ডি কক ঝড়ের পর রাবাদা-এনগিডিতে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা

201

টেস্ট সিরিজে চমকে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম এশিয়ান দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় জিতেছিল সিরিজ। তবে ওয়ানডেতে এসে বদলে গেল দৃশ্যপট। এই ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের কাছে পাত্তাই পাচ্ছে না লঙ্কানরা। প্রথম ম্যাচ ৮ উইকেটে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ১১৩ রানের আরেকটি বড় জয় পেয়েছে ফাফ ডু প্লেসির দল। সেঞ্চুরিয়নে বুধবার দুই দলের জন্যই ম্যাচটা ছিল ব্যাটিং ধসের। একটা সময় ৪ উইকেটে ২২০ রান তুলেও দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয় ২৫১ রানে। ওপেনার কুইন্টন ডি ককের ৭০ বলে ৯৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসের পাশাপাশি অধিনায়ক ডু প্লেসির ব্যাট থেকে আসে ৫৭ রান। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের তোপে পড়ে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছিল ৩৩ রানে। আর শ্রীলঙ্কা শেষ ৫ উইকেট হারায় ৩১ রানে! দুই দলের টপ অর্ডারের পারফরম্যান্সই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী রোববার ডারবানের কিংসমেডে হবে তৃতীয় ম্যাচ। সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ডি কক ও রিজা হেনড্রিকসের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। হেনড্রিকস খেলেছেন ধীরলয়ে, ডি কক তুলেছেন ঝড়। যার শুরুটা দ্বিতীয় ওভারেই বিশ্ব ফার্নান্দোকে চারটি চার হাঁকিয়ে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের ২০তম আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন মাত্র ৩৬ বলে। হেনড্রিকসকে ফিরিয়ে ৯১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গা। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন ডি কক, করেছিলেন ৮১ রান। তার আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে আউট হয়েছিলেন ৮৬ রানে। যেখানে হতে পারত টানা তিন সেঞ্চুরি, সেখানে কাল আরেকবার সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়তে হলো তাকে। সেঞ্চুরি থেকে ৬ রান দূরে থাকতে থিসারা পেরেরার লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৭০ বলে ১৭ চার ও এক ছক্কায় ৯৪ রানের ইনিংসটি সাজান উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ১০৩ ইনিংসের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৩ সেঞ্চুরির মালিক ডি ককের ৮০ থেকে ৯৯ রানের মধ্যে ইনিংস আছে ৮টি। এর মধ্যে ৮০ রানের একটি ইনিংসেই শুধু অপরাজিত ছিলেন। mচারে নামা ভান ডার ডুসেন চার বলের বেশি টেকেননি। ভিয়ান মুল্ডার থেমে যান ১৭ রানেই। তবে ডু প্লেসি ও ডেভিড মিলারের ব্যাটে বড় সংগ্রহের পথেই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৬ ওভার শেষে স্বাগতিকদের স্কোর ৪ উইকেটে ২২০। তিনশ তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু পরের ওভারে ডু প্লেসির বিদায়ে ধস নামে প্রোটিয়াদের ইনিংসে। থিসারার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬৬ বলে ৭ চারে ৬৭ রান করেন ডু প্লেসি। এই ইনিংসের পথে ৫ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৪৫.১ ওভারে ২৫১ রানেই শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। মিলার করেন ২৫ রান। ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার থিসারা। মালিঙ্গা ৩৯ রানে ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৫৬ রানে নেন ২টি করে উইকেট। লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কার শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ১১ রানেই কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিরোশান ডিকভেলা। ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন কুশল মেন্ডিস ও ওশাদা ফার্নান্দো। একটা সময় শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৯২। এরপরই নামে ধস। ৪৬ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২.২ ওভারে দেড়শর আগেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। ফার্নান্দো ৩১ ও মেন্ডিস করেন ২৪ রান। থিসারার ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার রাবাদা। এর মধ্যে প্রথম উইকেটটি নিয়ে ওয়ানডেতে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন ২৩ বছর বয়সি এই পেসার। অন্য দুই পেসার লুঙ্গি এনগিডি ১৪, আনরিচ নরজে ২৫ ও লেগ স্পিনার ইমরান তাহির ৩৯ রান দিয়ে নেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হন ডি কক।