`চাঁপাইনবাবগঞ্জে মামলা দায়েরের চেয়ে নিষ্পত্তির হার অনেক বেশি’

110

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালতের বিচারকাজে গতিশীলতা আনয়ন এবং সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের লক্ষে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
শনিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহা. আদীব আলী সভাপতির বক্তব্যে জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সার্বিকভাবে যে পরিমাণ মামলা দায়ের হচ্ছে, নিষ্পত্তির হার তার চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে সামগ্রিক মামলা নিষ্পত্তির হার ১১৯.৬১ শতাংশ। মামলা-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা এবং বিচারকদের নিরলসভাবে কাজ করার কারণেই এ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, দ্রুততম সময়ে বিচারকার্য সম্পাদনের জন্য বিচারকসহ বিচারকাজে সংশ্লিষ্ট জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট পাওয়া গেলে মামলা নিষ্পত্তির হার আরো বৃদ্ধি পাবে।
সম্মেলনে নির্বাহী বিভাগের বিচার কার্যক্রম, গ্রাম আদালত ও অন্যান্য বিষয় তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গালিভ খাঁন। এসময় তিনি বলেন, আমাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ থাকলে বলেতে পারেন আমি ব্যবস্থা নেব। আমরা গণমানুষের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।
আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেনÑ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমার শিপন মোদক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রবিউল ইসলাম, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাসুদ পারভেজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ, র‌্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি উপ-অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিছুর রহমান খাঁন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পিপি নাজমুল আজম, জিপি রোজবুল হক, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম ইফতেখার মজিদসহ অন্যরা।
মোবাইল কোর্ট ও এডিএম কোর্ট সম্পর্কে আলোচনা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ; মেডিকেল সার্টিফিকেট, মোস্ট মোর্টেম রিপোর্ট, ডিএনএ ও ডাক্তার সাক্ষীদের উপস্থিতি বিষয়ে সম্মেলনে জানান সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ; মালখানা ও জব্দকৃত আলামত নিষ্পত্তি বিষয়ক তথ্য উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির; হাজতি ও কয়েদিদের সমস্যা সম্পর্কিত আলোচনায় অংশ নেন জেলা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট মজিবুর রহমান মজুমদার; দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের মামলাসমূহের দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি, নিষ্পত্তির অন্তরায় ও এ-সংক্রান্ত সুপারিশ তুলে ধরেন যথাক্রমে সিনিয়র সহকারী জজ সুমন কুমার কর্মকার ও অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু তালেব; পারিবারিক আদালতের দেনমোহর ও খোরপোষ আদায়ে অসুবিধা ও ওয়ারেন্ট-সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন পারিবারিক আদালতের বিচারক মো. আরিফুল ইসলাম; জেলা লিগ্যাল এইড সম্পর্কে আলোচনা করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার রোকসানা খানম এবং সম্মেলনের শুরুতেই মামলা-সংক্রান্ত তথ্য ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন সহকারী জজ মো. আরিফুল ইসলাম।
দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা, আদালতগুলোয় এপিপি নিয়োগ, মামলার এজাহার ও নির্ভুল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল, আইনজীবীদের নির্ভুল আরজি দাখিল, ভূমি জরিপ মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন অফিসকে আরো সতর্ক হওয়া, সাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, ওয়ারেন্ট তামিল করা, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম সক্রিয় করা, নির্ভুল পোস্ট মোর্টেম রিপোর্ট তৈরি ও দাখিল, ডিএনএ টেস্টের জন্য জেলায় ল্যাব স্থাপন, ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষার সময় সতর্কতা অবলম্বন করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয় সম্মেলনে।
সম্মেলনে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সহকারী জজ এম. সারোয়ার জাহান ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশিতা শবনম।