কিছু আক্ষেপ রেখেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ

85

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। রয়ে গেল বেশ কিছু আক্ষেপ। তার মাঝে সবচেয়ে বড় আক্ষেপ সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি মিস করা। এ ছাড়া ভালো খেলতে থাকা লিটন দাসের আউট, ফিফটি করা মিরাজের সঙ্গীহীন হয়ে পড়া, কিংবা সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকের আউটটি। এই আক্ষেপগুলো না থাকলে টাইগাররা রানের চূড়ায় উঠতে পারত। আপাতত ৩৬৯ রানেই শেষ হলো বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। লিড হয়েছে ১৫৫ রানের।

২ উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। গতকাল শেষ বলে তামিম ইকবাল আউট হওয়ায় আজ নতুন ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। দিনের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান মমিনুল হক। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৭ রান করে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে বোল্ড হয়ে যান। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। উইকেটে আসেন সাকিব আল হাসান। শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটি জমে যায়। ২৩.৪ ওভারে ১০০ ছাড়ায় দলীয় স্কোর। বেন হোয়াইটকে পরপর দুটি বাউন্ডারি মেরে ৪৫ বলে ক্যারিয়ারের ৩১ নম্বর ফিফটি তুলে নেন সাকিব। এরপর মুশফিকও ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি তুলে নেন ৬৯ বলে। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১৭০ রান।

দ্বিতীয় সেশনেও সাবলীল খেলছিলেন মুশফিক-সাকিব। সবাই যখন দুজনের সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায়, তখনই ছন্দপতন। অ্যান্ডি ম্যকব্রেইনের অফ স্টাম্পের বাইরের একটা বল লেগসাইডে ঘোরাতে গিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। শেষ হয় তার ৯৪ বলে ১৪ বাউন্ডারিতে ৮৭ রানের ইনিংস। এর মাধ্যমেই অবসান হয় ১৫৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটির। উইকেটে এসেই বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। ৪৫তম ওভারে লিড নেয় বাংলাদেশ। সাকিব সেঞ্চুরি মিস করলেও মুশফিক সে ভুল করেননি। ১৩৫ বলে ১৩ চার ১ ছক্কায় তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। এর পরপরই দারুণ খেলতে থাকা লিটন দাস বাজে শটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪১ বলে ৮ চারে ৪৩ রানে। ২৮৬ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ভাঙে ৮৪ বলে ৮৭ রানের দারুণ জুটি। অথচ এক বল আগেই নিশ্চিত রান আউট থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন লিটন।

শতাধিক রানের লিড নিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৫ রানের জুটি ভাঙে মুশফিকের বিদায়ে। চা বিরতির পর ম্যাকব্রেইনের বলে সীমানায় কমিন্সের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে থামেন মুশফিক। শেষ হয় তার ১৬৬ বলে ১৫ চার ১ ছক্কায় ১২৬ রানের ইনিংস। ৩৩১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর তাইজুল (৪) আর শরীফুলকে (৪) ফিরিয়ে তিন* টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট তুলে নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইন। এই অফ স্পিনারের ষষ্ঠ শিকার হন এবাদত (০)। সঙ্গীহীন মিরাজ ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন ৬৬ বলে। শেষ বেলায় বেন হোয়াইটের বলে ৫৫ রান করা মিরাজ আউট হলে ৩৬৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। লিড হয় ১৫৫ রানের। ১১৮ রানে ৬ উইকেট নেন ম্যাকব্রেইন। ২টি করে নেন বেন হোয়াইট আর মার্ক অ্যাডায়ার।

আয়ারল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে অল আউট হয়েছিল ২১৪ রানে। সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন অভিষিক্ত হ্যারি টেক্টর। এ ছাড়া কার্টিস ক্যাম্ফার ৩৪ আর মার্ক অ্যাডায়ার করেন ৩২ রান। রান। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলাম নেন ৫ উইকেট। তার বোলিং ফিগার ২৮ ওভারে ১০ মেডেনসহ ৫৮ রান। এটা তার ক্যারিয়ারের ১১তম ৫ উইকেট শিকার। এ ছাড়া ২টি করে নেন এবাদত এবং মিরাজ। শরীফুল নিয়েছেন ১টি। এরপর প্রথম ইনিংস খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আর দিনের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২১ রান করা তামিম ইকবাল।