ভারতের চন্ডিগড়ে প্রথমবারের মতো করোনায় মৃত্যু

ভারতের চন্ডিগড়ে করোনায় মৃত্যু ১ ভারতের চন্ডিগড়ে গতকাল প্রথমবারের মতো কোভিডে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তি উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের বাসিন্দা, বয়স ৪০ বছর। তিনি পেশাগত কারণে লুধিয়ানায় থাকতেন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তাকে চন্ডিগড়ের সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (জিএমসিএইচ), সেক্টর ৩২-এ ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু চন্ডিগড়ের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে কারণ এখন পর্যন্ত এই শহরে কোনও কোভিড আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভারতজুড়ে সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আবার জটিল হয়ে উঠছে। জিএমসিএইচ-এর মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. জি.পি. থামি জানান, ওই রোগীকে শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা নিয়ে দুই দিন আগে ভর্তি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার (২৮ মে) তার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং বুধবার ভোরে তিনি মারা যান। ডা. থামি বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসার দ্বিতীয় দিনেই আমরা তার কোভিড টেস্ট করি এবং তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই কোভিড ওয়ার্ডে আইসোলেশনে রাখা হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওই রোগীর কোনও পূর্ববর্তী শারীরিক অসুস্থতা বা কোমরবিডিটি ছিল না—যা বর্তমান ভাইরাস স্ট্রেইনের সংক্রমণ ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। চন্ডিগড়ে এই প্রথম কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যু হলেও, সাম্প্রতিক সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এটি ভারতে অষ্টম কোভিড মৃত্যু। দেশটির স্বাস্থ্য দপ্তর এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি যে কোন ভ্যারিয়েন্ট এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। তবে ইতিমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
কানাডায় ভয়াবহ দাবানল, ম্যানিটোবায় জরুরি অবস্থা জারি

কানাডায় ভয়াবহ দাবানল, ম্যানিটোবায় জরুরি অবস্থা জারি কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ম্যানিটোবায় ভয়াবহ দাবানলের কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রাদেশিক সরকার। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ অবস্থায় অঞ্চলটি থেকে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল ম্যানিটোবার প্রিমিয়ার ওয়াব কিনেউ বলেন, ‘এই দাবানল পরিস্থিতিতে ম্যানিটোবা সরকার প্রদেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছে। এই পরিমাণ লোক সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। প্রিমিয়ার কিনেউ আরও জানান, জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার জন্য এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সহযোগিতা পাওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়েছেন। সেনাবাহিনীর বিমান দ্রুতই কাজ করা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আক্রান্তদের রাজধানী উইনিপেগে স্থানান্তর করা হবে বলে জানান কিনেউ। অবস্থানগত দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ খনিশিল্প শহর ফ্লিন ফ্লনের ৫,০০০ বাসিন্দাকে আগেই এলাকা ছাড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল। এছাড়াও বেশ কিছু প্রত্যন্ত শহর ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদেরও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রিমিয়ার বলেন, ‘প্রথমবারের মতো প্রদেশের প্রতিটি অঞ্চলে একযোগে দাবানল দেখা দিয়েছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত এবং আমাদের এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’ ম্যানিটোবায় বর্তমানে ২২টি সক্রিয় দাবানল রয়েছে। গত এক মাসেই প্রায় ২ লাখ হেক্টর বনভূমি পুড়ে গেছে, যা গত পাঁচ বছরের বার্ষিক গড়ের তিন গুণ। ম্যানিটোবা ওয়াইল্ডফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, এই বছর কানাডার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ম্যানিটোবায় বেশি দাবানল দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে কানাডা জুড়ে ১৩৪টি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর অর্ধেকই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দাবানলের ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, আলবার্টা, সাসকাচোয়ান, ম্যানিটোবা ও অন্টারিও প্রদেশে।
৩১ বার এভারেস্টের চূড়ায়

৩১ বার এভারেস্টের চূড়ায় ‘এভারেস্ট ম্যান’ নামেও পরিচিত নেপালি শেরপা কামি রিতা নিজের রেকর্ড ভেঙে আবার নতুন রেকর্ড গড়লেন। তিনি এবার নিয়ে ৩১ বার মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ৩১তম অভিযানে তিনি আজ মঙ্গলবার বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের একটি দলকে নিয়ে নেপালের ৫৫ বছর বয়সী এই শেরপা আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ৪ টায় ৮,৮৯৪ মিটার উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। অভিযানের আয়োজক সেভেন সামিট ট্রেকস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “কামি রিতা শেরপাকে কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তিনি কেবল একজন জাতীয় পর্বতারোহী নায়ক নন বরং এভারেস্টেরই একজন বিশ্বব্যাপী প্রতীক।” কামি রিতা ১৯৯৪ সালে একটি বাণিজ্যিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে প্রথম এভারেস্ট জয় করেছিলেন এবং তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ এই পর্বতচূড়া জয় করে চলেছেন। এমনকি একই বছরের মধ্যে দুইবার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডও রয়েছে তার। যেমন ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে দুবার করে এভারেস্টে আরোহণ করেছিলেন তিনি। এভারেস্ট রেকর্ডের জন্য তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন তার সহকর্মী নেপালি শেরপা পাসাং দাওয়া, যিনি ২৯ বার এভারেস্ট জয় করেছেন। গত সপ্তাহে পাসাং দাওয়া তার ২৯তম এভারেস্ট অভিযান সম্পন্ন করেন। কামি রিতা শেরপা গত বছর তার ৩০তম এভারেস্ট অভিযান শেষে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “রেকর্ডের জন্য আমি খুশি। আমি আরো খুশি যে, আমার আরোহণ নেপালকে বিশ্বে স্বীকৃতি দিতে সাহায্য করেছে।” ব্রিটিশ পর্বতারোহী কেন্টন কুল ১৯তমবারের মতো এভারেস্ট জয়ের এক সপ্তাহ পরে কামি রিতার এই কৃতিত্বের খবর এলো। কেন্টন কুল গত ১৮ মে ১৯তম বারের মতো এভারেস্ট জয় করেন। শেরপা নন এমন আরোহীদের মধ্যে এটি নতুন রেকর্ড। ৫১ বছর বয়সী ব্রিটিশ পর্বতারোহী কেন্টন কুল গত ১৮ মে সকাল ১১টায় নেপালি শেরপা দর্জি গ্যালজেনের সঙ্গে এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছান। এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ এবং তাদের গাইড (শেরপা) সফলভাবে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেছেন। নেপালের পর্যটন বিভাগ জানিয়েছে, এ মৌসুমে এভারেস্ট ও অন্যান্য পর্বতে ১,০০০ জনেরও বেশি আরোহণের অনুমতিপত্র জারি করেছে নেপাল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এভারেস্ট আরোহণের প্রচেষ্টার সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর ফলে অতিরিক্ত ভিড় ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গত বছর, নেপাল কর্তৃপক্ষ একটি নিয়ম চালু করেছিল যাতে পর্বতারোহীদের তাদের নিজস্ব মল পরিষ্কার করতে হবে এবং তা বেস ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনতে হবে।
দেশজুড়ে বড় আন্দোলনের প্রস্তুতির নির্দেশ ইমরান খানের

দেশজুড়ে বড় আন্দোলনের প্রস্তুতির নির্দেশ ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দলকে ‘পাকিস্তানজুড়ে বড় ধরনের আন্দোলন’ শুরুর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। সোমবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তার বোন আলীমা খান। তিনি বলেন, “ইমরান খান বলেছেন, তার দলের এখন ইসলামাবাদের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার পরিবর্তে দেশব্যাপী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।” পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। আলীমা খান বলেন, “ইমরান খান বলেছেন- তারা (সরকার) যতই নির্যাতন করুক না কেন, তিনি কখনই দাসত্ব মেনে নেবেন না। মাথা নত করার চেয়ে তিনি সারাজীবন জেলে থাকতে পছন্দ করবেন।” আলেমা সংবাদিকদের জানান, ইমরান খান অভিযোগ করেছেন যে, তাকে একজন সাধারণ বন্দির ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। গত আট মাসে, তাকে তার সন্তানদের সাথে মাত্র একবার কথা বলতে দেওয়া হয়েছে। আলিমা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের বোনদের তার সাথে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি আমরা যে বইগুলো পাঠাতে চাই তাও জেল প্রশাসন আটকে রেখেছে।” আলিমা আরো অভিযোগ করেন, ইমরানের ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাকে পরীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আদালতের অবমাননার আবেদনের আদেশ সরকার অমান্য করছে। তিনি বলেন, “ইমরান খানকে চাপে রাখার জন্য তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও ইমরান বলেছেন, তিনি মাথা নত করবেন না।” আলিমা ভ্লগার ও ইউটিউবারদেরও সমালোচনা করেছেন যারা দাবি করেন যে, ইমরানের মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা চুক্তি করেছে পিটিআই। আলিমা জানান, “দলের ভেতর বিশ্বাসঘাতকদের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে ইমরান বলেছেন, যারা উইকেটের দুই পাশে খেলে, তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই।” এদিকে, পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই দলের নেতা কারাবন্দী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বাইরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় গোহর দলীয় কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সব আইনি বাঁধা শেষ হতে চলেছে। আমরা তার মুক্তির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা বিক্ষোভ করেছি, সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করেছি ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” তিনি বলেন, “কর্মীদের প্রশ্ন তোলার পূর্ণ অধিকার আছে এবং আমরা তাদের আবেগকে মূল্য দিই। কেউ বুঝতে পারে না যে, ইমরান খান কীভাবে ও কেন দুই বছর ধরে কারাবন্দী রয়েছেন।” তিনি উল্লেখ করেন, “দলের ধৈর্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জনগণ ক্লান্ত, এমনকি বিচারকরাও রায় লিখতে লিখতে ক্লান্ত। আমরা ইমরান খানের মামলাগুলো নিষ্পত্তি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।” প্রসঙ্গত, ৭১ বছর বয়সি সাবেক ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদ ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত একাধিক মামলা রয়েছে, যা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর থেকে শুরু হয়।
গাজায় স্কুল ও আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ৪৯

গাজায় স্কুল ও আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ৪৯ গাজা সিটি ও উত্তর গাজার জাবালিয়ায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী একটি স্কুল ও একটি বাড়ি লক্ষ্য করে সোমবার (২৬ মে) সকালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর। একটি মেডিকেল সূত্রের বরাত দিয়ে আনাদোলুকে জানিয়েছে, গাজা সিটির আল-দারাজ পাড়ায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী ফাহমি আল-জিরজাওয়ি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। বোমা হামলার পর স্কুলটিতে আগুন ধরে যায়। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের ভিডিওতে দেখা গেছে, পুড়ে যাওয়া মরদেহ। এছাড়া আগুন লাগার সময় বাস্তুচ্যুতদের চিৎকার দেখা গেছে ও শোনা গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে বলেছে, স্কুলটিকে হামাস তাদের ‘কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে’ পরিণত করেছিল। তবে, তারা তাদের দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ সরবরাহ করেনি। এদিকে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর আরেকটি ভয়াবহ হামলায় ১৯ জন নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি বহুতল ভবন ‘সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস’ হয়ে গেছে। ভবনটি কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল। যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত বছরের নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ছিটমহলে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে।
আবুধাবি পুড়ছে রেকর্ড ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে

আবুধাবি পুড়ছে রেকর্ড ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রীষ্ম এখনো পুরোপুরি জেঁকে বসেনি, তার আগেই দেশটির রাজধানী আবুধাবিতে তাপমাত্রা পৌঁছেছে রেকর্ড ৫০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল আল শোয়ামেখে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া কেন্দ্র। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, আরব আমিরাতের বাসিন্দারা এখন গ্রীষ্মের শুরুর সময়টা কাটাচ্ছেন। অন্য বছরের মতো এবারও এ সময়ে আকাশ মূলত পরিষ্কারই থাকছে, কোথাও কোথাও আছে মেঘের আনাগোনা, কিন্তু আর্দ্রতা বাড়ছে। কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বাতাস থাকলেও সূর্যের প্রখর তাপের কারণে তাতে স্বস্তি মিলছে না। গতকাল দেশটির আবহাওয়া কেন্দ্র ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজি (এনসিএম) এক্সে লিখেছে, আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে আবু ধাবির আল শোয়োমেখে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরু করার পর এটাই মে মাসের রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানিয়েছেন এনসিএম প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা খালিজ টাইমস। এর আগে ২০০৯ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫০ দশমিক ২ ডিগ্রি উঠেছিল। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের সবচেয়ে উষ্ণ এপ্রিল পার করেছে। এ মাসে দেশটি গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখেছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে দেশটিতে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হাইতিতে সন্ত্রাসী হামলায় শিশুসহ ৫০ জন নিহত

হাইতিতে সন্ত্রাসী হামলায় শিশুসহ ৫০ জন নিহত ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ হাইতির একটি শহরে একটি গ্যাং হামলায় শিশুসহ অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মধ্য হাইতির প্রেভাল শহরে এই ঘটনা ঘটে। আজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, একটি গির্জায় হামলা চালায় এবং বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে। স্পেনের ইএফই সংবাদ সংস্থাকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, গণহত্যার স্থানে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব, কারণ গণহত্যাস্থল এখনো সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মরদেহের মধ্যে ১৪টি শিরচ্ছেদ এবং পুড়িয়ে ফেলা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
মধ্যরাতে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প; ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক স্থাপনা

মধ্যরাতে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প; ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক স্থাপনা ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা – ইউএসজিএস। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০০ টিরও বেশি ঘরবাড়ি। স্থানীয় সময় আজ দিবাগত রাত ২টা ৫২ মিনিটে কম্পন অনুভূত হয়। ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠের ৬৮ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হেনেছে ভূমিকম্পটি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল বেংকুলু প্রদেশের কাছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, এ ঘটনায় সুনামির কোনো সম্ভাবনা নেই।
ভারতে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ অভিযানে শীর্ষ মাওবাদী নেতাসহ নিহত ২৭

ভারতে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ অভিযানে শীর্ষ মাওবাদী নেতাসহ নিহত ২৭ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশকে মাওবাদী-মুক্ত করা হবে। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হয়। সেই অভিযানের অংশ হিসাবেই বুধবার (২১ মে) ছত্তিশগড়ে নারায়ণপুরের অবুঝমাঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলির লড়াই চলে। এই সংঘর্ষে শীর্ষনেতাসহ ২৭ মাওবাদী নিহত হয়েছেন। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা অবুঝমাঢ় মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর ছিল, অবুঝমাঢ়ে লুকিয়ে রয়েছেন এক মাওবাদী কমান্ডার। প্রথমে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে পরে জানা যায়, ওই কমান্ডার হলেন বাসভরাজু। বুধবার ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ অভিযানের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “দেশকে নকশালবাদ থেকে মুক্ত করতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। আজ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ২৭ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআই-মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভরাজু। নকশালবাদের বিরুদ্ধে তিন দশকের লড়াইয়ে এই প্রথম আমাদের বাহিনীর অভিযানে সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার কোনো মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে।” মাওবাদী শীর্ষনেতার মৃত্যুর পরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য আমাদের বাহিনীর জন্য গর্ব হচ্ছে। আমাদের সরকার মাওবাদী আতঙ্ক দূর করতে এবং আমাদের জনগণের জন্য শান্তি ও অগ্রগতির জীবন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ গত ২১ এপ্রিল থেকে কারেগুট্টা পাহাড় এলাকায় নতুন করে শুরু হয় মাওবাদী দমন অভিযান ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’র পাশাপাশি ছত্তিশগড়ের সশস্ত্র পুলিশ ও ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনী রয়েছে ওই দলে। মাঝে এক দিনের জন্য অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে তারপর এই অভিযান ফের শুরু হয়। মাওবাদী পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মিকে নির্মূল করাই এই অভিযানের উদ্দেশ্য।
পাকিস্তানে স্কুল বাসে বোমা হামলা, শিশুসহ নিহত ৫

পাকিস্তানে স্কুল বাসে বোমা হামলা, শিশুসহ নিহত ৫ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে একটি স্কুল বাসে বোমা হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। খবর বিবিসির। পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় আজ বুধবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রত্যন্ত শহর খুজদারে ওই হামলার সময় বাসটিতে প্রায় ৪০ জন স্কুল শিশু ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই শিশু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে একটি বড় বাসের পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে, যার পাশে স্কুলব্যাগ পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি অশান্ত প্রদেশ বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্রোহ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এই হামলাকে ‘স্পষ্ট বর্বরতা’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। শিশুদের লক্ষ্য করে হামলাকারীদেরকে তিনি ‘পশু’ অভিহিত করেছেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রতিবেশী ভারত ও বেলুচিস্তানের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরণের পরিকল্পনার অভিযোগ করেছে, যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই। এর আগে মার্চের শুরুতে, বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত সিবি জেলায় একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মির ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলায় প্রায় ২১ জন বেসামরিক ব্যক্তি এবং চারজন সামরিক কর্মী নিহত হয়েছিল। হামলাটি চালায় বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী যারা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। পাকিস্তানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিএলএলকে ‘ভারতের প্রক্সি গোষ্ঠী’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। তবে বিএলএ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএলএল উল্টো পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছে। বিএলএল বলেছে, গত দুই দশকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী হাজার হাজার জাতিগত বালুচ মানুষকে নিখোঁজ করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক করা হয়েছে, অথবা কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে অভিযানে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা করা হয়েছে।