সাইবার নিরাপত্তার কাজে সমন্বয় আনতে এজেন্সি হচ্ছে : তারানা

273

সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা রয়েছে স্বীকার করে আইনের মাধ্যমে ‘সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি’ প্রতিষ্ঠার পর এসব সংস্থার কাজগুলোকে সমন্বয় করা হবে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। গতকাল বুধবার বিটিআরসি কার্যালয়ের সামনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে কার র‌্যালি ও রোড শো উদ্বোধন শেষে একথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাইবার সিকিউরিটির বিষয়টি বিগত দুবছর ধরে হয়তো জোর দেওয়া হচ্ছে এবং আইন প্রণয়নের অপেক্ষায় আছে। আইন প্রণয়ন হলে সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি হবে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে থাকবে সেই এজেন্সি। সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করছে বিটিআরসি, এনটিএমসি, নতুন করে আইসিটি বিভাগও করছে। এই সমন্বয়হীন কাজগুলোকে সমন্বয় হবে তখন। ওই এজেন্সি যখন স্থাপিত হবে, আমি মনে করি তখন কাজের বিভাজনও হবে। সাইবার নিরাপত্তার দেশে সক্ষমতা কতটুকু রয়েছে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তারানা হালিম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ যত দ্রুত এগিয়েছে, সেই সমানতালে সাইবার সিকিউরিটির বিষয়টিতে শুরু থেকে ততটা গুরুত্ব আরোপ করা হয়নি। মূল কারণ হচ্ছে, তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণকেই অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। গত শুক্রবার সাইবার ক্রাইমের শিকার হয় বিশ্বের ১০০টির মতো দেশ; একটি ‘র‌্যানসমওয়্যার’ ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্য ও টেলিকমসহ বিভিন্ন খাতের বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্কে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই কম্পিউটার ম্যালওয়্যারে বাংলাদেশের কিছুকিছু প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হয়। বর্তমানে দেশে সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি না থাকলেও সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা আলাদাভাবে কাজ করছে বলে দাবি করেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা। তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে, সমন্বয়হীনতাটা আছে। কিন্তু আমাদের সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাশ হয়ে গেলে যখন সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি হবে, তখন অসমন্বিত প্রচেষ্টাগুলো সমন্বয় হবে। সাইবার হামলা থেকে আসলে শতভাগ নিরাপত্তা কোনো দেশই কখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা কতটুকু মেক্সিমাম নিশ্চিত করতে পারব এবং এর প্রতিকার করতে পারব বা তৈরি থাকব। সাইবার নিরাপত্তায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার সাথে আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ নানা উদ্যেগে নেওয়া হবে বলেও জানান তারানা হালিম। বাংলাদেশ কম্পিটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে একটি অডিট টিম রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি অডিট টিম বিসিসির আছে, আমরা এটির আইনগত ভিত্তি তৈরি করতে চাচ্ছি- যেন ক্রিটিক্যাল ইনফ্রাকটাকচার যেগুলো আছে, তারা যেন অডিট টিমকে ব্যবহার করে; তারা যেন দেখতে পারে কী কী সমস্যা আছে এবং সমাধানের চেষ্টা করে। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কী কী করণীয় সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের চিঠি দেওয়া হবে জানিয়ে তারানা বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেই অনুসারে নিরাপত্তা সংক্রান্ত অডিট করে যেখানে যেখানে দুর্বলতা পাওয়া সেখানে দৃষ্টি দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিশ্চিত করতে হবে। কার র‌্যালি ও রোড শোর উদ্বোধনীতে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, অপারেটর রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ অন্য অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।