গত দুই বছরে দলের বিপদেই অনেকবার ডাক পড়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। অধিনায়কের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে তাকে। সাকিব আল হাসানের ইনজুরির কারণে টেস্ট, টি-২০ দুই ফরম্যাটেই নেতার ভূমিকায় দেখা গেছে মাহমুদউল্লাহকে। চলমান ভারত সফরেও এক সংকটের পরবর্তী অধ্যায়ে বাংলাদেশের টি-২০ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহর সামনে এখন বড় অ্যাসাইনমেন্ট ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ। আজ দিল্লিতে শুরু হচ্ছে এই টি-২০ সিরিজ। যেখানে সাকিব-তামিমবিহীন বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে নিতে হবে মাহমুদউল্লাহকে। গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, নেতৃত্বের এই দায়িত্বকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন। মাশরাফি, সাকিবের মতোই বড়ো নেতা হওয়ার দিকে মনোযোগী হবেন।
অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
নেতৃত্বের দায়িত্ব নতুন না হলেও মাহমুদউল্লাহ এতদিন আপত্কালীন দায়িত্বই সামলেছেন। তার অধীনে পাঁচটি টি-২০ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে একটি। আজ শুরু হতে চলা সিরিজে দল হিসেবে খেলার প্রতিই গুরুত্ব দিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘আমি আগেও টি-২০, টেস্টে এটা (অধিনায়কত্ব) করেছি, যখন সাকিব ইনজুরিতে ছিল। আমাদের দল হিসেবে খেলতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে এবং সুযোগের ব্যবহার করতে হবে, নিজেদের দক্ষতার প্রয়োগ করতে হবে।’
বিপদে নেতৃত্বের ভারকে বোঝা মনে করেন না মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘আমি মনে করি না এটা বোঝা। আমি এইভাবে চিন্তা করছি না। আমি মনে করি দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে এটা দারুণ সুযোগ আমার জন্য।’
অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশে জনপ্রিয় ও পরীক্ষিত মাশরাফি-সাকিব। তাদের মতোই ভালো অধিনায়ক হতে চান মাহমুদউল্লাহ। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘আমরা (মাশরাফি, তিনি এবং সাকিব) অনেক বছর একসঙ্গে খেলেছি। আমি মনে করি, তারা অসাধারণ নেতা। সাকিবের দারুণ কিছু গুণ রয়েছে এবং মাশরাফি অসাধারণ প্রেরণাদায়ী। আমার দরকার নিজের খেলাটা এগিয়ে নেয়া এবং ভালো নেতা হওয়া।’
দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে টাইগাররা মাঠের ক্রিকেট নিয়েই মনোযোগী হতে চান। দলের সবাই সুস্থ আছেন উল্লেখ করে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমরা যখন এসেছিলাম এখানে ধোঁয়া ছিল। আমরা অনুশীলন করেছি তিন দিন এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি। পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। দলের প্রত্যেকেই সুস্থ আছে।’
ফিক্সিংয়ের কারণে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ায় সাকিবকে এই সফরে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সাকিবের না থাকা দলের মধ্যে অনেক শূন্যতা তৈরি করে। এমন ক্রিকেটার রাতারাতি তৈরি হয় না বলেই মন্তব্য করেছেন মাহমুদউল্লাহ। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘একজন সাকিব একদিনে তৈরি হয়নি। গত ১০, ১১, ১২ বছর ধরে সে পারফরম করে আসছে। তার বিকল্প খুঁজে পাওয়া অনেক বেশি কষ্টসাধ্য। তবে দলের সকলে সাকিবের অভাব পূরণের চেষ্টায় আছে। কিন্তু সাকিবের মতো শীর্ষ পর্যায়ের একজন ক্রিকেটার না থাকা দলে অনেক বড়ো শূন্যতা তৈরি করে।’
পরিসংখ্যানে…
মোট টি-টোয়েন্টি : ৮
ভারতের জয় : ৮
বাংলাদেশের জয় : ০
দলীয় সর্বোচ্চ রান
ভারত : ১৮০/৫ (নটিংহ্যাম, ২০০৯)
বাংলাদেশ : ১৬৬/৮ (কলম্বো, ২০১৮)
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান
ভারত : রোহিত শর্মা (৩৫৬)
বাংলাদেশ : সাব্বির রহমান (২৩৬)
সেরা ইনিংস
ভারত : রোহিত শর্মা (৮৯)
বাংলাদেশ : সাব্বির রহমান (৭৭)
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ উইকেট
ভারত : রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৬)
বাংলাদেশ : রুবেল হোসেন (৭),
আল-আমিন (৭)
সেরা বোলিং ফিগার
ভারত : প্রজ্ঞান ওঁঝা (৪/২১)
বাংলাদেশ : আল আমিন (৩/৩৭)