এলএসডি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে পিকেএসএফের কর্মশালা

150

এলএসডির প্রভাব এবং তা কার্যকরভাবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষে কর্মশালা করেছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন -পিকেএসএফের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ইউনিট। গতকাল বৃহস্পতিবার পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন (প্রাণিসম্পদ-২)।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশের গরু, মহিষ ইত্যাদি প্রাণী লাম্পি স্কিন ডিজিজে (এলএসডি) ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। এলএসডি হলো বসন্ত রোগের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট এক ধরনের সংক্রামক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত প্রাণীর নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা খামারিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
পিকেএসএফর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন, পিকেএসএফর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম তৌহিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, এ রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় গোটপক্স ভ্যাকসিন দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ লাখ গোটপক্স ভ্যাকসিন মাঠপর্যায়ে প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ একসময় গবাদিপশুর জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তাদের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত এ দেশের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। টেকসইভাবে দারিদ্র্য বিমোচনে গবাদিপশু পালন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই রোগের প্রাদুর্ভাব যেন এই খাতের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেই লক্ষে খামারি পর্যায়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি জোর দেন তিনি।
কর্মশালায় আলোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রাথমিকভাবে গরু, জলা মহিষ, জিরাফ ইত্যাদি প্রাণী লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশে এর সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্ত প্রাণীর চামড়া ও চামড়ার নিচে গোলাকার গোটা দেখা দেয়। আক্রান্ত প্রাণী শুকিয়ে যায় এবং চামড়ার ক্ষতি হয়। সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র মৌসুমে এই রোগ বেশি দেখা দেয়। দেশে আগামী বৃষ্টি ও বন্যার সময় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে।
অনুষ্ঠানে ‘ইমপ্যাক্ট অব লাম্পি স্কিন ডিজিজেস অন লাইভস্টক প্রোডাকশন অ্যান্ড ইটস কন্ট্রোলিং মেজারস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) প্রাণিস্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান ড. মো. গিয়াস উদ্দিন। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিএলআরআই’র মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার।
প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে পিকেএসএফের ভূমিকা উপস্থাপন করে মহাব্যবস্থাপক ড. শরীফ আহম্মদ চৌধূরী।