পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাকাল সাধারণ মানুষ : বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০৫ টাকা কেজি দরে

146

পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাকাল হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। রান্নায় অপরিহার্য এই প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম দুই-তিন দিনের ব্যবধানে আবারো কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। পাইকারি ও খুচরা- দুই জায়গাতেই বেড়েছে এর দাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন বাজার ও নিউমার্কেটে বুধবার দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। আমদানি কমে যাওয়ায় এ দাম বৃদ্ধির কারণ বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতার পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বিক্রেতারাও।
জেলা শহরের নিউমার্কেট এলাকার এক মুদি দোকানদার সাদিরুল ইসলাম বলেন, “দুই-তিন দিন আগেও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজ গত বুধবার কিনেছি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে। বিক্রি করছি ১০০ টাকা কেজি। দেশী পেঁয়াজ ছিল ৯০ টাকা, সেই পেঁয়াজ আজ বিক্রি করছি ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে।” তিনি আরো বলেন, দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজ বিক্রি আগের তুলনার অনেক কমে গেছে।
কথা হয় পুরাতন বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা নেহেরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, “দুই-চার দিন দেশী পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা কেজি দরে। এখন সেটা বিক্রি করছি ৯০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এখন করছি ৯০ টাকায়।” তিনি বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমার কারণেই দামটা বেশি। খুচরা বাজারে দাম বেশি প্রসঙ্গে তার অভিমত, “তারা (খুচরা ব্যবসায়ীরা) যদি দিনে ১ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করে তাতে তো ওদের সংসার চলবে না। তাই তারা একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।” তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ তো আর পেঁয়াজ কিনতে পারছে না। কিনতে এসে হতাশ হচ্ছেন তারা। আমরা এক কেজি পেঁয়াজে ১ টাকা লাভ করি। যেখানে প্রতিদিন ১০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হতো, এখন ১০ বস্তা বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে আমাদেরও ক্ষতি হচ্ছে।
সেখানকার আরেক পেঁয়াজ বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, বুধবার সোনামসজিদ পোর্টে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৯৫ টাকা কেজি দরে। আমি বললাম, এ দরে পেঁয়াজ কিনব না। কেননা পরিবহন খরচ দিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়বে ১০০ টাকা। এই দামে কিনে এনে কত দামে বেচব? এ কারণে পেঁয়াজ কেনা হয়নি।”
এদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে নাকাল সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলো পড়েছেন চরম বিপাকে। পেঁয়াজ কিনতে আসা ফয়েজ উদ্দিনের বক্তব্য, তার দৈনিক আয় ৩০০ টাকা। এর মধ্যে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতেই চলে গেল ১০৫ টাকা। সংসার চালাব কি করে- উল্টো প্রশ্ন তার। তিনি বলেন, “আগে এক কেজি পেঁয়াজ তিন দিন যেত। এখন সেটাকে ৪-৫ দিন চালানোর চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, বিক্রেতাদের তো আর ক্ষতি হচ্ছে না। ওদের লাভ ঠিকই হচ্ছে। কিন্তু আমার মতো মানুষরা সমস্যায় পড়ছে।”
আরেক ক্রেতা জোবদুল হকের কথা, “২৫-৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ খাওয়ার অভ্যাস। এখন সেটা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। সমস্যা তো হবেই, এ আর বলতে কি।”
তবে বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম কমার আশায় ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই।