং সপ্তম উইকেটে নাথান স্মিথের সাথে অবিচ্ছিন্ন ১৭ রান যোগ করেন মিচেল। স্যান্টনার ২৭, মিচেল ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৯১ বলে অপরাজিত ৭৮ ও স্মিথ ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ইংল্যান্ডের কার্স ৩ উইকেট নেন। দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা হন ব্রুক। আগামী ২৯ অক্টোবর হ্যামিল্টনে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে দু’দল।

উন্মোচিত হলো বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি

চট্টগ্রামে উন্মোচিত হলো বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক সিআরবি (সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং) প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। রোববার দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই দলের অধিনায়ক লিটন দাস ও শাই হোপ ট্রফিটি উন্মোচন করেন। এরপর তারা সিআরবির দৃষ্টিনন্দন পুরোনো রেল ইঞ্জিনের সামনে ফটোসেশনে অংশ নেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে দেশের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানে ট্রফি উন্মোচনের ধারা শুরু করেছে। এর আগে ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি লালবাগ কেল্লায় এবং সিলেটের চা বাগানে উন্মোচিত হয়েছিল। এবার চট্টগ্রামের শতবর্ষী সিআরবিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে আগামী সোমবার চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৯ ও ৩১ অক্টোবর, প্রতিটি ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ, টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অধিনায়ক লিটন দাস। বাংলাদেশ দলের স্কোয়াড:লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামিম হোসেন পাটোয়ারী, রিশাদ হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, নুরুল হাসান সোহান ও সাইফ হাসান।

সাংবাদিকদের সম্প্রীতির বন্ধনে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত

সাংবাদিকদের সম্প্রীতির বন্ধনে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত গোমস্তাপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুরে সাংবাদিকদের সম্প্রীতি বন্ধন এর মিলন মেলা উপলক্ষে এক প্রীতি  ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজকের খেলায়  অংশগ্রহণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক ক্রিকেট একাদশ ও নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট (এন,জি,বি) ক্রিকেট একাদশ। প্রীতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় রহনপুর এ বি স্কুল মাঠে এতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া  অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার ম্যাচটি ছিল জাঁকজমকপূর্ণ ও অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ, যেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক ক্রিকেট একাদশ বনাম এন,জি,বি ক্রিকেট একাদশ একে অপরের মুখোমুখি হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক একাদশ ৮৬ রান তাড়া করতে নেমে জমজমাট এই খেলায় বিজয়ী হয়ে গৌরব অর্জন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক ক্রিকেট একাদশ। প্রথমে এন,জি,বি টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দলীয় অধিনায়ক নিশান বাবু। নির্ধারিত ১০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে  ৮৫ রান করতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। এনজিবির পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন মনোয়ার হোসেন এবংএনজিবির বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক একাদশের দলীয় অধিনায়ক জোহুরুল ইসলাম। এসময় বক্তব্যে রাখেন দুই দলের অধিনায়ক, তাদের বক্তব্যে তারা বলেন, এই ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে। খেলা শেষে স্থানীয় জনগণের মাঝে আনন্দ-উাসের ঢেউ বয়ে যায় এবং এই ক্রিকেট  বিনোদনকে আনন্দ আরও রঙিন করে তুলেছে বলে মত প্রকাশ করেন দর্শকরা।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে রশিদ খানকে টপকে রিশাদের বিশ্বরেকর্ড

দুর্দান্ত বোলিংয়ে রশিদ খানকে টপকে রিশাদের বিশ্বরেকর্ড ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিংয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশের তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের ১৭৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে রিশাদ গড়েছেন এক নয়, দুইটি বড় রেকর্ড। তিন ম্যাচের সিরিজে ১২ উইকেট শিকার করে রিশাদ ভেঙে দিয়েছেন আফগানিস্তানের রশিদ খানের বিশ্বরেকর্ড। এতদিন পর্যন্ত ওয়ানডের ৩ ম্যাচের কোনো সিরিজে স্পিনার হিসেবে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নিয়েছিলেন রশিদ খান ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। রিশাদ এবার সেটি টপকে গড়লেন নতুন ইতিহাস। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের হয়েও নতুন রেকর্ডের মালিক হয়েছেন তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ ছিলেন আরাফাত সানি। রিশাদ সেই রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন।

১৯ মাস পর ঘরের মাঠে টাইগারদের সিরিজ জয়

১৯ মাস পর ঘরের মাঠে টাইগারদের সিরিজ জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। এবার সেই রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও ১৭৯ রানের জয় তুলে নিয়েছে তারা। ১৯ মাস পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে শেষ ওয়ানডে সিরিজ জয় পেয়েছিল টাইগাররা। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে ধসে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপ। ২৯৭ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০.১ ওভার শেষে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে করে ২৯৬ রান, ৮ উইকেটের বিনিময়ে। এরপর ব্যাট হাতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নাসুম আহমেদ এবং রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণির সামনে ব্যাটারদের একের পর এক উইকেট হারাতে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলেন আকিল হোসেইন, যিনি ১৫ বলে ২৭ রান করে মিরাজের কাছে উইকেট খুইয়ে আসেন। তার আগে কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্র্যান্ডন কিং করেন ১৮, কিসি কার্টি ১৫, এবং জাস্টিন গ্রিভসও ১৫ রানে থেমে যান। দলের অন্য ব্যাটাররা পুরোপুরি ব্যর্থ। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আজকের দিনে সবচেয়ে সফল ছিলেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। তারা দুজনেই ৩টি করে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম দিকেই চাপে ফেলে দেন। তানভীর ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয় ১৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। পাশাপাশি, ২-১ ব্যবধানে ট্রফি নিজেদের ঘরেই রেখে দিচ্ছে টাইগার বাহিনী। এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য-সাইফের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ওয়ানডেতে দারুণ সূচনা করে বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান দুই ওপেনার। পাওয়ারপ্লেতে নিয়ন্ত্রিত ঝুঁকি নিয়ে তারা রান তোলেন দ্রুত গতিতে। সাইফ হাসান ৭২ বলে ৮০ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৬টি চার ও ৬টি ছক্কা। অপরপ্রান্তে সৌম্য সরকার আরও একবার দেখান তার স্বরূপ। ৮৬ বলে ৯১ রান করেন তিনি ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে। দুজনের ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি দলকে এনে দেয় রানের দারুণ ভিত, যা ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়। তবে এই জুটি ভাঙার পর ইনিংসের গতি কিছুটা মন্থর হয়ে যায়। তাওহীদ হৃদয় ও নআজমুল হোসেন শান্ত চেষ্টা করেন ইনিংসকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর কারণে বড় স্কোরের সম্ভাবনা কিছুটা কমে আসে। হৃদয় ৪৪ বলে ২৮ রান এবং শান্ত ৫৫ বলে ৪৪ রানে আউট হন। শেষ দিকে রিশাদ হোসেন, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাসুম আহমেদরা তেমন বড় অবদান রাখতে পারেননি। তবে শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ জুটি গড়ে রানের চাকা সচল করার জোর চেষ্টা চালান। দলীয় ২৯৬ রানে ও ইনিংসের শেষ বলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে ফেরেন মিরাজ। সোহান ৮ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ফলে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২৯৬ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন স্পিনার আকিল হোসেন। তিনি ৪ উইকেট নেন ৪১ রানের বিনিময়ে। এছাড়া আথানাজে নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া মতি ও চেজ পান একটি করে উইকেট।

‘দিল্লিতে কুম্বলের ১০ উইকেট নেওয়ার পিচ মিরপুরের থেকেও খারাপ ছিল’

‘দিল্লিতে কুম্বলের ১০ উইকেট নেওয়ার পিচ মিরপুরের থেকেও খারাপ ছিল’ জিম লেকার, অনিল কুম্বলে, এজাজ পাটেল। ত্রয়ীর মধ‌্যে অদ্ভুত মিল রয়েছে। স্পিনে তিনজন হাত ঘুরান। ক্রিকেট বিশ্বে তারাই কেবল টেস্টে এক ইনিংসে ১০টি উইকেট পেয়েছেন। জিম লেকার ম‌্যানচেস্টারে। অনিল কুম্বলে দিল্লিতে। এজাজ মুম্বাইয়ে। প্রতিপক্ষ যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও ভারত। বিংশ শতাব্দীর আগে এই অস্বাভাবিক সাফল‌্যের দেখা পেয়েছিলেন লেকার ও কুম্বরে। এজাজই কেবল বিংশ শতাব্দীর প্রতিনিধি। হঠাৎ এই আলোচনা কেন? কেনই বা ১০ উইকেট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আলোচনাটা উঠছে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদের এক মন্তব‌্যকে ঘিরে। মিরপুর শের-ই-বাংলার উইকেট নিয়ে আলোচনা থামছে না। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর মিরপুরে আবার ফিরেছে ওয়ানডে। এ সময়ে গামিনি ডি সিলভার পরিবর্তে মিরপুরের দায়িত্বে টনি হেমিং। কিন্তু চিরচেনা মিরপুর পাল্টাতে পারেনি স্পিন দূর্গ। ধীর গতির, লো বাউন্সের উইকেট। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রীতিমত হিমশিম খেল। বাংলাদেশও ভুুগেছে। তাতেই উঠছে প্রশ্ন, এমন উইকেট খেলে লাভ কী? আর জয়েও কি প্রত‌্যাশিত লক্ষ‌্য পূরণ হলো? সময়ের কাছে সেই প্রশ্ন তোলা থাক। আগামীকাল মঙ্গলবার দুই দলের দ্বিতীয় ওয়ানডে। দলের প্রতিনিধি হয়ে মুশতাক আহমেদ এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।  কিংবদন্তি স্পিনার পাকিস্তানের হয়ে লম্বা সময় খেলেছেন। ৯৬ এর বিশ্বকাপ জিতেছেন। লেগ স্পিনার হিসেবে সাফল‌্য টইটুম্বর। তার কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিল, এর চেয় বাজে উইকেট এর আগে তিনি দেখেছেন কি না? উত্তরে বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচ বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, অনেক (বাজে উইকেট)। আমার মনে আছে, দিল্লিতে ভারতের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে অনিল কুম্বলে এক ইনিংসে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন। সেই উইকেটটি এর থেকেও খারাপ ছিল।’’ এমন উইকেটে মুশতাক নিজের সেরা সময়ে কত উইকেট পেতেন? সহজেই ৭, ৮, এমনকি ১০ উইকেট নিতে পারতেন? উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘‘না, সত্যি বলতে এটা ততটা সহজ নয়। যেমনটা ওই ভাই জিজ্ঞাসা করলেন, কখনও কখনও বেশি চাপের মধ্যে থাকতে হয় কারণ আপনাকে সেরাটা দিতে হবে। একজন তরুণ লেগ-স্পিনার হিসেবে আপনি নার্ভাস হতে পারেন। কোচিং দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কথা হলো প্রক্রিয়া ধরে রাখা। এই পিচগুলো কখনও কখনও আপনাকে আপনার কমফোর্ট জোন এবং প্রক্রিয়া থেকে বের করে নিয়ে যেতে পারে।’’ এজন‌্য সেন্ট্রাল উইকেটে লম্বা সময় স্পিনাররা বল করেছেন। কারণ ব‌্যাখ‌্যা করতে গিয়ে মুশতাক বলেছেন, ‘‘এই ধরণের পিচে, আপনাকে খুব স্মার্ট এবং ফিল্ড পজিশন নিয়ে ধূর্ত হতে হবে। সঠিক ফিল্ড সেট করে আপনাকে ব্যাটসম্যানকে আউট করতে হবে, সে ফ্রন্ট-ফুট না ব্যাক-ফুট প্লেয়ার, এবং আপনার গতি (৮৫ বা ৯০+ কিমি/ঘন্টা) কেমন হবে, তা বুঝে বল করতে হবে। কোচ হিসেবে আমরা তাদের তথ্য দিই, এবং প্লেয়ারদের তা মাঠে কার্যকর করতে হয়।’’

মিরপুরের স্পিন-ফাঁদে নাকাল, নাসুমের জবাবে আকিলকে উড়িয়ে আনছে উইন্ডিজ

মিরপুরের স্পিন-ফাঁদে নাকাল, নাসুমের জবাবে আকিলকে উড়িয়ে আনছে উইন্ডিজ বাংলাদেশের বিপক্ষে চলমান তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৭৪ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর স্কোয়াড শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের স্পিন আক্রমণকে আরও ধারালো করতে বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনকে উড়িয়ে আনা হচ্ছে। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগেই দলের সঙ্গে যোগ দিতে আজ রাতেই তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির একজন কর্মকর্তা আকিলের দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত সিরিজের প্রথম ম্যাচে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মন্থর ও নিচু বাউন্সের উইকেটে দুই দলের স্পিনাররাই প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই স্কোয়াডে পরিবর্তন আনছে সফরকারীরা। এর আগে বাংলাদেশও নিজেদের স্পিন আক্রমণ শক্তিশালী করতে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের স্পিনার রিশাদ হোসেন ও তানভীর ইসলাম মিলে ৮ উইকেট শিকার করে স্বাগতিকদের জয়ের নায়ক ছিলেন। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনা খারি পিয়েরে ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন এবং অফ স্পিনার রস্টন চেজ দুটি উইকেট পান। এদিকে, দলে আরও কিছু পরিবর্তন এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার র‍্যামন সিমন্ডস, যিনি এর আগে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তবে ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকা দুই পেসার জেডিয়াহ ব্লেডস ও শামার জোসেফ দেশে ফিরে যাবেন। আরও জানা গেছে, টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নিতে অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার আগামী ২১ অক্টোবর দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।

রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের; রাতে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান

সুপার ফোরে রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের; রাতে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গতরাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ১৯ ওভার ৫বলে জয় নিশ্চিত করে। প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান দারুণ বোলিংয়ে নেন ৩ উইকেট। জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও সাইফ হাসানের ৪৫ বলে ৬১ রান এবং তাওহীদ হৃদয়ের ৩৭ বলে ৫৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে উত্তেজনা তৈরি হলেও নাসুম আহমেদের শান্ত সিঙ্গেলে ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষে পৌছায় বাংলাদেশ। এদিকে রাজনীতি, কূটনীতি আর প্রতীকী দূরত্ব সবকিছু ছাপিয়ে টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বারে মতো মুখোমুখি হচ্ছে তারা। তবে এবার সুপার ফোরের ম্যাচে। ম্যাচটি শুরু হবে আজ রাত সাড়ে আটটায়। গ্রুপপর্বে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। তবে সেই ম্যাচে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের চেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটারদের হাত মেলাতে না চাওয়া, যাতে জড়িয়ে পড়ে ম্যাচ রেফারির নামও।