“ত্রিদেশীয় সিরিজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অনুপ্রেরণা”

457

ত্রিদেশীয় সিরিজেরই ইতি ঘটছে আজই। আজকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পরই মাশরাফি বিন মুর্তজার গন্তব্য আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন মনে করছেন, এই ত্রিদেশীয় সিরিজের পারফরম্যান্স আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
ত্রিদেশীয় সিরিজে এখন অবধি বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মন্দ নয়। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে এক ম্যাচে উড়িয়ে দিয়ে জয় পেয়েছে দলটি। আজও নিঃসন্দেহে শক্তিশালী আইরিশদের সামনে জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বলা যায়, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস এই ম্যাচে সঙ্গী হবে বাংলাদেশের।
হাবিবুল বাশার মনে করছেন, এই আত্মবিশ্বাসটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও কাজে দেবে বাংলাদেশের। আইসিসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক কলামে আসরটির বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত লিখেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার বিষয়টা ভালো হয়েছে। এটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় কোনো ইভেন্টের পূর্বে দলের খেলোয়াড়দের এক হয়ে থাকতে এ সিরিজটা কাজে দিচ্ছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিরুদ্ধ কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে এ সিরিজ। বাংলাদেশের ভালো ফলাফল করার ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী। বলা যায়, এর জন্য সমস্ত রসদ তৈরিই আছে। এটি সহজ হবে না, কিন্তু তারপরেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছু নেই।’
ইংল্যান্ডে ১ জুন থেকে শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। গ্রুপ পর্যায়ে বাংলাদেশকে লড়তে হবে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন শক্তির বিপক্ষে। তারপরও বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা দেখছেন সুমন।
তার এই আশাবাদের কারণ বাংলাদেশের পেস বোলিং লাইন-আপ। তিনি লিখেছেন, ‘নিঃসন্দেহে গ্রুপটা আমদের জন্য যথেষ্ট কঠিন। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের সাথে কঠিন গ্রুপে থাকা সত্ত্বেও আমি বিশ্বাস করি মাশরাফি, মুস্তাফিজ, রুবেল এবং ‘গতিশীল’ তাসকিনকে নিয়ে গড়া আমাদের পেস বোলিং বিভাগ যেকোনো ব্যাটিং লাইন আপের বিপক্ষে তাদের নিজস্ব সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে সক্ষম।’
তবে, সুমন মনে করছেন কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নেওয়াটা বোলারদের চেয়ে ব্যাটসম্যানদের জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। তিনি লিখেছেন, ব্যাটসম্যানরা মানিয়ে নিতে পারলে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যাবে, ‘ বিরুদ্ধ কন্ডিশনের অচেনা বাউন্স আর সুইংয়ের সাথে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কীভাবে মানিয়ে নেন সেটা এখন দেখার বিষয়। যদি ব্যাটসম্যানরা নতুন বল খেলার চ্যালেঞ্জটা সফলভাবে অতিক্রম করতে পারেন, তা হলে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। যদি, ম্যাচের শুরুতেই মিডল অর্ডারকে দায়িত্ব নিতে হয়, তা হলে বিশ্বের দারুণ সব পেসারদের বিপক্ষে বাংলাদেশকে বড় পরীক্ষাই দিতে হবে।’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল খেলেছিল ১১ বছর আগে। ওই সময়টাতে দলের অধিনায়ক ছিলেন হাবিবুল বাশার। আবারো মর্যাদার এই আসরে ফিরতে পেরে গর্বিত তিনি। লিখেছেন, ‘ খুবই চমৎকার লাগছে যে বাংলাদেশ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আবারো ফিরেছে। এই টুর্নামেন্টের সাথে আমাদের একটি লম্বা ইতিহাস জড়িয়ে আছে। যদিও বিগত আসরগুলোতে বাংলাদেশের বলার মতো কোনো সাফল্য নেই। তবে নিঃসন্দেহে ফিরতে পারাটা আমাদের জন্য গৌরবের ব্যাপার।’
২০০৯ আর ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলার সুযোগ পায়নি। তবে, এবার এই আসরে নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে বলে মানছেন দেশের প্রথম টেস্ট জয়ী অধিনায়ক।
গত দু’বছরে সীমিত ওভারে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সই তার এই আশাবাদের কারণ। তিনি লিখেছেন, ‘গত দুই বছরে আমাদের দলের ফলাফল বেশ ভালো ছিল। ঘরের মাঠে আমরা পাঁচটা আন্তর্জাতিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি, যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দল। নিজেদের সামর্থ্যের প্রতি নিখাদ বিশ্বাস ও আস্থা আছে আমাদের। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের দল দেশের বাইরেও ভালো করার অবস্থায় পৌঁছে গেছে। দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই দলের সাথে এক দশক ধরে আছেন। বিশ্বের প্রায় সকল প্রান্তে তারা খেলে ফেলেছেন, ৫০ ওভারের ফরম্যাটে কী করণীয় সেটা সবাই বুঝে ফেলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল আসরের কঠিন গ্রুপে অবস্থান করা, বাংলাদেশের তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’