পাকিস্তানের পদক্ষেপে পিছু হটলো ভারতের যুদ্ধবিমান

পাকিস্তানের পদক্ষেপে পিছু হটলো ভারতের যুদ্ধবিমান জুম্ম ও কাশ্মীর সীমান্তে ভারতের রাফায়েল যুদ্ধবিমান টহল দিতে গিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপে এ ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে ভারতের যুদ্ধবিমান জাম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে টহল দিচ্ছিলো। এ সময় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবারও নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাবকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ও পাবলিক অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ খান। পুলওয়ামা থেকে বর্তমান পর্ব পর্যন্ত তিনি (মোদী) জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এবং নির্বাচনী সুবিধা অর্জনের জন্য বারবার নাটক মঞ্চস্থ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন রানা সানাউল্লাহ খান। কোন সন্দেহ নেই যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর, চূড়ান্ত ও উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। এ বিষয়ে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে তিনি বলেন, বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গত সপ্তাহে ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই এমন তথ্য সামনে এলো। গত ২২ এপ্রিল পহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়।
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিন কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গত মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতিদিনই সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনারা নিয়মিতভাবেই নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। গতকাল সোমবার রাতেও পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ থেকে ‘ছোট অস্ত্রের উসকানিমূলক গুলিবর্ষণের’ ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, “২৮-২৯ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো বিনা উসকানিতে এলওসি বরাবর কুপওয়ারা, বারামুল্লা ও আখনূর সেক্টরের বিপরীতে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনারা পরিস্থিতির যথাযথ মূল্যায়ন করে সংযত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।” গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করছে ইসলামাবাদ। এর জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এদিকে জাতিসংঘ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে, যেন গঠনমূলক পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হয়। সাত দশকের বেশি সময় ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, দুই দেশই এই অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে, তবে নিয়ন্ত্রণ করে আংশিকভাবে।
কানাডায় নির্বাচন: জয়ের পথে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি

কানাডায় নির্বাচন: জয়ের পথে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি দেশটির ফেডারেল নির্বাচনে জয় পেতে যাচ্ছে।দেশটির পাবলিক ব্রডকাস্টার সিবিসি নিউজের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। সিবিসি নিউজ বলছে, গতকাল ভোটগ্রহণ শেষে এখনও ভোট গণনা চলছে। তাই এখনো পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না লিবারেল পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবে কিনা। ৩৪৩টি আসলের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে যেকোনো দলকে ১৭২টি আসন নিশ্চিত করতে হবে। লিবারেলরা এখন পর্যন্ত ১৫৬টি আসন জিতেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিবিসি জানিয়েছে, হাউজ অব কমন্সে লিবারেলরা সবচেয়ে বড় দল হতে পারে, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১৭২টি আসন থেকেও পিছিয়ে থাকতে পারে। যদি এটি ঘটে তাহলে সম্ভাব্য পরিস্থিতি হলো তারা মার্ক কার্নিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়ে একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবে, যেখানে তারা অনাস্থা ভোটে টিকে থাকতে এবং সংসদে আইন পাস করার জন্য অন্যান্য দলের সঙ্গে চুক্তি করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ক্রমাগত হুমকির মধ্যে দেশটিতে গতকাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কানাডার নাগরিকদের ভোটে দেশটির পার্লামেন্টের ৩৪৩ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১৭২টি আসনের প্রয়োজন পড়বে। কানাডার আনুমানিক ৪ কোটি ১০ লাখ নাগরিকের মধ্যে ভোটার রয়েছেন ২ কোটি ৯০ লাখ। এরই মধ্যে অগ্রিম ভোট প্রক্রিয়ায় ভোট দিয়েছেন ৭৩ লাখ কানাডীয়। নির্বাচনের হেভিওয়েট দুই প্রার্থী হলেন লিবারেল পার্টির মার্ক কার্নি এবং কনজারভেটিভ পার্টির পিয়েরে পইলিয়েভ্রে। মার্ক কার্নে গত মাসে জাস্টিন ট্রুডো সরে দাঁড়ানোর পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের মোকাবিলা করার জন্য তিনিই সবচেয়ে ভালো বিকল্প। কারণ অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পইলিয়েভ্রেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, ট্রুডো নেতৃত্বাধীন লিবারেলদের অধীনে এক দশক ধরে দুর্বল হয়ে পড়েছে অর্থনীতি। আর এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতির সামনে তা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। তবে, আমেরিকার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্রমাগত সমালোচনা ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারের প্রতি ভোটারদের জনসমর্থন বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের অনুমান সত্যি হলে, কানাডা ট্রাম্পবিরোধী একটি সরকার পেতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, কানাডা ট্রাম্পের আমেরিকার চেয়ে ইউরোপকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বেশি দেখছে। আর এমন পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অস্বস্তিতে ফেলবে।
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫২,৩০০ ছাড়াল

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫২,৩০০ ছাড়াল গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫৩ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫২ হাজার ৩১৪ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৯২ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এটি প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত

পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত ভারতনিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরের পহেলগ্রামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত এই উত্তেজনা প্রশমনের বদলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পত্রিকাটি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া ব্রিফিংয়ের সঙ্গে জড়িত চার কূটনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২২ এপ্রিলের পর থেকে এক ডজনেরও বেশি বিশ্বনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে এসব প্রচেষ্টা মূলত শান্তি আনার জন্য নয়, বরং সামরিক হামলার পক্ষে ভারত তার যুক্তি তৈরি করছে বলে মনে হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার দেয়া এক ভাষণে মোদি কঠোর শাস্তি এবং সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দেন, যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেননি। নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো জানায়, পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরে তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে এবং হামলার সাথে জড়িতদের খুঁজতে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। তিনি আরো বলেন, যদি মোদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব। আসিফ অভিযোগ করেন, মোদি মিথ্যা প্রচারণা চালানোর জন্য পরিচিত এবং পুলওয়ামা ঘটনার সময়ও একই কৌশল নিয়েছিলেন। তবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী এবং প্রয়োজন হলে উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ভারত। সেই সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে পহেলগ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি এবং হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকার পক্ষে খুব কম প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কূটনৈতিক কর্মকর্তারা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তার পাকিস্তানের অতীত ইতিহাস’ তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, পহেলগ্রামে হামলার ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, পরিস্থিতি কতটা অস্থিতিশীল তা বোঝা যায়, সীমান্তে দুই দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি কর্মকর্তা বলেছেন, রবিবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময় হয়েছে। সাত দশকের বেশি সময় ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, দুই দেশই এই অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে, তবে নিয়ন্ত্রণ করে আংশিকভাবে। কাশ্মীর ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।
এক মাসে নির্যাতিত ৪৪২ নারী-শিশু, ধর্ষণের শিকার ১৬৩

এক মাসে নির্যাতিত ৪৪২ নারী-শিশু, ধর্ষণের শিকার ১৬৩ চলতি বছরের মার্চ মাসে ৪৪২ জন নারী-শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এছাড়া, ধর্ষণের শিকার হয়েছের ১৬৩ জন। এরমধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছন ৩৬ জন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া বেগম শান্তি জানান, ধর্ষণের শিকার ২ জনকে হত্যা করা হয়। এছাড়া, ৫৫ জন কন্যাসহ ৭০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। সম্প্রতি নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া বেগম শান্তি বলেন, “বর্তমানে নারীর প্রতি বিদ্বেষ, বিদ্বেষমূলক আচরণ ও ভাষা নারীর স্বাধীন চলাফেরাকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছে। যেখানে সেখানে নারীর পোশাক, নারীর সাজসজ্জা, নারীর চলাফেরা নিয়ে প্রকাশ্যে অপমান করা হচ্ছে। গণপরিসরে নারীকে নানাভাবে শারীরিক ও মৌখিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে নারীর প্রতি ঘৃণা ছাড়ানো হচ্ছে, নারীকে বহুভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এবং, বাধাহীনভাবেই তারা সমাজে এসকল অপকর্ম সাধন করতে পারছে, যা তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলছে। নারীর অগ্রগতিকে বাধা দেওয়ার লক্ষ্যে ভীতির পরিবেশ তৈরীর জন্য এ ধরণের অপচেষ্টা করা হচ্ছে।” “আমরা লক্ষ্য করছি যে, নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার সহিংসতার মাত্রা পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। মাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে। ১৮ বছরের নীচে কন্যা শিশুদের উপর অন্যদিকে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাসের ক্ষেত্রে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।” দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা কারাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি (আবরার ফাহাদ হত্যা) পালিয়ে যাচ্ছে, শিশু ধর্ষণের আলোচিত ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিনে মুক্তি পাচ্ছে। সারা দেশে ছিনতাইসহ অপহরণ, খুন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে নারীসহ সকল মানুষ নিরাপত্তাহীন ও বিপন্ন বোধ করছে।” নারী বিদ্বেষী অপসংস্কৃতির প্রভাব এ দেশের নারী জাগরণের পথিকৃত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতিও পরিলক্ষিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতিকৃতিতে কালি লেপন, রংপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন হয়েছে। আমরা মনে করি, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সমাজের অচলায়তন ভেঙে নারীদের আলোর পথের সন্ধান দিয়েছেন। তিনি সমাজের অবরোধ ভাঙার জন্য, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য, নারীর মুক্তির জন্য আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন।“ এ সময় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, সুফিয়া কামালসহ নারী জাগরণের পথিকৃতদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার জোর দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক বলেন, “আপনারা জানেন যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নারীর জন্য ৬০% কোটা বহাল ছিলো। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ খসড়া প্রজাপনে এই বিধান রোহিত করা হয়েছে। যা কিনা নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিকালে অগ্রসর করার জন্য অসঙ্গতিপূর্ণ।” বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫ এ নারী কোটা এখান রাখার দাবি জানায়। “সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। নারী সমাজের দীর্ঘ দিনের দাবি দাওয়া নিয়ে নারী সমাজের পক্ষ থেকে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বিভিন্ন সুপারিশসমূহ প্রধান উপদেষ্টার কাছে দিয়েছে। যেখানে এ দেশের গত পাঁচ দশকের নারী আন্দোলনের অবাস্তবায়িত মূল মূল দাবিসমূহের প্রতিফলন ঘটেছে, যা নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি অতীতের মতো সুপারিশ পেশের সঙ্গে সঙ্গে মৌলবাদী, নারী বিদ্বেষী গোষ্ঠী ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীর অধিকার এবং নারী- পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। আমরা আশা করবো এই অপতৎপরতা, অপকৌশল রোধে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর মানবাধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকার, সকল রাজনৈতিক দল ও সমাজ এগিয়ে আসবে।” তিনি বলেন, “সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। বিবেক বা যুক্তির জায়গায় মনোজগতে স্থান নিয়েছে প্রতিহিংসা। এই উচ্ছৃঙ্খল জনতা শুধু জনসমক্ষে প্রতিপক্ষকে হেনস্তা, মারধর ও অপমান করেই ক্ষান্ত হচ্ছেনা। গণপিটুনির মাধ্যমে প্রকাশ্যে হত্যা করা হচ্ছে মানুষকে, এর সাথে চলছে লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এর মাধ্যমে ধ্বংসের খেলা।” শিক্ষার্থীরাও দলে দলে বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দাবি আদায়ের নামে জনদুর্ভোগসৃষ্টি করছে তারা। শিক্ষাঙ্গনেও বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের অবমাননা, জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা, এবং পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করছে না। এই হেনস্থা থেকে নারী শিক্ষকগণও রেহাই পাচ্ছেন না।” “বিচার প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা ও বিভিন্ন জটিলতা এবং বিচার প্রাপ্তির প্রতি তৈরী হওয়া এক ধরনের অনীহার কারণে বিভিন্ন ঘটনায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যখন তখন মব সহিংসতার অপতৎপরতা চালু হয়েছে যার ফলে সকল ক্ষেত্রে দেশের সামগ্রিক সামাজিক স্থিতিশীলতা হুমকির সম্মুখীন। এইসকল ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সবসময় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। সবকিছু মিলিয়ে দেশের এক বিশেষ জটিল, সঙ্কটময়, পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয়েছে।” আমাদের দেশের সকল পর্যায়ে নারীর অবস্থান এবং অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হলেও দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর সমঅধিকার, সমমর্যাদা এবং সমঅংশীদারিত্বের প্রশ্নে সমপ্রতিনিধিত্বে নারী এখনও উপেক্ষিত, এখনও অনেক পিছিয়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নারীর সম্পদ সম্পত্তিতে সমঅধিকার নেই, নীতিনির্ধারণী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়েও নারীর উপস্থিতি অপ্রতুল। আমাদের দেশে নারীর অংশগ্রহণে দেশের অর্থনীতির পশ্চাৎপদতা হ্রাস পেলেও জনগণের মনোজগতে মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণা এখনও বিরাজমান।” “আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে নারীর মুক্তির যে আকাঙ্খা প্রতিফলিত হয়েছে, তা নিয়ে নানা বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়ে নারী সমাজ নিজেদেরকে অগ্রসর করে নিয়ে চলেছে। এই নারী সমাজকে আরও অগ্রসর করে নিতে হলে আমাদের নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং ধর্মের দোহাই না দিয়ে বক্তিগতভাবে একজন নাগরিক এবং একজন মানুষ হিসেবে এদেশের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অর্ধেক জনগোষ্ঠী- নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সকলেরই যুক্তিসঙ্গত চিন্তা ভাবনার প্রতিফলন ঘটবে- এই প্রত্যাশা করি।” বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, নারী বিদ্বেষী প্রচার প্রচারণা বন্ধ করার লক্ষ্যে এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা। মব সহিংসতার অবসান ঘটনোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির প্রয়াস প্রতিহত করা উল্লেখযোগ্য।
ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮

ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮ হুতি নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনে আফ্রিকান অভিবাসীদের আটক রাখার একটি কারাগারে মার্কিন বিমান হামলায় কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) হুতি পরিচালিত আল-মাসিরাহ টিভি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির। আল মাসিরাহ আরো জানিয়েছে, সা’দা প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ এই হামলায় ৪৭ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপে একাধিক মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে এমন গ্রাফিক ফুটেজ পোস্ট করেছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। আল-মাসিরাহ টিভি এর আগে জানায়, রবিবার রাতে ইয়েমেনের রাজধানী সানার উত্তরাঞ্চলের বানি আল-হারিথ জেলার থাকবান এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ আটজন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি আমরান ও সা’দা প্রদেশেও যুক্তরাষ্ট্র রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানায়। আল-মাসিরাহ সর্বশেষ প্রতিবেদনে, সা’দা প্রদেশে মার্কিন বিমান হামলায় ৬৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানালো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন বাহিনী গত ১৫ মার্চ থেকে হুতিদের ওপর বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করেছে। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে হুতিদের আক্রমণ বন্ধ করার লক্ষ্যে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে এই অভিযান বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার (২৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক অভিযানের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, ১৫ মার্চ ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে টানা বিমান ও নৌ হামলা শুরু করার পর থেকে তারা ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে অস্ত্রের মজুদ এবং উৎপাদন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তারা বলেছে, চলমান অভিযান সম্পর্কে ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ’ করা হবে না। এদিকে হুতি গোষ্ঠী বলছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত তারা লোহিত সাগরের জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে এবং তাদের বাহিনী হামলার জবাব দেবে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে ইরান সমর্থিত হুতিরা। উত্তর ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চলই এখন তাদের দখলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে এর প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে তারা ১০০ এর বেশি হামলা চালিয়েছে। এরপর হুতিদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে হামলা শুরু হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তাই নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে আবারো হুতিদের ওপর হামলা জোরদার করার নির্দেশ দেন।
কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি

কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি কাশ্মীরে টানা তৃতীয় রাতের মতো ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (স্থানীয় সময়) কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শ্রীনগর থেকে এএফপি জানায়, ভারত, কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পাহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদে’ মদদ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করার প্রচেষ্টা ‘গুরুত্বহীন’ এবং যেকোনো ভারতীয় পদক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে। এদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী নৌমহড়া চালিয়েছে এবং যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ছবি প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে নিরাপত্তা বাহিনী পাহেলগাম হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে পাকিস্তানের ‘উসকানিমূলক’ গুলির জবাবে ভারতীয় সেনারা ‘উপযুক্ত’ অস্ত্র ব্যবহার করে পালটা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ভারতীয় পুলিশ তিনজন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে ওয়ান্টেড পোস্টার প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি এবং একজন ভারতীয়। তারা পাকিস্তানভিত্তিক, জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে অভিযোগ। পাহেলগাম হামলার তদন্তভার ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) হাতে নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, দেশটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্তে অংশ নিতে প্রস্তুত।
মালয়েশিয়ায় ৩ ঘণ্টার অভিযানে ৭ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৯

মালয়েশিয়ায় ৩ ঘণ্টার অভিযানে ৭ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৯ মালয়েশিয়ার নিলাই এলাকার দেশা পালমায় প্রায় ৩ ঘণ্টার অভিযানে ৪৯ জন অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। আটককৃতদের মধ্যে সাত বাংলাদেশি রয়েছেন। গতকাল রাতে বিভিন্ন অপরাধের জন্য তাদের আটক করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে ইমিগ্রেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (অপারেশনস) জাফরি এমবক তাহা বলেন, অভিযানে মোট ২৬০ জনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্য থেকে ইন্দোনেশিয়ার দুইজন পুরুষ এবং চার নারী, বাংলাদেশের সাতজন পুরুষ, মিয়ানমারের ১৪ জন পুরুষ, নেপালের চারজন পুরুষ, ভারতের আট জন পুরুষ এবং এক নারী, পাকিস্তানের পাঁচ জন পুরুষ, নাইজেরিয়ার দুইজন পুরুষ এবং ইয়েমেনের দুইজন পুরুষ রয়েছেন। আটকদের কোনো বৈধ পাস বা নথি নেই। কেউ কেউ অনুমোদিত সময়ের বেশি সময় ধরে অবস্থান করছিলেন।
এয়ারলাইনসগুলোকে ‘আবশ্যিক নির্দেশনা’ জারি করেছে ভারত

এয়ারলাইনসগুলোকে ‘আবশ্যিক নির্দেশনা’ জারি করেছে ভারত ভারতের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে দিল্লি থেকে পশ্চিমা দেশগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইনসগুলোর জন্য কিছু ‘আবশ্যিক নির্দেশনা’ জারি করেছে ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। আজ টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এয়ারলাইনসগুলোকে যাত্রীদের চেক-ইন সময়েই জানাতে হবে যে তাদের রুট পরিবর্তন হয়েছে, ফ্লাইট সময় বেড়েছে এবং মাঝপথে জ্বালানি নেয়ার জন্য ও ক্রু পরিবর্তনের জন্য বিরতি নিতে হতে পারে। পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজগুলোর জন্য বন্ধ করে দেয়ায় এসব ফ্লাইটে ‘দীর্ঘ সময় এবং কারিগরি বিরতি’ লাগবে। ডিজিসিএ-এর সিএফও ক্যাপ্টেন শ্বেতা সিং স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ ধরনের বিরতির সময় যাত্রীদের সাধারণত বিমানেই থাকতে হবে। তাই এয়ারলাইনসগুলোকে তাদের খাবারের প্রস্তুতি, জরুরি চিকিৎসাসেবা ও অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা নতুন করে সাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।