জ্বালানি-পরিকাঠামো খাতে মিয়ানমারের সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তি রাশিয়ার
রাশিয়া মিয়ানমারের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে রাশিয়ান জ্বালানি কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে বলে জানিয়েছে মস্কো। গতকাল রাশিয়ার অর্থনীতি মন্ত্রী ম্যাক্সিম রেশেতনিকভ সেন্ট পিটার্সবার্গে মিয়ানমারের বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী কান জো-এর সঙ্গে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাশিয়ান কোম্পানিগুলোকে সমুদ্র উপকূলবর্তী তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র উন্নয়নে আকৃষ্ট করতে আগ্রহী—এটি আমরা বিশেষভাবে লক্ষ করেছি। রাশিয়ান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি মিয়ানমারের দাওয়েই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। ওই অঞ্চলে একটি ৬৬০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২১ সালে নোবেলজয়ী আউং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সেনা কর্তৃক ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করছে রাশিয়া। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিয়ানমার ভিতরে-বাইরে সংঘাত, ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, খাদ্য সংকট ও প্রায় ৫৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের জন্য মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সেখানে একটি ছোট আকারের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর ঠিক এক মাস আগে, রাশিয়া ও মিয়ানমার দাওয়েই অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি বন্দর ও তেল শোধনাগার নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।শুক্রবার স্বাক্ষরিত চুক্তিটি শুধুমাত্র জ্বালানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। রাশিয়ান সরকার জানিয়েছে, এটি পরিবহন অবকাঠামো, ধাতুবিদ্যা, কৃষি ও টেলিকম খাতেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার পথ সুগম করবে। এই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া শুধু জ্বালানিখাতেই নয়, বরং মিয়ানমারে পরিকাঠামো ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রভাব বাড়াতে চায়। মস্কোর এই কৌশলমূলক অবস্থান, বিশেষত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে, তার আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার ও মিত্র তৈরির অংশ বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।