সুদানে দারফুরে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় চার শতাধিক নিহত: জাতিসংঘ

সুদানে দারফুরে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় চার শতাধিক নিহত: জাতিসংঘ সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দারফুর অঞ্চলের দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থীশিবিরে টানা দুই দিন হামলা চালিয়েছে। এতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সুদানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দারফুরের শেষ বড় শহর আল-ফাশেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে আরএসএফ আশপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে অন্তত ১৪৮ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলেও আশঙ্কা তাদের। জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বিবিসিকে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনও চলমান, এবং এর মধ্যে রোববারের সহিংসতায় নিহতরা নেই। “বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের খবরে ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে,” বলেছেন শামদাসানি। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও শনিবার জমজম ও আবু শোক শরণার্থী শিবিরে তীব্র লড়াইয়ের পর ব্যাপক হতাহতের এবং ব্যাপক আকারে বাস্তুচ্যুতির খবরে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সেনাবাহিনী গত মাসে জাতীয় রাজধানী খার্তুম পুনর্দখল করার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরএসএফ আল-ফাশের শহরে হামলা জোরদার করেছে। এটি দারফুরে একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী, যা এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রায় এক বছর ধরে শহরটি ঘিরে রেখেছে আরএসএফ। আল-ফাশেরকে ঘিরে থাকা দুটি শরণার্থী শিবির, জমজম ও আবু শোক ৭ লাখেরও বেশি মানুষকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। এ আশ্রিতদের অধিকাংশকেই দুর্ভিক্ষজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছিল, বেসামরিকদের ওপর হামলার জন্য তারা দায়ী নয় এবং জমজমে হত্যাকাণ্ডের চিত্র মঞ্চস্থই হয়েছে তাদের গায়ে কালি লাগানোর জন্য। পরেরদিন সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি জানায়, তারা সুদানের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে জমজম শিবিরটি ‘সফলভাবে মুক্ত’ করতে পেরেছে। আরএসএফের অভিযোগ, সেনাবাহিনী এই শিবিরটিকে সামরিক ব্যারাক বানিয়ে রেখেছিল এবং এর ‘নিষ্পাপ বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো’। ক্ষমতার দখল ঘিরে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে লড়াই চলছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্টের তথ্যানুসারে, সুদানে এসএএফ এবং আরএসএফের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২৯ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সুদানে চলমান এই সংঘাত বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক সংকটের সূচনা করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।
দেশে ফিরছেন মিয়ানমারে আটক বাংলাদেশি ২০ যুবক

দেশে ফিরছেন মিয়ানমারে আটক বাংলাদেশি ২০ যুবক অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক বাংলাদেশি ২০ জন নাগরিক দেশে ফিরছেন। গত কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারে বন্দি থাকার পর রোববার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ইয়াঙ্গুনের এমআইটিটি বন্দর ত্যাগ করেছেন তারা। মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। দূতাবাস জানায়, অসাধু দালালরা এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথিমধ্যে মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ দূতাবাস আজকে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। গত কয়েক মাস ধরে তারা মিয়ানমারে আটক ছিলেন। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন ২০ জন বাংলাদেশি তরুণের হস্তান্তরের সময় বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সম্প্রতি মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টার থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন। একই জাহাজে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবার জন্য যাওয়া বাংলাদেশের ৫৫ সদস্যের দলটিও দেশে ফিরছেন। তারা মিয়ানমারে ১০ দিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন দলটির সদস্যদের তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে মিয়ানমারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সকলকে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান। তিনি বিদেশগামীদের সন্দেহজনক বা প্রতারণামূলক চাকরির প্রস্তাবের শিকার না হওয়ার পরামর্শ দেন। গত দুই বছরে মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস ৩৫২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে প্রত্যাবাসন করেছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ৮৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যাবাসন হয়েছিল। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ শুক্রবার মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য ১২০ মেট্রিক টন মানবিক সহায়তা নিয়ে ইয়াঙ্গুনে যায়। আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নৈশক্লাবের ছাদধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২৬ জনে দাঁড়িয়েছে

নৈশক্লাবের ছাদধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২৬ জনে দাঁড়িয়েছে ডোমিনিকান রিপাবলিকের একটি নাইটক্লাবের ছাদ ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। সব নিহতের মৃতদেহ তাদের প্রিয়জনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার নৈশক্লাবে ছাদধসের এ দুর্ঘটনা ঘটে। ডোমিনিকান রিপাবলিকের রাজধানী সান্তো ডোমিঙ্গো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিক্টর আতাল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার ভোরে জেট সেট ক্লাবের ভেতরে এই দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত এবং আরো চারজন হাসপাতালে মারা যায়। গতকাল শনিবার এক কোস্টারিকান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় এর ফলে মৃতের সংখ্যা ২২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। যদিও আতাল্লাহ সতর্ক করেছিলেন যে অন্যান্য গুরুতরভাবে দগ্ধ ব্যক্তিরা এখনও হাসপাতালে তাদের জীবনের জন্য লড়াই করছেন। ক্লাবটিতে ঘটে যাওয়া এই বিপর্যয়, যা ক্যারিবীয় দেশটির কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। মেরেঙ্গুয়ে গায়ক রুবি পেরেজকে দেখতে কয়েক’শ লোক জড়ো হয়েছিল। ৬৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় থিয়েটারে তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। যেখানে প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদার এবং গায়িকার মেয়ে জুলিঙ্কা উপস্থিত ছিলেন, যিনি এই দুর্যোগ থেকে বেঁচে যান। ২০০৫ সালে পূর্বাঞ্চলীয় শহর হিগুয়েতে এক কারাগারের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৩৬ জন বন্দীর সংখ্যাকে ছাড়িয়েছে ছাদ ধসে মৃতের সংখ্যা। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আগে জানিয়েছিল যে নাইটক্লাবের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৮৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
১৬ দিনের ব্যবধানে মিয়ানমারে আবারও ভূমিকম্প

১৬ দিনের ব্যবধানে মিয়ানমারে আবারও ভূমিকম্প গত ২৮ মার্চের পর মিয়ানমারে আবারও আঘাত হেনেছে মধ্যম শক্তির এক ভূমিকম্প। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে দেশটির মধ্যাঞ্চলের ছোট শহর মেইকতিলার কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। মাত্র ১৬ দিন আগেই ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় মিয়ানমারের মান্দালয় প্রদেশ। সেই ক্ষয়ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি। এরই মধ্যে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে ৩ হাজার ৬৪৯ জন মারা গেছেন দেশটিতে। এছাড়া, আহত হয়েছেন আরও ৫ হাজার ১৮ জন। মিয়ানমারের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, রোববারের ভূমিকম্পটি মান্দালয় থেকে ৯৭ কিলোমিটার দূরের ওন্ডউইনে মাটির ২০ কিলোমিটার গভীরে সংঘটিত হয়। ওন্ডউইনের বাসিন্দারা বার্তাসংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, কম্পনের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে অনেকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এই ভূমিকম্পে কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, রাজধানী নেপিদো থেকে এক ব্যক্তি ফোনে এপিকে জানিয়েছেন, তারা সেখানে কোনো ধরনের কম্পন টের পাননি। পাঁচ বছর ধরে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। এর মধ্যে আবার আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প, যা সেখানকার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যা আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূমিকম্প মিয়ানমারের খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া সেখানে মেডিকেল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হতে পারে। কারণ, ভূমিকম্পে আক্রান্ত স্থানগুলোর প্রায় সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ধ্বংস হয়ে গেছে। অবশ্য, নতুন ভূমিকম্পের পর এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহায়তা হ্রাসে দুর্ভিক্ষের মুখে কোটি আফগান : জাতিসংঘ

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহায়তা হ্রাসে দুর্ভিক্ষের মুখে কোটি আফগান : জাতিসংঘ আফগানিস্তানে মার্কিন খাদ্য সহায়তা হ্রাস ব্যাপক খাদ্যসংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের সক্ষমতা মাত্র অর্ধেক প্রয়োজনীয় মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে, তাও অর্ধেক রেশন দিয়ে। এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএফপির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মুটিনতা চিমুকা জানান, আফগানিস্তান বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মানবিক সংকটে রয়েছে। তিনি দাতাদের প্রতি সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। কাবুল থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘের হিসাবে, ৪ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে ৩১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। চিমুকা বলেন, ‘আমাদের হাতে যে সামান্য সংস্থান রয়েছে, তাতে সারা বছরজুড়ে মাত্র ৮ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে। তাও যদি আমরা অন্যান্য উৎস থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা পুরোপুরি পাই।’ তিনি জানান, সংস্থাটি আগে থেকেই অর্ধেক রেশন বিতরণ করছে, যাতে স্বল্প সম্পদে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। ‘সাধারণত এই সময়ে ২০ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে সহায়তা করা হয়। এটা বিশাল এক সংখ্যা, যা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।’ এ বছর বৈশ্বিকভাবে ডব্লিউএফপির তহবিল ৪০ শতাংশ কমে গেছে। আফগানিস্তানের জন্য সহায়তাও বিগত বছরগুলোতে হ্রাস পেয়েছে। ফলে দৈনিক ন্যূনতম ২,১০০ কিলোক্যালোরি পূরণের জন্য নির্ধারিত পূর্ণ রেশনও অর্ধেক করে দিতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি। ‘এটা খুবই মৌলিক সহায়তা, কিন্তু জীবন রক্ষার জন্য অত্যাবশ্যক, ‘বলেন চিমুকা। বিশ্বসম্প্রদায়ের উচিত এমন একটি সহায়তা নিশ্চিত করা।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পরপরই তিন মাসের জন্য সব বিদেশি সহায়তা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। জরুরি খাদ্য সহায়তা এর আওতার বাইরে থাকার কথা থাকলেও সম্প্রতি ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ১৪টি দেশে এই সহায়তা কেটে দিচ্ছে, যার মধ্যে আফগানিস্তানও রয়েছে। এটি কার্যকর হলে তা ‘কোটিরও বেশি মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ড’ হবে বলে আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি দেশের জন্য সহায়তা পুনর্বহাল করলেও তালেবান-শাসিত আফগানিস্তান সে তালিকায় ছিল ন। চিমুকা বলেন, ‘যদি বাড়তি তহবিল না আসে, তাহলে হয়তো আমাদের বলতে হবে—আমরা আপনাদের আর সহায়তা দিতে পারছি না। তখন তারা কীভাবে বাঁচবে?’ তিনি বলেন, আফগানিস্তানে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব চরমে। পাকিস্তান থেকে বহু আফগান শরণার্থী ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, যাদের বাড়িঘর বা প্রয়োজনীয় সম্পদ কিছুই নেই। আফগানিস্তানে জাতিসংঘ সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ) এ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক দাতাদের দেশটিকে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ২ কোটি ২৯ লাখ মানুষ মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তায় রয়েছে। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়ক ইন্দ্রিকা রত্নায়েক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যদি আমরা আফগান জনগণকে দারিদ্র্য ও দুর্ভোগের চক্র থেকে বের করে আনতে চাই, তবে তাৎক্ষণিক সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতার ভিত্তি তৈরির কাজও চালিয়ে যেতে হবে।’ বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে গেলে আঞ্চলিক অভিবাসন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। উল্লেখ্য, জার্মানি ও ব্রিটেনসহ অন্যান্য দেশও তাদের বৈদেশিক সহায়তা বাজেট কাটছাঁট করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাটছাঁট সবচেয়ে বেশি। পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে ২৮ কোটি ডলার দিয়েছে, যা সবচেয়ে বড় অনুদান ছিল। ডব্লিউএফপি ছাড়াও আফগানিস্তানে কাজ করা অন্যান্য জাতিসংঘ সংস্থা, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোও অর্থ সংকটে পড়েছে, কেউ কেউ এমনকি, কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সঙ্গে আফগানিস্তানে পরিচালিত দুটি কর্মসূচিও বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই সংস্থা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার প্রসারে কাজ করত। কৃষিভিত্তিক জীবনধারার ওপর নির্ভরশীল আফগান জনগণের প্রায় ৮০ শতাংশই এই সংকটে আক্রান্ত হচ্ছে, বিশেষ করে অপুষ্টি প্রতিরোধ ও কৃষিভিত্তিক সহায়তামূলক প্রকল্পগুলোতে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চীনের

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চীনের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পাল্টা জবাব দিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে এবার ১২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। আগামীকাল থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। বুধবার বেইজিং মার্কিন পণ্যের ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে। বাণিজ্যযুদ্ধে এটি এক চলমান প্রবণতা, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর পর চীনও একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে।বেইজিং বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর আর কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ‘অস্বাভাবিক উচ্চ শুল্ক’ আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক বাণিজ্য নীতিমালা, মৌলিক অর্থনৈতিক আইন এবং সাধারণ বুদ্ধিমত্তার পরিপন্থী। এটি সম্পূর্ণ একপেশে হয়রানি ও জবরদস্তি। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক এখন সংখ্যার খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে যার কোনো বাস্তব মানে নেই। তিনি আরও বলেন, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের ‘হয়রানি ও জবরদস্তি’ আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে এবং ‘এটি এক ধরনের হাস্যকর পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়াবে’। এদিকে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার বেড়ে এখন কার্যত ১৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশে চীনের ওপর শুল্কহার ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। এর আগে প্রেসিডেন্ট চীনের ওপর ফেন্টানিল-সম্পর্কিত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, আর নতুন শুল্ক তার ওপরই যুক্ত হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের যেসব দেশের পণ্যে উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন, ০৯ এপ্রিল তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে এদিনই তিনি জানিয়ে দেন চীন, কানাডা ও মেক্সিকো বাদে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওপর আরোপ করা পাল্টা শুল্ক আগামী ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। তবে এই ৯০ দিন, অর্থাৎ তিন মাস এই দেশগুলোর সবার জন্য বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক হার প্রযোজ্য হবে।
ভারতে ঝড়-বজ্র ও ভারী বৃষ্টিতে ৮১ জনের মৃত্যু

ভারতে ঝড়-বজ্র ও ভারী বৃষ্টিতে ৮১ জনের মৃত্যু ভারতে ভারী বৃষ্টিসহ ঝড়ের তা-ব ও বজ্রপাতে বিহার, উত্তর প্রদেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে; সেই সঙ্গে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় বিহারে অন্তত ৫৮, উত্তরপ্রদেশে ২২ এবং পশ্চিমবঙ্গে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিহার ও উত্তর প্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য দুটির প্রশাসন। বিহারের রাজ্য সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নালন্দা জেলাতেই অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোজপুরে ৫ জন এবং গয়া জেলায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া পটনা, গোপালগঞ্জ, মুঙ্গের, সমস্তীপুর, জেহানাবাদ, মুজাফফরপুর, আরারিয়া ও বেগুসরাইয়ে মৃত্যুর খবর রয়েছে। বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেয়ার কথা বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। সরকারি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারে এর আগে বজ্রাপাতে এত মানুষের মৃত্যুর নজির নেই।
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তার দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপে এ কথা বলেন মাখোঁ। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ম্যাক্রোঁ বলেন, “ফ্রান্সের লক্ষ্য জুন মাসে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কনফারেন্সে নেতৃত্ব দেওয়া, যেখানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।” ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমি কাউকে খুশি করার জন্য এটি করছি না। আমি এটি করব, কারণ আমি মনে করি এক সময় এটি সঠিক হবে এবং আমি একটি যৌথ গতিশীলতাতে যুক্ত হতে চাই, যেটিতে যারা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেন, তারা এর বদলে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবেন। যেটি তাদের অনেকেই করেন না।” জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় ১৫০টি দেশ ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ পশ্চিমা শক্তি এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যে, ফ্রান্স, জার্মানি এবং জাপান। অন্যদিকে, যেসব দেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, তাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেন। ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন আলাদা দুটি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে আসছে। তবে তারা বিষয়টিতে এতদিন আনুষ্ঠানিকভাবেই সমর্থন জানিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্স যদি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে এটি তাদের পররাষ্ট্রনীতির বড় পরিবর্তন হবে।
বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে: জয়শঙ্কর বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি দাবি করেছেন, ভারতের চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সম্প্রতি থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাক্ষাৎ করেন। এরপর গতকাল বুধবার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে রাইজিং ভারত সামিটে ভাষণ দেওয়ার সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করলেন। নিউজ১৮ আয়োজিত সামিটের দ্বিতীয় দিনে ড. ইউনূস-মোদির সাম্প্রতিক বৈঠক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “আমি মনে করি আমাদের পক্ষ থেকে বৈঠকে যে প্রধান বার্তাটি বেরিয়ে এসেছে তা হলো, ঐতিহাসিক কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই অনন্য। এটি মূলত জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ, সম্ভবত অন্য যেকোনো সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি। এবং এটিই আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, “দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে বক্তব্য বেরিয়ে আসছে তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। এবং আমি মনে করি আমরা সেই উদ্বেগগুলো প্রকাশের বিষয়ে খুব খোলামেলা ছিলাম।” জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, “ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।” তিনি দাবি করেন, “একটি দেশ হিসেবে, আমাদের (ভারতের) চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। এটা আমাদের ডিএনএতে রয়েছে। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, একজন বন্ধু হিসেবে, আমি মনে করি আমরা আশা করি তারা সঠিক পথে চলবে এবং সঠিক কাজ করবে।” ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, তিনি আশা করেন যে- বাংলাদেশে শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি দাবি করেন, “গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি দেশ হিসেবে, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। এভাবেই ম্যান্ডেট দেওয়া হয় এবং ম্যান্ডেট পুনর্নবীকরণ করা হয়। তাই আমরা আশা করি তারা সেই পথেই যাবে।
গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ৩৫

গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ৩৫ গাজা সিটির শুজায়া এলাকার আবাসিক ভবনগুলোতে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরো ৫৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে ৮০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বুধবার গাজার শুজায়া এলাকার একাধিক বসতবাড়ি লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বোমা হামলার শব্দ থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তারা গণহত্যা চালাচ্ছে। গাজায় ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলার পর আটকে পড়া জীবিতদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ সরঞ্জামের অভাব থাকা সত্ত্বেও জরুরি কর্মীরা ‘তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা’ করছে। বাসল বলেন, “ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও কয়েক ডজন মানুষ আটকা পড়ে আছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে আমরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছি না। তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।” তিনি বলেন, “ইসরায়েল গাজায় যন্ত্রপাতি আসতে দিতে চায় না। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরঞ্জাম আসতে না দেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দুর্ভোগ অব্যাহত থাকবে।” দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রায় ১৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও তিন হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে গাজায় হামলা আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। নিহত ও আহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।