সন্তানই হোক মা-বাবার মনোযোগের কেন্দ্র বলেছেন জেলা প্রশাসক

252

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আজ বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ খাবার বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক এজেডএম নূরুল হক শিক্ষার্থীদের মাঝে শুকনা জাতীয় এ খাবার বিতরণ করেন। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা রহমানের সঞ্চালনায় শুকনা খাবার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা মওদুদ আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেশুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সোহরাব আলী। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা খাতুনসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ। প্রধান অতিথি এজেডএম নূরুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের খাবার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারি অনেক শিক্ষার্থী না খেয়েই স্কুলে আসে। কেউ কেউ কম কম করে খেয়ে আসে। কারো কারো পোশাক নোংরা থাকে। পুষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পায় না। এসব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলে একটা জিনিস ভালোভাবেই বোঝা যায়, এরকম শিক্ষার্থীর মা-বাবা কিংবা অভিভাবক সতর্ক নন। সন্তানের দিকে তাদের তেমন গুরুত্ব থাকে না। কিন্তু সন্তানই মা-বাবার মনোযোগের প্রধান কেন্দ্র হওয়া উচিত। সন্তানেরা স্কুল গেল কিনা, ভালোমত খেতে পেল কিনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতে পারছে কিনা এসব কিছুতেই লক্ষ্য রাখা উচিত অভিভাবকদের। একটা সন্তানকে সঠিকভাবে লালন-পালনের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেক সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বছরের শুরুতেই নতুন বই, দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন আছে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি প্রদান, এরকম অনেক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের বহুবিধ উন্নয়নের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এই সামান্য খাবার বিতরণ। এ খাবারে তেমন কোন উন্নতি হবে না শিক্ষার্থীদের এটাই সত্য। কিন্তু এর মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ যোগানোই প্রধান উদ্দেশ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মা-বাবার গুরুত্বের উপর একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নির্ভর করে। তাই মা-বাবা তথাপি একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবককে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। তাদের সন্তানের সকল দিক লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে তারা ভালোভাবে লেখাপড়া শিখে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাবে। তারা উন্নতি করলে দেশের উন্নতি হবে। আর তখন মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, দুবাইয়ের মতো আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। তিনি অভিভাবকদেরকে আরেকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে বলেন, তাদের সন্তানরা যেন মাদকের সাথে জড়িত না হয় এবং নিজেদেরকেও মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, সন্তানরা যেন জঙ্গিবাদের সাথেও জড়িত না হয় সেদিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে।