সেন্টমার্টিন ট্যুর প্ল্যান: দুই দিন এক রাত

399
নভেম্বর থেকে মার্চ—এই পাঁচ মাস সেন্টমার্টিন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন। আকাশ আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু পবনের কোমল স্পর্শ—এটি দেশের প্রবাল দ্বীপটির সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র!

ঢাকা থেকে বাসে টেকনাফ জাহাজ জেটিতে পৌঁছাতে ১০-১২ ঘণ্টা সময় লাগে। বাসের ধরণ ও মান অনুযায়ী জনপ্রতি টিকেটের ভাড়া আটশ’ থেকে দুই হাজার টাকা হতে পারে। টেকনাফ জাহাজ জেটি থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টায় সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছেড়ে যায়। তাই তার আগেই আপনাকে যেতে হবে টেকনাফে। অন্যদিকে প্রতিদিন বিকেল ৩টায় এসব জাহাজ সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে। জাহাজের শ্রেণীভেদে যাওয়া-আসা ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৫০০ টাকা।

প্রথম দিন

বাস আপনাকে জেটির কাছেই নামিয়ে দিবে। জাহাজের টিকিট অগ্রীম কাটা না থাকলে তখনই সংগ্রহ করে নিবেন। টেকনাফ থেকে কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারি বে ক্রুজ এন্ড ডাইন, এম ভি গ্রীনলাইন ১, এমভি ফারহান, আটলান্টিকসহ আরো কয়েকটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যেতে সময় লাগবে আড়াই থেকে তিনঘণ্টা।

ছেঁড়া দ্বীপ

ছেঁড়া দ্বীপ

দুপুর ১২ টার মধ্যেই সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছে যাবেন। হোটেল বুকিং করা না থাকলে ঠিক করে নিন। তারপর চেক ইন করে বেরিয়ে পড়ুন সমুদ্র স্নানের উদ্দেশ্যে। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। এক্ষেত্রে কেয়ারি মারজান রেস্তোরাঁ, বিচ পয়েন্ট, হোটেল আল্লার দান, বাজার বিচ, আসাম হোটেল, সি বিচ, রিয়েল রেস্তোরাঁ, হাজী সেলিম পার্ক ও হোটেল সাদেক-কে বেছে নিতে পারেন।

বিকেল বেলা পশ্চিম বিচে সময় কাটাতে পারেন অথবা হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে জেটি ঘাট থেকে ট্রলার/স্পিড বোটে চলে যান ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণে। যদি ছেঁড়া দ্বীপ যান তাহলে সূর্যাস্থ দেখে হোটেলে সন্ধ্যার ফিরে আসুন। রাতে বারবিকিউ করতে চাইলে আপনার রিসোর্টের সঙ্গে কথা বলুন; তারাই ব্যবস্থা করে দিবে। এক্ষেত্রে নিজেরা মাছ বাচাই করে কিনে দেয়ার চেষ্টা করবেন।

দ্বিতীয় দিন

ঘুম থেকে উঠুন খুব ভোরে। তারপর সাইকেল ভাড়া করে বা পায়ে হেঁটে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঘুরে দেখতে পারেন। পায়ে হেঁটে দ্বীপ ঘুরতে বের হলে অবশ্যই সঙ্গে খাবার পানি নিয়ে নিবেন। ৩-৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে দ্বীপের চারপাশ ঘুরে দেখতে ভালই লাগবে। আর আগের দিন যদি ছেঁড়া দ্বীপ না গিয়ে থাকেন তাহলে সকালের সময়টা কাটিয়ে আসুন। দুপুরের আগেই শেষ সমুদ্র স্নান করে নিতে পারেন! খাওয়া দাওয়া সেরে তিনটার মধ্যে জাহাজে চড়ে বসুন।

সেন্টমার্টিন জেটি ঘাট থেকে জাহাজগুলো ঠিক বিকেল ৩ টায় ছেড়ে যায়। তাই সময়ের আগে জেটি ঘাটে উপস্থিত না হতে পারলে জাহাজ মিস হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এমন ক্ষেত্রে হয় আপনাকে সেদিন দ্বীপে থাকতে হবে অথবা ট্রলারে করে ফিরতে হবে; যা অনেকটা ঝামেলার। সেন্টমার্টিন দ্বীপের জাহাজ জেটি এবং টেকনাফ জাহাজ জেটি থেকে সরাসরি ঢাকায় আসার বিভিন্ন বাসের টিকেট পাওয়া যায়। আপনার পছন্দের বাসে বাড়ির পথে রওনা দিয়ে দিন। অথবা যদি কক্সবাজার যেতে চান তাহলে টেকনাফ থেকে বাসে বা সিএনজিতে কক্সবাজার যেতে পারবেন।