উৎপাদনকারী নয়, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার

ওষুধ কোম্পানিগুলোর হাতে নয়, দেশের নাগরিকদের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২৫ আগস্ট বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আইনের বিধান অনুসারে ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৩৯টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। পরে সীমিত করে ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা রেখে ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সার্কুলার ইস্যু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওষুধ যেহেতু জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেকারণে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে নাগরিকদের বেঁচে থাকার অধিকার সম্পর্কিত। তাই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে ২৫ আগস্ট নির্দেশনাসহ রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওষুধ প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত রুলটি নিষ্পত্তি করে কতিপয় নির্দেশনা দিয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো কর্তৃক জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা থাকবে না। আদালত রায়ে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের বিধান, যা বর্তমানে ২০২৩ সালের ওষুধ ও কসমেটিকস আইনের সুনির্দিষ্ট বিধান অনুসারে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণের বিষয়ও উল্লেখ করেছেন। মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে মানুষের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য যখন-তখন ইচ্ছেমাফিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারণের সুযোগ থাকছে না।