বিদেশি কিউরেটরের সংখ্যা বাড়াচ্ছে : বিসিবি

138

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ভারী হচ্ছে বিদেশি কিউরেটরদের পাল্লা। প্রধান কিউরেটর শ্রীলঙ্কান গামিনি ডি সিলভা তো আছেনই, তার সাথে যোগ দিচ্ছেন দুই ভারতীয়। এদের ভেতরে নাগপুর ক্রিকেট একাডেমির প্রধান কিউরেটর প্রবীন হিংনিকারের নিয়োগ ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
জানা গেছে, এ মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি বিসিবির গ্রাউন্ডস কিমিটির নথিতে নাম লেখাবেন।
অপেক্ষমান তালিকায় থাকা আরেক ভারতীয় কিউরেটরের খুব শিগগিরই বিসিবির সাথে আলাপ আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিকল্পনার সাথে তার বনিবনা হলে তিনিও অনতি বিলম্বেই নতুন কিউরেটর হিসেবে নাম লেখাবেন।
বিদেশি কিউরেটর নিয়োগের প্রধান কারণ হিসেবে সোমবার (৫ মার্চ) বিসিবিতে নিজ কারযালয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান মোহাম্মদ জালাল ইউনুস জানালেন, গ্রাউন্ডস কমিটির লোকবল সংকটের কথা।
জালাল বলেন, ‘গ্রাউন্ডস কমিটির আন্ডারে কাজ করা লোক সংখ্যা কম। টেকনিক্যাল লোকের সংখ্যা কম। সেজন্যই আমরা চিন্তা করেছিলাম গামিনির সাথে আরও দুজন কউরেটরকে নিয়োগ দেয়ার জন্য। অলরেডি একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে খুব শিগগিরই যোগদান করবে। আরেকজন আসছে। আসার পরে আলাপ আলোচনা করে তারপরে নিয়োগ দেয়া হবে। দু’জনই ভারতীয়।’
এরপর তারা বিবেচনায় রেখেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ট্রু-উইকেটের বিষয়টি। বিশেষ করে জাতীয় লিগে। চার দিনের এই ম্যাচে ফ্ল্যাট উইকেট থাকায় একদলের তিন-চারজন ব্যাটসম্যানকে রান বন্যায় ভাসতে দেখা যায়। তাই এমন উইকেট করা হবে যেখানে ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলাররাও সহায়তা পেয়ে থাকেন। মানে স্পোর্টিং উইকেট।ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম‘কিছু ভেন্যুতে কিছু উইকেটকে ট্রু করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। আমরা অনেকদিন ধরেই এটা চাচ্ছি। ন্যাশনাল লিগ যখন হচ্ছে তখন একপেশে খেলা হচ্ছে। মানে ব্যাটসম্যানরা বোলারদের ওপরে ডমিনেট করে। দেখা যাচ্ছে একটা দলের মধ্যে ৩-৪ জন করে সেঞ্চুরি করে, মানে হচ্ছে ফ্ল্যাট উইকেট। আমরা চাচ্ছি এমন উইকেট হোক যাতে করে বোলাররাও হেল্প পায়।’
তবে, এই ভারতীয়র বাইরেও নাকি আরও কয়েকজন বিদেশি কিউরেটরের সাথে আলোচনাপ্রধান কিউরেটর শ্রীলঙ্কান গামিনি ডি সিলভা-ছবি: সংগৃহীত
চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটি। এর ভেতরে গামিনিরি স্বদেশি দু’ একজনও আছেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাদের সাথে নুন্যতম এক বছরের চুক্তিতে যাবে বিসিবি। তবে জালাল ইউনুসের ভাষ্যমতে চুক্তির মেয়াদ আরও লম্বা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, ‘চুক্তিটা লম্বা সময়ের জন্য। এক বছর তো মিনিমাম। কারণ তাদের সময় দিতে হবে। যেসব ভেন্যু আছে সেগুলো পরিদর্ন করবে দেখবে কেমন উইকেট দরকার। আমরা প্রায়ই বলছি যে আমরা ট্রু উইকেট বানাতে চাচ্ছি সেজন্য কি দরকার, কিছু জলবায়ুগত ব্যাপার আছে, এমন জলবায়ুতে যে ধরনের উইকেট আমরা চাই সেগুলো মেনটেইন করতে পারবো কি না এসব ব্যাপারে তাদের সাথে আমাদের আলাপ আলোচনা হবে। সেজন্য তাদের সময় দেয়া দরকার।’
নিয়োগ এবং চুক্তি চূড়ান্ত হলে দেশি ও বিদেশি কিউরেটরদের সমন্বয়ে করা হবে একটি প্যানেল। যেখানে তারা একে অপরের সাথে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে উইকেটের উন্নয়নে কাজ করবেন। এতে করে আইডিয়া শেয়ারের দারুণ সুযোগও তারা পাবেন এবং দেশি কিউরেটর যারা অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া তারা অভিজ্ঞ বিদেশিদের কাছ থেকে আরও বিস্তৃত জ্ঞান লাভ করবেন। ফলে তাদের বাড়তি প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করেন এই মিডিয়া কমিটি প্রধান।
‘একটা প্যানেল থাকবে সেখানে সবাই কাজ করবে। কিউরেটর হিসেবে যারা আসবে তারা স্থানীয়দের সাথে নলেজ শেয়ার করবে। এতে করে দেশের বাইরে গিয়ে ট্রেনিংয়ের আর দরকার হবে না। যারা আসছে কোয়াইট এক্সপেরিয়েন্সড।’
‘যখন বিদেশিকিউরেটর আসবে তখন দেশি কিউরেটররা ভাল করবে। অবশ্যই তারা ভাল করছে তবে তাদের সাথে কাজ করলে, তাদের নলেজ আরও বাড়বে এবং অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা যেহেতু কারও নেই সেহেতু তাদের সাথে কাজ করলে টেকনিক্যাল ব্যাপারগুলো তারা বিনিময় করতে পারবে।’-যোগ করেন জালাল ইউনুস।