চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইঁদুর দমন অভিযান শুরু

‘ছাত্র শিক্ষক কৃষক ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগিতা চাই’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইঁদুর দমন অভিযান শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে এ উপলক্ষে র‌্যালি বের হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ইঁদুর মেরে দমন অভিযানের উদ্বোধন করা হয়।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ। আলোচনা সভায় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় বাংলাদেশে ইঁদুর সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার সরকার, উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান, ইঁদুর নিধনে বিশেষ অবদান রাখায় রাজশাহী অঞ্চল থেকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত কৃষক মতি টুডু।
সভায় জানানো হয়, ইঁদুর বহুমাত্রিক সমস্যা সৃষ্টি করে। ফসল নষ্ট করে, খাবার নষ্ট করে, ইলেকট্রিক তার পর্যন্ত কেটে দেয়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফুটো করে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এককথায় ইঁদুর মাঠঘাট, ঘারবাড়ি সবখানেই ক্ষতি করে। ইঁদুর মানুষের কল্যাণ করে না, ক্ষতি করে। তাই ইঁদুর নিধন জরুরি। ইঁদুর যে পরিমাণ ভক্ষণ করে তার দশগুণ কেটে নষ্ট করে। আমাদের দেশে যে ইঁদুরগুলো দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে বাদামি ইঁদুর, গেছো ইঁদুর, বাতি বা সেলই ইঁদুর, মাঠের কালো ইঁদুর, কালো বড় ইঁদুর, মাঠের নেংটি ইঁদুর, নরম পশমযুক্ত ইঁদুর এবং প্যাসিফিক ইঁদুর উল্লেখযোগ্য।
ইঁদুর দ্রুত বংশবিস্তারকারী প্রাণী। এরা যে কোনো পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়ে দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। উপযুক্ত এবং অনুকূল পরিবেশে একজোড়া প্রাপ্তবয়স্ক ইঁদুর বছরে প্রায় ২০০০টি বংশধর সৃষ্টি করতে পারে। এরা সন্তান জন্ম দেয়ার দুই দিনের মাথায় আবারো গর্ভধারণ করতে পারে। গর্ভধারণকাল ১৮-২২ দিন। ইঁদুর বছরে ৬ থেকে ৮ বার বাচ্চা দেয়। প্রতিবারে ৪ থেকে ১২টি বাচ্চা দিতে পারে। তিন মাসের মধ্যে বাচ্চা বড় হয়ে আবার প্রজননে সক্ষম হয়ে উঠে ।
ইঁদুরের সামনের দাঁত জন্ম থেকেই বাড়তে থাকে; ইঁদুর সাধারণত ৫ থেকে ১০ ভাগ ফসলের ক্ষতি করে; ইঁদুর যা খায় তার চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি ক্ষতি করে; একটি ইঁদুর বছরে ৫০ কেজি গোলাজাত শস্য নষ্ট করে।