নিউজিল্যান্ড তদন্তে বাংলাদেশ-ভারতের শ্রমিকদের শোষণ

107

শ্রমিকদের শোষণের বিরুদ্ধে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ নিউজিল্যান্ড। দেশটিতে শতাধিক বাংলাদেশি ও ভারতীয় শ্রমিকের দুর্দশার বিষয়টি সম্প্রতি সামনে আসে এবং এরপরই তদন্ত শুরুর কথা জানানো হয়।

মূলত এসব শ্রমিককে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশটিতে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ ছাড়া তাদের অস্বাস্থ্যকর ও অনুপযুক্ত পরিবেশেও রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া এই শ্রমিকদের এমন জায়গায় থাকতে দেওয়া হয়েছিল যেগুলো কার্যত এত লোকের বাসস্থান হওয়ার জন্য উপযুক্ত ছিল না। নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন বিভাগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, শ্রমিকদের বাসস্থানের অবস্থা ছিল অস্বাস্থ্যকর, নোংরা এবং বসবাসের অনুপযুক্ত।গত সপ্তাহে দেশটির অভিবাসন বিভাগ বলেছে, শ্রমিকদের শোষণের এই অভিযোগের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ‘গভীর ও ব্যাপক তদন্ত’ শুরু করেছে নিউজিল্যান্ডের ব্যবসা, উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘আমাদের তদন্তকারীরা ১১৫ জন বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তারা অ্যাক্রেডিটেড এমপ্লয়মেন্ট ওয়ার্ক ভিসা (এইডব্লিউভি) বা স্বীকৃত কর্মসংস্থান ভিসায় নিউজিল্যান্ডে এসেছিলেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা ভিসা এবং চাকরির জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছেন, তবু তাদের বেশিরভাগই এখনো কোনো চাকরি পাননি।’

নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম রেডিও নিউজিল্যান্ড (আরএনজেড) জানিয়েছে, নিজেদের ভিসা এবং সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য বিভিন্ন এজেন্টকে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ প্রদান করা সত্ত্বেও এই শ্রমিকদের বেশিরভাগকেই কোনো বৈতনিক চাকরি দেওয়া হয়নি। নিউজিল্যান্ডে পৌঁছাতে এসব শ্রমিক যে পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন, বাংলাদেশি মুদ্রায় তার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা থেকে ৪৪ লাখ টাকা পর্যন্ত।

সংবাদমাধ্যম বলছে, অ্যাক্রেডিটেড এমপ্লয়মেন্ট ওয়ার্ক ভিসা বা এইডব্লিউভির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডে কাজের জন্য অস্থায়ী ভিসা পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী এসব শ্রমিকের কিছু ব্যক্তি বেশ কয়েক মাস ধরে নিউজিল্যান্ডে আছেন এবং কেউ কেউ সম্প্রতি দেশটিতে এসেছেন। ভারতীয় হাইকমিশন গত শুক্রবার এক টুইট বার্তায় বলেছে, ‘অকল্যান্ডে ভারতীয় শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়ে জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তাদের সহায়তা করার জন্য পৌঁছে গেছি। ভুক্তভোগী এসব শ্রমিককে খাদ্য ও কনস্যুলার পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’