যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ১২ দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ১২ দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) জারি করা এক নির্বাহী আদেশে তিনি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আগামী সোমবার থেকে এটি কার্যকর হবে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে নিজের প্রথম মেয়াদের অন্যতম বিতর্কিত পদক্ষেপের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকেরা। এ ছাড়া ট্রাম্প আরও সাতটি দেশের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। দেশগুলো হলো- বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, উভয় নিষেধাজ্ঞা আগামী সোমবার থেকে কার্যকর হবে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, কলোরাডোতে ইহুদিদের একটি র্যালিতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশটিতে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। কলোরাডোর বোল্ডারে স্থানীয় সময় গত রোববার দুপুরের ওই ঘটনায় হামলাকারীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছিল পুলিশ। তিনি একজন মিসরীয় নাগরিক। এ পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প ওই ঘটনার কথা উল্লেখ করলেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলোয় মিসরের নাম নেই। এ ছাড়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে আরেকটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন বলেও জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ত্রাণ সংগ্রহকারীদের মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করছে ইসরায়েলি বাহিনী

ত্রাণ সংগ্রহকারীদের মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করছে ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণের নামে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে মারছে ইসরায়েলি বাহিনী। ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্টভাবে মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে মৃত্যুর ফাঁদ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী রাফার পশ্চিমাঞ্চলে এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো স্থাপন করেছিল। এই এলাকাটি একটি নিরাপদ মানবিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েলি বাহিনী কেবল খাবারের জন্য সেখানে যাওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি চালিয়েছে। এমন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়েছে যারা খাবারের প্যাকেট ধরে রেখেছিলেন। এমনকি নিজের সন্তানদের এবং পরিবারের সদস্যদের খাওয়ানোর চেষ্টা করার সময় একজন নারীকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহতদের অনেকেই এখনো হাসপাতালে রয়েছেন। তারা আইসিইউতে রয়েছেন। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী মূলত মাথা, বুক এবং শরীরের উপরের অংশগুলো লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগের অবস্থা খুবই গুরুতর। এরমধ্যে আবার অধিকাংশ হাসাপাতালই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো স্থাপনের পর থেকে কমপক্ষে ১০২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৬০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ট্রাম্পের ‘সুন্দর’ বাজেট বিলকে ‘জঘন্য’ বললেন মাস্ক

ট্রাম্পের ‘সুন্দর’ বাজেট বিলকে ‘জঘন্য’ বললেন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন শীর্ষ মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের ‘সুন্দর’ দাবি করা বাজেট বিলটিকে তিনি ‘জঘন্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। এ ঘটনা দুই মিত্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধের সৃষ্টি করেছে। বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। নতুন বিলে বহু ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড় ও প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং একই সাথে মার্কিন সরকারকে আরো অর্থ ধার করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিলটি গত মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মাস্ক বলেন, ‘যারা এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদের জন্য লজ্জা। এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর অসহনীয় ঋণের বোঝা চাপাবে।’ মাস্ক কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা (ডিওজিই)- এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব শেষ করেছেন। ওই দপ্তরে তার কাজ ছিল সরকারি খরচ কমানো ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ খাত চিহ্নিত করে সেগুলো বাতিল করা। মাস্ক তার পোস্টে বলেন, ‘আমি দুঃখিত, কিন্তু আমি আর সহ্য করতে পারছি না। এই বিশাল শুয়োরের মাংসে ভরা কংগ্রেসীয় বিলটি জঘন্য ন্যক্কারজনক। যারা এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন, আপনারা জানেন যে আপনারা ভুল করেছেন। বিলটি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে এবং এর ফলে দেশের নাগরিকরা ভয়াবহ ঋণের চাপে পড়বে।’ আমেরিকান রাজনীতিতে “শুয়োরের মাংস” বলতে আইন প্রণেতাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রকল্পে ব্যয় বোঝায়। মাস্ক অন্য একটি পোস্টে একটি রাজনৈতিক সতর্কতা যোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের নভেম্বরে, আমরা আমেরিকান জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী সমস্ত রাজনীতিবিদকে বরখাস্ত করব।’ “ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল” নামে পরিচিত এই বাজেট প্রস্তাবটি ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উদ্যোগ। বিলে রয়েছে ২০১৭ সালের করছাড় অব্যাহত রাখা, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ৪৬.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ, জাতীয় ঋণের সীমা ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানো। তবে এসব খরচের ভার সামলাতে গিয়ে বিলটি সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কড়া কাটছাঁট করার প্রস্তাব দিয়েছে। কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) বলছে, এর ফলে মেডিকেইডে ৬৯৮ বিলিয়ন ডলার কমানো হবে, খাদ্য ভর্তুকি কর্মসূচি (এসএনএপি) থেকেও কমিয়ে দেয়া হবে ২৬৭ বিলিয়ন ডলার। এদিকে, মাস্কের সমালোচনার জবাব দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই জানেন যে, এই বিলের ব্যাপারে ইলন মাস্ক কী অবস্থান নিয়েছেন। তবে, মাস্কের এই মন্তব্য তার মতামত পরিবর্তন করে না। প্রেসিডেন্টের মতে, এটি একটি বড় এবং সুন্দর বিল। প্রেসিডেন্ট এই ক্ষেত্রে অটল আছেন।”
পাকিস্তানে জেল থেকে পালিয়েছে ২১৩ কয়েদি

পাকিস্তানে জেল থেকে পালিয়েছে ২১৩ কয়েদি পাকিস্তানের করাচির মালির জেল থেকে অন্তত ২১৩ জন কয়েদি পালিয়েছে। পলাতক কয়েদিদের ধরতে বড় আকারের অভিযান শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। আজ পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ডন ও জিও নিউজে সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেল থেকে পালানোর সময় অন্তত একজন নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৮০ জন কয়েদিকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৩০ জনের বেশি কয়েদি এখনো পলাতক। জেল সুপার আরশাদ শাহ বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় ৪ ও ৫ নং সার্কেলের বন্দিদের যখন তাদের ব্যারাক থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল তখনই জেল থেকে পালানোর ঘটনা ঘটে। সিন্ধুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান এই ঘটনাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর প্রিজনব্রেক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে ১২০০ অভিবাসীর যুক্তরাজ্যে প্রবেশ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে ১২০০ অভিবাসীর যুক্তরাজ্যে প্রবেশ ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে একদিনে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে প্রায় ১২০০ অভিবাসী। যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত একদিনে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১ জুন) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শনিবার ১ হাজার ১৯৪ জন অভিবাসী ১৮টি ছোট নৌকায় করে দেশটিতে পৌঁছেছেন। এ নিয়ে ২০২৫ সালে চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৮১১ জনে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যদিও ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য সরকার এই প্রবণতা থামাতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ফরাসি উপকূলীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত তারা প্রায় ২০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি এই সর্বশেষ আগমনকে ‘চমকে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেন। যদিও এটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের সেই রেকর্ডের চেয়ে কম, যখন একদিনে ১,৩০০ অভিবাসী ছোট নৌকায় এসে পৌঁছেছিল। তবে এই পরিস্থিতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে কড়া অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি, বিশেষ করে কট্টর ডানপন্থিদের চাপের মুখে অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রাখতে। ২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক আগমনের পর ২০২৩ সালে কিছুটা কমে এলেও, আবারও ব্যাপকহারে চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। গত বছর ৩৬,৮০০ জন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে। চলতি বছর এপ্রিলেই চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে-যা ২০১৮ সালে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে আগেভাগেই এ মাইলফলক অতিক্রম। চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী স্টারমার নতুন ও কঠোর অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছেন। এতে অভিবাসীরা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হতে যত সময় লাগবে, তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি অপরাধীদের বিতাড়নের ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে।
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪০০ ছাড়াল

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪০০ ছাড়াল গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (১ জুন) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৩৬ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪১৮ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ২৪ হাজার ১৯০ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। উল্লেখ্য, ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
যুক্তরাষ্ট্র শুল্কচুক্তি ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ করেছে: চীন

যুক্তরাষ্ট্র শুল্কচুক্তি ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ করেছে: চীন বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে স্বাক্ষরিত শুল্কচুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ করেছে বলে অভিযোগ করেছে চীন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, চীন তার স্বার্থ রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেবে। খবর বিবিসির। সোমবার (২ জুন) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ওয়াশিংটন গত মাসে জেনেভায় আলোচনার সময় স্বাক্ষরিত চুক্তিকে ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ করেছে। ওই চুক্তিতে উভয় দেশ একে অপরের থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছিল। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, মার্কিন পদক্ষেপগুলো জানুয়ারিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপের সময় হওয়া ঐকমত্যকেও গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেছে। শুক্রবার ট্রাম্পের অভিযোগের পর চীনের পক্ষ থেকে পাল্টা এই অভিযোগ এলো। শুক্রবার ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন যে, ‘চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছে’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিযোগের বিস্তারিত খোলাসা করেননি। তবে বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার পরবর্তীতে জানান, চীন চুক্তির অধীনে সম্মতি অনুসারে অ-শুল্ক বাধা দূর করছে না। গত মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার ঘোষণা দেয়। অন্যদিকে, চীন মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ করার ঘোষণা দেয়। সোমবার (২ জুন) বেইজিং বলেছে, চুক্তির মার্কিন লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে- চীনা কোম্পানিগুলোর কাছে কম্পিউটার চিপ ডিজাইন সফটওয়্যার বিক্রি বন্ধ করা, চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ের তৈরি চিপ ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করা এবং চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা। জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার বিষয়টি বাণিজ্য বিশ্লেষকের হতবাক করে দিয়েছিল, কারণ গত কয়েক মাস ধরে ওয়াশিংটন ও চীন পারস্পরিক বাণিজ্যের বেশি কিছু ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে অবিশ্বাস্যভাবে দূরে ছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, জেনেভার বৈঠক দেখায় যে মুখোমুখি আলোচনার সময় ওয়াশিংটন ও বেইজিং চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু কিছুদিন পার হতেই না হতেই ফের পাল্টাপাল্টি দোষারোপের ঘটনা চুক্তির ভঙ্গুরতা তুলে ধরেছে এবং দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানো কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে তার ইঙ্গিত দেয়। যদিও পারস্পরিক নতুন অভিযোগগুলো এটাও ইঙ্গিত দিতে পারে যে, ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনা ভালোভাবে চলছে না। রবিবার (১ জুন) হোয়াইট হাউজের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প এবং শি শিগগির আলোচনা করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সিবিএস নিউজকে বলেছেন, শি এবং ট্রাম্পের কথা বলার পরে বাণিজ্যে চুক্তির বিস্তারিত ‘স্পষ্ট’ করা হবে। তবে কথোপকথনটি কবে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা তিনি বলেননি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট এবিসি নিউজকে বলেছেন, চলতি সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে এবং ‘উভয় পক্ষই আলোচনায় আগ্রহী বলে জানিয়েছেন’। হ্যাসেট প্রত্যাশিত আলোচনা সম্পর্কে বলেন, “মূল কথা হলো, যদি পরিস্থিতি আমাদের ইচ্ছামতো না ঘটে, তাহলে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।” গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর বর্তমান শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা দেন। দ্বিগুণ এই শুল্ক আগামী বুধবার থেকে কার্যকর হবে। শুক্রবার পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গে এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, এই পদক্ষেপ স্থানীয় ইস্পাত শিল্প এবং জাতীয় সরবরাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, একই সঙ্গে চীনের উপর নির্ভরতা কমাবে।
নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ ক্রীড়াবিদ নিহত

নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ ক্রীড়াবিদ নিহত নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সবাই অ্যাথলেট বা ক্রীড়াবিদ। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু নিউজ এজেন্সি। বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, গতকাল কুরা এলাকায় একটি সেতু থেকে বাসটি পড়ে গেলে এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওগুন প্রদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় ক্রীড়া উৎসব (ন্যাশনাল স্পোর্টস ফেস্টিভাল) থেকে ফিরছিলেন তারা। বাসটিতে থাকা ৩৫ জন আরোহীর বেশিরভাগই ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া কর্মকর্তা। দুর্ঘটনার পর পর সাবেক নাইজেরিয়ান ভাইস প্রেসিডেন্ট আতিকু আবুবাকার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেলে ২৫ কোটি মৌমাছি, সতর্কতা জারি

যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেলে ২৫ কোটি মৌমাছি, সতর্কতা জারি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে উল্টে পড়া একটি ট্রাক থেকে আনুমানিক ২৫ কোটি মৌমাছি পালিয়ে গেছে। এতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সতর্কতা জারি করে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে। আজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল ওয়াশিংটনের কানাডার সীমানার কাছে একটি দুর্ঘটনায় মৌমাছি বহনকারী প্রায় ৩১ হাজার ৭৫০ কেজি ওজনের একটি ট্রাক উল্টে যায়। ওয়াটকম কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৫ কোটি মৌমাছি এখন মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। মৌচাষীরা পুলিশের সঙ্গে মিলে মৌমাছির চাকগুলো পুনরায় বসানোর কাজ করছেন, যাতে মৌমাছিরা তাদের রানী মৌমাছি খুঁজে ফিরে যেতে পারে। এই প্রক্রিয়া আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিয়ের উপহারসামগ্রী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল প্রাণঘাতী বোমা

বিয়ের উপহারসামগ্রী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল প্রাণঘাতী বোমা পার্সেল খুলতেই সুতায় পড়ে টান। এরপর বিকট শব্দে সেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুইজনের মৃত্যু হয়। একজন হয় গুরুতর আহত। ঘটনাটি ঘটে ভারতের ওড়িশার বোলাঙ্গির জেলার পাটনাগড় শহরে সাত বছর আগে। সেই ঘটনায় করা হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে সম্প্রতি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে ওই রাজ্যের এক আদালত। মামলার বাদীপক্ষের যুক্তি শুনে আদালত মন্তব্য করেন, এটি ছিল একটি ‘ঘৃণ্য’ অপরাধ। তবে আদালতের মতে, এটি ‘সবচেয়ে বিরল ও ভয়াবহ’ ধরনের মামলা নয়, যার জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রযোজ্য। তাই আদালত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। আসামির নাম পুঞ্জিলাল মেহের। বহুচর্চিত মামলাটি ‘ওয়েডিং বম্ব’ (বিয়ে বোমা) হত্যা মামলা নামে পরিচিত। পাটনাগড় শহরে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য শেখর সাহু ও রিমার। বিয়ের পাঁচদিন পর উপহারের নাম করে পার্সেলে করে পাঠানো এক বোমা। নবদম্পতি ওই পার্সেল খোলামাত্রই বিস্ফোরণ হয়। এতে সৌম্য শেখর সাহু ও তার দাদি জেমামণি সাহুর মৃত্যু হয় এবং সৌম্যর স্ত্রী রিমা গুরুতর আহত হন। অভিযুক্ত পুঞ্জিলাল মেহের ওই পরিবারের পূর্বপরিচিত ছিলেন। নিহত যুবকের মা সংযুক্তা সাহুর সাবেক সহকর্মী ছিলেন তিনি। কলেজের এক সাবেক অধ্যক্ষ ছিলেন পুঞ্জিলাল। তার বয়স এখন ৫৬ বছর। মামলার তদন্তকারীরা জানান, পুঞ্জিলাল পেশাগত দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্তা সাহুর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এক পর্যায়ে তিরি পরিকল্পনা করে এই পার্সেল বোমা হামলা চালান। তিনি ভুয়া নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে রায়পুর থেকে বোমাটি কুরিয়ার করেন। এ কাজের জন্য তিনি এমন একটি কুরিয়ার সার্ভিস বেছে নেন যেখানে সিসিটিভি বা পার্সেল স্ক্যানিং ছিল না। সূত্র: বিবিসি