খাদ্যসঙ্কটে মহাকাশে সুনীতা-বুচ
কয়েক দিন আগে নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামসের সাম্প্রতিক ছবি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। বলেছিলেন, তার স্বাস্থ্য ভালো নেই। ভেঙে যাওয়া গাল, শীর্ণকায় শরীরের সেই ছবি উদ্বেগ বাড়িয়েছিল অনুরাগীদের। তবে সুনীতা তা অস্বীকার করে জানান, তার ওজন একই আছে। মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণহীনতার জন্য শরীরে তরলের পরিমাণের তারতম্য ঘটেছে। সেই কারণে শীর্ণকায় দেখাচ্ছে। তবু দুশ্চিন্তা কমেনি। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রকাশ করা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকে থাকা সুনীতা এবং তার সফর-সঙ্গী বুচ উইলমোরের ছবি দেখে বিশেষজ্ঞদের অনেকে জানিয়েছেন, সুনীতাদের কাছে ফল, আনাজের মতো তাজা খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। গত জুন মাসে বোয়িং স্টারলাইনারের তৈরি প্রথম মহাকাশযানের পরীক্ষামূলক উড়ানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন সুনীতা ও বুচ। ঠিক ছিল ৮ দিন মহাকাশে থেকে ফিরে আসবেন তারা। কিন্তু বোয়িংয়ের যানে একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে, গ্যাস লিক হওয়া থেকে থার্স্টার অকেজো হয়ে পড়া। বহু চেষ্টাতেও সারানো যায়নি সেসব। ফলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য মহাকাশে আটকে পড়েন সুনীতারা। বাধ্য হয়ে পরিকল্পনা বদলাতে হয় নাসাকে। বোয়িং ও নাসাকে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের দ্বারস্থ হতে হয়। কিছুদিন আগে বোয়িং স্টারলাইনারের মহাকাশযানটিকে যাত্রিবিহীন অবস্থায় পৃথিবীতে ফেরানো হয়েছে। সুনীতারা ফিরবেন স্পেসএক্সের মহাকাশযান ক্রু-৯ মিশনে। স্পেসএক্সের যানটি নিয়ে গিয়েছেন নাসার নিক হেগ ও রুশ কসমোনট আলেকজান্দের গর্বোনভ। সামনের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সুনীতাদের নিয়ে ফিরবেন তারা। আমেরিকার একটি প্রথম সারির দৈনিকে দাবি করা হয়েছে, মহাকাশে সুনীতাদের খাবার-দাবার ও রসদ ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে। যদিও নাসার আশ্বাস, কোনও খাদ্য সঙ্কট হয়নি। স্টারলাইনারের সঙ্গে যুক্ত এক বিশেষজ্ঞ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, মহাকাশচারীদের ভান্ডারে দুই ধরনের খাবার থাকে। শুকনো খাবার— যেমন গুঁড়ো দুধ, প্রাতরাশের শস্যজাতীয় খাবার, পিৎজা, চিকেন রোস্ট, টুনা ইত্যাদি। ওই বিশেষজ্ঞের মতে, সুনীতাদের কাছে এই ধরনের খাবার পর্যাপ্ত রয়েছে। তবে তাজা ফল, আনাজের ভান্ডার কমে আসছে। পৃথিবী থেকে তিন মাস অন্তর আইএসএস-এ খাবার পাঠানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে ওদের কাছে টাটকা ফল, আনাজ অনেকটাই ছিল। কিন্তু গত তিন মাসে কমে এসেছে। নাসা জানিয়েছে, তিন মাস অন্তর যে খাবার পাঠানো হয়, সেগুলো মূলত রান্না করা খাবার, গরম করে খাওয়া যায়। মহাকাশচারীরা যাতে ঠিক মতো খেতে পারেন, তার জন্য চৌম্বকীয় প্লেট ও ধাতব চামচ-কাঁটা ব্যবহার করা হয়। নাসার আশ্বাস, সব ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথিবী থেকে চিকিৎসকেরা সুনীতাদের স্বাস্থ্যের উপরে কড়া নজর রাখছেন।