পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত

287

জেলায় পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন এসএফএম খাইরুল আতাতুর্ক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা অহেদুজ্জামান, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, বিভিন্ন ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্যাণ পরিদর্শক ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। প্রথমেই কোরআন তেলোয়াত করেন পরিবার পরিকল্যাণ পরিদর্শক গোলাম কবির এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম। এ্যাডভোকেসি সভার শুরুতেই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য খাতে ২০১৭ সালে অর্জিত সাফল্য তুলে ধরেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম। এসময় তিনি বলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কল সেন্টার ১৬৭৬৭ এই নম্বরে ফোন করে বিনামূল্যে যে কোন পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সেবা পেতে পারেন। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ২০০৭ সালের ৫৫.৮% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে ৬২% হয়েছে। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী হার ২০০৯ সালের ৩০% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ নালে ৪৭% হয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক মাঠকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন সেবা সপ্তাহে জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনারা এই কাজগুলো ইবাদত মনে করে করবেন। জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক বলেন আগে সবারই বাড়িতে ডেলিভারি হতো, যে কারণে হোক এখন আমার সচেতন হয়েছি। আমরা অবশ্যই বাড়িতে ডেলিভারি করবো না বা বেসরকারি ক্লিনিকেও করবো না সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি করবো। সরকারি হাসপাতাল প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে বড় হাসপাতাল আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর হাসপাতাল বাংলাদেশের অন্য সকল হাসপাতালের চেয়ে ভাল। আমাদের হাসপাতাল সম্প্রতি ২৫০ শয্যায় উন্নিত হয়েছে। আগের তুলনায় সেবা মান বেড়েছে। আমাদের সন্তানেরা বাড়ীতে হবে না সরকারি হাসপাতালে হবে। আমাদের দরজার কাছে আছে কমিউনিটি ক্লিনিক, যেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটাকে মনিটরিং করেন। তিনি চান আমারা সকলে এখন থেকে সেবা নিয়, সেখানে ত্রিশ রকমের ওষুধ দেওয়া হয় এবং ডেলিভারির সুযোগ সুবিধা আছে। আমরা সেখানে যাব সেবা নিব। ২৪-২৯ নভেম্বর স্পেশাল প্রচারণা চালাব মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করবো। যারা মাঠে কাজ করেন, প্রত্যেক ওর্য়াডে একজন করে লোক আছে স্বাস্থ্য বিভাগের এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের , আপনারা যেভাবে যত কাছে যেতে পারেন যাবেন। আপনারা ইবাদত মনে করে কাজটা করবেন, তাদেরকে সঠিক পরামর্শ ও সেবাটা দিবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন এসএফএম খাইরুল আতাতুর্ক বলেন সিভিল সার্জন বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর ৪২ হাজার ৪’শ ১৭ জন রেজিষ্ট্রারভুক্ত গর্ভবতী রয়েছে। আর শিশু মৃত্যুর হার ২৮ ভাগ এবং মাতৃমৃত্যুর হার ১৭৬ এবং এই হারটা চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটু বেশী। আমাদের জেলায় নরমাল মাতৃমৃত্যুর হারটা একটু বেশী এজন্য একটা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে যেখানে ৩ হাজার ধাত্রীকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা নিরাপদ ডেলিভারি করতে পারে। সব উপজেলায় ১৭ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চার উপজেলায় চারটি এবং কানসাটে একটি। গত মাসের ২৪ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গোমস্তাপুরের একজনকে পুরস্কৃত করেছেন তিনি এবছরে সবচেয়ে বেশী ডেলিভারি করেছেন। সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তিনি। আমারা চাই প্রত্যেকটা মা যেন বেঁচে থাকে। আমারা মায়েদেরকে উৎসাহিত করবো তারা যেন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করে। পেটে বাচ্চা আসলে যেন কমপক্ষে চারবার তারা কোন ডাক্তার বা নার্স এর কাছে গিয়ে চেকআপ করেন।
উল্লেখ্য আগামী ২৪ থেকে ২৯ নভেম্বর থেকে এই সেবা ও প্রচার সপ্তাহ চলবে।