১২০ বছর পর বেনিন ভাস্কর্য ফেরত পেল নাইজেরিয়া
নেদারল্যান্ডস ১২০ বছর আগে ঔপনিবেশিক শাসনামলে নাইজেরিয়ার বেনিন রাজ্য থেকে লুণ্ঠিত ১১৯টি ঐতিহাসিক ভাস্কর্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দিয়েছে। গতকাল নাইজেরিয়ার লাগোসের জাতীয় জাদুঘরে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এসব মূল্যবান নিদর্শন হস্তান্তর করা হয়। নাইজেরিয়ার জাতীয় জাদুঘর ও স্মৃতিস্তম্ভ কমিশনের মহাপরিচালক ওলুগবিল হলোওয়ে এই প্রত্নবস্তুগুলোর তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, “এগুলো কেবল বস্তু নয়—এগুলো আমাদের আত্মপরিচয় ও অতীতের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই, বিশ্ব আমাদের সঙ্গে ন্যায্যতা, মর্যাদা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে আচরণ করুক।” তিনি আরও জানান, জার্মানিও ১,০০০-এর বেশি নিদর্শন ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা ঔপনিবেশিক আমলে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকে ‘বেনিন ব্রোঞ্জ’ নামে অভিহিত করা হয়। এগুলোর মধ্যে ১৬শ থেকে ১৮শ শতাব্দীর মধ্যে তৈরি সূক্ষ্ম ধাতু ও হাতির দাঁতের ভাস্কর্য রয়েছে। ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ সেনা অভিযানের সময় বেনিন লুণ্ঠনের মাধ্যমে এসব সম্পদ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সে সময় বেনিনের রাজা ওভনরামওয়েন নোগবাইসিকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। বর্তমানে ফেরত পাওয়া চারটি ভাস্কর্য লাগোসের জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে সেগুলো জাদুঘরের স্থায়ী সংগ্রহে যুক্ত হবে। বাকি নিদর্শনগুলো ফেরত পাঠানো হবে বেনিনের ঐতিহ্যবাহী শাসক ওবা ইওয়ারে দ্বিতীয়-এর কাছে।উল্লেখযোগ্য যে, ২০২২ সালে নাইজেরিয়া বিশ্বের বিভিন্ন জাদুঘর ও সংগ্রহশালার কাছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফেরতের আনুষ্ঠানিক দাবি জানায়। ওই বছর যুক্তরাজ্যের একটি জাদুঘর থেকে ৭২টি এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড থেকে ৩১টি প্রত্নবস্তু ফেরত পায় নাইজেরিয়া।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ ঔপনিবেশিক ইতিহাসের পুনর্মূল্যায়ন এবং বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক সম্পদের ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।