জেলায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন
অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন-নারী ও কন্যার উন্নয়ন-এই স্লোগানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এই সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথর বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার রেজাউল করিম। সূচনা বক্তব্য দেন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. সাইকী ওদুদ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী জাকিয়া সুলতানা, জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খানশুর, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মোমেনা খাতুন, ছাত্র নেতা আবদুর রাহিমসহ অন্যরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বলেন-আমরা নারীদের জন্য সমানভাবে কাজের ও শিক্ষার পরিবেশ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি। সেখানে তাদেরকে সমতা দিলে চলবে না, তাদেরকে ন্যায্যতা দিয়ে উঠিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন-নারীরা চান তাদের কাজের স্বীকৃতি, আমরা যারা পরিবারে পূরুষ আছি তারা নারীদের সম্মান করব, তাদের কাজের স্বীকৃতি দিব। একজন কর্মজীবী নারী ঘুম থেকে উঠে রান্না করবেন, সকলকে খাওয়াবেন, সন্তানের যতœ নিবেন, স্কুলে দেয়ার জন্য প্রস্তুত করবেন, তার পর স্বামীকে অফিস যাবার জন্য প্রস্তুত করে দিবেন, তারপর তিনি অফিসে যাবেন। অফিস থেকে ফিরে এসে আবার সংসারের সব কাজ তাকেই করতে হয়। অথচ আমরা তাকে কতটুকু মর্যাদা দিই। আমাদের এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। নারীদের সুযোগ দিতে হবে। সৃষ্টিশীল কাজ নারীরাই বেশী করেন। সব ক্ষেত্রে নারীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে জুলাই-আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারীদের সাহসী অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন। পুলিশ সুপার রেজাউল করিম তাঁর বক্তব্যে নারীদের জন্য শুধু সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ নয়-তাদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কাজ দেয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বারিয়াডাঙা ইউনিয়নে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে সদর উপজেলার মানপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকা বেগম। আরো উপস্থিত ছিলেন, নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুফতি হানিফ মো: আব্দুল কাদের, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ- চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রোগ্রাম অফিসার উত্তম মন্ডল, বালিয়াডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানটিতে সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
শিবগঞ্জে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ সকালে উপজেলা প্রশাসন ও জাতীয় মহিলা সংস্থার আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান আজাহার আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌফিক আজিজ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা উম্মে সুমাইয়া ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহিন আকতারসহ অন্যরা। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও নারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, নাচোলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপতি হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অদিদপ্তরের আয়োজনে মিনি কন্সফারেন্স রুমে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা প্রভাতি মাহাতোর সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া, তথ্যসেবা কর্মকর্তা ইমরান হক, নাচোল প্রেস ক্লাবের সভাপতি অলিউল হক ডলার, সাংবাদিক এ্যাসোসিয়েনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল হোসেন, ব্র্যাকের কর্মসূচী সংগঠক জাহিদুল ইসলাম, ডাসকো ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি নিলুফার ইয়ামিন। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো অন্যেন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল ইসলাম বাবু, রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি ইব্রাহীম আলী,সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জিলানীসহ বিভিন্ন নারী উন্নয়ন সমিতির সদস্যবৃন্দ।
আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্যে প্রভাতি মাহাতো নারী দিবসের তাৎপর্য তুলে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার বলেন,“নারী প্রতি অবিচার বা নির্যাতন কোন না খেঅনভাবে পরিবার থেকে শুরু হয়। কন্যা শিশু সন্তানটি প্রথমে নির্যাতনের শিকার হয় তার পরিবার থেকে। পরিবার থেকে অধিকার,সমতা,ও নারীর ক্ষমতায়ন উঠে আসার দরকার। শুধু একটি দিবসই নারী দিবস হিসাবে পালন না করি। প্রতিদিন হবে নারী দিবস। প্রত্যেকদিন নারীকে সম্মান করতে হবে। নারী অধিকার ও পাপ্য সম্মানটুকু দিতে হবে। আমরা সকলে মানুষ । একজন নারীও মানুষ। নারীর সাথে মানুষের মত আচরন করতে হবে। একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠাই একাই পুরুষের দ্বারা উন্নয়ন সম্ভব নয়, একই নারী দ্বারা সম্ভব নয়। উভয় উভয়কে সম্মান করে হাতে হাত রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখে কাজ করলে তখন আমাদের এ দিবসের সফলতা আসবে।”