ভারতে বিজেপির নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) জোট ছাড়ার হুমকি দিয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের ক্ষমতাসীন দল তেলেগু দেশম বলেছে, জোটের নিয়ম রক্ষা না হলে তারা আর এ জোটে থাকবে না। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু গত শনিবার জোট শরিকের ওপর তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর এই নাখোশ হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তেলেগু দেশম পার্টির নেতা ও চন্দ্রবাবু নাইডু বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে অন্ধ্র প্রদেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কিছু পরিকল্পনা দেন নাইডু। কিন্তু সেসব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্ধ্রের বিজেপি নেতৃত্ব সম্প্রতি চন্দ্রবাবু সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়। জোটের প্রধান দলটির প্রতি চন্দ্রবাবুর ক্ষিপ্ত হওয়ার এটিও একটি কারণ। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত রাজ্য নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করা। জোটের নিয়ম না রক্ষা করা হলে আমরা আমাদের পথ দেখব।’ মহারাষ্ট্রে বিজেপির শরিক শিবসেনা এরইমধ্যে এনডিএ ছাড়ার হুমকি দিয়েছে। শিবসেনা নেতা উদ্ভব ঠাকরে জানিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী কোনো নির্বাচনে শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধবে না। এবার এল তেলেগু দেশমের হুমকি। শনিবার চন্দ্রবাবু বলেন, ‘বিজেপি যদি জোটে আমাদের না চায়, তবে তাদের নমস্কার জানাতে আমরা প্রস্তুত।’ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ২০১৪ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট সরকার (এএনডিএ)। তবে নরেন্দ্র মোদি সরকার নিয়ে ভারতে বিতর্কের অভাব নেই।
নোট বাতিল, জিএসটি চালু, বেকার সমস্যা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সর্বোপরি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান, সব মিলে এখন ভালো নেই বিজেপি সরকার। ভারতের প্রভাবশালী সাময়িকী ইন্ডিয়া টুডের সর্বশেষ জনমত সমীক্ষাও বিজেপিকে ভাবিয়ে তুলেছে। সেখানে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, গত এক বছরে বিজেপির জনসমর্থন কমেছে ১২ শতাংশ আর কংগ্রেসের সমর্থন বেড়েছে ১০ শতাংশ। ১৯৯৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে অন্ধ্র প্রদেশের ক্ষমতায় রয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তেলেগু দেশমের রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশের বিধানসভার ১৭৬টি আসনের মধ্যে ১০৩টি। আর লোকসভায় রয়েছে ১৬টি আসন। আগামী বছরের এপ্রিল মাসে ভারতের লোকসভার পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের আগে ঘরের এই কোন্দলে বিজেপির ক্ষতি হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।