জাকির নায়েকের পাসপোর্ট বাতিল

301

ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশটির বিতর্কিত ইসলাম প্রচারক জাকির নায়েকের পাসপোর্ট বাতিল করেছে। বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) সামনে সশরীরে হাজির না হওয়ায় জাকিরের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এনআইএ সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু এবং ফার্স্টপোস্টের খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় তদন্ত সংস্থার ডাক উপেক্ষা করার পরও কেন ওই ইসলামি বক্তার পাসপোর্ট বাতিল করা হবে না; তা জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় তাকে। সেই নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নায়েকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়নের অভিযোগ নিয়ে চলা তদন্তে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জাকির নায়েককে একাধিকবার সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। তিনি সেই নির্দেশ মানেননি। একপর্যায়ে কারণ দর্শানোর এক নোটিশ দিয়ে জানতে চাওয়া হয়, তার হাজিরার অভাবে বেশকিছু তদন্তকাজ ঝুলে থাকার পরও কেন তার পাসপোর্ট বাতিল করা হবে না। ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে এনআইএর সামনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সেই কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয় তাকে। গত ডিসেম্বরে নায়কের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। জানুয়ারিতে তার নামে জারি হয় সমন। এরপর আরও তিনবার সমন জারি হলেও আদালতে যাননি তিনি। উগ্রবাদ প্রচারের অভিযোগে এনআইএ-এর তলবেও সাড়া দেননি বিতর্কিত এই বক্তা। তদন্তের স্বার্থে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হলেও নায়েক ভারতে ফেরেননি। গত মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জাকিরের পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার খবর জানায়। ফার্স্টপোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি সপ্তাহের গত মঙ্গলবার মুম্বইয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে জাকির নায়েকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়।
উল্লেখ্য, গুলশান হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত দুইজন জাকির নায়েককে অনুসরণ করত বলে অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। নিহত জঙ্গিদের দুজন-রোহান ইমতিয়াজ এবং নিবরাস ইসলাম জাকির নায়েককে অনুসরণ করত বলে অভিযোগ রয়েছে। রোহান গত বছর জাকির নায়েকের পিস টিভির একটি অনুষ্ঠান তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিল। ভারতে বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া জঙ্গিরাও জাকির নায়েককে অনুসরণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পাটনার গান্ধী ময়দান ও বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে আটক জঙ্গিদের কাছ থেকেও জাকিরের বক্তৃতার সিডি ও বই উদ্ধারের দাবি করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতে জাকির নায়েক ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। একপর্যায়ে ভারত ছেড়ে জাকির নায়েক সৌদি আরবে আশ্রয় নেন এবং পরবর্তীতে সেদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ১৫ নভেম্বর ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ভারত সরকার। ১৮ নভেম্বরে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা জাকির নায়েক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি তার পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়।