জেমস ৫৯ এ পা রাখলেন

117

ভক্ত ও দর্শকদের কাছে জেমস নামে পরিচিত। প্রকৃত নাম ফারুক মাহফুজ আনাম। এই দুই নাম ছাড়াও তাকে অনেকেই গুরু নামে ডাকেন। এ রক কিংবদন্তি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অনেক জনপ্রিয় এবং কালজয়ী গান। আজ তার ৫৮ তম জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। জেমসের জীবন বেশ বাঁক বদলের, অনেক গল্পের। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী, যিনি পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের অমতেই সংগীতচর্চা শুরু করেন জেমস।

বাবার সঙ্গে গান নিয়ে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। সংগীতের নেশায় ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং নামক একটি বোর্ডিং-এ তিনি থাকতে শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সংগীতের ক্যারিয়ার শুরু হয়। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফিলিংস’ নামক একটি ব্যান্ড। জেমস নিজেই ব্যান্ডের প্রধান গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। যদিও অ্যালবামটি সে সময়ের শ্রোতাদের গান শোনার রুচির সঙ্গে একটু ভিন্ন মেজাজের হওয়ায় জনপ্রিয়তা পায়নি।

১৯৮৮ সালে তার ‘অনন্যা’ নামের অ্যালবাম সুপারহিট হয়। এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অফ ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো ফিলিংস ব্যান্ড থেকে বের হয়। এ ছাড়াও জেমসের অন্যান্য অ্যালবামগুলো হল নগর বাউল থেকে ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘বিজলি’। একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’, ‘কাল যমুনা’।

জেমস চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেও সফল হয়েছেন। তার বেশকিছু গান ‘দেশা দ্য লিডার’, ‘সত্তা’ ছবির জন্য গান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানে কণ্ঠ দিয়েও জয় করেছেন কোটি ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ (গ্যাংস্টার), ‘চাক চালে’ (ও লামহে) এবং ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ (লাইফ ইন অ্যা মেট্টো), ‘বেবাসি’ (ওয়ার্নিং) গানগুলো উল্লেখযোগ্য। একটা প্রজন্মের কাছে জেমস মানে এখনো এক উন্মাদনা, তার প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এতোটাই প্রবল যে ভক্তদের তিনি ‘দুষ্টু ছেলের দল’ বলে অ্যাখ্যায়িত করেন।