ইতিহাস ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়ার সেমিফাইনাল

192

মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বুধবার শেষ চারে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। তার আগে তাদের সেমিফাইনালে ওঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।
১৯৬৬ সালের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড হারায় পর্তুগালকে* কোনও বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৬৬ সালে দেশের মাটিতে।
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৯০ হাজারেরও বেশি দর্শকের সামনে ববি চার্লটন ফিরতি এক শটে প্রথমার্ধে এগিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে। ১৯৬৫ সালের ব্যালন ডি’অর জয়ী ইউসেবিওর নেতৃত্বে পর্তুগালের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। চার্লটন বিরতির পর ৮০ মিনিটে আরেক গোল করলে সহজ জয় পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল ইংলিশরা। কিন্তু ২ গোলে পিছিয়ে যাওয়া পর্তুগিজ ৮২ মিনিটে এক গোল শোধ দেয় ইউসেবিওর পেনাল্টি থেকে।
২-১ গোলের জয়ে পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। যেখানে নির্ধারিত সময় ২-২ গোলে শেষ হলে অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলের জয় নিশ্চিত করে তারা। ইংল্যান্ড ঘরে তোলে তাদের একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা।
* থ্রি লায়নরা বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল খেলে ১৯৯০ সালে। কিন্তু ওইবার একটু কম আনন্দ করতে পেরেছিল তারা।
ইংল্যান্ড ও পশ্চিম জার্মানি গোলশূন্য স্কোরে শেষ করে প্রথমার্ধ। বিরতির পর এগিয়ে যায় জার্মানরা। তুরিনের দেল্লে আলপি স্টেডিয়ামে আন্দ্রেস ব্রেহমে ৬০ মিনিটে এগিয়ে নেন ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের ফাইনালিস্টদের।
২৪ বছর পর আবার সেমিফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড, কিন্তু হতাশার বিদায় নিতে হলো তাদেরসময় যত যাচ্ছিল, চাপ বাড়ছিল ইংল্যান্ডের ওপর। তবে ৮০ মিনিটে তাদের স্বস্তিতে ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেন তাদের সর্বকালের শীর্ষ বিশ্বকাপ গোলদাতা গ্যারি লিনেকার।
অতিরিক্ত সময়ে দুই দলের শট লাগে গোলপোস্টে এবং বেশ কয়েক বার সুযোগ নষ্ট করে তারা। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে স্কোর হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
জার্মান ও ইংলিশরা তাদের প্রথম তিন পেনাল্টি থেকে গোল করে। কিন্তু স্টুয়ার্ট পিয়ার্সের পেনাল্টি রুখে দেন বোদো ইগনার। তারপর ওলাফ থোন জার্মানির চতুর্থ পেনাল্টি লক্ষ্যভেদ করেন। তবে ক্রিস ওয়াডল তার শট গোলবারের ওপর দিয়ে গেলে পশ্চিম জার্মানি নিশ্চিত করে ফাইনাল এবং ইংল্যান্ডের পল গ্যাসকোইগনে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
* ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে গেলে স্বাধীন দেশ হিসেবে ক্রোয়েশিয়া প্রথমবার বিশ্বকাপে ওঠে ১৯৯৮ সালে। ওইবারই তারা নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল।
ক্রোয়েশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডেভর সুকারের নেতৃত্বে অ্যালেন বোকসিচ, জোনিমির বোবান ও রবের্তো প্রোসিনেকির মতো ওই তরুণ দল দারুণ পারফরম্যান্স করে ওঠে শেষ চারে।
ফ্রান্সের কাছে সেফিফাইনাল হারলেও তৃতীয় হয়েছিল ক্রোয়েশিয়াআর্জেন্টিনার পরে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নকআউটে ওঠে ক্রোয়েটরা। শেষ ষোলোতে রোমানিয়া ও কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে বিদায় করে তারা। দুই ম্যাচেই গোল করেন সুকার।
ক্রোয়েশিয়ার ‘সোনালি প্রজন্ম’ স্বাগতিক ফ্রান্সকে ১-০ গোলে পেছনে ফেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। টুর্নামেন্টের পঞ্চম গোল করেন সুকার। কিন্তু লিলিয়ান থুরামের জোড়া গোলে ঘুরে দাঁড়ানো জয়ে ফাইনালে ওঠে ফরাসিরা।
ব্রাজিলকে হারিয়ে ফ্রান্স তাদের প্রথম শিরোপা ঘরে তোলার দিনে ক্রোয়েশিয়া তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুকার ও প্রোসিনেকির লক্ষ্যভেদে ২-১ গোলে জেতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
* স্বাধীনতার আগে ক্রোয়েশিয়া ছিল যুগোস্লাভিয়ার অংশ, যাঁরা দুইবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলেছে।
‘ইউরোপের ব্রাজিলিয়ান’ নামে পরিচিতি পাওয়া যুগোস্লাভিয়া ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে উরুগুয়ের কাছে ৬-১ গোলে হেরে যায়।
১৯৬২ সালেও শেষ চার খেলেছে যুগোস্লাভিয়া। ১৯৬২ সালে ওইবার চেকোস্লোভাকিয়ার কাছে হেরে যায় তারা। রয়টার্স