শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

436

বাংলা পঞ্জিকার শেষ দুমাস ফাল্গুন ও চৈত্র মিলিয়ে বসন্ত ঋতু। বাংলার প্রকৃতি, আমাদের ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বড় স্থান দখল করে আছে বসন্ত। বসন্ত মিলনের ঋতু, আবার বিরহেরও ঋতু। এদিকে আজ বাংলা ফাল্গুন মাসের ৩ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। শীতের জবুথবু প্রকৃতির অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ সমীরণের প্রবাহ শুরু হয়েছে, এর সাথে দোলায়িত হচ্ছে মানুষের মন ও। জীবনের রসায়নে এ সময়টা এক নতুন পরিবর্তন নিয়ে আসে। হৃদয়ে সৃষ্টি হয় প্রণোদনা, নাড়া দেয় এক অব্যক্ত আবহ। কেবল মানুষের মনেই নয়, বৃক্ষরাজি, পক্ষী ও প্রাণিকূলেও এ হাওয়া দোলা দিয়ে যায়। শীতের বিদায়ের এই সময়ে সময়ে জেলা শহরের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে কলেজ চত্বরে এই উৎসবের উদ্ধোধন করেন এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এবিএম রাশিদুল হাসান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ.কে.এম. মনজুর রেজা, শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম, পৌর মেয়র নজরুল ইসলামসহ কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা। উদ্ধোধনের পূর্বে আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সকলকে বসন্তের শুভেচ্ছা। ছাত্র-ছাত্রীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই এই বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে তারা মানুষ, মানবতা ও দেশের জন্য কাজ করতে পারে। আকাশ সংস্কৃতির কারনে ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছে, এগুলো তুলে ধরার জন্যই, সংস্কৃতির সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য এমন আয়োজন করায় কলেজ কতৃপক্ষকে আমি ধন্যবাদ জানায়। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিলে তাদের মাঝে জাতীয়তাবোধ তৈরি হবে। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ.কে.এম. মনজুর রেজা বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের একটি হল পিঠা। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ১০টি ইতালিয়ান, চায়নিজ খাবাবের নাম বলতে পারলেও, বাংলার পিঠাগুলোর নাম জানে না। তাই আধুনিক প্রজন্মকে এগুলোর সাথে পরিচয় করানো খুবই জরুরী। এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এবিএম রাশিদুল হাসান বলেন, শুধুমাত্র শ্রেণীশিক্ষা নয়। এর পাশাপাশি সহ শিক্ষা কার্যক্রম অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটার জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী অনেক বেশি গুরুত্বারোপ করছেন। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হলে মানুষ কখনও দুর্নীতি, জঙ্গীবাদসহ কোন অপকর্মে জড়াতে পারে না। এসব আয়োজন শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও সামজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা রাখবে। মেলায় কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৩০ টি স্টল অংশগ্রহণ করে। স্টলগুলোতে গিয়ে দেখা যায় বাহারী বিভিন্ন পিঠা ছিল এই উৎসবে। তারমধ্যে অন্যতম- ডালের পিঠা, প্রজাপ্রতি পিঠা, গোলাপ পিঠা, পুলি পিঠা, লবনাঙ্গ, নারিকেল পিঠা, নকশী পিঠা, সামুক পিঠা, চিরুনী পিঠা, তিল পিঠা, তেল পিঠা, ভাপা পিঠা, পালো পিঠা, দুধ পুলি, পাটিশাপটা, তাল পিঠা, গেনী পিঠা, গোলাপ পিঠা, মুখশামলী পিঠা ইত্যাদি।