লন্ডনের কনসার্টে হামলার পরিকল্পনাকারী যুবকের যাবজ্জীবন

321

সংগীত শিল্পি এলটন জনের কনসার্ট কিংবা মধ্য লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে বোমা হামলার পরিকল্পনাকারী ১৯ বছর বয়সী এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে যুক্তরাজ্যের একটি আদালত। পশ্চিম লন্ডনের বাসিন্দা হারুন সাঈদ তার বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রস্তুতি নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই উদ্দেশ্যে মেশিগন গান ও আত্মঘাতী বোমা সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ফাইভের ‘জিহাদি’র ছদ্মবেশে কাজ করা এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তারের পর হারুনের ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখা যায়, তিনি লন্ডনের জনবহুল এলাকাগুলোর খোঁজ নিচ্ছিলেন, যে তালিকায় বিবিসি টু আয়োজিত হাইড পার্কে এলটন জনের কনসার্টও ছিল। আদালতের দ-াদেশ অনুযায়ী অন্তত ১৬ বছর ছয় মাস জেল খাটতে হবে সাঈকে। সন্ত্রাসী পরিকল্পনার অভিযোগ গত বছর হারুনের ভাইকেও যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়েছিল। বিশ্বযুদ্ধ এবং অন্যান্য সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণদিবস ‘রিমেম্ব্রান্স সানডে’তে কোনো একজনের শিরñেদ করার পরিকল্পনা করেছিল সে। বিচারক মাইকেল টপোলস্কি তার রায়ে বলেন, ‘বহু মানুষকে হত্যা করতে’ চেয়েছিল হারুন, তাই যাবজ্জীবন কারাদ-ই তার জন্য উপযুক্ত সাজা। তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ২০১৪ সালের শেষ দিক থেকে হারুনের চরিত্রে পরিবর্তন আসে; এ সময় থেকে তিনি স্বঘোষিত ইসলামিক স্টেটের সমর্থক হয়ে ওঠেন। হারুনের পরিকল্পনা ছিল প্রথমে বন্দুক হামলার পর আত্মঘাতি হামলা চালানো। গত বছরের গ্রীষ্ম থেকে অস্ত্র জোগাড়ে মরিয়া হয়ে অনলাইনে জিহাদিদের খোঁজ শুরু করেন তিনি; সে সময়ই ‘আবু ইসা’ নামে ছদ্মবেশি এক জিহাদির সঙ্গে তার পরিচয় হয়, যে বিদেশে যুদ্ধ করছে বলে হারুনকে জানায়। ‘আবু ইসা’ এরপর হারুনকে ‘আবু ইউসুফ’ নামে অন্য এক জিহাদির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, যাকে এমআই ফাইভের কর্মকর্তা বলছে বিবিসি; জিহাদি ছদ্মবেশে যিনি কাজ করছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতে বলেন, হারুন তার নতুন এ বন্ধুদের সঙ্গে বিদেশে গিয়ে জিহাদে অংশ নিতে চাইলেও পরে জানতে পারে কর্তৃপক্ষ তার পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। এরপর সে বন্দুক কেনার অর্থ সংগ্রহে দ্ইু দফা জাল ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শেষে ‘ইউসুফের’ পরিচয় করিয়ে দেওয়া ব্যক্তির সঙ্গে বার্কশায়ারের এক কফি শপে দেখা করে হারুন যুক্তরাজ্যের ভেতরেই হামলার পরিকল্পনা করেন। তাদের দুই দফা সাক্ষাতের সব কথা গোপনে রেকর্ড করা হয়। ওই সাক্ষাৎগুলোতে হারুন স্পিøন্টার হিসেবে ব্যবহৃত কাঁটতারে ভর্তি শক্তিশালী বোমা কিনতে ছদ্মবেশি ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে দেড়শ পাউন্ড দেন। এর কিছু দিনের মধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।