ভয়াবহ পারমাণবিক হামলার ৭২ তম বর্ষপূর্তি : স্মৃতির ক্ষতচিহ্ন যাদের বুকে

185

ভয়াবহ পারমাণবিক হামলার ৭২ তম বর্ষপূর্তি আজ। নিহত ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের রক্ত আর অবকাঠামোর ধ্বংসস্তূপে মুহূর্তেই অচেনা হয়ে গিয়েছিল চেনাজানা হিরোশিমা। ইতিহাসের পাতায় ৬ আগস্ট দিনটির পরিচিতি ব্ল্যাক ডে বা ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন দিবস’। ৭২ বছর আগে পৃথিবীতে বিরাজিত মানবীয়তার আলো নিভিয়ে অন্ধকার নামিয়েছিল আজকের পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীকে বিস্মিত করে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় তারা ছুড়ে দিয়েছিল ‘লিটল বয়’ খ্যাত পারমাণবিক বোমা। ঘটনার ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক হামলার ভয়াবহ সেই স্মৃতি যেন জাপানের মানুষের মনে এখনও তরতাজা। গত রোববার ৭২ তম হিরোশিমা দিবস পালন করতে পিস মেমোরিয়াল পার্কে জড়ো হন জাপানিরা। বেদনার্ত স্মৃতির ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে সেখানে প্রার্থনায় রত হন তারা। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট ওই পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান তোশিকি ফুজিমোরি। জাপানি সংগঠন হিদানকিয়োর শীর্ষ কর্মকর্তা তিনি। ৬ আগস্ট পারমাণবিক বোমা হামলার ঘটনায় যারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তাদেরকে নিয়ে সংগঠনটি গঠিত হয়েছে। ৭২ তম হিরোশিমা দিবসকে সামনে রেখে একটি পেইন্টিং এর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তোশিকি ফুজিমোরি। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমাটি ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ফুজিমোরির বয়স ছিল মাত্র এক বছর। তাকে কোলে করে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন মা। হঠাৎ প্রচ- বিস্ফোরণ। মা আর এক বছরের ফুজিমোরি দুইজনই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অনেকটা মরতে মরতেই বেঁচে যান তিনি। আর কখনও যেন এমন হামলা না হয় তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিরোশিমা। উত্তর কোরিয়া যখন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দাবি করে যাচ্ছে তখন ৭২ তম বর্ষপূর্তিতে হিরোশিমা বলছে ‘নেভার এগেইন’ বা ‘আর কখনও নয়’। হিরোশিমায় জন্মগ্রহণকারী পিয়ং ইয়ং-এর এথনিক কোরিয়ান কিম জি নো মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা হিবাকুয়াশারা (পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়ারা) এবং আমাদের দলগুলো একটি স্পষ্ট লক্ষ্য ধারণ করে। আর তাহল বিশ্ব থেকে পারমাণবিক বোমা বিলুপ্ত করা। পারমাণবিক অস্ত্র কখনওই ব্যবহার করা উচিত নয়।’ ৬ আগস্ট যখন হিরোশিমায় হামলা হয় তখন কিম তার মায়ের গর্ভে। ওই বোমার তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনিও। ৭২ তম হিরোশিমা দিবসে মোতোইয়াসু নদীতে ভাসমান মশাল জ¦ালানো হয়েছে।