নারী ফুটবলাররা দাবি আদায় করেই ছাড়লেন

107

দিন আসে দিন যায়। সময় চলে যায়,খেলোয়াড়দের বয়স বাড়ছে। কিন্তু আয় নেই। দিন শেষে নারী ফুটবলাররা দেখছেন তারা শুধু খেলেই যাচ্ছেন। কিন্তু নিজের জন্য কিংবা সংসারের জন্য কিছু পাচ্ছেন না। চ্যাম্পিয়ন হয়ে বোনাস পাচ্ছেন, উপহার পাচ্ছেন আর সংবর্ধনা পাচ্ছেন। কিন্তু দিনের আলোয় সবই থাকছে অন্ধকারে। এভাবে আর কত দিন। অনুশীলন করো টুর্নামেন্ট খেলতে যাও। এখানেই জীবন থেমে থাকবে নাকি পারফরম্যান্স থাকতে থাকতে অর্থ আয়ের পথটাও মসৃণ হওয়া উচিত। এসব নানা ভাবনায় নারী ফুটবল দল ভেবে দেখল বিদ্যমান বেতনে জীবন চলবে না। সংসার চলবে না। খেলা শেষ হয়ে গেলে উপহার পাওয়া টিভি, ফ্রিজ দিয়ে কোনো লাভ নেই। বেতনের কথা বলতে হবে। বলাও হলো। ‘আর কটা দিন সবুর করো রসুন বুনেছি—এ কথায় ধৈর্য ধরতে বলা হলো। কিন্তু লাভ হলো না। সময় ফুরাল। সবাই ফুঁসে উঠল। শেষ পর্যন্ত দাবি আদায়ের জন্য একটা তালিকা তৈরি করে বাফুফেতে দিয়ে সিনিয়র ফুটবলাররা ছুটিতে গেলেন। মনে মনে ধরেই রেখেছিলেন দাবি না মানা হলে ফিরবেন না। বাফুফেরও আশঙ্কা ছিল। যদি এশিয়ান গেমসের আগে খেলোয়াড়রা না ফেরেন, ঝামেলা হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন নিজ উদ্যোগে খেলোয়াড়দের দাবি পূরণে এগিয়ে এলেন। মেয়েরা বলছেন কিরন আপার সঙ্গে কথা বলে তো লাভ হলো না। সভাপতি স্যারই সব করে দিলেন।’

ছয় মাসের জন্য চুক্তি করা হয়েছে। ৩১ জন ফুটবলার বেতন কাঠামোয় এসেছেন। ছয় মাসের পারফরম্যান্স বিচার করে গ্রেড ওঠা নামা করবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন বলেছেন, ‘আমার মন চায় অনেক কিছুই করি।এর চেয়েও বেশি দিতে পারলে খুশি হতাম। পারলে পাঁচ গুণ বেশি বেতন দিতাম। আমার তো সেই ক্ষমতা নেই।’ কাজী সালাহউদ্দিন নিজের পকেট থেকেও মেয়েদেরকে টাকা দিয়েছেন। যতদিন ব্যবস্থা করতে না পারবেন নিজের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়ে আসছেন, দিয়েছেনও। কিন্তু তিনিও বুঝেন এটা স্থায়ী না। এবার তারা টাকাটা দেবেন সেটা ফিফার ফান্ড থেকে দেবেন। আর স্পন্সর থেকে নিয়ে দেবেন। চুক্তি স্বাক্ষর করে জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন আবদার পূরণ হয়েছে।’

৫০ হাজার টাকা পাচ্ছেন যারা

সাবিনা খাতুন, গোলরক্ষক রূপনা চামকা, মাসুরা পারভীন, শামসুন্নাহার, শিউলি আজীম, নিলুফার ইয়াসমীন নিলা, আনাই মোগিনি, মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, রিতু পর্না চাকমা, সানজিদা আক্তার, মার্জিয়া আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার এবং তহুরা খাতুন।

৩০ হাজার টাকা পাচ্ছেন যারা

সোহাগী কিসকু, স্বপ্না রানী, আফিদা খন্দকার, শাহেদা আক্তার রীপা, স্বর্ণা রানী মন্ডল, আকলিমা খাতুন, সুরমা জান্নাত, সাথী বিশ্বাস, মাতসুশিমা সুমাইয়া, উন্নতি খাতুন।

২০ হাজার টাকা পাচ্ছেন যারা

হালিমা আক্তার, কোহাতি কিসকু, নাসরিন আক্তার, ইতি খাতুন।

১৫ হাজার টাকা

রুপা ও আইরিন খাতুন।