ম্যাকগ্রা অ্যান্ডারসনের কাছে পরাজিত হলেও খুশি হবেন

237

ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রাচীন ফরম্যাটে যদি শ্রেষ্ঠ পেসারদের তালিকা করা হয় তবে এক বাক্যেই উপরের দিকে নাম থাকবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রার। টেস্ট ক্রিকেটে এই কিংবদন্তি বোলারের মোট উইকেট ৫৬৩টি। তার সমান উচ্চতায় এখন পর্যন্ত আসতে পারেননি আর কোনো পেসার। কিন্তু বেশি দিন এই সিংহাসন ধরে রাখতে পারবেন না তিনি।
তার আসন দখলের পথে একটু একটু করে এগিয়ে আসছেন ইংল্যান্ড পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। ৫৫৭ উইকেট নিয়ে ম্যাকগ্রার ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছেন এই পেসার। আর মাত্র ৬টি উইকেট হলেই ধরে ফেলবেন ম্যাকগ্রাকে। কিন্তু স্বয়ং ম্যাকগ্রা তার আসন হারানোর সামনে দাঁড়িয়ে বেশ উৎফুল্লই আছেন। তার মতে, অ্যান্ডারসন তাকে পেছনে ফেললে খুশিই হবেন তিনি। এটা তার জন্য গর্বের।
ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ চলছে ইংলিশদের মাটিতে। আর এই সিরিজেই ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন অ্যান্ডারসন, এমনটাই ধারণা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। তবে ম্যাকগ্রা মনে করেন, যদি অ্যান্ডারসন তাকে ছাড়িয়ে যান তবে এই ইংলিশ পেসারকে হয়তো আর কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না।
২০০৭ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া অস্ট্রেলিয়ান এই কিংবদন্তি জনপ্রিয় ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘আমি জিমিকে (জেমস অ্যান্ডারসন) অনেক সম্মান করি। তার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা। আমি স্বপ্ন দেখি একদিন সে আমাকে ছাড়িয়ে যাবে কিন্তু তাকে কেউ ছাড়াতে পারবে না।’
‘রেকর্ড করা সব সবসময়ই দারুন কিছু। আমি গর্বিত ফাস্ট বোলার হিসেবে এই রেকর্ড করতে পারায়। আমি সমানভাবেই গর্বিত জিমি আমার সমান পৌঁছে গেলে। এটা ফাস্ট বোলারদের জয়। সে যে দেশেরই হোক না কেনো। আমি নিজের চোখে আমাকে ছাড়ানোর সেই দৃশ্য দেখতে চাই। টি-টোয়েন্টির এই যুগে একজন ফাস্ট বোলারের জন্য এই উচ্চতায় পৌঁছানো কতোটা কষ্টের আমি বুঝি।’
২০০৩ সালে লর্ডসে টেস্ট অভিষেক হয় অ্যান্ডারসনের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচের পর ১৪১টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন এই পেসার। এমন অসাধারণ ফিটনেস খুব কম পেসারই দেখাতে পেরেছেন। এতোগুলো টেস্টে ৩১ হাজার ৬৫টি বল করেছেন অ্যান্ডারসন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এত বল করার কীর্তি নেই আর কোনো পেসারের।
এমন এক পেসার সম্পর্কে আরেক তারকা পেসারের মুখে গুণগানের ফুলঝুরি স্বাভাবিকই। তাই তো ম্যাকগ্রা বলেন, ‘একজন ফাস্ট বোলারের জন্য নিজেকে ফিট রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি। আর এই কাজটি জিমি দারুনভাবেই করেছে। শুধুমাত্র মানসিকভাবে শক্ত থাকলেই এটা সম্ভব। আর গত ১৫ বছরে জিমি নিজের মানসিক শক্তিটা প্রবলভাবে তুলে ধরেছে। আমি সব সময় বলি জিমি অন্য শ্রেণীর। ২০০৬-০৭ এ তার বিপক্ষে খেলেই আমি বুঝছিলাম।’
টেস্ট ইতিহাসে যুগে যুগে অনেক ফাস্ট বোলার এসেছেন। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, অনিল কুম্বলে বা মাইকেল হোল্ডিং যা করে দেখাতে পারেননি অ্যান্ডারসন করে দেখিয়েছেন তা। তার এই কীর্তিতে ম্যাকগ্রার আনন্দের শেশ নেই।