নারী ভোটার বাড়াতে ইসির ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ

496

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটার তালিকা হালনাগাদে নারী ভোটার বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা উদ্যোগ নিচ্ছে। একই সাথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা না করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসি। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাদপড়া ও নতুন ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার আশা করছে ইসি। এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণের লক্ষ্য হচ্ছে মৃত ভোটার বাদ দিয়ে নারী ভোটার বাড়ানো। কারণ দুই বছর আগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিবন্ধন তথ্য নিতে গিয়ে কম বয়সীদের অনাগ্রহে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারেনি। সেই সাথে নারী ভোটারদের অনীহা ও মৃতদের বাদ দেয়ার কাজেও সফলতা পায়নি। এ অবস্থায় নতুন হালনাগাদে ব্যাপক সাড়া পেতে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো হচ্ছে। ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকায় ভোটার হতে নাগরিকদের আগ্রহ বেড়েছে। পাশাপাশি একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যোগ্য ভোটার তালিকাভুক্ত করতে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও বিশেষ নজর রয়েছে। ভোটার হওয়া উচিত এই সচেতনতার পাশাপাশি ইসির প্রচারণা ও বাড়ি বাড়ি যেতে তথ্য সংগ্রহকারীদের গাফিলতি না থাকলে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে মনে করেন ইসি সংশ্লিষ্টরা। ২০১৫ সালে এক সাথে তিন বয়সীদের (বর্তমানে যাদের বয়স ১৫-১৭ বছর) তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওই সময় প্রায় ৭২ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা পূরণ করতে পারেনি কমিশন। ভরা বর্ষায় হালনাগাদের কাজ চলায় অনেক এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যায়নি বলে অভিযোগ ছিল। এবার ২৫ জুলাই থেকে সব উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। ওইদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ময়মনসিংহে হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
সূত্র জানায়, এবার একযোগে সব উপজেলায় ২৫ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ভোটার তথ্য সংগ্রহ চলবে। তাতে প্রায় ৩৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে এবং যেসব নাগরিক যোগ্য হওয়ার পরও বিভিন্ন কারণে ভোটার হতে পারেননি কেবল তাদের ভোটার করা হবে। পাশাপাশি এ সময় মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে এবং ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও নেয়া হবে। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বাংলাদেশের মোট ১০ কোটি ১৮ লাখের বেশি ভোটারের মধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। এ অনুপাত ৫১:৪৯। তবে সর্বশেষ হালনাগাদে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটার প্রায় ৬ শতাংশ কম। হালনাগাদের পর নারী-পুরুষের ব্যবধানও কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণে তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউনিয়ন পরিষদ বা কোনো দলের পার্টি অফিসে বসে ভোটার তালিকার হালনাগাদের কাজ করা যাবে না। তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। কারণ গতবছর হালনাগাদে কিছু ভোটার বাদ পড়েছে, নারী ভোটার কিছুটা কম হয়েছে এবং মৃত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। ইসি চাচ্ছে আগামি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে করা ভোটার তালিকাটা যেন নির্ভুল থাকে। সামনেই নির্বাচন। ইসি চায় ভোটার তালিকা যেটা আছে তা নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে। তবে রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন কেউ যেন ভোটার হতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, নারী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। সেই সাথে সরকারি-বেসরকারি বিভাগ-সংস্থাকে কাজে লাগানো হবে। মৃতদের নাম বাদ দিতে বিশেষ নজর থাকবে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ কমিটির মাধ্যমে যোগ্যদের ভোটার করা হবে।