জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে এইচপিভি টিকা দেয়া

বাংলাদেশে প্রতিবছর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে প্রতি এক লাখে গড়ে আক্রান্ত হয় ১১ জন নারী আর মারা যায় প্রায় ৫ হাজার জন।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ।
তিনি বলেন, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসটি প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষ ও নারী উভয়েই বহন করে। আক্রান্ত হয় মেয়েরা। সমকামী যারা, তারাও আক্রান্ত হয়। আমাদের দেশে বাল্যবিয়ের কারণে অল্পবয়সী মেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। ভবিষ্যতে যেন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আর কোনো নারী আক্রান্ত না হয়, সেজন্য আগামীকাল ২৪ অক্টোবর  থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিভাগে ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধক ১ ডোজ টিকা প্রদান করা হবে।
সিভিল সার্জন জানান, এজন্য ১ হাজার ৫৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ম-৯ম শ্রেণীর ৮৬ হাজার ৮৯৪ জন ছাত্রী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় না এমন ১০-১৪ বছর বয়সী ২ হাজার ৭৯৭ জন কিশোরীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদেরকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। নিজেরা কিংবা কোনো কম্পিউটারের দোকানে গিয়েও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
সিভিল সার্জন বলেন, আগামী বছর থেকে শুধু ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীদেরই এই টিকা দেয়া হবে। এরপর আর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে কোনো নালী আক্রান্ত হবে না। তিনি বলেন, এই রোগটি অনেক আগেই বাসা বাঁধলেও এর প্রকাশ পায় ১৫-২০ বছর পরে। কাজেই হেলাফেলা না করে সরকারি টিকা গ্রহণে নির্দিষ্ট বয়সের মেয়েদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি জানান, এই টিকা বাইরে থেকেও ক্রয় করে দেয়া যাবে, তবে দাম পড়বে ৬ হাজার টাকার উপর।
সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভিলেন্স ইমুলাইজেশন মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা হক, সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোছা. রেশমা খাতুন, ডা. শাহনাজ খাতুন।
এসময় সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আস শামস তিলক ও জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা শামশুন নাহারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।