‘দেশে ভিক্ষুক নেই’ মন্তব্য করে পদ হারালেন কিউবার মন্ত্রী
‘কিউবায় কোনো ভিক্ষুক নেই। কিছু মানুষ ভিখারির ছদ্মবেশে সহজে টাকা আয় করার চেষ্টা করছে।’- এমন মন্তব্যের জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন কিউবার শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতো কাবরেরা। বুধবার (১৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি কিউবার পার্লামেন্টে বক্তব্যকালে শ্রমমন্ত্রী মার্তা দাবি করেন, কিউবায় প্রকৃত অর্থে কোনো ‘ভিক্ষুক’ নেই। যারা ময়লার বিন ঘাঁটাঘাঁটি করেন, তারা এটাকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ উপায়’ ভাবেন বলেই এমন করছেন।
তার এই মন্তব্যে কিউবার জনগণ ও প্রবাসী কিউবানরা সমালোচনায় ফেটে পড়েন। সমালোচনা বাড়তে থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত হোন কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াস কানেল। এরপরই শ্রমমন্ত্রী মার্তা পদত্যাগ করেন।
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কিউবা। দেশটিতে চলছে খাদ্য সংকট। দারিদ্রের হার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার সময় মার্তা বলেন, “কিউবায় কোনো ভিক্ষুক নেই। সহজে অর্থ উপার্জনের জন্য ভিক্ষুক হওয়ার ভান করে এমন মানুষ রয়েছে।”
কিউবার বাসিন্দারা এই মন্তব্যের জন্য ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়। বলা হয়, সরকার উদাসীন ও মানুষের করুণ অবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন। মানবাধিকার কর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা শ্রম মন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেন। তারা এ নিয়ে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন। যেখানে বলা হয়, ‘মন্ত্রীর এ মন্তব্য কিউবার মানুষের প্রতি অপমানজনক।’
এরপর কিউবার প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টে শ্রমমন্ত্রী মার্তার নাম উল্লেখ না করেই তার সমালোচনা করে বলেন, “নেতৃত্বকে সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন। জনগণের বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।’ মন্ত্রী মার্তার পদত্যাগ কিউবান কমিউনিস্ট পার্টি এবং সরকার গ্রহণ করেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কিউবার সরকার ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রকাশ করে না। তবে দ্বীপদেশটির গভীর অর্থনৈতিক সংকটে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করে কিউবার বেশিরভাগ বাসিন্দা।