গ্রামের কোনো ঘরে নেই দরজা, শাস্তির ভয়ে হয় না চুরিও

93

ঘরের নিরাপত্তা বজায় রাখতে দরজার বিকল্প নেই। তবে কখনো ভেবে দেখেছেন যেখানে বাস করছেন সেখানে যদি কোনো দরজা না থাকে তাহলে কী হবে? সবার প্রথমেই নিশ্চয়ই মাথায় আসছে চুরি বা ডাকাতির কথা!

জানলে অবাক হবেন, ভারতের মহারাষ্ট্রে এমন একটি গ্রাম আছে যেখানকার কোনো ঘরেই নেই দরজা। আর সেখানে চুরিও হয় না শাস্তির ভয়ে। বলছি মহারাষ্ট্রের সুন্দর ছোট্ট এক গ্রাম শনি শিংনাপুরের কথা। যেখানে কোনো দরজা নেই। ফলে তালা ব্যবহারেরও ব্যবস্থা নেই। শুধু রং-বেরঙের দরজার ফ্রেম আছে ঘরে ঘরে।

ওই গ্রামের বিসান্দারা বিশ্বাস করেন, ভগবান শনির (শনি দেবতা) প্রতি তাদের অবিরাম বিশ্বাসের কারণে কেউ চুরি করবে না। শিরডি থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার দূরত্বের এই গ্রামবাসীর বিশ্বাস এইরকম। গ্রামবাসীর প্রচলিত ধারণা অনুসারে, প্রায় ৪০০ বছর আগে একটি কালো পাথর পানাসনালা নদীর তীরে অবতরণ করে। স্থানীয় এক ব্যক্তি ধারালো রড দিয়ে আঘাত করলে ওই পাথর থেকে রক্ত বের হতে থাকে।

ওইদিন থেকে গ্রামের লোকেরা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের জের ধরে সবার ঘরের দরজা ও তালা খুলে দিয়েছেন। এমনকি বাড়ি সেভাবে রেখেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান। গ্রামবাসীর মধ্যে চুরির ভয় নেই। এমনকি কয়েক দিনের জন্যও তারা সেভাবেই ঘর ছেড়ে যান।

এই গ্রামের কেউ চুরি করতে সাহসও করেন না, কারণ তাদের বিশ্বাস কেউ চুরি করলে মানসিক অসুস্থতা বা সাত বছরের জন্য দুর্ভাগ্য বা অন্ধত্বের শাস্তি পাবে। তবে গ্রামের কোনো ঘরে যাতে কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণী ঢুকতে না পারে সেজন্য কাঠের প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় আরও এক কাহিনি প্রচলিত আছে, এক ব্যক্তি নাকি তার ঘরের বাইরে একটি দরজা তৈরি করেছিলেন।

অতঃপর পরের দিন তার সঙ্গে বিরাট এক দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর থেকে গ্রামের আর কেউই এ সাহস দেখাননি। জানলে অবাক হবেন, এই গ্রামের পুলিশ স্টেশন ও পোস্ট অফিসেও দরজা নেই।সেখানে আছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি শাখা। আর সেটিও ‘লকলেস’। যদিও এটিতে একটি কাঁচের প্রবেশদ্বার ও একটি রিমোট-নিয়ন্ত্রিত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক লক আছে। যা খুব কমই দৃশ্যমান।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া