সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব

সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব: অস্ট্রেলিয়ান ট্রায়াল ১৬ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে বড় সাফল্য অজর্ন করেছে অস্ট্রেলিয়া। সরকারি এক ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে, ডিজিটাল বয়স যাচাই প্রযুক্তি ‘গোপনীয়তা রক্ষা করে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্যভাবে’ কাজ করতে সক্ষম। শিশু-কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি থেকে রক্ষা করতে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আইন পাস করেছে অস্ট্রেলিয়া। গত নভেম্বরে পাস হওয়া এ আইন চলতি বছরের শেষ নাগাদ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং এক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো যদি এ আইন মানতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদেরকে পাঁচ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো আইনটিকে  ‘অস্পষ্ট, তাড়াহুড়ো এবং ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছে। সিডনি থেকে এএফপি জানিয়েছে, সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি স্বাধীন  বয়স নিশ্চয়তা প্রযুক্তি ট্রায়ালের অন্তর্বর্তী ফলাফলে  দেখা গেছে, বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ট্রায়ালের প্রকল্প পরিচালক টনি অ্যালেন বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় এই ব্যবস্থা চালু করতে কোনো বড় প্রযুক্তিগত বাধা নেই। এই সমাধানগুলো প্রযুক্তিগতভাবে বাস্তবায়নযোগ্য, বিদ্যমান সেবার সঙ্গে নমনীয়ভাবে একত্রিত করা যায় এবং অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার রক্ষা করতে পারে। তবে অস্ট্রেলিয়ার নাইন নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে অ্যালেন সতর্ক করে বলেন, শিশুদের এই যাচাইকরণ পদ্ধতি এড়িয়ে যাওয়া ঠেকানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি না, কোনো ব্যবস্থাই শতভাগ নির্ভুল হতে পারে। ট্রায়াল প্রতিবেদনে জানানো হয়, বয়স যাচাইয়ের জন্য অনেক পদ্ধতি থাকলেও সব পরিস্থিতিতে উপযোগী এমন একক সমাধান নেই। এই ট্রায়ালে ৫৩টি সংস্থা অংশ নিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুদের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, এসব প্ল্যাটফর্ম শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার এই নতুন আইন অন্যান্য দেশও পর্যবেক্ষণ করছে। অনেকেই এখন নিজেদের দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এদিকে, গ্রিস চলতি মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ‘ডিজিটাল প্রাপ্তবয়স্ক’ বয়স নির্ধারণ করা হয় এবং বাবা মায়ের সম্মতি ছাড়া শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।

২০২৪ সালে শিশুদের প্রতি সহিংসতা ‘ভয়াবহ মাত্রায়’ পৌঁছেছে: জাতিসংঘ

২০২৪ সালে শিশুদের প্রতি সহিংসতা ‘ভয়াবহ মাত্রায়’ পৌঁছেছে: জাতিসংঘ গাজা থেকে শুরু করে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতময় অঞ্চলে ২০২৪ সালে শিশুদের ওপর সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদরদপ্তর থেকে এএফপি এ খবর জানায়। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। আর ২০২৩ সালের চেয়ে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৩৬ হাজার ২২১টিই সংঘটিত হয়েছে ২০২৪ সালে। বাকি ৫ হাজার ১৪৯টি আগের বছরের হলেও তা এ বছর যাচাই করা হয়েছে। এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালেও শিশু সহিংসতায় রেকর্ড হয়েছিল, তবে পরের বছর অবশ্য সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় সহিংসতা বেড়েছে ২১ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সহিংসতায় সাড়ে ৪ হাজারেও বেশি শিশু নিহত এবং কমপক্ষে ৭ হাজার জন আহত হয়। বর্তমানে নির্বিচার হামলা ও সহিংসতার প্রধান শিকার শিশুরাই বলেও দাবি করা হয়। এছাড়াও বহু শিশু একাধিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এমন ভুক্তভোগী শিশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪৯৫ জনে। জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা বলেন, যে ২২ হাজার ৪৯৫ শিশুর এখন স্কুলে পড়া বা মাঠে খেলাধুলা করার কথা, তারা আজ শিখছে কীভাবে গোলাগুলি আর বোমার মধ্যেও বেঁচে থাকতে হয়। এই শিশুদের আর্তনাদ আমাদের সবার রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো। তিনি আরো বলেন, এটি যেন আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত হয়। কারণ আমরা একেবারে সংকটসীমার কিনারায় পৌঁছে গেছি। জাতিসংঘ প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ২০টি সংঘাতময় অঞ্চলে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের পরিশিষ্টে যুক্ত রয়েছে তথাকথিত ‘লজ্জার তালিকা’, যেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার জন্য দায়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে হাইতির একটি সশস্ত্র গ্যাং জোটের নাম। তাদের বিরুদ্ধে শিশু হত্যা ও অঙ্গহানি, সশস্ত্র সহিংসতায় নিয়োগ, অপহরণ, মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা এবং যৌন সহিংসতার মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নাম এ বছরের তালিকাতেও রয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭২, খাবারের লাইনে ছিলেন ২৯ জন

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭২, খাবারের লাইনে ছিলেন ২৯ জন গাজা উপত্যকায় বুধবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাগুলিতে কমপক্ষে ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৯ জন ছিলেন খাদ্য সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা লাইনে।  ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড চলছে এমন সময়, যখন সহায়তার আশায় প্রতিদিনই জীবন বাজি রাখছে সাধারণ জনগণ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাতারের সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমান লোকজনের ওপর সর্বশেষ হামলাটি চালানো হয় বুধবার সকালে গাজার কেন্দ্রস্থলে সালাহ আল-দীন সড়কে, নেৎসারিম করিডোরের কাছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০০ জনের বেশি। এর বাইরেও গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। গাজা শহরের দক্ষিণের জেইতুন এলাকায় একটি বাড়িতে বিমান হামলায় নিহত হন আটজন। দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরে শরণার্থীদের তাঁবুতে চালানো আরেকটি হামলায় নিহত হন আরও আটজন, যাদের মধ্যে দুই শিশু ও এক নারী ছিলেন। ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা ওয়াফা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, আরও এক হামলায় গাজার কেন্দ্রীয় অংশের মাজাজি শরণার্থী শিবিরে নিহত হন একই পরিবারের অন্তত ১০ জন, যাদের মধ্যে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী ও তাদের সন্তানরাও। দেশটির মুক্তিকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, বসতি এলাকাগুলোয় ইসরায়েলি হামলা ও বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলোয় সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ধারাবাহিক দমন-পীড়ন, গণহত্যা, ক্ষুধার্তদের লক্ষ্য করে হামলা, জোরপূর্বক উচ্ছেদ, এবং তথাকথিত নিরাপদ অঞ্চলগুলোকে সীমিত করার মাধ্যমে ইসরায়েল যেসব অপরাধ করছে, তা স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ। এই নির্লজ্জ হত্যাযজ্ঞ প্রায় ২০ মাস ধরে চলমান একটি গণহত্যা যুদ্ধের অংশ। খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমান মানুষের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বুধবার টেলিফোনে এক আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও মোদি তাদের আলোচনার সময়ে ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘর্ষ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন। তবে দুই নেতার মধ্যে প্রায় ৩৫ মিনিট আলোচনা হয় মূলত ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে আজই ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় দুপুরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনির। তার আগেই ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের দুই নেতার মধ্যে কথা হলো। “পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলার পরে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেদিন তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার সমর্থনের কথাও জানিয়েছিলেন। তারপরে দুই নেতার মধ্যে এই প্রথম কথা হল,” বিবৃতিতে বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। “এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অপারেশন সিন্দুর নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন,” বলেছেন মিশ্রি। তার কথায়, “প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ২২ এপ্রিলের পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পের কথা গোটা বিশ্বের কাছে জানিয়ে দিয়েছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন যে ছয়-সাতই মে রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটি ও গোপন আস্তানাগুলিকেই নিশানা করেছিল ভারত । পরিমিত, সুনির্দিষ্ট এবং উত্তেজনা যাতে প্রশমিত না হয়, সেরকমই পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। ভারত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যে কোনও আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।“ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিক্রম মিশ্রির যে ভিডিও বার্তাটি শেয়ার করেছেন, তাতে সচিব বলছেন, “গত নয়ই মে রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন উপ-রাষ্ট্রপতি ভান্স। ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স জানিয়েছিলেন যে পাকিস্তান ভারতে বড়সড় হামলা চালাতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন যে যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ভারত আরও কড়া প্রত্যুত্তর দেবে। “ভারত নয়-দশই মে রাতে পাকিস্তানের হামলার কঠিন জবাব দেয় এবং পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করে। তাদের সামরিক বিমানঘাঁটিগুলো অকেজো করে দেওয়া হয়। ভারতের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে পাকিস্তান সামরিক অভিযান বন্ধের অনুরোধ করতে বাধ্য হয়,” মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফোনালাপের বিষয়ে জানিয়েছেন বিক্রম মিশ্রি। বিবৃতিতে তিনি এও বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এই গোটা ঘটনাক্রমে কোনো সময়েই ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা বা যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় নি।“ বিক্রম মিশ্রির কথায়, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের প্রতি তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।“ মিশ্রি জানিয়েছেন যে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন ট্রাম্প আর মোদির মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়ায় ওই আলোচনা হতে পারেনি। পররাষ্ট্র সচিবের কথায়, এরপরে ট্রাম্পের আগ্রহেই দুই নেতা টেলিফোনে কথা বলেন ভারতীয় সময় বুধবার সকালে।

ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না: যৌথ বিবৃতিতে জি৭

ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না: যৌথ বিবৃতিতে জি৭ কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত অর্থনৈতিক জোট জি৭ একটি যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাতে ‘উত্তেজনা কমানোর’ আহ্বান জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার। কানাডায় ৫১তম শীর্ষ সম্মেলনের জন্য বৈঠকে থাকা জি-৭ দেশগুলো তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আরো বলা হয়েছে, ‘ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না’। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা নিশ্চিত করছি, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে স্পষ্ট করে বলেছি, ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না।” “আমরা জোর দিয়ে বলছি যে, ইরানি সংকটের সমাধানের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে শত্রুতা হ্রাস পাবে, যার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতিও অন্তর্ভুক্ত।” মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার কারণে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে একদিন আগেই ফিরছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবিলম্বে তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প তার মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে বলেছেন, “ইরানের পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করা উচিত ছিল। আমি তাদের চুক্তি স্বাক্ষর করতে বলেছিলাম। এটা লজ্জার, আর মানব জীবনের ক্ষতি। সাধারণভাবে বলছি: ইরান কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। আমি এটি বারবার বলেছি। সবাই জরুরিভিত্তিতে তেহরান খালি করে দিন।” ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত থামাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। মঙ্গলবার (১৭ জুন) সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে মাখোঁ সাংবাদিকদের জানান, “এই প্রস্তাবটি আলোচনা শুরু করার জন্য।” ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফরাসি ভাষায় বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাত থামাতে সক্ষম হয়, তা খুবই ভালো বিষয় এবং ফ্রান্স তা সমর্থন করবে এবং আমরা এ জন্য শুভকামনা জানাই। তিনি আরো বলেন, “উভয় পক্ষেরই হামলা বন্ধ করা উচিত, বিশেষ করে নিরীহ জনসংখ্যার ওপর সমস্ত হামলা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি।” এ ধরনের কোনো হামলা কখনোই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার কারণে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে একদিন আগেই ফিরছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবিলম্বে তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “ইরান আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে আজকের প্রাণহানি এড়ানো যেত। এটা দুঃখজনক ও অনর্থক প্রাণহানি। পরিষ্কার করে বলছি—ইরান পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণ করতে পারে না। আমি বারবার এটা বলেছি!” যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘তেহরান খালি করার’ আহ্বানকে “ভয়াবহ ও চরমভাবে উদ্বেগজনক” বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্ক ট্যাংক ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি’-এর নির্বাহী সহসভাপতি ম্যাথিউ ডাস। তিনি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটা আসলে ভয়াবহ। তেহরান একটি মহানগরী যেখানে ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষ বাস করে। এই বিশাল জনসংখ্যাকে হঠাৎ করে সরিয়ে নেওয়া এক কথায় অসম্ভব। তেলের সংকটের মধ্যে মানুষকে পায়ে হেঁটে পালাতে হবে- এটা এক ভয়ঙ্কর কল্পনা।” দুর্ভাগ্যবশত, ডোনাল্ড ট্রাম্প যা বলছেন তা কতটা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত তা জানা কঠিন… তবুও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন রাষ্ট্রপতির এই ধরণের ভাষা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমাদের সকলের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত,” তিনি বলেন। ডাস আরো বলেন, “ট্রাম্প যা বলেন, তার কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া উচিত সেটা বোঝা কঠিন হলেও, এমন ভাষা একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে শোনা গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমাদের সবার সতর্ক হওয়া উচিত।” এর আগে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে বলেন, “সবাই এখনই তেহরান ছেড়ে চলে যাও!” ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধের মধ্যে ট্রাম্প কেন এমন বিবৃতি দিলেন সেটি স্পষ্ট নয়। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য হলো ইরানি কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে যেকোনো চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা, তার মনে যে চুক্তিই থাকুক না কেন। ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনা ‘ফোরদো’-তে হামলা চালানোর ক্ষমতা একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেরই রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল হেরজোগ। তার এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হেরজোগ বলেন, “ফোরদো একটি গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনা। যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই কেবল এমন বোমা আছে যা সেখানে আঘাত হানতে পারে।” তিনি আরো বলেন, “ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রতিরোধে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।” ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি ইরানের একটি পাহাড়ি অঞ্চলে গভীরভাবে ভূগর্ভে অবস্থিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মন্তব্য ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হতে পারে।  এদিকে, ইরান এখনো বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর সন্দেহ, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।

ইরানের সাথে ‘সমন্বিত’ভাবে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথি

ইরানের সাথে ‘সমন্বিত’ভাবে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথি ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথিরা রোববার জানিয়েছে, ইরানের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ বোমা হামলার পর ইরান পাল্টা হিসাবে ইসরাইলে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র  হামলা চালিয়েছে। সানা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। হুথিরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা মধ্য ইসরাইলে ‘ইসরাইলের সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তু লক্ষ্য করে সামরিক হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। রাজধানী  সানাসহ  ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখলকারী এই গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা ‘গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন সময়ে’ ‘বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি ২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ দিয়ে এই অঞ্চলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।  হুথিরা জানিয়েছে, তাদের হামলা ‘ইরানি সামরিক বাহিনীর পরিচালিত অভিযানের সাথে সমন্বিত’ ছিল। গত ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হুথিরা ইসরাইল এবং ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা শুরু করে। ইসরাইল ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অসংখ্য হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সানার বন্দর এবং বিমানবন্দর।

ইরানের ৯ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহতের দাবি ইজরাইলের

ইরানের ৯ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহতের দাবি ইজরাইলের ইসরাইলি সামরিক বাহিনী শনিবার জানিয়েছে, আগের দিন শুক্রবার ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে তাদের বিমান হামলায় নয়জন শীর্ষস্থানীয় ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে নিহতদের নাম উল্লেখ করে বলেছে, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন-এর শুরুতে ইসরাইলি বিমান বাহিনীর হামলায় ইরান সরকারের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নয়জন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছেন।’ সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘তাদের নির্মূল করা ইরানি শাসকগোষ্ঠীর গণবিধ্বংসী অস্ত্র অর্জনের ক্ষমতার ওপর একটি চরম আঘাত।’ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘গোয়েন্দা অধিদপ্তর কর্তৃক সংগৃহীত সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের’ ভিত্তিতে এই হামলা চালানো হয়েছে।

৬ বিজ্ঞানী নিহত, জরুরি অধিবেশন ডেকেছে ইরান

৬ বিজ্ঞানী নিহত, জরুরি অধিবেশন ডেকেছে ইরান ইরানের রাজধানী তেহরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে মূল লক্ষ্যবস্তু করে দেশটিতে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এর কিছু সময় পর, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ইফি ডেফ্রিন শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইরানে ১০০টির বেশি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে ২০০টির বেশি যুদ্ধবিমান। এমন প্রেক্ষাপটে পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডেকেছে ইরান। ইরান ইন্টারন্যাশনালের লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা এবং ফরেন পলিসি কমিটি শুক্রবার জরুরি অধিবেশনে বসবে। দেশটির সিনিয়র একজন আইনপ্রণেতা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়লের হামলায় ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ডের প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে নিহত হয়েছেন, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি। খতম-আল আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার ঘোলামালি রশিদও নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের অতর্কিত হামলায় ইরানের ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। তাদের একজন হলেন, ফেরেয়দুন আব্বাসি। আব্বাসি ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা, এইওআই-এর সাবেক প্রধান। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা দায়িত্বে আছে এইওআই। ইসরায়েলের হামলায় নিহত অপর বিজ্ঞানীর নাম মোহাম্মদ মেহেদী তেহরানচি। তিনি তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি। তবে বাকি চারজন নিহত বিজ্ঞানীর নাম এখন পর্যন্ত জানায়নি দেশটি। ইরান ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলী খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা শামখানি নিহত হয়েছেন। তার নিজ বাসভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। তবে খামেনি অক্ষত আছেন বলে নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে। এদিকে সর্বশেষ খবর অনু্যায়ী, ইরান ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ১০০টি ড্রোন ছুড়েছে।

উড়োজাহাজ বিপর্যয়ের পর আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী

উড়োজাহাজ বিপর্যয়ের পর আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী আহমেদাবাদের মেঘানিনগরে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার সকাল নয়টার দিকেঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মোদি। মোদির সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিঞ্জরাপু, এই দফতরের প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মহল, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী উপেন্দ্র প্যাটেল, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি, আমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক প্রমুখ। এরপর সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী চলে যান আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে। এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন দুর্ঘটনাগগ্রস্ত ওই বিমানটিতে আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী রমেশ বিশ্ব কুমারসহ অন্য আহত চিকিৎসক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা। আহতদের সাথে কথা বলে তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে খোঁজখবর নেন মোদি। আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন ‘বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী রমেশ বিশ্বকুমার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি তার ভাই অজয় কুমার রাকেশের সাথে যুক্তরাজ্যে ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি বিমানের ১১এ আসনে বসেছিলেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন।’ অন্যদিকে রমেশ জানান ‘টেক অফের মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয় এবং এরপর সেটি ভেঙে পড়ে।’ বৃহস্পতিবারই হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গতকাল দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদের মেঘানিনগর এলাকায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের দিকে উড়ে যাচ্ছিল ওই বিমানটি। এদিন দুপুরে ২৩ নম্বর রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনাগ্রস্থ বিমানটি বিমানবন্দরের কাছেই বাইরামজি জিজিভয় (বি.জে) মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে ভেঙে পড়ার আগে মাটি থেকে দুইটি জেট ইঞ্জিন বিশিষ্ট ওই বিমানটি ৬২৫ ফুট উঁচুতে ছিল বলে জানা যায়। বিমানবন্দরের ভিতরের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে বিমানবন্দর থেকে উন্নয়নের কিছুক্ষণ পরেই বিমানটি বাম দিকে হেলে পড়তে থাকে। একইসঙ্গে ওপরে ওঠার পরিবর্তে লেজের অংশটি নিচের দিকে নামতে নামতে হঠাৎ মাটিতে ভেঙে পড়ে। বিবামবন্দার থেকে টেকঅফ’এর পরেই বিমানের পাইলট ‘মে-ডে কল’ (বিপদ সংকেত) পাঠান ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল’ (এটিসি)-তে। এরপর এটিসি থেকে বিমানটির সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায় নি। তারই কয়েক সেকেন্ড পরে বিমানবন্দরের খুব কাছেই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বি.জে হাসপাতালের ভবনে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানটিতে বিমানকর্মী এবং যাত্রী মিলিয়ে ২৪২ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী এবং ২ জন পাইলট ও ১০ কেবিন ক্রু সদস্য। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিকের ছাড়াও ৬১ জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন; এদের মধ্যে ৫৩ ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগাল এবং কানাডার ১ জন নাগরিক ছিলেন।

ভারতে বিমান বিধ্বস্তে ২৪২ আরোহীর সবাই নি*হত

ভারতে বিমান বিধ্বস্তে ২৪২ আরোহীর সবাই নি*হত ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ এ তথ্য জানিয়েছে। আজ দুপুরে সেখানকার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে বিমানটি রওনা দেয়। উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরই এটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানে যে ২৪২ আরোহী ছিলেন তাদের মধ্যে ২৩০ জন ছিলেন সাধারণ যাত্রী। আর বাকি ১২ জন ছিলেন ক্রু। বিমানটিতে করে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক। আহমেদাবাদ সিটি পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক বার্তাসংস্থা এপিকে এর আগে জানান, দুর্ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বিমানটির কোনো আরোহী বেঁচে নেই। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে বিমান বিধ্বস্তে কেউ বেঁচে নেই। এটি আছড়ে পড়েছে আবাসিক এলাকায়। এতে স্থানীয় কিছু মানুষও হয়ত মারা গেছে। সব মিলিয়ে কতজনের মৃত্যু হয়েছে সেটি নিরূপণ করা হচ্ছে।” ভারতে বিমানটি পাখির আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে ভারতের এ ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের পর অনেকটা দুলতে দুলতে বিমানটি এগিয়ে যাচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরই এটি বিধ্বস্ত হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার এ বিমানটি সেখানকার একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আঘাত হানে। বিমান চলাচল বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, বিমানটি উড্ডয়ন করার সঙ্গে সঙ্গে সম্ভবত এটিতে কয়েকটি পাখি আঘাত হেনেছিল। এতে করে পূর্ণ উড্ডয়নের জন্য যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন ছিল বিমানটি সেটি হারিয়ে ফেলেছিল। ফলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও বিমানটি আর উপরের দিতে নিতে পারেননি পাইলট। সাবেক ক্যাপ্টেন সৌরভ ভাটনাগর নামের এ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “প্রথমত মনে হচ্ছে, একাধিক পাখির ধাক্কায় দুটি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যায়। উড্ডয়নটি নিখুঁত ছিল। কিন্তু ল্যান্ডিং গিয়ারটি উপরে তোলার আগেই বিমানটি নিচে নামা শুরু করে। এমনটি সাধারণত হয় যখন ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় অথবা বিমান আকাশে থাকার সামর্থ হারিয়ে ফেলে। তদন্তে আসল কারণ বেরিয়ে আসবে।” তিনি আরও বলেন, “ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে উড্ডয়নটি বেশ সুন্দরভাবে হয়েছিল। এছাড়া বিমানটিও নিয়ন্ত্রিতভাবে নিচে নেমে আসে। পাইলট মে ডে কল করেছিলেন। যার অর্থ ওই সময় জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।”