রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে হবে এই খাবারগুলো

487

উচ্চ রক্তচাপ এখন প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর একটি। এর কোনো পূর্ব লক্ষণ নেই। এবং হঠাৎ করেই একদিন আপনি এর কবলে পড়ে মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়তে পারেন। হঠাৎ করেই একদিন আপনার শরীরে অস্বস্তি এবং বুকে ব্যাথা দেখা দিতে পারে এর ফলে। রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন আপনার ধমনীর দেয়ালের বিপরীতে রক্তের চাপ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে আপনার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া, কিডনিতে সমস্যা, স্ট্রোক, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং দেহের কিছুটা বা পুরোটা প্যারালাইসিস বা পক্ষাগাতগ্রস্ত হয়ে পড়ার মতো মারাত্মক সব রোগ বালাই হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কোনো স্পষ্ট কারণ নেই। তবে মানসিক চাপ এবং আবেগগত উত্থান-পতন এর পেছনে একটি বড় ভুমিকা পালন করে। ডাক্তাররা একে প্রায়ই একে নীরব বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। যথাযথ চিকিৎসা এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমেই একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। এখানে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক খাদ্যগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো।

১. কলা: কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
২. রসুন: রসুন খেলে দেহে নাইট্রিক এসিডের হার বাড়ে। যা রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে প্রশস্ত করে। এবং ধমনীর দেয়ালে রক্তের চাপ কমায়।
৩. সবুজ পাতাবহুল সবজি: সবুজ পাতাবহুল সবজিতে ক্যালোরি কম থাকে। আঁশ, পটাশিয়াম, ফোলেট এবং ম্যাগনেশিয়াম বেশি থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর প্রধান প্রধান উপাদানগুলোর কয়েকটি এগুলো।
৪. স্বল্প চর্বিযুক্ত দুধজাত পণ্য: যেসব দুধজাত পণ্যে চর্বি কম সেসব রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। স্বল্প চর্বিযুক্ত দুধ বা দইয়ে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম যা রক্তচাপ কমায়।
৫. পূর্ণ শস্য: পূর্ণশস্য জাতীয় খাদ্যে আছে প্রচুর আঁশ এবং ভিটামিন, খনিজ পুষ্টি এবং ব্র্যান। যা ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমায়। এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬. বাদাম: আখরোট সহ নানা ধরনের বাদামে আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আঁশ এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি। রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং রক্তপ্রবাহের কোনো ধরনের ওঠানামা প্রতিরোধে বেশ কার্যকর এই খাদ্য।
৭. বীজ: সূর্যমুখী ফুল এবং কুমড়ো বীজ উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এই বীজগুলো পটাশিয়াম ও ম্যাগেনেশিয়ামে সমৃদ্ধ যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
৮. আম: আমে আছে প্রচুর আঁশ এবং বিটাক্যারোটিন। যা রক্তচাপ কমায়।
৯. রুই মাছ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ মাছ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড প্রদাহ কমায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
১০. ক্যাপসিকাম: এতে আছে ভিটামিন সি। যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং রক্তচাপ কমায়।
১১. অ্যাপ্রিকট: এতে আছে ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন। যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে। প্রতিকাপ অ্যাপ্রিকটে ৩.৩ গ্রাম রক্তচাপ কমাতে সহায়ক আঁশ থাকে।
১২. ডার্ক চকোলেট: এতে আছে ফ্ল্যাবোনয়েড যা রক্তচাপ কমায়।
১৩. আপেল: প্রতিটি আপেলে আছে ৪.৫ গ্রাম রক্তচাপ কমানোর খাদ্য আঁশ।
১৪. গাজর
এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন। যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
১৫. ডিম: ডিম একই সঙ্গে কোলোনস্টেরল নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
১৬. চেরি: খাদ্য আঁশ এবং ভিটামিন সি-তে ভরপুর এই ফলটিও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
১৭. জাম্বুরা: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটিতে আরো আছে লাইকোপেন নামের উপদান। যা রক্তচাপ কমাতে বেশ কার্যকর।
১৮. ফ্ল্যাক্সসীড: এতে আছে খাদ্য আঁশ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। যা প্রদাহ কমাতে, হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে এবং রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
১৯. স্পিনাক: খাদ্য আঁশ, বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় এটিও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
২০. টমোটো: ভিটামিন সি সহ অন্যান পুষ্টি উপাদানের পাশপাশি এতে আছে লাইকোপেন, যা রক্তচাপ কমায়।
২১. ব্লুবেরি: এটি নিম্ন গ্লিসেমিক উপাদান সমৃদ্ধ এবং ফাইবার ও রিজার্ভাট্রোল সমৃদ্ধ। যা উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
২২. পেঁয়াজ: এতে আছে কুয়ারসেটিন, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
২৩. লিমা শীম: জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কলেজ অফ নিউট্রিশন এ প্রকাশিত গবেষণা মতে এটি রক্তচাপকে স্বাস্থ্যকর মাত্রায় ধরে রাখে।
২৪. তরমুজ: এতেও আছে ভিটামিন সি এবং লাইকোপেন, যা রক্তচাপ কমায়।
২৫. মিষ্টি আলু: এতে আছে রক্তচাপ প্রতিরোধী শ্বেতসার, ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন। রক্তচাপ কমায় এটি।
২৬. স্ট্রবেরি: এত আছে একধরনের পিগমেন্ট যা রক্তচাপ কমায়।
২৭. পাতা কপি: কোয়ারসেটিন, বিটাক্যারোটিন এবং ভিটামিন  সি সমৃদ্ধ এই সবজিটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
এছাড়া মটরশুটি, সবুজ শীম, পেঁপে ওটমিল, পেয়ারা এবং কিউই ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপাদান রয়েছে।