জাতীয়করণের দাবিতে নাচোলে কলম বিরতিতে নকলনবিশরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নকলনবিশরা চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘কলম বিরতি’।
নকলনবিশ অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা ও নির্দেশনা মোতাবেক মঙ্গলবার সকাল থেকে নাচোল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলিয়ে নকলনবিশরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
নাচোল উপজেলা নকলনবিশ নজরুল ইসলাম বলেন, নকলনবিশরা বছরের পর বছর বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ও জনসেবার কাজ করি আমরা, অথচ আমাদেরকে সরকারের কোষাগার থেকে কোনো বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জাতীয়করণ করা হলে রাষ্ট্রকে আমারা যে টাকা আয় করে দেই, সেই অর্থ থেকেই আমাদের বেতন দেওয়া সম্ভব। অন্য কোনো রাজস্ব খাত থেকে আমাদের এক টাকাও দিতে হবে না। এমনকি নিজেদের টাকা দিয়ে কাগজ-কলম কিনে কাজ করতে হয় আমাদের।
নকলনবিশ সদস্যরা আরো বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমেছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, আপনারা ঘরে ফিরে যান। আপনাদের সকল দাবি দাওয়া এমনকি জাতীয়করণের দাবি মেনে নেয়া হবে। আমরা যখন ঘরে ফিরে যাই তখন ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের দাবি উপেক্ষা করে। আমরা এ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও বৈষম্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
সদস্যরা আরো বলেন, আমরা দলিলের নকল লেখা বাবদ বর্তমানে প্রতি পৃষ্ঠা ৩৬ টাকা হারে পাই। এতে মাসে কয়েক হাজার টাকা আয় হয়, যা একজন নকলনবিশের সংসার চালানোর জন্য অতি নগণ্য। অথচ আমরাই এই অফিসের মূল চালিকাশক্তি।
নকলনবিশ সদস্যরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের (জাতীয়করণের) দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। কর্মবিরতি পালন করেছি কয়েকবার। তৎকালীন সরকারের আশ্বাসে আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক সমাধান না হওয়ায় আবার কর্মবিরতি শুরু করেছি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন। আমাদের এই দাবি মানা না হলে আমরা সর্বাত্মক কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামব।
নারী নকলনবিশ সদস্যরা বলেন, আমরা রাষ্ট্রের কোনো সুযোগ-সুবিধা পাই না। এমনকি নারী হিসেবে আমাদের মাতৃকালীন কোনো সুযোগ-সুবিধাও নেই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই বৈষম্যের বিলোপ চাই এবং আমাদের চাকরির জাতীয়করণ চাই।